আজ ‘বাংলার সক্রেটিস’ আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ড. হুমায়ুন আজাদ স্যারের ৬৯তম শুভজন্মদিন।
সাইয়িদ রফিকুল হক
বাংলার ইতিহাসে তিনি এক ক্ষণজন্মা-পুরুষ। আর মহাপুরুষ তো বটেই। তাঁর মতো সাহসীমানুষ এই দেশে এখন কয়জন আছে? আর তাঁর কালেও কয়জন ছিল? জানি, উত্তর খুঁজতে গেলে আমাদের আঁতকে উঠতে হবে। এখন অনেক পদবীধারী-ডিগ্রীধারী, আর অনেক তৈলবাজ-তৈলবিশারদ ভেক ঘুরে বেড়ায় আমাদের সমাজে। কিন্তু এদের মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব, চরিত্র আর সততা বলে কিছু নাই। আর তিনি ছিলেন এককথায় অসাধারণ। আর তিনি ছিলেন একজন স্মরণীয় ব্যক্তিত্ব। তাঁকে প্রাতঃস্মরণীয় ব্যক্তিও বলা যেতে পারে। আর এতে কোনো ভুল নেই। বরং এতে তাঁকে কমই বলা হবে। তাই, গর্বসহকারে আবারও বলছি: বাংলাদেশে তাঁর মতো সাহসীমানুষ খুব কমই আছে। তিনি ছিলেন একজন বহুমাত্রিক ও ভিন্নধারার ভিন্নমতের লেখক। তাঁকে বলা হয় প্রথাবিরোধী লেখক। সবকিছু ঠিক আছে। আসলে, তিনি ছিলেন সত্যবাদীলেখক। এবং এখনও তিনি আমাদের কাছে তা-ই আছেন। তাঁর সততা ও সাহস আমাদের এখনও মুগ্ধ করে রেখেছে।
ড. হুমায়ুন আজাদ স্যার ছিলেন বাংলা ভাষা ও সাহিত্যে জ্ঞানের বাতিঘর। আর তাঁর মতো যোগ্যপুরুষ সমকালীন জীবনে খুঁজে পাওয়া সত্যিই দুষ্কর। তাঁর মতো বাস্তববাদী ভাষাবিদ আর কে হবে? কার এমন যোগ্যতা আছে? তিনি ছিলেন দুনিয়ার সমস্ত ভণ্ডামি ও শয়তানীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো এক জাজ্বল্যমান-প্রতিবাদী-মহাপুরুষ। তিনি নিজে ছিলেন অসম্ভব সাহসী। আর সবসময় তিনি সাহসের পরিচর্যা করতেন। আর অন্যকেও সাহসী হতে তাঁর লেখনিশক্তির দ্বারা প্রভাবিত করতেন।
১৯৪৭ সালের আজকের দিনে, অর্থাৎ, ২৮-এ এপ্রিল তিনি জন্মেছিলেন বিক্রমপুর-জেলার রাঢ়িখালগ্রামে। আর মৃত্যুবরণ করেন ২০০৪ সালের ১১ই আগস্ট। তিনি এই বাংলার চিহ্নিত হানাদারবাহিনী কর্তৃক প্রথম আঘাতপ্রাপ্ত হন ২০০৪ সালের ২৭-এ ফেব্রুআরি—ওই বছরের বইমেলার শেষলগ্নে। তখন বাংলাদেশ শাসিত হচ্ছিলো একাত্তরের হানাদারবাহিনীর দোসরদের দ্বারা।
এই সাহসীমানুষটিকে তখন পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়। তাঁর লিখিত বাংলাসাহিত্যের অবিস্মরণীয় বিদ্রুপাত্মক-গ্রন্থ ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’ এখনও সমানভাবে জনপ্রিয়। আর এই গ্রন্থটির জন্য হানাদারবাহিনীর হাতে তাঁকে নির্মমভাবে জীবন দিতে হয়েছে।
আজকের এই শুভজন্মদিনে একজন খাঁটি-বাঙালি লেখক ড. হুমায়ুন আজাদ স্যারের প্রতি অকৃত্রিম ভক্তি ও শ্রদ্ধা রইলো। মহান আল্লাহ, আমার শ্রদ্ধেয় স্যারকে আপনি শান্তিতে রাখুন। আমীন। আমীন। আমীন।
আজ আর নয়। পরে আরও বিস্তারিতভাবে স্যারের ওপর কিছু লেখার ইচ্ছে আছে।
সাইয়িদ রফিকুল হক
মিরপুর, ঢাকা, বাংলাদেশ।
২৮/০৪/২০১৬
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০৫