শুভ্রা, বাহিরে সন্ধ্যা। তোমার সাথে কিছুক্ষণ আগে কথা হল। পুরোন মাথা ব্যাথা আবার ফিরে এসেছে, কষ্ট দিচ্ছে। তুমি কোনভাবে বাসায় পৌঁছুতে পারলে সেখানে সবান্ধব পরিবেশে, দেখবে সব ঠিক হয়ে যাবে। তারপর তুমি শাহবাগে চলে আসবে। আমার বেরোতে রাত নয়টা বাজবে, তুমি অপেক্ষা করে থাকবে সোহরাওয়ার্দীতে। আমরা লালন মঞ্চের কাছে বসে চা খাব, আর সিগারেট। তারপর শেষ হলে চলে যাব রমনা পার্ক। রাতের পার্ক, খুব শীতল আর ভৌতিক হয়ে থাকবে। তুমি ভয় পেয়ে আমার সঙ্গে সেঁটে থাকবে। আমি তোমার উষ্ণতা নেব। রমনার অস্তাচল দিয়ে বেরিয়ে আমরা মিন্টো রোড ধরে হাঁটবো। সেখানে প্রথমবারের মত আমরা শীতের ঘ্রাণ পেয়েছিলাম। বেইলি রোডের হলদে আলোর নিচ দিয়ে যাবার সময় আরেকবার চা চলতে পারে ফুটপাথে বসে। তুমি কি আমার কাঁধে একটু মাথা রাখবে না? আমি তখন পুরুষের ভেতর পুরুষ হয়ে উঠব, আর তুমি নারীর ভেতর আরো বেশি নারী।
আমরা হেঁটে হেঁটে ভাবছি খিলগাওএর দিকে চলেছি, কিন্তু কখন পথ আমাদের ঘুরিয়ে দিয়েছে কমলাপুরের দিকে আমরা কি তা টের পেয়েছি? সেখানে পৌঁছুবার পর খবর আসবে, একটামাত্র ট্রেন, রাত একটা বেজে পনের মিনিটে সমুদ্রের দিকে ছেড়ে যাবে। আমরা ট্রেনটার কাছে গিয়ে দাঁড়িয়ে দেখতে পাব ভৌতিক এক ট্রেন। আমাদের জন্যে নির্দিষ্টে আসনে পৌঁছে দেখব কেউ নেই আর সেই কম্পার্টমেন্টে। পুরো ট্রেনটা চলতে শুরু করার আগে আমরা জানতেই পারব না যে, শুধু সেই বগিতে কেন, পুরো ট্রেনেই কোথাও কেউ নেই। তুমি ভয় পেয়ে যাবে। আমি তোমার কপালে চুমু খেয়ে তোমাকে গাঢ় করে বুকে চেপে রাখব। আমরা আমাদের বগি থেকে বেরিয়ে একটা স্লিপিং বাথে ঢুকে পড়ব, এবং অতি অবশ্যই সেখানে থাকবে না কেউ। তুমি জানালার কাছে, বিছানায় পা ঝুলিয়ে বসবে। রুমের কোণে কফি রাখা থাকবে, জানিনা কোথা থেকে আসবে। আমরা দুটো শাদা মগে, উঁহু, একটাই মগে দুজনেই চুমুক দেব। বাহিরে ট্রেনটা তখন নদীর ওপর সরু সেতু দিয়ে যাচ্ছে...