সেই যুগের কথা বলি...আজকাল কেউ তেমন আর চিঠি লিখে না । সময়গুলো কেমন যেন দিনকে দিন পাল্টে যাচ্ছে । চারদিকে এতো মানুষ অথচ কেউ কারো নয়।
মনের মধ্যে এলোমেলো ভাবনা। অবসরে ভাবনা বড় পীড়া দেয় ! ভাবনার শঙচিল দেশ-দেশান্তরে উড়ে বেড়ায়। কতো স্মৃতি, কতো আপনার জন ! কতো ভালবাসা ! বুকটা ভারী হয়ে যায় ! বুকের কথা-ব্যথা, আমার এই প্রাত্যহিক দুর্দান্ত দুর্দশার কথা কাউকে বলতে মনটা বড় ব্যাকুল হয়ে ওঠে !
এক বুক যন্ত্রণা নিয়ে সকালের আলো ফোটে । কর্মের তাগিদে বিছানা ছাড়ি । দায়িত্ব পালনে এক পায়ে দাঁড়িয়ে থাকি ঘন্টার পর ঘন্টা । ক্রমে ক্রমে দিনের আলো বাড়তে থাকে । ব্যস্ততার প্লাবনে ভেসে যায় জীবন । ভেসে যায় স্মৃতি-ভালবাসা, হতাশা-ব্যর্থতা, সব-সব ! তারপর এক সময় দিনের আলোয় পশ্চিমী টান আসে। শ্রান্ত শরীরে ক্লান্ত বিকেলের রং লাগে । আমার কর্ম ঘুচে যায় । ফিরে আসে ভাবনা ঘরের অন্ধকার ! কেউ নেই ! কোথাও কেউ নেই ! শুধুই একা ! একলা জেগে থাকা ! নির্জীব, নিশ্চল পাথরের মতো পড়ে থাকা ! এক বুক প্রত্যাশায় প্রহর গুণা ! তারপর হলুদ ঘোমটা জড়ানো সন্ধ্যা নামে ।
তারপরও কেউ আসে না । পাশে এসে বসে না । বলে না, 'আমি আছি ! আমি তোমাকে আমার করে নেবো ! আমি ভরিয়ে দেবো তোমার মনের তাবৎ শূন্যতা !'
ক্লান্ত দেহে সন্ধ্যা-আঁধারের ঘোর লাগে । একটা বেদনা মনের দিগন্ত জুড়ে ছড়াতে থাকে ! প্রদ্বীপ জ্বালিয়ে রাতকে বরণ করে নেই। প্রদ্বীপের ক্ষীণ আলোয় পাতাবাহারী তলায় আমার সংসার দেখে বিচলিত হই ! অগোছালো ! ইতস্তত দুঃখের কণিকা ছড়ানো ! আবার শূন্যতার অন্ধকারে হারিয়ে যায় জীবন ! কীসে যে আমার সংসার ! আমার সংসারের কোথাও তো হাসি নেই, আনন্দ নেই ; নেই প্রেম-ভালবাসা ! নেই প্রত্যাশা প্রাপ্তির নীলাভ সুখানুভূতি ! আছে শুধু দুঃখ-বেদনা, ব্যর্থতা-গ্লানি, অপ্রাপ্তি আর অপূর্ণতার অতৃপ্তি ! তারপরও সংসার সাজানোর প্রাণান্ত প্রচেষ্টা । নিজেকে নিয়ে নিজের খেলায় মত্ত হওয়া । জীবনের সুনীল-সবুজ দিনে পরম যত্নে পাওয়া স্বপ্নময় স্মৃতিকে মন্থন করে যাওয়া । এমনি করে কাটে দিন ; ভাঙ্গে জীবনের খেলাঘর !
♥ উৎসর্গ : সৈয়দ বদরুদ্দোজা টিপু ।।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে আগস্ট, ২০১৫ দুপুর ১২:২৪