রহিম মিয়া খুব ভোরে ঘুম থেকে উঠে টিউবয়েল থেকে হাত-মুখ ধুয়ে, এক গ্লাস ঠান্ডা পানি ঢকঢক করে পান করলেন। এরপর ফ্রেশ হয়ে গোয়ালঘর থেকে গরু-ছাগল বের করে বাইরে নির্দিষ্ট জায়গায় বেঁধে রেখে, ওদেরকে খাবার দিয়ে রওনা দিয়েছেন তার ধান ক্ষেতের দিকে। ফজল শেখ, সুরেশ বাবু, আর গাজী সাহেবের ফসলের মাঠ পেরিয়ে তারপর রহিম মিয়ার ধানক্ষেত। রহিম মিয়ার এক দাগে চার বিঘা ধানের জমি। দিগন্ত বিস্তৃত সবুজ ফসলের মাঝ দিয়ে রহিম মিয়া যখন হেঁটে তাঁর ফসলের ক্ষেতে যান, তখন চারপাশের সবুজের মিতালি রহিম মিয়ার মনটাকে সতেজ করে দেয়। রহিম মিয়ার ধান ক্ষেতের কাছে আসতেই মনটা ভালো হয়ে যায়। হালকা ঝিরঝিরে বাতাস এসে ধানের শীষগুলোর মাথা দুলিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। এবারের ধানের শীষগুলো অনেক পরিপুষ্ট হয়েছে। এবারের ধানের ফলন গতবারের চেয়ে বেশি হবে এ কথা হলফ করে বলা যায়। ধানের শীষের দোলা দেখে রহিম মিয়ার মনটাও একটু দুলে ওঠে। রহিম মিয়া ধান বিক্রি করে এবার কি কি করবেন তার একটা হিসাব মনে মনে করে ফেলেন। ছেলেটাকে একটা সাইকেল কিনে দিতে হবে, ওর স্কুলে যেতে কষ্ট হয়। মেয়েটা ধরেছে নতুন কি যেন এক জামা এসেছে সেটি কিনে দিতে হবে। অনেক দিন ধরে বায়না করছে কিন্তু দেওয়া হচ্ছে না। বাড়ির গিন্নি আবার কি কি ঘরের জিনিস কিনবে সেখানে আবার কিছু টাকা দেয়া লাগবে, নইলে এবার আর তার মুখের দিকে তাকানো যাবে না। এবার রহিম মিয়া ভাবছেন, ধানের দাম ভালো পেলে ধান বিক্রি করে ছোট্ট একটা পুকুর কাটবেন বাড়ির পাশে। তাহলে মাছের অভাব হবে না, আর পুকুর পাড়ে কয়েকটা আম গাছ লাগাবেন। এই সব স্বপ্ন দেখতে দেখতে রহিম মিয়া খুশি মনে বাড়িতে এসে গিন্নির কাছে ভাত চান। আজ রহিম মিয়ার মনটা খুব খুশি তাই গিন্নির হাতের কচু শাক আর ডাল যেন অমৃত লাগছে। গিন্নিকে সে কথা বলতেই গিন্নি একটা ঝামটা দিয়ে বলে, ‘ বুড়ো বয়সে কত রঙ্গ!’ সত্যি রহিম মিয়া কি বুড়ো হয়ে গেছেন। আগে গিন্নির সাথে সুযোগ পেলেই কত রসিকতা করতেন, আনন্দ করতেন, খুনসুটি করতেন। আর এখন খাওয়ার সময় আর ঘুমানোর সময় ছাড়া গিন্নির সাতে ভালো করে দুটো কথা বলাই হয় না। আগে কি সুন্দর স্বাস্থ্য ছিল গিন্নির, প্রথম যৌবনে যখন হেসে হেসে গিন্নি কথা বলত তখন রহিম মিয়ার হার্টবিট বেড়ে যেত। আর এখন রোগে ভুগে বেচারির যে অবস্থা হয়েছে তা দেখলে রহিম মিয়ার কষ্ট হয়। রহিম মিয়া ভাবছেন এবার ধান উঠলে গিন্নিকে ভালো একটা ডাক্তার দেখাবেন। যেন তার আর কষ্ট না হয়। এভাবে সময় এগিয়ে যেতে থাকে। রহিম মিয়ার সোনালি ধান কাটার সময় এগিয়ে আসে। এবার কৃ্ষি শ্রমিকের দাম বেড়ে ৪০০ টাকায় গিয়ে পৌঁছেছে। যাই হোক সেটি কোনো সমস্যা না। রহিম মিয়ার ধান কাটা সারা। এবার ধানের ফলন গতবারের তুলনায় অনেক বেশি হয়েছে। রহিম মিয়া বাজারে যান ধানের দামের খোঁজ নিতে। রহিম মিয়ার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়ে। ধানের মণ মাত্র ৬০০ টাকা! রহিম মিয়া চেখে সর্ষের ফুল দেখতে থাকেন। পাওয়ার টিলারওয়ালা এখনো টাকা পাবে, সার-তেলের দোকানে হালখাতা, কৃষি শ্রমিকের টাকাটা এক মহাজনের কাছ থেকে নিয়েছিলেন। এ মাসেই না দিলে সামনের মাসে সুদ গুনতে হবে। সারা বছর যে দোকান থেকে বাকি করে খেয়েছেন সেখানেও হালখাতা। ধান কাটার পর আবার জমি চাষ করতে হবে সেখানেও অনেক টাকা দরকার। ওদিকে ছেলে-মেয়ে-গিন্নি তাকিয়ে আছেন ধান বিক্রির টাকার দিকে। রহিম মিয়ার গা-হাত-পা টলতে তাকে, গা দিয়ে ঘাম ছুটতে থাকে। রহিম মিয়া বারান্দায় শুয়ে আছেন. চোখটা কেমন যেন ঝপসা লাগছে। সেই ঝাপসা চোখে উঠোনে তাকিয়ে দেখতে পান সোনালী ধানের স্তুপ। কিন্তু কি আশ্চর্য তার সোনালি ধানগুলো এত ধুসর রঙের দেখাচ্ছে কেন। রহিম মিয়া ভেবে পান না এই রং পরিবর্তনের কারণ। রহিম মিয়া উঠেনোর দিকে এক দৃ্ষ্টিতে তাকিয়ে আছেন। তার দু’চোখ দিয়ে গড়িয়ে পড়ছে সোনালি অশ্রুধারা!
রহিম মিয়ার সোনালি অশ্রুধারা
মত প্রকাশ মানে সহমত।
আওয়ামী লীগ আমলে সমাজের একটা অংশের অভিযোগ ছিলো, তাদের নাকি মত প্রকাশের স্বাধীনতা নাই। যদিও, এই কথাটাও তারা প্রকাশ্যে বলতে পারতেন, লিখে অথবা টকশো তে।
এখন রা জা কারের আমলে... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্নমর্যাদা!
রেহমান সোবহান একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার বাড়ি থেকে বিদ্যালয়ের দূরত্ব প্রায় ৬ কিলোমিটার। রেহমান সাহেব এমন একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করতেন যা খুব নির্জন এলাকায় অবস্থিত এবং সেখানে যাওয়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন
কাঁঠালের আমসত্ত্ব
কাঁঠালের কি আমসত্ত্ব হয় ? হয় ভাই এ দেশে সবই হয়। কুটিল বুদ্ধি , বাগ্মিতা আর কিছু জারি জুরি জানলে আপনি সহজেই কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানাতে পারবেন।
কাঁঠালের আমসত্ত্ব বানানের জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। অ্যাকসিডেন্ট আরও বাড়বে
এরকম সুন্দরী বালিকাকে ট্র্যাফিক দায়িত্বে দিলে চালকদের মাথা ঘুরে আরেক গাড়ির সাথে লাগিয়ে দিয়ে পুরো রাস্তাই বন্দ হয়ে যাবে । ...বাকিটুকু পড়ুন
কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন