ভালবাসার মানুষটার অবহেলা সইতে না পেরে কিছুদিন আগে অকালে ঝড়ে গেল একটা ছেলের প্রান।সে আত্মহত্যা করেছে।
.
এস.এস.সি রেজাল্টের দিন বরিশালের একটা ছেলে তার রেজাল্ট দেখে আত্মহত্যা করেছে।রেজাল্টে তাকে ফেইল ঘোষনা করা হয়েছে।কিন্তু ছেলেটা মারা যাওয়ার পরে জানা গেলো আসলে ছেলেটা গোল্ডেন এ+ পেয়েছে।ব্যাস। এখানেও ঝড়ে গেল আরেকটা প্রান।দেশের একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ।
.
নিজের দেহ বিলিয়ে দিয়ে যখন বিয়ে করার কথায় রাজী হলোনা তার প্রেমিক তখুনি নিজেকে নিজেই শেষ করে দিলেন মডেল সাবিরা হোসাইন।
.
আরো আছে সবচেয়ে আশ্চর্যজনক একটা মৃত্যু।স্টার জলশার সিরিয়াসে আত্মহত্যার বিষয় দেখে অভিনয় করতে গিয়ে নিজেই আত্মহত্যা করে ফেললেন প্রিমা নামের ৯ বছরের চতুর্থ শ্রেনীতে পড়া এক মেয়ে।
.
.
আসলে দিন দিন আমরা অধঃপতনের দিকে নেমে যাচ্ছি আস্তে আস্তে।১ম মৃত্যুর ক্ষেত্রেই বলছি।যার কাছে আপনার ভালবাসার মুল্য নেই বা যে আপনাকে দাম দেয় না এরকম অকৃতজ্ঞদের জন্য আপনার মৃত্যুকে বরন করে নেয়াটা কি মানায়? নাকি আপনি কাপুরুষ? নাকি মনে করেন সেই আপনার সব? বর্তমানে ভালবাসার উপরে বিশ্বাস করতে নেই।আজ থাকবে তো কাল গায়েব।যার কাছে আপনার দাম নেই মরলেই তখন সব সমস্যার সমাধান হয়ে যায়না।বরং বেঁচে থেকেই এগিয়ে যাওয়াটা সাহসীদের কাজ।জীবনের কাছে আপনি হার মেনে নিলে জীবন নিজে থেকে কিছুই করতে পারবেনা।আজ যে ছেলেটা ভালবাসা না পাওয়ায় প্রান দিলো সে কি মরে গিয়ে তার ভালবাসার মানুষটাকে ফিরে পেয়েছে? নাহ!! একদম না।তো ফলাফল কি দাঁড়ালো? সবদিক থেকেই সে ব্যর্থ।পরকালে,পৃথিবীতে আর নিজের কাছেও।
.
এবারে ২য় ক্ষেত্রে বলি।রেজাল্ট!!!! একটা রেজাল্ট দিয়ে কি মানুষের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ হয়? অবশ্যই না।তবুও রেজাল্টে ভুল এসেছিল পরে জানা যায় ছেলেটি গোল্ডেন পেয়েছে।কি প্রমান হলো? সবুরে মেওয়া ফলে।ছেলেটা অপেক্ষা করলে ঠিকই ফল পেত।এভাবে সে নিজের জীবন দিয়ে বুঝিয়ে দিল যে সে আসলেই অক্ষম ছিল।লাইফে আর কিছুই করতে পারতো না।বেঁচে থাকলে লাইফে অনেককিছুই সে পেত।ওই ভুল রেসাল্টের পরে জিদ্দি ভাব নিয়েও যদি সে নিজেকে গড়ে নিত যে তাকে পরে অনেক ভাল করতে হবে তাহলে সে নিশ্চয় পারতো।কিন্তু কি করলো? বোকার ন্যায় নিজের প্রানটা নষ্ট করে হার মানলো পৃথিবীর কাছে।
.
সাবিরা হোসাইন।ভালবাসার কিছু শর্ত আছে।সেই শর্তগুলো পালন না করা মানেই লাইফ শেষ।ভালবাসা শেষ।আপনি কাউকে খুব বেশি ভালবাসেন।হয়ত আপনি বুঝতে পারছেন ওই মানুষটাও আপনাকে খুব বেশি ভালবাসে।ব্যাস শুরু রিলেশন।কিন্তু যখন দেখবেন তার নজরটা আপনার শরীরের দিকে পড়ছে তখন ভুলে যান সে আপনাকে ভালবাসতো কেননা যে আপনাকে ভালবাসে সে আপনাকে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করতে পারবে।আর সাবিরা হোসাইন কাজটা একদম ভুল করলো।যে তাকে চায়না বা শুধু শারীরিক সুখের জন্য তাকে ব্যবহার করেছিল তাকে ভালবেসেই জীবনটা নেয়া ঠিক হয়নি তার।হয়ত সে বেঁচে থাকলে এমন কেউ ছিলো যে তার সবকিছু জেনে হলেও তাকে ভালবাসতো।সেই সুযোগটা কাউকে সে দিলোনা।আল্লাহ তাআলা সবার জন্যেই কাউকে না কাউকে পাঠিয়েছেন শুধু আমাদের উচিত সঠিক সময়টা আর সঠিক মানুষটার জন্য অপেক্ষা করা।
.
৩য় ক্ষেত্রে যে মেয়েটা মারা গেলো সেও একপ্রকার ভুলবসতই মারা গেলো।চতুর্থ শ্রেনীতে পড়া একটা মেয়ে কার্টুন রেখে সিরিয়ালে মনোনিবেশ করছে এখুনি তাহলে তার ভবিষ্যৎটা কি হতো বলাই বাহুল্য।যে নাটক দেখে এখুনি আত্মহত্যার চেস্টা করেছিল,ভবিষ্যতে সে নাটক দেখে বেঁচে থাকলে আরো ভয়ানক কিছু করতে পারতো।তবুও সেও ভুলের ফাঁদে পা দিয়ে জীবনটা নষ্ট করলো।
.
আমাদের জীবনটা আল্লাহর দেয়া একটা নিয়ামত।এটাকে হেলায়ফেলায় নষ্ট করার অনুমতি আল্লাহ আমাদের দেননি।তিনি আমাদের জন্য ভাল কিছু রেখে দিয়েছেন অনেক আগে থেকেই।শুধু আমাদের সময়ের অপেক্ষা করতে হতো।এই ৪ টা অপমৃত্যু থেকে হলেও অন্তত এটা শিক্ষা নেয়া যায় এটা বোকামী।কখনো জীবন দিয়ে কিছু আদায় করা যায়না।বরং বেঁচে থেকে আরো ভাল কিছু করে দেখাতে হয়।যাতে পাশের মানুষগুলো বলতে পারে ঝড়ের মধ্য দিয়েও সে আজ এত বড়।এই বড় হয়ার স্বপ্নটা সবার থাকে।ধাক্কা খেলেই থেমে যেতে নেই।বরং জীবনটাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে শিখতে হয়।নয়ত সেই জীবনের কাছেই আপনাকে হার মানতে হবে।কিন্তু আসল কথা হলো জীবনের কাছে হার মানলে চলবে না বরং আপনি তখনই স্বার্থক যখন হাজার বাধা,ধাক্কার পরেও জীবন আপনার কাছে হার মানবে।সেই স্বার্থকতা খুঁজে পেতেই বেঁচে থাকতে হবে।নতুন দিনের নতুন আলো দেখার আশায়।নতুন প্রত্যয় নিয়ে।নতুন আশা নিয়ে।যা আপনাকে পৌঁছে দিবে আপনার মুল লক্ষ্যে।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে মে, ২০১৬ রাত ৯:৩৬