কবি তুই আছিস্ কেমন?
চেয়েছিলি জীবনে যেমন
পেয়েছিস্ কি তার কিছুটা ছিটেফোঁটা?
এক মুঠো ভালোবাসা, পাতে ভাত মোটা
পরিপাটি সংসার সুখের
পেরেছিস্ কি আজও দুঃখের
সেই গ্লানিটা ঘোচাতে
সংগ্রামী পথচলায় প্রাণটা বাঁচাতে?
ছিলাম খেলার সাথী ন্যাংটাকালে আমি
আর কে বুঝবে তোর দিবসযামী?
কেটেছে কী কষ্টে, অনাহারে
দশের থালায় একের আহারে
দিনপাত হতো তোর
নির্ঘুমে করেছিস্ কতো না রাত ভোর!
তবু তো তুই-ই ছিলি আমাদের শ্রেষ্ঠ
যদিও বয়সে ছিলি কনিষ্ঠ
ছিলি স্কুলের সেরা এক নম্বর ছাত্র
সারা এলাকার গর্ব একমাত্র।
যেদিন টেলেন্টপুলে হলি সারা টাঙ্গাইলে প্রথম
সেদিন কতো না সরগরম
উত্তাল সমস্ত জনপদ
তোকে নিয়ে কতো মতামত
হবি কি ডাক্তার নাকি ইঞ্জিনিয়ার
ভাবনার ইয়ত্তা ছিলো না আর!
তোদের পরিবারটা ছিলো সংস্কৃতিমনা
দেখেছি লোকের আনাগোণা
তোর বড় ভাই জহিরের কাছে
নাটক, কবিতা, গান কিংবা নাচে
মাতিয়ে রাখতি সারাটা এলাকা
একমাত্র তোরাই বিশাল, একা।
কতো রাত পার করেছি নাটক দেখে
মনে মনে নায়কের ভাবনা এঁকে
আমিও করতে পারতাম যদি অভিনয়
তোর বড় ভাইয়ের মতো নিশ্চয়
হয়ে যেতাম বিখ্যাত অভিনেতা-
থাক, সেই সব কথা।
তোরা ভাইবোন, বন্ধু মিলে
গাইতি গান সকলে
পাড়া জুড়াতো, ঘুম পাড়াতো রাতে
কেউ শিশুদের দোলনাতে।
তোদের বাড়ির সেই দীঘল উঠোনে
পৌরাণিক গল্পের বুননে
ভাবতে ভাবতে বুঁজে যেতো দুই চোখ
আজও অম্লান স্মৃতিতে অমোঘ!
তোর লেখা ছড়াগুলো আজও মুখে মুখে আওড়াই
কিন্তু সেই তুই কাছে নাই
চলে গেলি অন্য হাই স্কুলে
ন্যাংটাবেলার বন্ধুকে ভুলে!
তবু আমি ছিলাম খুবই খুশি
সেখানেও ফার্স্ট, নাম করেছিস্ বেশি
এসএসসিতে পেলি স্টার, গেলি ঢাকার শহরে
আমাকে এ গ্রামে একলা করে।
সেই থেকে তুই পাশে নাই
কতো না খুঁজে বেড়াই
পুরনো স্মৃতির আস্তাকুঁড়ে
শৈশব, কৈশোর জুড়ে
গোল্লাছুট, ডাংগুলি খেলা
কেটে যেতো সারা বেলা
পাড়ার দুষ্টুরা মিলে
কেটেছি কতো না সাঁতার ঐ ঝিলে
ছিপ বড়শি, পালো, ঠেলা
ধরেছি যে মাছ মেলা
আমি তোর সাথে
শামখালীর জলে, কাদা-মাঠে।
৩১.০১.২০১৩
....চলবে....