খুব বৃষ্টি পড়ছে আকাশের বুক থেকে। শিলা বৃষ্টি হলে আমি সবসময়ই শিলা কুড়াই, বেশ ভালো লাগে কুড়াতে। যেমন ঝড় হলে মানুষ আম কুড়িয়ে মজা পায় ঠিক তেমনি আমিও মজা পাই। বাচ্চাদের মত খুশি হই। আর শিলা মুখে লাগাই। মনে হয় এই বুঝি আমি রাজকন্যা হয়ে গেলাম। বৃষ্টি হলে আমার সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। বৃষ্টির জল আর আমার চোখের জল মিলে একাকার হয়ে যায়। অন্তত কেউত চোখের জল ঝরা দেখে না বা বুঝতে পারেনা।
বাহিরে যখন আমি বের হই তখন চোখে সানগ্লাস, আর মাথা ঢাকা থাকে ওড়না দিয়ে। মুখটাও ঢাকা থাকে কিছুটা। খুব কম বের হই। কলেজে যাওয়া, ঘুরতে বের হওয়া কয়েক বছর আগেই সব বন্ধ করেছি। সবকিছু কেন জানি খুব এলোমেলো হয়ে গেছে আমার জীবনে। অনেকেই আমাকে ভালবাসতে চায়, কিন্তু আমি চাই না। আসলে আমি কি চাই এখন তার আর কোন মূল্য নেই। আর মানুষ অকারনে কষ্ট পাক সেটাও আমি চাইনা। শুধু কি মানুষ কষ্ট পায়? আমি কি কষ্ট পাই না? আমিও যে মানুষ, আমারো যে মন আছে। আমারো যে ভালবাসতে ইচ্ছে করে।
মাঝে মাঝে মনে হয় বেঁচে আছি এটাইত অনেক, আর ভালবাসা দিয়ে কি হবে? সবাই কি সব কিছু পায়? হয়ত আমার এই বেঁচে থাকাটাই আমার জন্য অনেক। তাই অন্যকিছু কপালে নেই। নেই কারো ঘরণী হওয়ার যোগ্যতা। নেই কারো বুকে মাথা রেখে সুখ অনুভব করার। আমার মন আকাশে রংধনু কখনোই উঠবেনা। ঝড় সব নিয়ে গেছে আমার। শুধুই আমার অস্তিত্বটুকু আছে পড়ে। মন পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। এই পুড়ার গন্ধ সবাই বুঝেনা, সবাই পায়না।
অনেকগুলো মেঘ জমে এই মনের ভেতর। আর যখন খুব ভারী হয়ে যায় তখনি বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে। আমাকে সবাই করুণা করে, ভালবাসতে পারে না কেউ। এসিড দগ্ধ নারীকে আসলেই কেউ ভালবেসে কাছে টানে না, শুধু যখন জানে তখন কাছে এসে বলে “ ইস! এত সুন্দর চেহেরাটাকে এমন করেছে?” মানুষের করুণা পেতে কখনো চাইনি। দগ্ধ আমি তাই দূরে থাকি সবকিছু থেকে।
আমি বিধাতার সাথে কথা বলি, আমি জানি তিনিই বুঝেন আমার মনের কথা। আর আমিও অনেক কৃতজ্ঞ , এই যে বেঁচে আছি তার দয়ায়। আমি অনেক ভালো আছি, ভালো আছি...............।