সারা দেশে একের পর হত্যা কাণ্ডের ঘটনা ঘটছে এমন কি খোদ রাজধানীতে ঘটা হত্যাকাণ্ড গুলো আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যম মিডিয়ায় জায়গা করে নিচ্ছে । দেশ বিদেশের লোক আতন্কিত হচ্ছে । জুলহাজের সঙ্গে আমার একটা অনুষ্টানে পরিচয় হয়েছিল, ডেন মজির্নাই পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন । হাসি মুখে তার সঙ্গে ছবিও তুলে ছিলাম । ছবিটা খুজে পাচ্ছি না । তবে পেয়ে যাবো ।
সাধারণ মানুষ থেকে শুরু করে শিক্ষক,ব্লগার । যাকে ইচ্ছে যেমনে ইচ্ছে দিন দুপুরে হত্যা করা হচ্ছে । অথচ কেউ কিছু করতে পারছে না । এ করেছে ও করেছে । তারা করাচ্ছে এই বলে করে ভাষণ দিয়ে যে যার দায় এড়াতে চাইছে । কিন্তু প্রকৃত খুনিরা এর ফলে আড়ালেই থেকে যাচ্ছে । অভিজিত হত্যাকাণ্ডের পর আমি লিখেছিলাম, অভিজিতের হত্যাকারীদের এফবিআই ধরতে পারবে না । কেউ যদি পারে তবে সেটা পারবে বাংলাদেশের পুলিশ । ব্লগার ওয়াশিকুর রহমান বাবুকে এলোপাথাড়ি কুপিয়ে তিন খুনি পালিয়ে যাচ্ছিল। এ সময় তা দেখছিল আশপাশের অসংখ্য মানুষ।কিন্তু ওয়াশিকুরকে রক্ষা বা খুনিদের ধরতে এগিয়ে আসেননি। ওয়াশিকুর যখন রক্তাক্ত অবস্থায় রাস্তার ওপর পড়ে ছটফট করছিলেন, তখন পথচারীরা নিরাপদ আশ্রয়ে ছুটতে থাকেন। দোকানের সাটার বন্ধ করে দেওয়া হয়। মুহূর্তেই ফাঁকা হয়ে যায় ঘটনাস্থল তেজগাঁও বেগুনবাড়ির সড়ক। কিন্তু সেখান থেকে সরে যাননি তিন হিজড়া। এ তিনজনই ওই তিন খুনিকে ধরতে জীবন বাজি রাখেন এবং তারা ধরেও ফেলেন তিনজনকে। জুলহাজ আর তনয় এর খুনিরা খুন করার পর প্রকাশ্য জনগণের সামনে দিয়ে পালিয়ে গেছে । পথিমধ্যে পুলিশের সঙ্গে তাদের হাতাহাতির ঘটনাও ঘটেছে । কিন্তু পুলিশ তাদের ধরে রাখতে পারেনি । জনগণ পুলিশকে সাহায্য করতে এগিয়ে আসেনি । কেন আসেনি ? আসেনি কারণ সাধারণ মানুষ নিজ নিজ নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পরেছে । স্বেচ্ছায় কেউ ঝামেলার মধ্যে যেতে চাইছে না । আমার কথা হচ্ছে, একজনকে ঝাপটে ধরার পরেও পুলিশ দলটির অন্য সদস্যরা কেন জান বাজি রেখে খুনিকে ধরে রাখেনি ? কারণ তারাও নিরাপত্তা হীনতায় ভুগছে । তাদের মতো গোটা জাতি এখন নিরাপত্তাহিনতায় ভুগছে । খুনিরা আসছে খুন করছে । পালিয়ে যাচ্ছে । এ যেন নাটক সিনামার কোন দৃশ্য ।
কে, কখন, কোথায় খুন হয়ে যায়, গুম হয়ে যায় তা বলার উপায় নেই । আইজি সাহেব তো বলেই দিয়েছেন , নিজ নিজ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করুণ । জনাব আইজি সাহেব, আমি আমরা ব্লগারেরা ,অন্যায়ের বিরুদ্ধে লিখি,ন্যায়ের জন্য লিখি , অধিকার আদায়ের জন্য লিখি । শিশুদের জন্য লিখি বঞ্চিতদের জন্য লিখি,ধর্মীয় কুসংস্কারের গোঁড়ামির বিরুদ্ধে লিখি । হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে লিখি । জনাব আইজি সাহেব আপনার কি মনে আছে, সাবেক মন্ত্রী বলেছিলেন, কারো বেডরুম পাহারা দেওয়া সরকারের কাজ নয় । আমরাও জানি সেটা সম্ভব নয় । কিন্তু রাস্তাটা তো ঠিক মতো পাহারা দেবেন ? সেটাও দিচ্ছেন না । সর্বত্র চলছে তদবির আর বাণিজ্যের খেলা ।
জনাব আইজি, দয়া করে আমাকে নিরাপত্তা দিন । আমি আপনার কাছে আমার নিজের নিরাপত্তা চাইছি । ঠিক আছে আপনার কথা মেনে নিয়েই আমি আপনার কাছে আমার নিজের নিরাপত্তা চাইছি । আপনি সে ব্যবস্থাটি করে দিন । আমাকে একটি অস্ত্রের লাইসেন্স দিন । শুধু আমাকে নয় সকল ব্লগারদের একটি করে অস্ত্রের লাইসেন্স দিন । আমরা আমাদের নিজ নিজ নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবো । আর পারছি না । প্রতিদিন একটু একটু করে মরে যাচ্ছি । বাসায় থাকলে মনে হয় বাসার নিচে খুনিরা অপেক্ষা করছে । কোথাও গেলে মনে হয় খুনিরা অনুসরণ করছে । অফিসে গেলে মনে হয়, অফিসের বাহিরে ওরা ওত পেতে আছে । আর পারছি না । যদি শাহবাগিদের সুবিধাবাদী হতাম তা হলে বিরানির প্যাকেটসহ সরকারের সুদৃষ্টিতে থাকতাম । আমাদের ব্লগারদের কোন দল নেই । তাই আমাদের কোন নিরাপত্তাও নেই । এসব কথা বিবেচনা করে আমাকে আমাদের একটি করে অস্ত্রের লাইসেন্স দিন । তাহলে হয়তো খুনিরা আমাদের কাছে আসতে ভয় পাবে । মরার আগে নিজেকে বাঁচাবার জন্য ক্ষুদ্র একটা তো চেষ্টা করে যেতে পারবো । আপনারাও বলতে পারবেন , যে নিজেরে বাচাতে পারে না সে আবার ব্লগ লিখে কেন । কেউ আপনাদের দোষ দেবে না ।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে এপ্রিল, ২০১৬ দুপুর ২:৩৪