১
এই চিঠিটা কখনও তোমার চোখে পড়বে কিনা জানি না । অবশ্য চোখে না পড়লেও কিইবা আসে যায় । যা হওয়ার তা হবেই হবেই । আর যা হবে তা আমি কিছুতেই আটকাতে পারবো না । এইভাবে বলছি বলে ভেবো না, কিছুতেই আমার কিছু আসে যায় না । সত্যিটা হলো, আমি খুব করে চাইছি তোমার চোখে পড়ুক । তুমি দেখো কতটা কষ্টক্ষরণ হয় আমার বুকের ভিতরে । যদিও না দেখলেও তুমি জানো , আমি জানি । জানি বলেই তোমার গারো বিষাদ চোখ, নির্লিপ্ত থাকার বোকা চেষ্টা দেখে আমার মায়া হয় । যে খেলায় দুইজনেরই পরাজয় সেখানে কেউ সুখী হতে তো পারে না । তাই যে নিপুন ব্লেড শিল্পী কলিজার ঠিক মাঝখানে যে অপূর্ব শিল্পকর্ম আঁকছে তাতে ভিজে যাচ্ছে আমাদের চোখের কোণ থেকে পুষে রাখা স্মৃতিঘোর পর্যন্ত । ব্লেডটা কেড়ে নিতে খুব ইচ্ছে করছে কিন্তু মাঝে মাঝে ইচ্ছে করলেও কিছুই করা হয়না । তীব্র বিষণ্ণতাতেই চিরমুক্তি মনে হয় । চুইয়ে পড়া স্মৃতির জন্য জেগে থাকতে চেয়েছি যে রাত এখন তার ফুরাবার অপেক্ষায় থাকি । দীর্ঘ পথে হঠাৎ পাশে তোমাকে না দেখে পিছন ফিরে তাকালে দেখি আছে কেবল অপার্থিব হাহাকার । দাবা বোর্ডের মতো ছকে বাঁধা জীবনটা আরও আঁটসাঁট হয়ে যায় একেরপর সৈন্যসামন্ত হারিয়ে । তাই আমার সব ইচ্ছেরাই ডায়েরির পুরনো পাতায় হলুদ হয় । কেউ দেখে না কেউ জানে না পোস্টারের জীবন বয়ে চলা নিছক অজুহাতহীন ।
আচ্ছা, আমার লিখাটা কি এলেমেলো মনে হচ্ছে ?? মনে হচ্ছে, লিখাটা খসে পড়া তারার মতো দিশাহীন ছুটে চলেছে ?? কে জানে হবে হয়তো । হলেই বা কি । তুমি তো জানোই আমি প্রচণ্ড স্বার্থপর । তোমাকে স্বস্তি দিতে সুখে থাকার অভিনয় করতে পারছি না আমি । তোমাকে শান্তি দিতে ইচ্ছে করছে না । বারবার বুঝিয়ে দিতে ইচ্ছে করছে, তোমাকে ছাড়া আমার চলে না । তোমাকে ছাড়া আমার শুকনো কলমে কান্না ভরেও শব্দ সৃষ্টি করতে পারি না , পারি না আমার পলকতলে সুখ মাখিয়ে স্বপ্ন জন্ম দিতে , আমার বন্ধ্যা হৃদয় বারবার শুধু কষ্ট কষ্ট বলে চিৎকার করতে চায় পুরোটা লিখা জুড়ে । ভালোবেসে না হোক, করুণা করে । দুইদণ্ড, একটি সেকেন্ড বা কেবলই একটি ক্ষণ, আরও একবার তুমি রয়ে যাও আমার কাছে ।
আমি জানি, এই লিখাটা পড়লে তুমি আরও জর্জরিত হবে । ডুকরে কেঁদে আমাকে খুঁজবে, যে আমাকে তুমি ভালবাসতে চেয়েছিলে । বারবার জানতে চাইবে, কোথায় সেই আমার জেদ, কোথায় আমার পুরুষোচিত অহংকার , কোথায় আমার একলা চলার ওইচিত্যবোধ । হায় তুমি যদি জানতে, পুরুষের জীবন মানে ভালোবাসার জন্য তৃষিত থাকার জীবন । তুমি যদি জানতে, পুরুষের জীবন মানে সর্বহারা হয়ে ভালোবাসার জীবন......
২
সোবহান সাহেবের জীবনকে সর্বহারার জীবন কি বলা যায় ?? মানুষের সংবিধানে যতরকম অজুহাত আছে বেঁচে থাকার তা সবই তিনি হারিয়েছেন । এখন তিনি প্রতিদিন অজুহাত খোঁজেন । এই ৬৮ বছর বয়সে এসে বেঁচে থাকার জন্য নতুন সংবিধান রচনা করা কঠিন । এই জগতের সবকিছু আইন আর অজুহাত তারুণ্যের জন্য । বৃদ্ধদের জন্য কঠিন এক ঈর্ষা আর জীবনের সমান দীর্ঘ সব দীর্ঘশ্বাস ছাড়া কিছু নেই । তবুও তাদের বেঁচে থাকতে হয় । বেঁচে থাকার জন্য সৃষ্টি করতে হয় নিত্যনতুন ফাঁদ । কিন্তু তার খবর আমরা কয়জন রাখি । আমরা দেখি, সোবহান সাহেব প্রতিদিন সকালে নিয়ম করে একবার বারান্দায় এসে বসেন , সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ঠিক সেই একইভাবে বসে থাকেন । দোতালার উপর থেকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন রাস্তার দিকে । রাস্তার মানুষেরা বড় ব্যস্ত মানুষ । তারা কোনও দিকে তাকায় না । অথচ উপরের দিকে যদি তাকাতো তাহলে এক করুণ বৃদ্ধকে দেখতে পেতো । একা , মানবসঙ্গের জন্য তৃষিত । কেউ না দেখলেও সোবহান সাহেব সবাইকে খুব মনোযোগ দিয়ে দেখেন । প্রতিটা মানুষের গায়ে লেগে থাকে অসংখ্য গল্প । সেইসব পড়ার চেষ্টা করেন । আমরা যদি উপরের দিকে তাকাতাম তাহলে দেখতাম, সোবহান সাহেব খুব আস্তে বিরিবির করে কথা বলছেন। এই কথা তার নিজের সাথে নয় । মানুষের সাথে । যে মানুষটি তার শরীরে খুব হতাশা বয়ে বেড়াচ্ছে, তিনি তাদের মনে মনে বলেন, কেন এতো হতাশা গো?? নিজের উপরে ভরসা রাখো । যে মানুষটি শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছে বিপুল আনন্দের গল্প তাকে দেখে তিনি বলেন, বাবা এই সুখের দিনে দুঃখের দিনগুলোর কথা কিন্তু ভুলে যেও না । তাহলেই সুখ দীর্ঘস্থায়ী হবে । আমরা যদি উপরে তাকাতাম তাহলে সোবহান সাহেবকে দেখলেই আমাদের মন ভালো হয়ে যেতো । আমাদের দুর্ভাগ্য আমরা কেবলই হেঁটে যাই নিজেদের দিকে পাশ ফিরে। এই কারনে সোবহান সাহেবের বাসার একতালায় যে তরুন দম্পতি থাকে সে ছেলেটিও জানেন না তিনি তাকে কত অপছন্দ করেন । তাকে অপছন্দ করেন কারণ একদিন এমন টোনাটুনির জীবন তারও ছিলো, সেসব কথা কথা বড় বেশি মনে পড়ে যায় । ছেলেটিকে যখন মেয়েটির জন্য শাড়ি আনতে দেখেন, মুখে আসন্ন সুখের পূর্বাভাস নিয়ে, তখন তার মিসেস সোবহানের কথা মনে পড়ে । শাড়ির দোকানে নিয়ে গেলে সে কিসব কাণ্ডই না করতো । একবার তিনি শাড়ি এনে লুকিয়ে রাখলেন বিশেষ দিনে দিবেন বলে, কিন্তু তার আগেই মিসেস সোবহান শাড়িটা আবিষ্কার করে ফেললেন, তারপর কি কান্নাকাটি, নিশ্চয়ই সোবহান সাহেব অন্যকারও জন্য শাড়ি কিনেছে । সেসব দিনের কথা মনে করেন আর দীর্ঘশ্বাস ফেলেন । কতদিন হয়েছে মিসেস সোবহান মারা গেছেন?? দশ বছর?? কিংবা তারও বেশি?? সোবহান সাহেবের মনে হয় অনন্তকাল , অনন্তকাল তিনি একা আছেন । সোবহান সাহেবের বুক দুমড়ে যায় । আমরা যারা হঠাৎ কালে ভাদ্রে উপরের তাকিয়ে সোবহান সাহেবকে দেখি তারা কোনোদিনও জানতে চাই না তিনিও কাঁদেন কিনা খুব কষ্টে । ভাড়াটিয়া মেয়েটাও জানেন না, সে যখন তার সন্তান সম্ভবা হওয়ার খবরটি দিচ্ছিল তখন সোবহান সাহেবের চোখের কোণায় জল জমেছিলো । তার মনে পড়ে গিয়েছিলো, তার একমাত্র নাতিটি থাকে সুদূর আমেরিকায় । আজ তিন বছর হয়ে গেছে তিনি তার মুখ দেখেননি । যেমন মুখ দেখেননি তার সন্তানের । প্রতি বছর আসার কথা থাকলেও কোনওবারই তাদের আশা হয়না। তারা জানতে চায়না, বুঝতেও না, তিনি যে বেঁচে আছেন তার একমাত্র অজুহাত, মৃত্যুর আগে তিনি শেষ আরেকবার তাদের দেখতে চান । আমরা সেসবের কিছুই জানবো না । জানবো না আমরা অনেক কিছুই কারন আমাদের নিজেদের জানতেই সময় শেষ সেখানে সমাজের জন্য নিতান্তই অপ্রয়োজনীয় একজনের জন্য আমাদের কেনও কৌতূহল হবে । হয়তো একদিন সোবহান সাহেবের নিঃসঙ্গতা থাকবে না । হয়তো একদিন তীব্র যাতনা তিনি আর সইবেন না । সেইদিন আমাদের মনে কিছু প্রশ্নের জন্ম হবে । আমরা কিছু জানবো, অনেক কিছুই জানবো না । প্রকৃতি সুনিপুনভাবে উত্তর আড়াল করে । আর আমাদের অল্প জানাতেই সুখ । অনেক প্রশ্নের উত্তরই আমরা কখনই জানবো না ।
৩
অথচ তুমি ঠিক চলে যাবে, চলে যাবে কারণ কিছু প্রশ্নের উত্তর আমাদের জানা নেই । তুমি চলে যাবে কারণ আমাদের সম্পর্কের কোনও ভবিষ্যৎ নেই । আমাদের মাঝে যাই থাক, আমরা যেভাবেই চাই পরস্পরকে, একটা জায়গায় এসে আমাদের থমকে যেতেই হয় । কারণ আমাদের চাওয়ার পরিণতি কোনও সুন্দর গল্প হবে না । আমরা সারাজীবন একসাথে হাঁটতে পারবো না । একদিন তোমার পথ তোমাকে আলাদা করে নিতে হবে কারণ তোমার সাথে চলার জন্য যে যোগ্যতা তা আমি কোনোদিন অর্জন করতে পারবো না । কিংবা আমার পাশে থাকার জন্য যে আত্মদান তা দেওয়ার মতো মানসিক জোর তুমি কোনোদিন ধারন করতে পারবে না । তাই এই ভালো, আরও জটিলতর বিধ্বস্তটার আগেই দুইজনের আলাদা হয়ে যাওয়া । জানি, সব জানি । এও জানি, আমার অজস্র প্রতিশ্রুতি তোমার বিশ্বাস টলাতে পারবে না । আমার বিপন্ন ভালোবাসা তোমাতে এনে দিবে না শিকল ভাঙ্গার শক্তি । তবুও কেনও এতো অসহায় লাগে । সব জেনেও ইচ্ছে করে লোভ দেখাই তোমাকে, একটা দিপ্তিময় জীবনের । লোভ দেখাই খুব বৃষ্টিতে চা এর কাপ হাতে রিকশায় চড়ে অচেনা রাস্তায় হারিয়ে যাওয়ার , লোভ দেখাই তুমি যখন কাঁদবে প্রতিটা অশ্রুকণাকে মুক্তো বানিয়ে দেওয়ার ।
কিন্তু জীবন এক জলজ্যান্ত বাস্তব। তাই এভাবে হয়না । তুমি বারাবার আমাকে বোঝাও, আমি বুঝি । আর সব মেয়ের মতোই, তুমিও নিশ্চয়তা চাও এক স্থিরতার । নিরাপত্তা চাও ভবিষ্যতের । আর আমি মানেই অনিশ্চয়তায় ভরা অস্থিরতা । আমি মানেই ভবিষ্যৎ নিরাপত্তাহীনতা । আমি জানি, আমার বাস বর্তমানে আর তুমি দেখো অনেকদুর । আমার জন্য তোমার তীব্র স্রোতে বাঁধ পরে ঠিক এইখানে । আমরা পরস্পরকে হারিয়ে ফেলি ঠিক এইখানে । আমি তোমার অসংখ্য কান্নার কারণ । তবুও আমার মনে হয়,এখানেই সব সুখ । া আমি পারি তোমাকে কালবৈশাখীর মতো এক তীব্র জীবনের স্বাদ দিতে । আমার সীমাবদ্ধতা তোমাতে নিহিত । আমি ভেংগেচুরে যাওয়ার আগেই তুমি আমাকে উদ্ধার করো ।
৪
সোবহান সাহেবের গলা ভেঙ্গে আসতে চায় । তিনি আবারও প্রশ্ন করেন , এইবারেও আসবি না?? টেলিফোনের ওপাশ থেকে তার পুত্রের গলা ভেসে আসে , না বাবা । হচ্ছে না ।
- কেনও?? তুই কথা দিয়েছিলি এই সামারে যত ঝামেলাই হোক আসবি ।
- হ্যাঁ বাবা আমি চেষ্টাই করেছি কিন্তু পেরে উঠছি না ।
- না না আমি কোনও কথাই শুনবো না , তোকে আসতে হবে ।
- বাবা প্লিজ বোঝার চেষ্টা করো । আমার কি যাওয়ার ইচ্ছে করে না ?? কিন্তু এদিকে এতো ঝামেলা, অনেক চেষ্টা করেছি ।
- কতদিন তোদের দেখি না । কত আশা ছিলো দেখবো ।
- বাবা আমারও তো ইচ্ছে ছিল । ইচ্ছে ছিলো এইবার বাবা ছেলে দাদু মিলে আম্মার কবর জিয়ারত করবো । হলো না ।
- থাক আমাকে আর সান্ত্বনা দিস না ।
- উফ বাবা বাচ্চাদের মতো করো কেনও ?? আমেরিকা থেকে বাংলাদেশ আসা এতো সহজ না কেনও বুঝতে চাও না ।
- আমাকে আর কিছু বোঝাতে হবে না তোদের ।
সোবহান সাহেব নিজেকে ধরে রাখতে পারেন না। কেঁদে ফেলেন । তিনি ফোন রেখে দেন । চিন্তাশূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন দেওয়ালের দিকে । তার খুব কষ্ট হচ্ছে । প্রচণ্ড কষ্ট ।
৫
তোমার কষ্ট আমার সহ্য হয়না । তোমার মলিন মুখ, ভেজা চোখ আমাকে গুড়িয়ে দেয় । আমার সাথে অনিশ্চয়তায় ভরা মাপা হাসির চেয়ে দূর থেকে তোমার উচ্ছলতা দেখা অনেক আনন্দের । তাই শেষমেশ ভাবি, একবার অন্তত তোমার মতো করে ভাবি । ভেবে নেই, তবে তাই হোক, যা তুমি চাও । আমার ভাঙ্গা স্বপ্নের শেষ টুকরোর মতো নিঃসঙ্গতাটুকু আমারই থাক, ইচ্ছেগুলো পূরণ করে নিবো নাহয় ইচ্ছে মতো কষ্ট দিয়ে । মন শক্ত করে ভাবি, তোমাকে নাহয় যেতেই দিবো যতটা দূরে তুমি শান্তি পাও । তোমার শান্তি দেখে হয়তো আমি সুখী হবো না, কিন্তু সান্ত্বনা তো থাকবে, আমিও তোমার শান্তির কারণ ।
কিন্তু এতটা মহান তো আমি নই । হলে আগের লাইনেই চিঠিটা শেষ করে দিতাম । দিতে পারলাম না । কারণ আমার ইচ্ছে করছে, আমার খুব ইচ্ছে করছে, লিখি, যেও না .........
৬
আমি টেবিল ছেড়ে উঠে দাঁড়ালাম । চিঠিটা অসমাপ্তই পরে রইলো । থাকুক । ভালো লাগছে না । এই বিভ্রান্তি, কি চাই আমি , এই মৃত্যুপথযাত্রী সম্পর্ক রন্ধ্রে রন্ধ্রে বিষ হয়ে ছড়িয়ে পড়ে । আমি বারান্দায় এসে দাঁড়াই । শেষ রাতের আকাশ মরে পড়ে আছে মাথার উপর । ঠাণ্ডা সব তারাগুলো শব বয়ে যায় ক্লান্তিময় আলো জ্বেলে । আমি সামনে তাকাই । সামনের বিল্ডিঙে সোবহান সাহেবের ঘরে আলো জ্বলতে দেখে অবাক হই । এতো রাত তো কখনও জাগতে দেখিনি তাকে । জানালা দিয়ে তাকাতে চমকবার পালা । একটা পিস্তল কপালে ঠেকিয়ে বসে আছেন তিনি । সম্ভবত আত্মহত্যা করতে যাচ্ছেন । আমার উচিৎ এখন দৌড়ে তার বিল্ডিঙে যাওয়া, মানুষ ডাকা, তাকে উদ্ধার করা । কিন্তু আমি কিছুই করলাম না । মন্ত্রমুগ্ধের মতো তাকিয়ে আছি সোবহান সাহেবের দিকে । যাক, কেউ একজন তো জীবনের সব ছোটখাটো মোহ থেকে মুক্তি পেয়েছে । কেউ একজন তো সব ছেড়ে দিতে পারে এক মুহূর্তেই । সবসময় সমাজের বোঝা মনে হয়ে আসা লোকটার প্রতি শ্রদ্ধাবোধ হয় । সোবহান সাহেবের প্রশান্তিময় মুখের দিকে তাকিয়ে ফিসফিস করে প্রার্থনা করি, ডু ইট ম্যান জাস্ট ডু ইট ...............
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৪ রাত ৮:১৩