“রুমানা মঞ্জুর বা ভিকারুন্নেসার ঘটনায় আমরা যতটা উদ্বেলিত হই ততটা এ ঘটনায় হইনা। কেন?” এই শিরোনামে গত ২০ তারিখে ফেসবুকে একটা নোট লেখা হয়, তা ২২ তারিখে এক বন্ধুর ফেসবুক ওয়ালে ঝুলতে দেখে পড়ে ফেলি। পড়ার পর নিজের উপর কেন যেন ভীষণ রাগ হলো, সে সাথে নোটের লেখককে সাথে সাথেই ফ্রেন্ড রিক্যুয়েস্ট পাঠাই।
এবার আসি নোটের বর্ণনায়...
“বরগুনার বামনা উপজেলার ছোট ভাইজোরা গ্রামের হতভাগ্য জেনি আক্তার। প্রতিবেশী ইউপি সদস্য গোলাম হায়দার হেমায়েত মৃধার ছেলে তাপু মৃধা তাকে ধর্ষণের পর গলায় ফাঁস লাগিয়ে হত্যা করেছে। গত ১৯-০৭-১১ মঙ্গলবার রাতে এ পাশবিক নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। চলাভাঙ্গা দারুস সালাম রশিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার ৮ম শ্রেনীর ছাত্রী জেনী আক্তার ছোট ভাইজোরা গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোতালেব হাওলাদারের সেজ মেয়ে।
ধর্ষক ও খুনি গোলাম জিসান হায়দার ওরফে তাপু মৃধা (২২) উপজেলার ডৌয়াতলা ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি গোলাম হায়দার হেমায়েত মৃধার বড় ছেলে। ঘটনার পর থেকে তাপু মৃধা পলাতক।
জেনির মা হাসিনা বেগম বলেন, গত সোমবার রাতের খাওয়া শেষে জেনী ঘরের দোতলার পাটাতনে ঘুমিয়ে পড়ে। নীচে শিশু পুত্রকে নিয়ে তিনিও ঘুমিয়ে পড়েন। আনুমানিক রাত সাড়ে তিনটার দিকে দোতলার পাটাতনে গোঙানী ও ধ্বস্তাধ্বস্তির শব্দ শুনে তার ঘুম ভেঙ্গে যায়। টর্চ লাইটের আলো জ্বালিয়ে তিনি দোতলার পাটাতনে উঠে দেখেন তাপু তাঁর মেয়ের ওপর পাশবিক নির্যাতন চালাচ্ছে। এ সময় তিনি মেয়েকে রক্ষায় এগিয়ে গেলে তাপু তাকে টর্চলাইট দিয়ে পিটিয়ে আহত করে।
মেয়েকে রক্ষা করতে না পেরে তিনি বসতঘর হতে তিনশত গজ দুরে তাপুর বাবা গোলাম হায়দারের ঘরে সাহায্যের জন্য দৌড়ে যান হাসিনা । সেখানে গোলাম হায়দার ও তাঁর পরিবারের লোকজন হাসিনা বেগমকে আটকে রাখেন। দেড়ঘন্টা পরে তাকে তারা ছেড়ে দেন। পরে নিজ ঘরে এসে বসতঘরের পিছনে জাম্বুরা গাছে মেয়ের ঝুলন্ত লাশ দেখতে পান হাসিনা।
হাসিনা আরও বলেন, দুই বছর ধরে তাপু মৃধা তাঁর মেয়েকে প্রেম নিবেদন করে উত্যক্ত করে আসছিল। তাপুর পরিবারের কাছে বহুবার নালিশ করেও কোন প্রতিকার পাওয়া যায়নি। এ কারণে দুইমাস আগে মেয়ের মাদ্রায় যাওয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়। বখাটে তাপুর হাত থেকে বাঁচতে মেয়ের বিয়ে ঠিক করেন। বিয়ের খবর শুনে ক্ষিপ্ত হয়ে গত কয়েকদিন ধরে তাপু তাদের পরিবারের সদস্যদের নানাভাবে হুমকী দিয়ে আসছিল।
গ্রামবাসি জানায়, ওই রাতে ঘরে কোন পুরুষ লোক ছিল না। নিহত জেনীর বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্য মোতালেব হাওলাদার ঢাকায় একটি গার্মেন্টে চাকুরী করেন।”
এই নোট পড়ার পর এক সাংবাদিক বন্ধুর সাথে এই বিষয়ে আলোচনায় জানতে পারি যে, পুলিশ তার গৎবাঁধা বুলি আওড়েছে সংবাদ কর্মীদের সামনে, “বামনা থানার উপপরিদর্শক মো: হারুন অর রশীদ বলেন, ওই মাদরাসাছাত্রীকে ধর্ষণের আলামত পাওয়া গেছে। পরে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করা হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে সন্দেহ করা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত মূল আসামী তাপু মৃধার বাবা, মা ও দুই আত্মীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাপুকে গ্রেফতারের জন্য পুলিশের অভিযান অব্যহত আছে।”
যার মানে হলো প্রধান আসামী পলাতক, মানে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করবে না। ফলে যাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা খুব সহজেই আদালত থেকে জামিন নিয়ে বেরিয়ে আসতে পারবে। তার উপর আবার সরকারী দলের হাত আছে এই নেতার উপর, তাই এই বিষয়ে সর্বোচ্চ যা হতে পারে, তা হলো কিছু টাকা-পয়সার বিনিময়ে আপস-রফা, না মানলে মামলা তুলে নিতে জেনীর পরিবারের উপর চলমান থাকবে সর্বাত্মক নির্যাতন। মামলা তুলে নেওয়ার পর অমানুষ তাপু দ্বারা আবারো কোন জেনী শিকার হবে এমনি পৈষাচিকতার।
এই পাশবিক ঘটনায় কিছু ব্যাপার আবারো সুস্পষ্টভাবে উঠে এসেছে, আর তা হলো-
প্রথমত, এই সমাজে সামন্ততন্ত্র এখনো রয়ে গেছে পরোক্ষভাবে, আগে রাজা-বাদশাহ-জমিদারেরা প্রজাদের উপর নির্যাতন করতো, এখন মন্ত্রী-আমলা-সরকারী দলের নেতা-পাতিনেতারা তা করে থাকে জনগণের উপর। এই নারী নির্যাতনের ঘটনাগুলোর বেশীরভাগের ক্ষেত্রেই শ্রেনী একটা বড় ভূমিকা পালন করে, এখানে নিপীড়নকারী প্রায়শই হয় উচ্চ শ্রেনীভুক্ত আর নিপীড়ক নিম্ন শ্রেনীর। এখানে উপজেলা আওয়ামীলীগের সহসভাপতি গোলাম হায়দার হেমায়েত মৃধার বড় ছেলে তাপু মৃধা উচ্চ শ্রেনীকে নির্দেশ করে, কারণ তার বাবা সরকারী দলের নেতা, দল ক্ষমতায় তাই অর্থ বা পেশী শক্তির কোন কমতি নাই তার। মূলত এখানে তাপু'কে আমি দেখি রাষ্ট্রের প্রতিরূপ হিসেবে, যে রাষ্ট্র কেবলই ক্ষমতাধরের, সাধারণ জনগণের কোন স্থান এখানে নাই; অপরদিকে, জেনী যেন জনগণের প্রতিরূপ, যারা প্রতিদিন নিষ্পেশিত হচ্ছে এই রাষ্ট্র দ্বারা। আর রাষ্ট্রের প্রতিফলনই পরিলক্ষিত হয় একটি সমাজে।
দ্বিতীয়ত, এই রাষ্ট্রে শিশু জন্মের পর পরই তাকে দু'টি শ্রেনীতে বিভাজিত করা হয়; নারী ও পুরুষ। আর এই বিভাজন রাষ্ট্র অজীবন তুলে ধরে প্রতি পদে পদে। একজন মানুষের জন্ম নারী বা পুরুষ ভিন্নভাবে হয় না। কিন্তু এই রাষ্ট্র, সামাজ, পরিবার, ধর্ম প্রভৃতির প্রভাবে সে আর মানুষ হিসেবে বেড়ে উঠতে পারে না, সে ক্রমেই নারীতে পরিণত হয়। এমনকি শিশুর খেলার উপকরণের দ্বারাও তাকে পৃথক করা হয়, ছেলে শিশুর হাতে তুলে দেওয়া হয় বন্দুক, গাড়ী, বল, ব্যাট ইত্যাদি, যা শিশুর মাঝে প্রতিযোগিতার বোধ জন্মাতে সহায়তা করে। অপর দিকে, একটি মেয়ে শিশুর হাতে তুলে দেয়া হয় পুতুল, পুতুলের সাজ-সজ্জার জিনিষ, হাড়ি-পাতিল। মেয়েটি পুতুলকে সাজায়, সন্তানের মতো আদর করে, হাড়ি-পাতিল দিয়ে সে রান্না করে। সেই মেয়ে শিশুর মাঝে ক্রমেই ঘর কুণো স্বভাব গড়ে উঠতে থাকে। যার ফলে সে হয়ে পড়ে পরনির্ভরশীল। এই নির্ভরশীলতার বিষয়টা পুরোপুরিই রাষ্ট্রের কাছ থেকে পাওয়া, কারণ ধর্ম ও ভাষাকে পুঁজি করে চলা রাষ্ট্র নারীকে সাংবিধানিকভাবেও সম-অধিকার দিতে ব্যর্থ হয়েছে। রাষ্ট্রের এই পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রভাবে এখানে একটি শিশু জন্মই নেয় নারী বা পুরুষ হিসেবে। জেনীর ক্ষেত্রেও এই নির্ভরশীলতা ও নিরাপত্তার অভাব থেকেই তাকে মাত্র ১৩ বছর বয়সে বিয়ে করতে বাধ্য করা হয়েছিল পরিবার থেকে। যার ফলে জেনী তাপু দ্বারা না হলেও তার স্বামীর দ্বারা অবশ্যই ধর্ষিত হতো, আর ধর্ষণ শুধু মাত্র দেহের হয় না, তার সাথে কোমল মনটাও হয় ধর্ষিত, এর দায় যতটা জেনীর পরিবারের তারচেয়েও বেশী এই সমাজের, আর এর চেয়েও বেশী দায়ী এই রাষ্ট্র। এই সমাজে প্রতিদিন যে কত নারী তার স্বামীর দ্বারা ধর্ষিত হয়, তার হিসেব কে রাখে ! কারণ রাষ্ট্র যেমন এই ধর্ষণকে বৈধতা দিয়েছে, তেমনি এই পারিবারিক ধর্ষণকে সমাজ এবং পরিবারও জায়েজ করেছে।
তৃতীয়ত, “রুমানা মঞ্জুর বা ভিকারুন্নেসার ঘটনায় আমরা যতটা উদ্বেলিত হই ততটা এ ঘটনায় হইনা।” কথাটা আংশিক সত্য। এই হত্যাকাণ্ডের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে মিডিয়ায় তা প্রচার না পাওয়া। আর তা হয়েছে শুধুই শ্রেনী বৈষম্যের দিক থেকে। রুমানা মঞ্জুর বা ভিকারুন্নেসার ঘটনা; উভয় ক্ষেত্রে নির্যাতিতা উচ্চ অথবা মধ্যবিত্ত শেনীভুক্ত আর মূলত এই শ্রেনীই মিডিয়ার গ্রাহক এবং চালক। তাই এমনি করে হাজারো জেনীর খবর পত্রিকার ভেতরের পাতায় ভাঁজ হয়ে পড়ে থাকে, তা পাঠকের কাছে সেভাবে পৌছায় না। যে কোন আন্দোলনে মিডিয়ার শক্তি কতটুকু, তা বোধ হয় কাউকে বলে বোঝানোর প্রয়োজন পড়বে না। এখন যদি ব্যবসায়ী মিডিয়াওয়ালারা নৃশংসতার বিচারও করেন, দেখবেন ঐ দু'টি ঘটনার চেয়েও হৃদয় বিদারক ঘটনা জেনীর ক্ষেত্রে ঘটেছে, অথচ আমাদের উচ্চ বর্ণের ছুচিলেরা সব মুখে কুলুপ এঁটে আছে। খোদ মিডিয়া যখন শ্রেনী বৈষম্য অথবা ব্যবসায়িক স্বার্থে এমন পৈষাচিক ঘটনাগুলো প্রকাশে অনীহা দেখায়, তখন এই হত্যার দায় মিডিয়াওয়ালা আর ওই ছুচিলেরাও কী এড়াতে পারবেন, যেখানে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ওই ছুচিলদের আগমণ ঘটে মিডিয়ায় কিছু গৎবাঁধা বুলি ঝাড়ার জন্য ??
মধ্যবিত্তের কিছু ভাবনা আছে, তা মোটামুটি একই রকম। আর তা হলো, সকল ফল ভোগ করব, কিন্তু কোন আন্দোলনে না গিয়ে, একটা সুবিধাবাদী অবস্থান থেকে। এরা দেশের জন্য অনেক সুন্দর সুন্দর বুলি ছাড়েন মিডিয়ার সামনে, যদিও তার খুব কম অংশই নিজের জীবনে ধারণ করেন। অথচ যখন আন্দোলন-সংগ্রামের সময় আসে তখন তাদের দেখা পাওয়া যায় না, তারা তখন থাকেন সবার শেষে। কিন্তু তার স্বার্থে আঘাত লাগলে সে ঠিকই পথে নামে। যখন চিকন চালের দাম আশঙ্কাজনকভাবে বেড়ে যায়, তখন এই মধ্যবিত্তকে বাগে আনতে সরকার প্রচুর পরিমাণে খাদ্য শস্য মজুত থাকার পরও চাল-গম আমদানি করে, ফলে চালের দাম কিছুটা সহনীয় বোধ হয়, কিন্তু কৃষি উপকরণের চড়া দামের ফলে কৃষক যে দামে ধান বিক্রি করে, তা থেকে তার উৎপাদন খরচও তুলতে পারে না। কিন্তু এসব দেখা তো আর ওই মধ্যবিত্ত ছুচিলদের কাজ নয়। যদিও সকল আন্দোলন-সংগ্রামের সূচনা হয় মধ্যবিত্ত শ্রেনী থেকে, তথাপি আন্দোলন এই শ্রেনীতে আবদ্ধ থাকলে তা কেবলই বুর্জোয়া ও পেটি-বুর্জোয়াদেরই লাভ হবে, সমষ্টিগত এর কোন সুফল পাওয়াটা প্রায় অসম্ভব।
মূলত পুরুষতন্ত্র তার নিজের অস্তিত্বের কারণেই নারীদের অবদমিত রেখে তাকে বিশেষ আনুকূল্যের কথা বলে, যার ফলে সম-অধিকারের চিন্তা রাষ্ট্রের নানা ভণ্ডামিতে ঢাকা পরে যায়। ''নারীবাদ', 'নারীতন্ত্র', 'নারী অধিকার' এই শব্দগুলোর মাঝেই 'পুরুষতন্ত্র' স্বদম্ভে পদচারণা করে। যে রাষ্ট্রে মানবতাবাদ, বা মানবাধিকার অনুপস্থিত, সেই রাষ্ট্রে নারী-পুরুষ উভয়ের অধিকারই খর্বিত হবে, সম-অধিকার তো সুদূর পরাহত; এটাই তো স্বাভাবিক। এই রাষ্ট্রে নারীকে যেমন দোররা মারা হয়, পুরুষের জন্য তেমনি আছে ক্রসফায়ার থেরাপী। পরিমল-মাণিক-তারেক-এরশাদরা যেমন রাষ্ট্রের কুৎসিত চেহারা দেখায়, তেমনি হাসিনা-খালেদা-সাহারাও এই রাষ্ট্রেরই এক বিভৎস রূপ। এখানে রাষ্ট্র পুরুষতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষক আর এনজিওগুলো রাষ্ট্রের পদলেহী (অবশ্য কিছু ক্ষেত্রে এর উল্টো চিত্রও আমরা দেখতে পাই)...
শেষ কথা
রুমানা মঞ্জুর বা ভিকারুন্নেসার ঘটনার ক্ষেত্রে আমরা যে প্রতিবাদের ঝড় দেখতে পাই, তা শুধুমাত্র ব্যক্তি নির্ভর। কিন্তু এটা আমরা বুঝতে পারিনা যে মুখোশের আড়ালে এমনি আরো লাখো পরিমল আর সাইদ তাদের শিকারের অপেক্ষায় আছে। এই ভোগবাদী সমাজে নারী সর্বত্রই পণ্য হিসেবে পরিগণিত হয়। মা, স্ত্রী, বোন, কন্যা নামক বিভিন্ন পরিচয়েই কেবল তাকে সীমাবদ্ধ রেখে সেই ভোগপণ্যতাকেই লালন করা হয়। এর একটা উদাহরণ হতে পারে নারীর নিজের নামের আগে বা পরে স্বামীর নাম জুড়ে দেওয়া, অথচ স্বামী তো তার স্ত্রীর নাম জুড়ে নিজের নাম বদলায় না। আর এমনটা কিন্তু গ্রামের অশিক্ষিত কোন বধু করে না, শহুরে কর্মজীবী উচ্চ/মধ্যবিত্ত নারীরাই এমনটা করে থাকে। জেনীর নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি দ্বারা স্পষ্টভাবে প্রমানিত হয় যে, এই ক্ষেত্রে আমাদের শ্রেনীপ্রশ্নের ব্যাপারটিও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই শ্রেনী বৈষম্যের কারণেই এই ক্ষেত্রে মিডিয়া ও ছুচিল সমাজ নিশ্চুপ। আবার শ্রেনীপ্রশ্নের কাঙ্ক্ষিত সমাধান হলেই যে নারীরা রাতারাতি মুক্ত হয়ে যাবেন সকল কুসংস্কার থেকে তা নয়, কেননা অর্থনৈতিক পরিবর্তন যতটা দ্রুত ঘটতে পারে, সাংস্কৃতিক পরিবর্তন ততটা দ্রুত ঘটেনা, তা কিছুটা সময় সাপেক্ষ। কিন্তু নারীদের 'নারী' পরিচয় থেকে বেরিয়ে আসবার জন্যে যেই সংগ্রাম আবশ্যক সেটা নির্দ্বিধায় শ্রেনী সংগ্রামকেই নির্দেশ করে, সেটাকে উপেক্ষা করে কিংবা বাদ দিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব নয়। এ কারনেই ভিকারুন্নেসা স্কুলের ঘটনাটির সাথে জেনীর পৈষাচিক হত্যাকাণ্ড, এরকম আরো অজস্র ঘটনাগুলো, যা প্রতিনিয়ত ঘটে চলেছে, তা যুক্ত করেই আমাদের সংগ্রামে অগ্রসর হওয়া দরকার, তাহলে 'পুরুষতান্ত্রিক' চোঁখে নারীকে দেখবার যেই সহজাত প্রবণতা আমাদের সকলের মাঝেই কম বেশী কাজ করে, তা থেকে বেরিয়ে আসার পথে অগ্রসর হওয়া যাবে। আর সেই সাথে সকলের সংঘবদ্ধ আন্দোলনে অংশগ্রহণের মাধ্যমেই আমরা রাষ্ট্রের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারি যেন সে তার ‘যৌন সন্ত্রাস’ নামক বাই-প্রডাক্ট এর প্রডাকশন বন্ধ করে…..
নিরাশার আঁধারে বিদীর্ণ এই অন্তর আশার আলোতেও ভয় পায়.....
তবুও কেন যেন সে নতুন স্বপ্নে বুক বাঁধতে চায়!!!
লিখেছেন: শাহেরীন আরাফাত
(কৃতজ্ঞতা: তাসলিমা তাহরীন, ধন্যবাদান্তে: আল-বিরুনী প্রমিথ)
তথ্যসুত্র: Click This Link
Click This Link
মূল লেখার সুত্র