ছবিঃ ইত্তেফাক।
করোনা ভাইরাস নিয়ে চীনে যত না ডালপালা গজিয়েছে, তার চাইতে বেশী গজিয়েছে এই বাংলায়। কেননা আমরা সত্য মিত্থার মিশেল করে রচনা তৈরিতে বিশ্বের বিস্ময়। আবার যে কোন নতুন টপিকের উপরে হামলে পরাও আমাদের চারিত্রিক গুণাবলির একটা অংশ।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার রিপোর্ট বিশ্ববাসী মানলেও সহজে বাঙ্গালিদের যুক্তিতে যুতসই হয়না। বিধায় সহজেই তৈরি হয়ে যায় পক্ষ বিপক্ষ।
বাহ্যিক দৃষ্টিতে ২০১৯ এর শেষ দিকে করোনার আক্রমন শুরু হয় চীনে। সেখানেও তৈরি হয় দ্বিমত, কেউ বলেন বিষাক্ত সাপ থেকে আবার কেউ এটাকে গবেষণার অভিশাপ হিসেবে আখ্যায়িত করেন। মানব দেহে সংক্রমণের সাথে পাল্লা দিয়ে সংক্রমিত করে চৈনিক ও বিশ্ব রাজনৈতিক অর্থনৈতিক সেকটর কেও।
ছবিঃ দ্য ডেইলি স্টার।
সংক্রমন শুরুর কিছুদিন আগে একজন চীনা চিকিৎসক করোনা ভাইরাসের উৎপত্তিস্থল উহানের কেন্দ্রীয় হাসপাতালে চক্ষু বিশেষজ্ঞ গত ৩০ ডিসেম্বর লি ওয়েনলিয়াং তার সহকর্মীদের ওই ভাইরাস নিয়ে সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন ৩৪ বয়সী এই চিকিৎসক। তার পর পুলিশ গুজবের অজুহাতে গ্রেফতার করে মুচলেকা দিয়ে ছেড়েও দেয়। করোনা আক্রান্ত হয়ে অবশেষে উনি মৃত্যু বরন করেন।
শুরু হয় করোনার খুঁজ খবর নেয়া। ধীরে ধীরে চীন সরকারের দিকে তীর ঘুরে যাওয়ার ইঙ্গিত আসতে শুরু করে। এই ভাইরাস সম্বন্ধে ২০১৯ এর জানুয়ারিতেই নাকি গবেষণা পত্র বের হয়েছিল, কিন্ত চীন সরকার জনগনের সামনে আনেনি। বিস্তারিত সন্ধ্যা প্রদীএর ব্লগ নভেল করোনা ভাইরাস কি সত্যিই একেবারে অজানা কিছু, না এর পেছনে রয়েছে অবহেলা ও ষড়যন্ত্র?
এবার চীনে করোনার উপস্থিতিতে সরকারী সংক্রমণ শুরু হয়েছে নতুন করে ভিন্ন মাত্রায়।
করোনাভাইরাসের তথ্য দেওয়া সাংবাদিক নিখোঁজঃ
ভিডিও বার্তায় করোনাভাইরাস নিয়ে সারাবিশ্বের মানুষকে তথ্য দেন চীনা সাংবাদিক চেন কুইশি। এর কিছুদিন পর থেকেই তার খোঁজ মিলছে না।
সরকারের সমালোনা করায় শিক্ষককে গৃহবন্দি
করোনাভাইরাসের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে চীন সরকারের সমালোচনা করেন অধ্যাপক সু সাংরুন। সেকারণে তাকে গৃহবন্দি করে রাখা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
নিখোঁজ রয়েছেন কাপড়ব্যবসায়ী
কাপড়ের ব্যবসা করেন উহানের বাসিন্দা ফেং বিন। তিনি করোনাভাইরাস নিয়ে ৪০ মিনিটের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ করেছিলেন। ভিডিওতে তিনি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নিহতদের ব্যাপারে বলেছিলেন। এর দুই সপ্তাহ পর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না।
চাপে চীনা সাংবাদমাধ্যমগুলোও!
চীনের সংবাদমাধ্যমগুলোকেও চাপে রেখেছে দেশটির সরকার। যে কারণে তারা করোনাভাইরাস নিয়ে স্বাধীনভাবে সংবাদ প্রকাশ করতে পারছে না। তবে, এর মধ্যেও বিভিন্ন ধরনের ব্যঙ্গাত্মক সংবাদ করছেন দেশটির কিছু সংবাদমাধ্যম। পাশাপাশি, যদিও দেশটির সামাজিকমাধ্যম সরকার নিয়ন্ত্রিত, এরপরও অনেকেই করোনাভাইরাস ইস্যুতে সরকারের সমালোচনা করছেন।
করোনাভাইরাস: একদিকে রোগ আতঙ্ক, অন্যদিকে গুম আতঙ্ক
বাংলাদেশের অর্থনীতিতে চীনের সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার্য। করোনার আক্রমনে মানব দেহ এখন পর্যন্ত হুমকিতে পরেনাই সত্য, তবে তৈরি পোশাক, ইলেক্ট্রনিক ও খাদ্য দ্রব্য খাতে চীনা আমদানি নির্ভর বাংলাদেশ স্বাভাবিক ভাবেই খুবই বেকায়দায় পরতে যাচ্ছে।
চীন যে পথে হাঁটছে, তাদের জন্য কতটা মঙ্গল তারাই ঠিক করবে। তবে তাদের সাথে বাণিজ্য সম্পর্ক যাদের আছে, অবিলম্বে বিকল্প খুঁজার সময়ক্ষেপন করলে পস্তানোর সময় পাবে কি না বলা মুশকিল।
তথ্য সুত্রঃ
দ্য ডেইলি স্টার বাংলা। ৫:৩০ অপরাহ্ন, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০ / সর্বশেষ সংশোধিত: ০৫:৩৮ অপরাহ্ন, ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০২০
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০২০ রাত ৯:২২