somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আসুন আবার বই পড়ি। আরেকটা বই পড়ি।

০৩ রা ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ সন্ধ্যা ৭:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমার নতুন বাসায় যেতে হলে বেইলি রোড হয়ে আসতে হয়,সেখানে একটা বইয়ের দোকানের ক্যাপশনে চোখ আটকে থাকে, তা হল “ তবুও বই পড়ুন”।
অভ্যাস বলি, শখ বলি আর স্বভাবই বলি, বই পড়া হল সবচেয়ে মূল্যবান গুণের একটি ।রূপকথার পঙ্ঘিরাজ, স্বপ্নপুরী, মেঘের রাজ্যে পরীর বাসা, ডাইনী আর রাক্ষসের দল শিশু মনকে যেন আলাদীনের জাদুর চেরাগ পাইয়ে দেয়, সিন্দাবাদ হয়ে সে ভেসে চলে সমুদ্রে সমুদ্রে। ইশপের উপকথা গল্পচ্ছলে তাকে মূল্যবোধ শিখিয়ে তোলে।
কৈশোরের অনুসন্ধানী হৃদয়ের অতি উপাদেয় খাবার হল শারলক হোমস, মাসুদ রানা, কখনো মন ডুবে যায় আইজ্যাক আসিমভের ফিকশনে কিম্বা বেড়িয়ে পড়ে জুল ভারনের সাথে পৃথিবী সাথে ভ্রমনে।
মৈত্রেয়ী দেবীর ণ হন্যতে, মির্চা এলিয়াদের লা নুই বেঙ্গলী,নিমাইয়ের মেম সাহেব, প্রাক যৌবনের আকর্ষিত প্রেম আর চুপি চুপি আবেগের প্রথম উষ্ণ চুমু । মনে হবে আহারে! কবে প্রেমে পড়ব, কে আসবে জীবনে? সে কে কে ?
অথবা যদি আরেকবার বুক ডিব ডিব করে উঠত! আরেকবার প্রেমে পড়তে পারতাম!
রবীন্দ্রনাথের যোগাযোগ এ দুই সত্তার যে মানসিক দ্বন্দ্ব, পার্ল এস বাকের গুড আর্থের চরিত্র গুলোর যে যাপিত জীবন, কিম্বা হেরমান হেসের সিধবার্থ কি জীবনের মানে সম্পর্কে আরেকবার ভাবাবে না?
সুনীলের পায়ের তলায় সর্ষে যে কারো অলস দুপুর গুলোকে নিয়ে যাবে বন পাহাড়ি টিলায়, কিম্বা জ্যোৎস্না স্নাত নদীর বুকে।
আবার রাশিয়ান লেখকদের লেখা ছড়িয়ে দিবে মিছরির মত বরফ, হাড় কাঁপানো হিমেল বাতাস, সামনে থাকা সবুজ গাছ গুলোকে মনে হবে পাতাঝরা, ধূসর বিবর্ণ।
কাহলিল জিব্রানের প্রফেট তা ত আপনার জীবনদর্শনেরই অন্য নাম, পড়লে মনে হবে আরে ! এই বইটাই ত খুঁজেছি এত দিন!
জীবনানন্দের কবিতারা, হিজলের গাছে ঘেরা বনের পাশ দিয়ে, নিয়ে স্রোতের শব্দ ঘেরা এক নদীতে, সাঁতার কাটা হাঁস, নৌকার পালের ছায়ায়, টেনে নেবে এক সবুজ মায়ায়।

লেখকরা তাদের জীবনের সেরা অনুভূতিগুলো একত্র করেন দুই মলাটের মাঝে যাকে আমরা বই বলি। সে নীরব ভাষা আপনার সাথে এত কথা বলবে এত কথা বলবে যে নিজেকে কখনো একা মনেই হবে না।
সে শব্দগুলো আপনাকে কখনো ডাইনী হত্যাকারী রাজকুমার বানাবে, কখনো ঘোড় সওয়ারী বীর, বুদ্ধিমতী প্রেমিকা, জ্ঞানী বৃদ্ধ, চিন্তাশীল বিজ্ঞানী। কখনো নায়ক কখনো বা ভিলেন।

সফল হোক বইমেলা ২০১৫ । আমরা সাধারণত পরিচিত লেখক দের বই কিনি। এতে করে আমরা তিনটা কাজ করি।
১। নতুন লেখক বের হয়ে আসার পথ নষ্ট করি ।
২। নতুন অভিজ্ঞতা, অনুভূতি আস্বাদনের পথ বন্ধ করি।
৩। তৃতীয়টি মারাত্মক , ভাষা সাহিত্যের বিকাশের পথ রুদ্ধ করি ।


তাই প্রতিবার বই মেলায় অন্তত দুজন নতুন লেখকের বই কিনুন। একটা বিষয় দারুণ সত্য যে পৃথিবীর সব চেয়ে খারাপ বই ও অন্তত একটা ভাল লাইন আপনাকে আস্বাদন করতে দেবে। সব চেয়ে অপ্রয়োজনীয় বই ও মগজকে একবার নাড়া দিবে। তাই এবার শ্লোগান হোকঃ

" আবারও মেলায় যাই,
নতুন হাতের নতুন বই চাই"

বইয়েরই ক্ষমতা আছে অতীত, বর্তমান ভবিষ্যতে বিচরণের।তাই অনর্থক শো পিস প্রসাধনী, কুর্তা না কিনে আসুন বই কিনি। উপহারে থাকুক শুধুই বই।
প্রতিদিন চায়ের কাপের পাশে বই থাক, মনিটরের পাশে থাকুক বই, বই থাকুক বাথরুমে, জ্যামের বাসে, কিবা যাত্রা পথে।
ইলেকট্রিক বিলের লাইনে দাড়িয়ে আপনার হাতে একটা বই থাকতেই পারে। সময়কে উপভোগ করতে চান বা সময় থেকে পালিয়ে থাকতে চান বই হোক শ্রেষ্ঠ সঙ্গী।
আসুন আবার বই পড়ি।
আরেকটা বই পড়ি।

১৭টি মন্তব্য ১২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×