somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রূপকথার গল্পঃ লাল জুতা!!

১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ২:৫০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :





মূলঃ হ্যান্স ক্রিশ্চিয়ান অ্যান্ডারসেন
ভাষান্তরঃ সাইফুল্লাহ সাইফ


ক্যারেন খুব গরীব মেয়ে । তার জুতা নেই, সে খালি পায়ে হাঁটে । একদিন এক মহিলা তাকে রাস্তায় অসহায়ের মত পড়ে থাকতে দেখে । ক্যারেনকে দেখে তার খুব মায়া হল । তিনি ক্যারেনকে দত্তক নিলেন । তারপর তাকে সুন্দর একজোড়া লাল জুতা কিনে দিলেন ।

আরও একটু বড় হলে ক্যারেন তার প্রিয় লাল জুতোজোড়া পরে গির্জায় যেতে চায় ।

গির্জায় গিয়ে উপাসনার সময় ক্যারেন শুধু তার লাল জুতা নিয়েই ভাবে । উপাসনা শেষে পালক মহিলাটি ক্যারেনকে ধমকের স্বরে বলেন যে, ক্যারেন একজন উঠতি বয়সী খ্রিষ্টান, গির্জায় জুতা পরে যাওয়া তার ঠিক না ।

পরবর্তী রবিবারেও ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ক্যারেন তার লাল জুতা পরে নেয় । এবারো উপাসনা কালীন পুরো সময়টা ক্যারেন তাকে দেখতে কেমন লাগে শুধু সেসব নিয়েই ভাবে ।

তারপর গির্জা থেকে বের হয়ে আসার সময় তার জুতাগুলো যেন নিজেরাই নাচতে শুরু করে দিল ।

ক্যারেন ঘোড়ার গাড়িতে চড়ে বাড়ি ফিরছিল । গাড়ির ভেতর ক্যারেন একজন বয়স্ক মহিলাকে খুব নির্দয়-ভাবে লাথি মারলে গাড়োয়ান তার পা থেকে জুতোজোড়া খুলে ফেলে । বয়স্ক মহিলাটি অসুস্থ হয়ে যায় । তখন অসুস্থ মহিলাটির সেবা করা ক্যারেনেরই দায়িত্ব, কিন্তু সে তা না করে একটি বল নিয়ে ব্যস্ত থাকে । একজন বয়স্ক রোগীর সেবা করার কথা ভুলে গিয়ে ক্যারেন আবার তার জুতোজোড়া পরে নাচতে চায় ।

ক্যারেন নাচতে শুরু করলে এবার যেন তার জুতাগুলো আপনাআপনি জীবন্ত হয়ে উঠে । তারা নাচতে নাচতে ক্যারেনকে একটি অন্ধকার গলিতে নিয়ে যায় । ভয়ে সে তার পা থেকে জুতা খুলে ফেলার চেষ্টা করে কিন্তু জুতাগুলো তার পায়ের সাথে পুরোপুরি আটকে যায় । সে মাঠে ও ঝোপে, বৃষ্টিতে ও রোদে বহুদিন ধরে নাচতে থাকে ।

সমাধিক্ষেত্রের ভেতরে নাচার সময় সে একটি পরী দেখতে পায় । পরীটি তাকে বলে যে, মৃত্যুর আগে পর্যন্ত তাকে নেচে যেতে হবে । এবং সে নাচতে থাকবে যখন তার শরীরে শুধু হাঁর ছাড়া আর কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না তখনো ।

ক্যারেন তার পায়ের চামড়া বিদীর্ণ হয়ে রক্তাক্ত না হওয়া পর্যন্ত পাহাড়, মরুভূমি ও কাটার ঝোপঝাড়ে অবিরাম নেচে যায় ।

সে অবশেষে একজন জল্লাদের কাছে এসে তার পা কেটে দেয়ার অনুরোধ জানায়, যেন সে এই নির্মম যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পায় ।

জল্লাদ ক্যারেনের ইচ্ছা অনুযায়ী কাজটি করল । কিন্তু তার শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন পায়ের সাথে জুতাগুলো তখনো নেচে চলছিল ।

আনন্দে ক্যারেন জল্লাদের হাতে চুমু দেয়, যে হাত দিয়ে লোকটি ক্যারেনের পা কেটে দিয়েছিল । লোকটি তাকে কাঠের তৈরি ছোট পা ও একজোড়া ক্র্যাচ বানিয়ে দিল ।

ক্যারেন এখন তার ভুলের অনুতাপ করতে গির্জায় যেতে চায় । কিন্তু যখনি সে গির্জায় যায়, তার লাল জুতোজোড়া এসে হাজির হয় সামনে । তারপর গির্জার দরজার সামনে নাচতে থাকে তারা, যাতে ক্যারেন ভেতরে ঢুকতে না পারে ।

ক্যারেন ঘরে এসে কান্নায় চোখ ভাসায় ।

অবশেষে একদিন পরীটি আবার তার কাছে আসে । সে ক্যারেনের কান্না ও ভুলের অনুতাপ দেখে তার ছোট কক্ষটিকে একটি গির্জা বানিয়ে দেয়, যাতে সে প্রার্থনা করতে পারে ।

ক্যারেন এতোটাই খুশি হয় যে একসময় তার হৃদয় গলে যায় । তারপর সে মারা যায় ।

বিঃ দ্রঃ প্রথম অনুবাদ । চেষ্টা করে দেখলাম । প্রথম হিসেবে ভুলত্রুটি থাকা খুব স্বাভাবিক । পরামর্শ দিলে অনুপ্রেরণা পাব । ধন্যবাদ ।


গল্পটি বাংলানিউজের শিশুদের পাতা ইচ্ছেঘুড়িতে আজ প্রকাশিত হল "লাল জুতার নৃত্য" শিরোনামে । দেখতে ক্লিক করুন. এখানে



সর্বশেষ এডিট : ১৪ ই মে, ২০১৪ রাত ১০:০৬
২টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×