(ইহা অলস মস্তিষ্কের ফালতু প্যাঁচাল ! কাল রাতে নেট না পেয়ে এই অকাজ করলাম ! সমস্ত চরিত্র কাল্পনিক ! কারো সাথে মিল খুঁজতে চাইলে নিজ দায়িত্বে খুঁজবেন ! এই বিষয়ে আমি দায়ী নই ! আর সামুর স্পেশাল রম্য লেখকেরা এবং বিজ্ঞ পাঠকেরা ইহাকে আমার আদর্শলিপির প্রথম পাঠ হিসেবে নিলে খুব খুশি হবো !নিজের দুঃসাহসে নিজেই অবাক আমি ! চেয়ারম্যান , নোমান নমি আর মাইনাস - প্রিয় তিন রম্য লেখক ভাইয়াদের লেখা পড়ে পড়ে আদার ব্যাপারী তিতির জাহাজ চালানো শুরু করছে ! হয়ত এটাই শেষ ! প্রিয় তিন ভাইকেই উৎসর্গ করলাম এই লেখা । তোমরা ভাগ করে নিও ! লেখার সাইজ বিশাল আছে ! )
কড়াই - ওই ডিম , তুই এমুন দূরে দূরে থাহিস কেন রে ? তোর বাপ মা তোরে আদব লেহাজ কিছু শিহায় নাই !নাহি নতুন নতুন দাম বাড়নে ভাব বাড়ছে !
ডিম- শিহাইবো না কেন ! শিহাইছে !বেশি কতা কইবা না কইলাম ।
কড়াই- ছাই শিহাইছে ! হেই সক্কাল ব্যালা আইলি । একটা সালাম আদাব ও দ্যাস না ! কাহিনী কি ! তারপর এহন বেলা বাজতেছে ১২ টা । জিগাইসও না ,কেমুন আছি ! বেয়াদ্দপ পোলা !
ডিম - খালা , মুখ সামলায় কতা কইও ! এমনিতেই মেজাজ খারাপ ! তারমধ্যে তুমি আর ফাউ প্যাঁচাল পাইড়ো না কইলাম !
কড়াই - ওই বান্দর !খালা কস কারে ! ওই পোলা , চোখের মাথা খাইছস নাহি !আমারে কি দ্যাখতে খালা লাগে ! ফাজিল পোলা ! আমারে আফু ডাকবি ! নাম ধইরাও ডাকতে পারোস !বয়সে আমি তোর সমানই হবো । আমি দেখতে বড় আর তুই পিচকা ! তাই বইলা তুই আমারে খালা ডাকবি ! কানের নিচে এমুন একটা চটকনা দিমু রে বজ্জাত !
ডিম - দেহো খালা , চেতাইও না কইলাম !মেজাজ বিলা হইতেছে কিন্তু !
কড়াই - এত্তুটুকুন পোলা ! তোর মেজাজ এমুন গরম থাহে কেন রে? কারো লগে ভালুবাসা হইছিলো নাহি ! হের লাইগা পরান দাপায় !!
ডিম - ধুর ! তুমি যে কি কও ! :#>
কড়াই-ক্যান ! দুষের কি ! প্রেরেম ভালুবাসার কি আর বয়স আছে রে ! আমি যেই দুকানে ছিলাম ,সেইহানে এক লাল রঙের বালতি আছিলো ! কি তাঁর চিহারা ! এক্কেরে নায়ক ছাকিব পান ! :#> আমিও কি কম আছিলাম রে ! আমার সেই চিহারা দেইখা বিপু অবিশ্বাস ও হিংসা করতো !
হায় ! কি দিন আছিলো রে ! এহন সেই রূপ ও নাই , সেই যৌবনও নাই ! বান্দরনি বুয়া ঠিক মতো যত্ন নেয় নাহি ! একটু সিম বার দিয়া কায়দা মতো ডলা দিলে কি হুন্দর লাগে আমারে ! তা কি হ্যায় দিবে ! হ্যায় আছে হিন্দি সিরিয়াল নিয়া ! এই বাসার বিবি সাহেব তো হারা দিন উপুত হইয়া পইড়া থাহে টিবির উপ্রে ! এই ফকিরনি বুয়া আছে হ্যার লগে ! হারাদিন হাজ গুজ আর আর টিবি ! মনে লয় টিভি হ্যারে গিলাইয়া দেই !
ডিম- হ , ঠিক কইছো খালা ! আমিও সেই সক্কাল থেইকা শুনতেছি ওই ঘর থেইকা হিন্দি কথার আউয়াজ আইতেছে ! কি কয় সব ! ম্যায় তুমচে পেয়ার করতা হু ! আরে বান্দরের দল , সোজা বাংলায় কবি , আমি তুমারে ভালুবাসি ! এইডার চেইয়ে সুন্দর কতা আছে নাহি !
কড়াই- ওই ডিম ! হাছা ক তো ! এতো কতা থাকতে তোর কানে হুদু প্রেরেমের কতা আইলো কেন? কার প্রেরেমে মজলি রে ! হেই ডিমের নাম ক দেহি !
ডিম- তুমি যে কি না খালা ! খালি সরম দাও ! আমি কি বড় হইছি নাহি ? বড় হইলে তো পেরেম করতাম । :#> আমাগো ফার্মে একখান মুরগী ছিলো ! কি যে সুন্দর রে খালা ! বিপু অবিশ্বাস হ্যার কাছে কিচ্ছু না ! তারে আমার ঝিম এর মতো লাগতো !
কড়াই- কস্কি মমিন !ঝিম আবার কুন নায়িকা ? নতুন নাহি !
ডিম- হুম। মডেল আছিলো আগে । এহন হিট নায়িকা ! তার পাশে মনে করো ছাকিব পান যায় না ! মনন্ত সলিল যাইতে পারে । ঝিম এর ফিগার টা না ! উফ ! খালা রে ! তুমি যদি দেখতা !আমি যহন মোরগ হমু ঠিক অমন একটা মুরগীর লগে ডেটিং করুম ! :!>
কড়াই -উকে , কিন্তু হুদু ডেটিং কেন ! পেরেম কইরা হ্যারপর বিয়া কইরা ফেলবি !তোগো ঘর ভইরা বাচ্চা হইবো ! আমারে নানি নানি ডাকবো !
ডিম- খালা ! তুমি জানি কেমুন ! খালি সরম দাও !অইডা কি মুখে কওন যায় !
কড়াই - ওরে ! ভাইগ্না দেখি সরমে লাল হইছে ! তর লজ্জা দেইখা আমার পুরান কতা মনের ভিতর চাগান দিয়া উঠলো রে !
ডিম- কওনা না খালা ! কি হইলো তুমার সেই বালতির ! সে কি তুমারে পছন্দ করে নাই?
কড়াই- থাবড়া দিমু কইলাম ! পছন্দ না করনের কি !
ডিম- তাইলে ?
কড়াই- হ্যায় তো আমার দিকে টেরায় টেরায় চায় । আমি দেহি আর সরম পাই ! এক রাইতে হইলো কি , বালতি সাহেব এক্কেরে নায়কের লাহান সাহস দেখাইয়া কাইত হইয়া পড়লো আমার গায় ! হায় ! হায় ! কইস না ! আমি তো সরমে নাই ! এই বালতির কি লাজ সরম কিছুই নাই ! কাছে আইসা কইলো , কেমুন আছো জান পাহি!আমি কই , ভালু আছি । আপনে ক্যামুন আছেন ভাইজান? আমার মুখে আপনে ডাক শুইনা সাহেবের কি রাগ ! কয় , আমি তুমার পর নাহি ! আমারে তুমি কইবা ! আর ভাইজান কইবা না ! পরান পাহি কইবা ! আপুন আপুন লাগে ! তুই ক দেহি ভাইগ্না ! ক্যামুন সরম পাইছিলাম !
ডিম-তারপর কি হইলো?
কড়াই - আরে ছেমড়া ! সবুর কর ! একটু নাইন আপ এ চুমুক দিয়া নেই। গলাডা হুকায় গেছে গা ! তারপর সারারাইত কত্ত কতা রে ! আমারে নিয়ে সে একখান গান ও বানছিলো ! ও কড়াই , ও কড়াই তুমি কুথায় ?তুমি ছাড়া পরান ফাইট্টা বদনা হইতে চায় ! ......তুই ক দেহি , এমুন পাগল কিডা আছে ? এমুন ভালো কি কেউ আমারে বাসপো ! । আমার তো মানুষের লাহান মুন নাই। তাই আমি তারে আমার হাতল দিয়ে দিলাম। সেই রাইত আমি জীবনেও ভুলুম না রে ভাইগ্না !
ডিম- ওই খালা , কাইন্দ না তো ! আমি কান্দন দ্যাখতে পারি না। চোখ থুক্কু খোসা জ্বালা করে ! তারপর কি হইলো হেইডা কও !
কড়াই - কি আর হইবো । কপালে কি সুখ আছে রে মনা ! সক্কাল বেলা রাগছাগলের লাহান চিহারার কর্মচারীডা আইসা হেরে আমার কইলজার থন টান দিয়া সরায় নিলো ! আর এমুনি কপাল ! ওই দিনই আমি বিক্রি হইয়া এই বাসায় আইয়া পড়লাম ! বিদায় নেওনের সময় হ্যায় যে কি কান্দন রে ভাইগ্না ! গাছের বাকল ঝইরা যায় , নদীর মাছ ডাঙ্গায় চইলা আহে এমুন ! বুকে পাষাণ বাইন্ধা চক্ষের পানিতে আমি তারে বিদায় দিলাম । সে আমারে কতা দিলো , মরণের পর হইলেও সে আমার হইবো । ভাঙ্গারি পট্টিতে আমাগো বাসর হইবো !
ডিম- তারপর ? খালা , হ্যায় আছে কেমুন ? তোমার সাথে যোগাযোগ হইছে আর ? কোন খোঁজ পাইছো ?
কড়াই - হ , পাইছি । এই বাড়ির সাহেব হেই দুকান থেইকা একটা মগ কিনা আনছিলো । হ্যার কাছে খবর পাইলাম, শয়তান বালতি আমারে ভুইলা পোড়ারমুখী খুন্তির পেরেমে পড়ছে ! খুন্তিরে দ্যাখলে ভাইগ্না তোর বমি আইবো ! এক্কেরে কাঠি ! মনে হয় মাঠের মইদ্দে কেউ একখান কঞ্চি পুঁইতা রাখছে ! এর চেয়ে আমার বিন্নি আফারে হুন্দর লাগে ।
ডিম- আহারে খালা ! তুমার কাহিনী দেহি ছিঃনেমারেও হার মানায় গো!থাক বাদ দেও তো । তুমি এহনও কত্ত জোয়ান ! দেইখো তুমার লগে পিঁয়াজের মতো একজন নায়কের ভালুবাসা হইবো !
কড়াই- এত্ত বড় কথা কইলি তুই ! আর আমি তোরে আনাফ সানাফ কত্ত কিছু কইছি ! তুই অনেক বড় ভালু রে বাপধন ! আয় আমার বুকে আয় ! আল্লাহ তোরে বাঁচাইয়া রাখুক ! তুই আগে ফুইট্টা বাচ্চা হ , তারপর একটা হুন্দর মোরগ হ । আমি খাস দিলে তোর লাইগা দুয়া করি রে বাজান !
( এর মধ্যে রান্নাঘরে বুয়ার আগমন । সে বেগম সাহেবার জন্য ডিম পোঁচ করতে আসছে । কড়াইতে তেল গরম দিয়ে সে ডিমে হাত দিতেই ডিম কেঁদে উঠলো । )
ডিম-খালা গো , আমারে বাঁচাউ । আমি বাঁচপার চাই । সক্কাল বেলা ওই পাজি বুয়া আমার বইন রে ভাইজা হ্যালাইছে ! কতো খাওন লাগে বিবি সাহেবের ! মুটকি জানি কুন খানকার !হারাদিন হিন্দি নাটক দেহে আর বইসা বইসা খায় ! খালা , আমি তুমার পায়ে দরি গো ! আমারে বাঁচাউ ।
কড়াই- তুই ভাপিস না ভাইগ্না । আমার জীবন তো গেছেই জ্বইলা ! আমি তোর এই কচি ডাবের লাহান মুখের কান্দন দেখতে পারুম না । আমার জান থাকতে আমি তোরে মরতে দিমু না ! ইয়া আলি !
( বুয়া কাছে আসতেই কড়াই কাত হয়ে গরম তেল ঢেলে দিলো বুয়ার পায়ে )
বুয়া- ওরে মারে ! আমি পুইড়া মরলাম গো ! কে আমারে অবিশাপ দিলো রে ! আমার এত্ত হুন্দর পা খান পুইড়া গেলো রে !
কড়াই- ওরে ! আমি হাসতে হাসতে শ্যাষ ! ওই বদ বুয়া , এক্ষুণ তুমার হিন্দি আহে না ? ব্যাক্কল মানুষ ! বিপদে পড়লে বাপের নাম মনে পড়ে! শালার বাঙালি জাইত ! আসল চিনো না ! কান্দ বেশি কইরা হিন্দিতে কান্দ ! দেহি কিডা তোমারে বাঁচায় !
ডিম- খালা , তুমি আমার নানীর পেটের খালার লাহান কাম করলা ! তুমার এই ঋণ আমি ক্যামনে শোধ করুম ! আইজ থেইকা তুমারে আনটি ডাকুম ! তুমি এত ইচমারট !!
কড়াই - না রে বাজান ! খালাই ডাহিস ! তোর ডাক শুনলে পরানডা কুয়ার পানির লাহান ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা লাগে !
{ বুয়া অসুস্থ । বিবি সাহেব হোটেল থেকে খাবার কিনে আনে ! ডিম স্বপ্ন দেখে সে মোরগ হয়েছে ! একটা সোনালি রঙের মুরগীর সাথে তার বিয়ে হচ্ছে ! কড়াই খালা অনেক রান্না বান্না করছে ! তাদের বিয়েতে অনেকে এসেছে । কড়াই বললো , বালতিও নাকি ডেকোরেটর এর লোকদের সাথে এসেছে । তার চেহারা নাকি নষ্ট হয়ে নিপজলের মতো হয়ে গেছে । সে তার ভুল বুঝতে পেরেছে ! সে ক্ষমা চায় ।ইচ্ছে না থাকলেও কড়াই নাকি তাকে মায়া করে মাফ করে দিয়েছে !(এই কথা অবশ্য ডিম বিশ্বাস করে নাই ! ) তারপর , কাজী সাহেব একসাথে দুইটি বিয়ে পড়ালেন ।
এসব ভাবতে ভাবতে ডিম ঘুমিয়ে পড়ে । :-< কড়াই পরম মমতায় তার খোসায় হাতল বুলিয়ে দেয় ! }
১৭০৭১২
ও কড়াই ও কড়াই তুমি কুতায় ???? (রম্য লিখবার ব্যর্থ চেষ্টা )
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
Tweet
৬৬টি মন্তব্য ৬৬টি উত্তর
পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন
আলোচিত ব্লগ
ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।
ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!
সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন
কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?
জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী
ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)
সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)
সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন
জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা
বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন