ইয়ুভাল নোয়াহ হারারির বহুল আলোচিত Sapiens আমার পড়া নন-ফিকশন বইয়ের তালিকার প্রথম তিনের মধ্যে থাকবে। পুরোপুরি একাডেমিক বই, অথচ নাটোরের কাঁচাগোল্লার চাইতে সুস্বাদু!
মানুষের উৎপত্তি এবং বিকাশ সম্পর্কে আমাদের ব্যাপক কৌতুহল। আমাদের পূর্বপুরুষ কি একসময় এককোষী জীব ছিল? শিম্পাঞ্জি কি আমাদের আলাদা হয়ে যাওয়া কাজিন? যদি ইভোলিউশান সত্যিই হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের এক স্তর আগের জীব কই গেল? এইসব প্রশ্নের ব্যাখ্যা পাওয়া যাবে বইয়ে।
ইভোলিউশন এখন আর থিউরি নয়, এটা ফ্যাক্ট!
লেখক Humans বলতে কেবল আধুনিক মানুষ নয়, Neanderthal, Java মানব ইত্যাদি সবাইকে বুঝিয়েছেন। আধুনিক মানুষ বোঝাতে ব্যবহার করেছেন Sapiens।
আজ থেকে কয়েক মিলিয়ন বছর আগে থেকে ১২ হাজার বছর আগে পর্যন্ত (সর্বশেষ ইন্দোনিশিয়ার Flores দ্বীপে) আধুনিক মানবের বাইরে অন্যান্য প্রজাতির হিউম্যানস পৃথিবীময় ছড়ানো ছিল। যেমন ইউরেশিয়ায় Neanderthal এবং পূর্ব এশিয়ায় ইরেকটাস মানব। প্রশ্ন হচ্ছে আমরা কি কেবল Sapiens এর বংশধর? অন্যান্য 'মানব' প্রজাতি তাহলে কোথায় গেল?
দুইটা থিউরি:
থিউরি ১: আজ থেকে ৭০ হাজার বছর আগে পূর্ব আফ্রিকা থেকে স্যাপিয়েনস সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়ে এবং অন্য সব মানবকে নির্বংশ করে ফেলে। এই থিউরি অনুসারে আমাদের সবার গোড়া এক জায়গায়- পূর্ব আফ্রিকা। (এটা নিয়ে চমৎকার বিবিসি ডকুমেন্টারি আছে।)
থিউরি ২: স্যাপিয়েনস আফ্রিকা থেকে উদ্ভূত হয়ে পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলে ছড়িয়ে পড়ে। তারা স্থানীয় মানবের সাথে সংমিশ্রন করে নানান চেহারার আধুনিক মানব তৈরি করেছে। ইউরেশিয়ার মানুষ স্যাপিয়েন্স এবং নিয়ানডারথাল মানবের সংমিশ্রণ; চীন, জাপান এবং কোরিয়ার মানুষ স্যাপিয়েন্স এবং ইরেকটাস মানবের সংমিশ্রণের ফসল! এই থিউরি অনুসারে আফ্রিকা (সাহারার দক্ষিণাঞ্চল) বাদে সারা বিশ্বের মানুষ সহিহ স্যাপিয়েনস না! সম্প্রতি এক গবেষণা বলছে, মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপের মানুষের ডিএনএর ১-৪ ভাগ নিয়ানডারথাল ডিএনএ!
বইটা পুরোটা পড়েই দেখুন! আপনার জন্য আরো অনেক চমক অপেক্ষা করছে।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে অক্টোবর, ২০১৮ রাত ২:২৯