মাইক আবিষ্কারের পর মসজিদে প্রথম যখন সেটা ব্যবহার করে আজান এবং নামাজ পড়ানো শুরু হলো, একদল আলেম-ওলামা হৈচৈ শুরু করলেন। নবিজি কি কখনো মাইক ব্যবহার করেছেন? করেননাই। তাহলে আমরা কেন মাইক ব্যবহার করবো? এই ছিল ওনাদের যুক্তি।
এখনো অনেক আলেম এসব ক্ষেত্রে মাইক ব্যবহারের বিরোধিতা করেন। আমাদের দেশে তাবলীগের যে বিশ্ব-ইজতেমা হয় টঙ্গিতে, সেখানে আজান এবং নামাজ কোনটাইতে মাইক ব্যবহার করা হয়না। খালি গলায় কাজ সারা হয। অবিশ্বাস্য হলেও এটা সত্যি। যারা ইজতেমায় অংশগ্রহণ করেছেন তারা বিষয়টা জানেন। এনাদের যুক্তি মোটামুটি এরকম: মাইক্রোফোন শব্দকে বিদ্যুৎ শক্তিতে রূপান্তরিত করে যেটা লাউডস্পীকারের মাধ্যমে পুনরায় শব্দশক্তিতে পরিণত হয়। অর্থাৎ, আমরা মাইকে যে শব্দ শুনি, সেটা প্রকৃত অর্থে কোন মানুষের কণ্ঠ-নিসৃত শব্দ না! তাই মাইক পরিত্যাগ করা কর্তব্য!
আলেম-ওলামাদের মধ্যেই যখন মাইকের ব্যবহার নিয়ে এত বিতর্ক; এহেন অবস্থায় কেউ যদি মাইকের আজান ভালো লাগেনা বলে টুইট করেন, তাহলে এটা কি করে ইসলাম-বিদ্বেষ হয় আমার বুঝে আসেনা। কারো ভালো লাগা - খারাপ লাগা কেনো আমাদের মনমতো হবে। আমার নিজের অভিজ্ঞতায় কোন এক মসজিদের আজান খুব যন্ত্রণাদায়ক ছিল যেটার কাছাকাছি আমাকে কিছুদিন দুপুরবেলা থাকতে হয়েছিল। আমরা পারলে দরজা-জানালা বন্ধ করে ওই অত্যাচার থেকে বাঁচার চেষ্টা করতাম। এখন নিজেকে ইসলামপ্রেমী প্রমান করার জন্য আমাকে মিথ্যা বলতে হবে, ওই আজান খুব মিষ্টি ছিল!!
সনু নিগম যদি ওনার বক্তব্যের জন্য অসহিষ্ণু হয়ে থাকেন, তাহলে তাকে গালাগাল করে, তার একান্ত ব্যক্তিগত মতামতকে সম্মান না করে আমরা নিজেদের কতটুকু সহিষ্ণু প্রমাণ করছি?
#ThinkingBeyond
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে এপ্রিল, ২০১৭ রাত ৯:৪৯