কবির খুব ইচ্ছে ছিল, তার কবিতার বই বের হবে। নিজের নতুন বইয়ের গন্ধে মন ভরে উঠবে। একুশের বই মেলায়, সে বই প্রকাশিত হবে। কবি স্টলে বসে থাকবেন। পাঠকরা আসবে, বই কিনবে। দু’চার লাইন বইয়ের পাতায় লিখে নিজের অটোগ্রাফ দিবেন। পাঠকরা কবির সাথে সেলফি তুলবে। সুন্দরী রমণীরা হেসে হেসে তার সাথে কথা বলবে আর বিভিন্ন ঢংঙে সেলফি তুলবে। কেউ কেউ আবার, কবির মোবাইল নম্বরটি চেয়ে নেবে। কবি, লাজুক হাসি হেসে তা দেবেন আর বলবেন, “ফোন করবেন”। বন্ধুরা খুশির আবেগে তাকে অভিনন্দন জানাবে। মেলায় এসে বইও কিনবে। ফেসবুকে সে বইয়ের জন্য আলাদা পেজ খোলা হবে। লক্ষ লক্ষ সদস্য থাকবে। নিজের ফেসবুক ওয়ালে থাকবে সে বইয়ের প্রচ্ছদ। অন লাইনে ছড়িয়ে পড়বে, তার কবিতার বই বের হয়েছে। প্রথম কবিতার বই। পরিবারের কেউ আবার ভুল করে বলে ফেলতে পারে, “জানো জানো, আমার ছেলের (বা মেয়ের) বই বের হয়েছে।”
আজ বই মেলার শেষ শুক্রবারে, কবি ভীষণ ব্যস্ত। পাঠকের ঢল নেমেছে, কবির স্টলে। বইটি ভালোই জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
কিন্তু এ কি ! কিছু লোক পুলিশ নিয়ে কবির স্টলের দিকেই এগিয়ে আসছে। তাঁদের দেখে বেশ রাগান্বিত মনে হচ্ছে। পুলিশ এসেই সব পাঠকদের স্টল থেকে চলে যেতে বললেন। শুধু কবি আর প্রকাশক ছাড়া। লোকগুলোর দাবি, কবি চোর।
কবি, বিভিন্ন কবির লেখা চুরি করে, নিজের নামে প্রকাশ করেছেন। তার প্রমাণ স্বরূপ, আসল কবিরা তাঁদের লেখা অনলাইনে প্রকাশের সময় সহ স্ত্রীণশর্ট এবং নকল কবির ফেসবুকে প্রকাশের সময় সহ স্ত্রীণশর্ট নিয়ে এসেছে। এতে স্পষ্ট প্রমাণ হয় যে, নকল কবির লেখাগুলো নকল। উনি সবগুলো একত্রিত করে বই প্রকাশ করেছেন। ভেবেছিলেন কেউ জানবে না। তাছাড়া নকল কবি, নিজের পক্ষে কিছুই বলতে পারছে না। তার মুখ বাংলা পাঁচের মতো হয়ে গেছে।
প্রকাশকের দাবি, নকল কবি নিজেই টাকা দিয়ে বই প্রকাশ করেছে। এতে উনার কোন দোষ নাই। সব দোষ, এ নকল কবির।
প্রকৃত লেখকরা, ভবিষ্যতে এমন কিছু হলে অবাক হবেন না।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:৫৮