একদিন সিফাত উল্লাহ প্রসঙ্গে বাংলাদেশ সরকার অস্ট্রিয়ান সরকারকে ফোন দিলো।
বাংলাদেশ সরকার: হ্যালো , কেমন আছেন?
অস্ট্রিয়ান সরকার:ভালো। আপনি?
বাংলাদেশ সরকার :এই তো ভালো। আসলে খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা বিষয় নিয়ে আপনাদের সাথে একটু আলাপ ছিলো।
অস্ট্রিয়ান সরকার এবার নড়েচড়ে বসলো। কতদিন পরে বাংলাদেশ তাদের ফোন দিয়েছে। আবার বলছে গুরুত্বপূর্ণ কথা। অস্ট্রিয়ান সরকার বললো, “আচ্ছা বলুন তো।”
বাংলাদেশ সরকার : বাংলাদেশ বংশোদ্ভুত এক নাগরিকের ব্যাপারে কথা বলতে চাই। সে এখন আপনার অস্ট্রিয়ার নাগরিক। সে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে উল্টাপাল্টা কথা বলে সব সময়। সে সব সময় মদ পান করে আর মদ খেয়ে এটা সেটা বলে। যা আমাদের প্রধানমন্ত্রীর ব্যাপক সম্মানহানি ঘটাচ্ছে।”
অস্ট্রিয়ান সরকার: হা হা হা। প্রধানমন্ত্রীকে নিয়েই তো বলবে। যাদের হাতে ক্ষমতা দিয়েছে সমালোচনা তো তারই করবে। পারলে চৌদ্দ গুষ্টি তুলে গালি দিবে। তাছাড়া আপনাদের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তো ইলেকশন স্টাফিং এর মতো গুরুতর অভিযোগ আছে। সমালোচনা তো হবেই।”
বাংলাদেশ সরকার: আরে ভাই আপনি বুঝতে পারছেন না। সে অনেক অশ্লীল ভাষায় গালি দেয় । খুব খুব অশ্লীল। মানে ইয়ে মানে ওই সব গালি. . .”
অস্ট্রিয়ান সরকার: কি যে বলেন আপনারা। ওসব আমাদের এখানে কোনো বিষয় না। আমাদের নিয়েও আমাদের জনগণ অনেক নগ্ন অশ্লীল কার্টুন বানায়। আমরা এগুলো আমাদের সোস্যাল ডেমোক্রেসির অন্তর্ভুক্ত বলে মনে করি। এগুলো প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার। যাই হোক, অন্য কোনো বিষয় থাকলে বলুন।
বাংলাদেশ সরকার : আরে শেষ হয় নি তো, আরো আছে। সে আমাদের ধর্মও অবমাননা করেছে। সে একদিন..
অস্ট্রিয়ান সরকার: শুনুন। এ ব্যাপারে আপনার সাথে কোনো কথাই চলবে না। অনেক ব্লগারকে কেবল ধর্মের সমালোচনা করার জন্য আপনারা দেশ ছাড়া করেছেন। তাদের আমাদের আমার এখানে আশ্রয় নিয়েছে। ধর্মকে ব্যবহার করে আপনারা নোংরা রাজনীতি করেন। আপনাদের মতো আমাদের দেশে ব্লাশফেমি আইন নেই। ধর্মকেও আমরা সমালোচনার বিষয় মনে করি। সেটা যে ধর্ম নিয়েই হোক। আর এসব সমালোচনার কোনো মাপকাঠি এখানে ঠিক করা নেই। সুতরাং এটাও ওই নাগরিকের কোনো অপরাধ নয়। তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যাংক লুট, চুরি, খুন , রাহাজানি এসব অভিযোগ থাকলে বলুন। আমরা আপনাদের সহায়তা করবো।
বাংলাদেশ সরকার : ইয়ে মানে সেরকম কিছু নেই। কিন্তু..
অস্ট্রিয়ান সরকার : তাহলে ঐরকম লোকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিন। শুধু শুধু নিরপরাধ ব্যক্তিদের খুজে বেড়াবেন না। ধন্যবাদ।
বাংলাদেশ সরকার টেলিফোনটা হাতে নিয়ে হা করে রইলো।
সব জায়গায় যে ফ্যাসিবাদ চলে না এ ব্যাপারে তার হালকা একটা বোধোদয় ঘটলো। তারপর সিফাত উল্লাহকে গ্রেফতার করা হয়েছে এই মর্মে হালকা একটা গুজব ছড়িয়ে বাংলাদেশ সরকার ঘুমিয়ে পড়লো।
এতক্ষণ আপনারা একটি ধূর্ত এবং লাঠিয়াল সরকারের গল্প শুনলেন। আশা করি ভালো লেগেছে।
সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০২০ সন্ধ্যা ৭:৩১