সুন্দরবন-ধ্বংসী রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে ইসলামি দল ও ইসলামিক চিন্তাবিদদের কোনো সুস্পষ্ট বক্তব্য নেই! সুন্দরবন-রক্ষা আন্দোলনের নেতৃত্ব এবং প্রতিবাদী ভূমিকায় বামপন্থিরাই অগ্রগণ্য। যদিও ইসলামি শিক্ষায় শিক্ষিতরা মাদ্রাসায়, খানকায় মহানবী (স.)-র এ বাণীটি আওড়ান "যদি জানতে পারো যে আগামী কালই কেয়ামত তবুও জমিনে একটি চারাগাছ লাগাও"! এমন কালজয়ী নির্দেশনা পড়লেও এর কোন আছর ইসলামিস্টদের আখলাকে আছর করে না! অপ্রয়োজনে গাছের একটি পাতা ছেঁড়াও যে ধর্মে নিষিদ্ধ সেখানে পৃথিবীর বৃহত্তম একটি বন উজাড় করে দেয়ার পায়তারা হচ্ছে অথচ আমরা পান-চুনে ঠোঁট লাল করে খিলখিলিয়ে হাসছি!
শুক্রবার জুম্মার খুতবায় এ নিয়ে সুস্পষ্ট আওয়াজ তুলার কথা ছিল। যে দ্বীন কেয়ামতের পূর্বমুহূর্তে গাছ লাগানোর শিক্ষা দেয়, সে দ্বীনের ৮৫%অনুসারীর চোখের ডগায় পৃথিবীর বৃহত্তম বন জ্বালিয়ে ছারখার করে দেয়া হবে! আশ্চর্য!
সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে যারা ঝাঁপিয়ে পড়বে তারা নিঃসন্দেহে মুজাহিদ, যারা পুলিশের গুলিতে নিহত হবে তাঁরা শহীদ, যারা এ আন্দোলনে বিজয়ীর বেশে ফিরে আসবে তাঁরা গাজী (যদি ঈমানদার হয়)- এমন ঘোষণা আলেমদের পক্ষ থেকে আসলে এ আন্দোলন দাবানলের মতো ছড়িয়ে পড়বে, ভারতীয় প্রকল্প লেজ গুটিয়ে পালাবে।
সুন্দরবন-রক্ষা আন্দোলনকে 'জিহাদ' ঘোষণা দিয়ে 'জিহাদ' শব্দের ওপর থেকে সুশীল শ্রেণীর 'নাক সিটকানো' স্বভাবের ওপর লাথি মারার সুযোগ রয়েছে। জিহাদ যে যাবতীয় বে-ইনসাফীর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের নাম তা-ও প্রমাণিত হবে হাতে-কলমে।
জাতীয় স্বার্থের প্রতি উদাসীন থেকে জাতীর নেতৃত্ব পাবেন- এমন বন্যচিন্তা যাদের মাথায় ঘুরে তারা এ যুগে জন্মিলেও চেতনায় বাবা আদমের (আঃ) আমলে বাস করেন।
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা আগস্ট, ২০১৬ সন্ধ্যা ৭:১০