সকালে ঘুম থেকে উঠে মনে করেছিলাম বৃষ্টি হবে। বৃষ্টি হলে সারাদিনের পরিবেশ একটু হলেও ঠান্ডা থাকবে। যার ফলে দিনটা ক্লান্তি ছাড়াই কাটিয়ে দেয়া যাবে। কিন্তু বেলা বাড়ার সাথে সাথে সূর্য্যি মামা উত্তাপ ছড়াতে লাগলো। এতকিছু না ভেবে প্রস্তুত হয়ে সকাল ১০টার দিকে বাসা থেকে বের হলাম। নির্দিষ্ট জায়গায় অর্থাৎ সিআরবি’তে পৌঁছতে ১ ঘন্টার মত লাগলো।
সিআরবি’তে পৌঁছে প্রথম দেখা হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসা অনুষদের বড় ভাই তারেক ভাইয়ের সাথে। প্রায় ১ বছর আগে যখন উনার গ্রাজ্যুয়েশন শেষ হয়েছিল তখন উনার সাথে শেষ দেখা হয়েছিল, এরপর আর দেখা হয়নি। নববর্ষের শুভেচ্ছা বিনিয়ম করে, টুকটাক কথা বলে উনার কাছ থেকে বিদায় নিলাম।
শীরিষতলায় বর্ষবরণের মঞ্চ
এদিকে সিআরবি’র সাত রাস্তার মোড়ে আগে থেকে অপেক্ষারত ব্লগার বন্ধু জুনায়েদ কৌশিকের সাথে একত্র হলাম। এ সময়ে বন্ধু ইকবাল ফোন করে জানালো তার আসতে আরো ৫ মিনিট লাগবে। এরই ফাঁকে শুরু করে দিলাম ছবি তোলা। ঠিক ৫ মিনিট পর বন্ধু ইকবাল তার প্রিয়তমাকে নিয়ে উপস্থিত। তার প্রিয়তমার সাথে পরিচয় পর্ব সেড়ে সিআরবি’র মনোরম এলাকায় ঘুরতে লাগলাম।
ব্রিটিশদের তৈরিকৃত সিআরবি'র রেলওয়ে স্থাপনা
ও হ্যাঁ, সিআরবি সম্পর্কে কিছু বলা যাক। জায়গাটা অনেক বড়, খোলামেলা ও চমৎকার। এই নিয়ে ৪র্থ বারের মতো ‘নববর্ষ উদযাপন পরিষদ, চট্টগ্রাম’এর উদ্যোগে সিআরবি’র শীরিষতলায় বর্ষবরণ ও বর্ষবিদায়ের অনুষ্ঠানের আয়োজন হল। উক্ত জায়গায় পাহাড়ের উপরে চিটাগাং রেলওয়ে বিল্ডিং (সি.আর.বি) অবস্থিত। যেটি প্রায় ৮০ বছর আগে ব্রিটিশদের কর্তৃক নির্মিত একটি স্থাপত্য নিদর্শন। ভবনটি প্রথমে ব্রিটিশ আমলে ‘আসাম বেঙ্গল রেলওয়ে’র এবং পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে ‘ইস্ট বেঙ্গল রেলওয়ে’র সদর দপ্তর ছিল। বর্তমানে এটি বাংলাদেশ রেলওয়ের ‘নর্থ ডিভিশন’এর সদর দপ্তর। বাংলাদেশের প্রথম টেষ্ট জয়ের স্বাক্ষী এম.এ. আজিজ স্টেডিয়ামের পাশেই চমৎকার এই জায়গাটির অবস্থান। নগরীর টাইগার পাস কিংবা রেলওয়ে স্টেশন থেকেও সামান্য দূরত্বে এর অবস্থান। খুব সকালে কিংবা শেষ বিকেলে জায়গাটিতে পায়ে হেঁটে বেড়ালে চমৎকার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করা যায়।
অনুষ্ঠানের মূল কেন্দ্র
হাঁটতে হাঁটতে সিআরবি’র পাহাড়গুলোর একদম চূড়ায় উঠে গেলাম, যেখানে রেলওয়ের কর্মকর্তাদের বাংলো অবস্থিত। বাংলোগুলোও খুব সুন্দর, সাথে বড় বড় বট গাছ। পাহাড়ের ঢালুতে বসে কিছুক্ষণ আড্ডা দিলাম আমরা। কিছুক্ষণের এই আড্ডা শেষে শীরিষতলার কাছে আসতেই দেখা হলো বন্ধু আরফাত, মোস্তফা ও তার কাজিনের সাথে। সবাই মিলে বর্ষবরণের অনুষ্ঠান উপভোগ এবং আড্ডা চলতে থাকলো। এরই মধ্যে বন্ধু ইকবাল এবং তার প্রিয়তমাকে বিদায় জানাতে হলো।
সাহাবউদ্দীনের বলি খেলা
আড্ডা দিতে দিতে ঘড়িতে সময় তখন প্রায় পৌঁনে ৩টা। জুনায়েদ কৌশিক বললো সাহাবউদ্দীনের বলি খেলা দেখার কথা। বলি খেলার স্থান শীরিষতলার পাশেই। তারপর গেলাম বলি খেলার স্থানে। চট্টগ্রামে থেকেও এতদিন বলি খেলা দেখা হয়নি আমার। এবারে দেখে তার স্বাদ মেটালাম।
দেখতে দেখতে ঘড়ির কাটা প্রায় সাড়ে ৩টা। বলি খেলা দেখে সিআরবি’র পাশেই এম.এ. আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়াম চত্বরে সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক আয়োজিত বর্ষবরণ অনুষ্ঠান দেখে আমি আর জুনায়েদ কৌশিক রওনা দিলাম জিইসি’র উদ্দেশ্যে। জিইসি’র সোনালি রেস্টুরেন্টে ছিল নতুন বাংলা কমিউনিটি ব্লগ “কুহেলিকা”র শুভ উদ্ভোধনী অনুষ্ঠান (সম্ভবত এটিই চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক প্রথম বাংলা কমিউনিটি ব্লগ)।
ঘড়িতে সময় যখন ৬টা তখন কুহেলিকা’র অনুষ্ঠান শেষ হলো। অতঃপর সবার কাছ থেকে বিদায় নিয়ে বাড়ি ফিরলাম।
এবার দেখবো খুকু মণিদের কিছু ছবিঃ
সমতলে এক পিস।
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই এপ্রিল, ২০১২ রাত ১:০৬