এক মেঘলা বিকালে হাঁটতে হাঁটতে হঠাৎ তার মনে পড়লো প্রায় বিশ বছর আগে একদিন সন্ধ্যাবেলায়; যখন মাঠে দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি ছিলোনা, সে ক্লান্তিহীন কেঁদেছিলো। সে কান্নায় কোন খাদ ছিলোনা। যতোটা থাকে তার এই সময়কার হাসিতে।
হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হলো। রাস্তায় উপস্থিত সকলে ছাউনীর নিচে জায়গা করে নিতে হুড়োহুড়ি লাগিয়ে দিলো। সে কেবল একজন বৃদ্ধ লোককে দেখতে পেলো যে বৃষ্টির আঁচ নিজের গায়ে লাগাতে দ্বিধাবোধ করছেনা। লোকটি সবেমাত্র মসজিদ থেকে নামাজ পড়ে বেরিয়েছে। তার চোখেমুখে প্রশান্তির স্পষ্ট স্পর্শ লেগে আছে। বৃদ্ধ লোকটি তার মাথার টুপি একবার এদিক-ওদিক করে পুনরায় মাথায় পরে নিলো। সে আরো দেখলো লোকটি এই বৃষ্টির মধ্যেই নিষ্পৃহভাবে হেঁটে চলেছে। আকাশে তখন মেঘ গর্জন করছে।
অনেক, অনেকদিন পর সে মাঠটির কাছে গিয়ে দাঁড়ালো। বিশ বছর আগের সেই দিনের মতো আজকেও মাঠে কাউকে দেখা যাচ্ছেনা। সে মাঠটির একেবারে মাঝখানে গিয়ে দাঁড়ালো। দাঁড়িয়ে একবার চারপাশে তাকালো। মাঠের একেবারে কোনায় একটি বাদুড়কে মৃত পড়ে থাকতে দেখলো। তার মুখ কাঁপতে লাগলো। বিস্ফোরিত চোখে পানির কোন দেখা পাওয়া গেলোনা।
জীবনের শেষ প্রান্তে এসে সে যখন অন্ধ; একদিন নিজের ঘরের বারান্দার চেয়ারে বসে তার মনে পড়লো মসজিদ থেকে বেরিয়ে নিঃশঙ্ক চিত্তে বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা বৃদ্ধ লোকটির কথা। সে উপলব্ধি করলো নিজের দৃষ্টিশক্তির তীক্ষ্ণতার কারণে আজ সে অন্ধ।