রোজা এলেই দেখি ধনী লোকদের মধ্যে ইফতারের হিড়িক পরে যায় । নামী দামি রেস্টুরেন্ট এ বিভিন্ন অফার দেখি, আনলিমিটেড ইফতার ৫০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত । একটা মানুষ কি এতো টাকার ইফতার করতে পারে ? সেখানে হয়তো আপনাকে একটু ভিন্ন ভাবে খাবার পরিবেশন করবে । আপনাকে দামি প্লেটে বা দামী গ্লাসে খাবার দিবে । বিভিন্ন রকমের সালাদ সুপ দিবে কাঁটা চামচ দিবে ।কিন্তু এ গুলোয় লাভ কি বলেন । আপনি যখন একদিনের জন্য এই বিলাস বহুল জীবন যাপন করছে তখন হয়তো আপনার আমার কোন ভাই না খেয়ে আছে বা কেউ বিনা চিকিৎসায় ঘরে শুয়ে আছে । এতে কি লাভ ? বিপন্ন কি হচ্ছে না মানবতা ? আপনি যখন এতো টাকা খরচ করে রেস্টুরেন্ট এ বসছেন সেই সময় হয়তো কোন অসহায় মা তার সন্তানের মুখে একটা খেজুরও তুলে দিতে পারছে না । মানুষকে এই অসহায়ত্ব থেকে বের করে আনার কি কোন উপায় নেই ? আমরাই পারি পৃথিবীকে সুন্দর করে গড়ে তুলতে । আমার কাছে যা অতিরিক্ত আছে অন্যের কাছে হয়তো একটাও নেই । আমি কি পারিনা সেটি তাকে দান করতে ? আমারা কিন্তু ইচ্ছে করলেই পারি । একদিনের কয়েকজন লোকের অতিরিক্ত ইফতার খরচ যদি সবার মাঝে বিলিয়েদি তবে অনেক ভালো হয় । আমরা ১৬ কোটি মানুষ সবাই একদিন হয়তো একই ইফতার করি । নিজেদের ভিতর জাগিয়ে তুলি সম্প্রীতির বন্ধন ।
আপনি অন্যের জন্য বসে থেকেন না নিজেকে দিয়েই পরিবর্তন শুরু করুন ।
আসুন আমরা প্রতি রমজানে অন্তত একদিন হলেও প্রতিবেশীদের বাসায় ইফতার পাঠানোর রীতিটা চালু করি। এটা অনেক সুন্দর একটা প্রথা। একটা বাচিঁয়ে রাখি।
.
সবশেষে আরো একটা আবদার। বাংলাদেশে মুসলিম এবং বিধর্মীদের বিবাদ ইদানীং বেশ চরমে উঠেছে।সাম্প্রদায়িক হামলায় প্রতি নিয়ত লক্ষ করছি ।আমরা ভুলে যাই এই দেশ লালন , নজরুল , রবি ঠাকুরের দেশ ।এখানে আজানের সুর ঢাকের শব্দের সাথে যায় মিশে । এখানে কোন ভেদাভেদ থাকতে পারে না । এই দেয়ালটা আসুন পবিত্র রমজানে ভেঙ্গে ফেলি। ভিন্ন ধর্মানুসারী কলিগ-বন্ধু-প্রতিবেশীদের ডেকে একদিন ইফতার করান। তারাও দেখুক আমাদের খোদাভীতি। সারাদিন না খেয়ে থাকা সত্ত্বেও প্লেট ভর্তি ইফতার নিয়ে আমরা বসে থাকি — এই দৃশ্য দেখলে দেখবেন তারাও বেশ অনুপ্রাণিত হবে। যুক্তরাজ্যে সাড়া ফেলছে ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য ইফতার আয়োজন
.
ঢাকা বেশ ব্যস্ত নগরী। কাজের চাপেই আমাদের বাহিরে খেতে হয়। অন্তত একটা চেষ্টা করি, একদিন ইফতার থেকে ৫০ টাকা বাঁচিয়ে একটা রিকশাওয়ালাকে দেই। ১ কোটি মানুষের এই শহরে তাইলে প্রায় ৫০ কোটি টাকার খুশি বিলিয়ে দেয়া হবে। ঈদের দিন কারো বাসায় তাইলে আর সেমাইয়ের অভাব হবে না। জয় হোক মানবতা মনুসত্তের ও সংযমের । গড়ে উঠুক সম্ভাবনার বাংলাদেশ ।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে মে, ২০১৮ রাত ১০:১১