রোহিঙ্গাদের উপর অত্যাচার হচ্ছে এ কথা সত্য । কিন্তু অনেকে একে ১৯৭১ এর সাথে তুলনা করছে বলছে ভারত বাংলাদেশের ১.৫ কোটি শরণার্থীদের আশ্রায় দিয়েছিল আমরা কেন দিবনা । দেখেন ভারত অবেক বড় দেশ ওদের জনসংখ্যার ঘনত্ব ২৭৩ জন প্রতি বর্গ কিলোমিটারে সেখানে বাংলাদেশের ঘনত্ব ১২০০ জনের মত যা পৃথিবীর সব চেয়ে ঘনবসতি পূর্ণ দেশ । অন্য দিকে ভারত ভালভাবে জানত বাংলাদেশ স্বাধীন হলে এরা ফিরে যাবে । কিন্তু আমরা এ কথা জানি রোহিঙ্গাদের আশ্রায় দিলে মায়ানমার ওদের কখনো ফিরিয়ে নিবে না । কিন্তু রোহিঙ্গাদের এই অবস্থায় মায়ানমারের থাকও অসম্ভাব । ওখানে শিশুরা পর্যন্ত আক্রান্ত হচ্ছে । আমরা জোর করে ওদের মায়ানমারে ফিরিয়ে দিলে বিষয় তা অমানবিক হবে । এবং এই লোক গুলোর মৃত্যুর দায় আমাদের উপর পড়বে । আর সত্তব কথা বলতে কি রহিঙ্গারা বাঙ্গাদেশের মত দেশে এসে খাবে কি এদের জমি নেই ঘরবাড়ি নেই । জীবন বাচাতে এদের অধিকাংশই অপরাধ কাজে লিপ্ত হবে কারণ বাংলাদেশ একটি দরিদ্র দেশ এদের দায়িত্ব সারা জীবন রাষ্ট্র নিতে পারবে না । এর আগে যে সব রহিঙ্গারা এসেছে আমরা জানি এদের একটা অংশ ইয়বা ব্যাপ্সা চুরি ছিনতাই সহ বিভিন্ন অপরাধ মুলক করম কাণ্ডে জরিত ছিল ।আর এরা এসে যে আবার বৌদ্ধদের উপর অত্যাচার করবে না তার কোন গ্রান্তি নেই রামুর সময়ও অনেক রহিঙ্গা কে দেখেছি । তাই এখন উচিত বিশ্বের সব দেশের নেতাদের এক হয়ে এই সমস্যার সমাধান করা কারণ এটা শুধু মায়ানমারের সমস্যা না । আন্তর্জাতিক সমস্যা । সব দেশ এসে মায়ানমারের উপর চাপ সৃষ্টি করতে পারে । এতেই প্রকৃত সমাধান
আমরা চাই সব দেশের সাম্প্রদায়িক হামলার বিচার হোক তা হিন্দু হোক বা মুসলিমদের উপর হোক । কারণ পৃথিবী থেকে হানা হানি মুক্ত নিরাপদ করার দায়িত্ব আমাদের । নিচের লেখাটুকু ব্লগার Asif Mohiuddin এর কলম থেকে নেওয়া
মিয়ানমারে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন চলছে বেশ কয়েক বছর ধরেই। ২০১২ সালে এই নিয়ে অনেকবারই লিখেছি, কিন্তু এরপরেও বারবার বলা হয়েছে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতন নিয়ে আমি নাকি 'যথেষ্ট' পরিমাণ লিখি নি। যারা বলছেন, তাদের প্রফাইলে ঢুকলেই দেখতে পাচ্ছি, হিন্দুদের মালাউন বলে গালাগালি করে তাদের দেশ ছেড়ে ভারতে চলে যাওয়ার পরামর্শ তারা দিয়েছেন। রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ হিসেবে দেশের বৌদ্ধদের জবাই করার প্রত্যয়ও তারা ব্যক্ত করেছেন। সেই সাথে, নানা দেশের ছবি সংগ্রহ করে সেগুলোকে রোহিঙ্গাদের ওপর নির্যাতনের ছবি বলে ফেইসবুকে প্রচার করছেন।
তাই বলে কি আমি রোহিঙ্গাদের ওপর আক্রমণের সমর্থন করছি? না, তা তো করছি না। কিন্তু শুধুমাত্র প্যালেস্টাইনে কিংবা ভারতে কিংবা মিয়ানমারে মুসলিমের ওপর নির্যাতন হলে যেই হাহাকার শুনি, যেই কান্নাকাটি শুনি, সেই একই কান্নাকাটি হাহাকার হ্যাশট্যাগ অন্যান্য ক্ষেত্রেও দেখতে চাই। চাকমা মারমা সাওতালদের ওপর যখন বাঙালি সেটেলার মুসলমান আক্রমণ করে, বৌদ্ধ হিন্দুদের ওপর যখন পাশবিক নির্যাতন চালায়, বাঙলাদেশেই, সেসব ফেলে যখন প্যালেস্টাইনের মুসলিমদের নিয়ে দিনের পর দিন হ্যাশ ট্যাগ দেখি, তখন বিরক্ত হই। কিন্তু এই সংখ্যালঘু নির্যাতন থামাবার উপায় কী?
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় বা জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন থামাবার একমাত্র উপায় হচ্ছে, নিজের দেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতন স্বীকার করে নিয়ে সেটা সংশোধনের পথ খুঁজে বের করা। ধর্ম এবং জাতিসত্ত্বার ওপর ভিত্তি করে রাষ্ট্র যেন কাউকে অবহেলা না করে, কারোর অধিকার হরণ না করে, সেটা নিশ্চিত করা। এটা না করলে আপনি মিয়ানমারের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর নির্যাতনের প্রতিবাদ করার অধিকার অর্জন করেন না। আপনি যখনই বলবেন, বাঙলাদেশে হিন্দু বৌদ্ধ আদিবাসীরা খুব সুখে আছে, তখনই পৃথিবীর যেকোন দেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন বিষয়ে আপনার সকল বক্তব্যই আবর্জনায় পরিণত হবে। আপনি শুধু হাস্যরস সৃষ্টি করতেই পারেন। এটাকে হিপোক্রেসি বলে। আর হিপোক্রেটদের থেকে আর যাই হোক, প্রতিবাদ আশা করি না।
পৃথিবীতে সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নির্যাতনের ওপর ভিত্তি করে একটি তালিকা প্রকাশ করেছে এমনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। প্রথম দেশটিতে সবচাইতে ভয়াবহ সংখ্যালঘু নির্যাতন হয়, এভাবে ক্রমান্বয়ে। তালিকাটি নিম্নরূপঃ
১। সিরিয়া
২। সোমালিয়া
৩। সুদান
৪। আফগানিস্তান
৫। ইরাক
৬। ডি আর কঙ্গো
৭। পাকিস্তান
৮। মিয়ানমার
৯। বাঙলাদেশ
১০। ভারত
দশটি দেশের মধ্যে ডি আর কঙ্গো, মিয়ানমার এবং ভারত ছাড়া বাকি সাতটি দেশ মুসলমান অধ্যুষিত। অনেকগুলোর রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। এই তালিকার বাইরে যেসব ইসলামিক দেশ আছে, যেমন সৌদি আরব, সেখানে আসলে সংখ্যালঘু বলেই কিছু অবশিষ্ঠ নেই। অন্য কোন ধর্মের মানুষের প্রকাশ্য ধর্ম পালনের অধিকার পর্যন্ত নেই। মন্দির বা উপাসনালয় তৈরি করা তো দুরের কথা।
এবারে অন্যদের দোষারোপ না করে ভাবুন। ভাবা প্রাকটিস করুন।
আমরা কখনো সাম্প্রদায়িক হামলা চাই না । কারণ এগুলয় ধংস ছাড়া আর কিছুই হয়না । বাংলাদেশে আজ বৌদ্ধরা অত্যাচারিত হলে কাল মায়ানমারের মুসলিমরা অত্যাচারিত হবে । এর শেষ কোথায় ? আসুন আমরা সবাই মিলে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বিশ্বাসী হয়ে এগিয়ে যাই সামনের দিকে ।যেদিন আমরা চারিদিকে হিন্দু মুসলিম দেখা বাদ দিয়ে শুধু মানুষ দেখব সেদিনি ই আমরা প্রকৃত মানুষ হয়ে উঠতে পারবো । আসুন আমরা সবাই মিলে বাংলাদেশে একটা অসাম্প্রদায়িকতার চারা রোপণ করি যখনি একে উপড়ে ফেলা হবে তখনি বাংলাদেশের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে "
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে নভেম্বর, ২০১৬ দুপুর ২:৪৯