যাইহোক একটা গল্প দিয়ে শুরু করি সেদিন দেখলাম আমার তিন বন্ধু এয়াথিনা , সাব্বির আর সুব্রত প্রচুর ঝগড়া করছে । ওরা আমার ছোট বেলার বন্ধু এক সাথে বড় হইছি । আমি তখন কাছে গিয়ে জানতে পারি তারা আম নিয়ে ঝগড়া করছে । সাব্বির বলছে আমার গাছের আম খুবি সুন্দর ও মিষ্টি এয়াথিনা বলছে তার গাছের আম সবচেয়ে ভালো তোদের গাছের আম অনেক খারাপ । তখন সুব্রত বলছে আম শুধু মিষ্টি হলে হয় না তোদের গাছের আমে পোকা ভরা । আমার গাছের আমই সেরা । তখন আমি বললাম তোরা কি সবাই সবার গাছের আম খেয়ে দেখেছিস ওরা সবাই মাথা নাড়ল তখন আমি সবার গাছের আম খেয়ে দেখলাম । এখন কেবল আমি বলতে পারবো কোন গাছের আম ভালো । জন্মের পর থেকে আমরা যা কিছু পাই সব কিচুই নিজের যোগ্যতা অনুসারে পাই বা কোন কিছুর বিনিময়ে পাই । এক মাত্র ধর্মই আছে যা আমরা জন্ম সুত্রে প্রাপ্ত করি । পৃথিবীতে ছোট বড় মিলে প্রায় ১০০ টার মত ধর্ম আছে । তাদের প্রত্যেকেই বিশ্বাস করে তাদের ধর্মই ঠিক । তার মানে কি ৯৯% মানুষ ভুল ধর্ম নিয়ে চলে । কিন্তু বিষয়টা এমন হলে ভালো হতো না যে জন্মের পর সবাই সব ধর্মের বই পরবে তার পর তার বয়স যখন ১৮ হবে তখন সিধান্ত নিবে সে কি করবে । কারণ আমাদের দেশে ভোটার হইতে গেলেও ১৮ বছর বয়স লাগে ।অনেকে বলবে যে ধর্ম সবার শেষে এসেছে সেটাই ভালো এটা অনেক অংশে ঠিক আর অনেক অংশে ঠিক না কারণ প্রথমে যে জিনিষ টা তৈরি হয় তাতে ভেজাল কম থাকে আবার এটাও সত্য শেষের তাতে সুযোগ বেশি থাকে । এই যদি সত্য হয় এর পর যে ধর্ম আসবে সেটা কি বেশি ঠিক হবে ?
এই পর্যন্ত যত প্রান হানি হইছে বেশির ভাগ কিন্তু ধর্মীয় হানাহানি নিয়ে । এখনো জঙ্গি আই এস যা করছে তা মানবতা বিরুদ্ধ । আবার কেউ বলেন না যে তুমি কয়টা ধর্ম পড়ে এসে বলছ । আসলে কোন ধর্ম ভালো আর কোনটা খারাপ এটা বোঝার জন্য সব পড়া লাগে না দেখলেই বোঝা যায় । তরকারি ভালো হইছে না খারাপ হইছে এটা বলার জন্য তরকারি রান্না শেখা লাগে না খাইলেই বুঝা যায় । এখন আসি ধর্মের শুরুটা নিয়ে । সব ধর্মেই প্রায় শুরুর গল্প একই । হিন্দু ধর্মে বলা হইছে প্রথমে ঈশ্বর যে ২ জন মানুষ সৃষ্টি করে পৃথিবীতে পাঠান তাদের নাম মনু ও শতরূপা ইসলাম ও খ্রিস্টান রা বলে আদম ও হওয়া । তার পর এদের থেকেই পৃথিবীতে বংশ বৃদ্ধি হইছে । আমার প্রশ্ন হল যে আমরা সবাই জানি ভাই বোনের মধ্যে কোন শারীরিক সম্পর্ক হতে পারে না । এটা কোন ধর্মই সমারথন করে না । এটা পাপ তাহলে তখন বংশ বৃদ্ধি হইছিল কি ভাবে ? আবার কেউ বলেন না যে আগে মানুষের মধ্যে আচার আচারন ছিল না তখন করা যেত । তখন পাপ ছিল না ।
এইটা কেমন কথা কারণ পাপ কি ভালো তার বিচার সৃষ্টিকর্তাই করেন । তিনি তো তখন একাধিক পরিবার সৃষ্টি করে দিতে পারতেন তবে এই বিতর্ক হতো না তার কাছে তো কিছুই অসাম্ভাব না । না তিনি পরবর্তীতে বুঝেছিলেন এটা অন্যায় ছিল । আমরা আরবি বা সংস্কৃত তে লেখা কোন কিছুতে পা লাগলে ব্যাতিত হই । কারণ হিসেবে বলি এটা পবিত্র ভাষা । ভাষা কি ভাবে পবিত্র হয় । এগুলো তে তো গালাগালি ও লেখা থাকতে পারে । এক হুজুর আমাকে একদিন বলল নন মুসলিম রা কখনো বেহেশতে যেতে পারবে না । আমি বললাম গোলাম আজম ইয়াইয়া খান লাদেন যারা লক্ষ লক্ষ মানুষ হত্যা করেছে এরা কি বেহেশতে যেতে পারবে । তিনি বললেন এরা কোন না কোন সময় যেতে পারবে । আমি আবার প্রশ্ন করলাম তবে কি নিউটন, আইনস্টাইন জগদীশ চন্দ্র বসু , মাদার ত্রেসা সহ আরও অনেকে আছেন যারা না থাকলে লক্ষ লক্ষ মানুষ বিনা চিকিৎসায় মারা যেত বা পৃথিবী এতো উন্নতি হতো না । এরা কি বেহেস্তে যাবে । হুজুর আমাকে বললেন তুই নাস্তিক এরা কখনো বেহেস্তে যাবে না । আমার অবাক লাগলো যুক্তিতে না পেরে উঠে উনি আমাকে নাস্তিক বললেন । পাল্টা যুক্তি দিতে পারতেন । আর আমি এটাও মানতে পারলাম না যে এই লোক গুলো শুধু মাত্র তাদের ধর্মের জন্য বেহেস্তে যেতে পারবে না । আমিতো রবিন্দ্রনাথ কে পছন্দ করি সাচিন কে পছন্দ করি তবে এদের কি সারা জীবন নরকে থাকতে হবে ? তবে কি স্বর্গ নরক একটা সম্প্রদায়ের লোকের জন্য । দুনিয়াতে ভালো খারাপ কাজের কোন মূল্যায়ন নেই ।
পরবর্তী পর্ব গুলোতে আমি আরও বিস্তারিত আলোচনা করবো বিজ্ঞানের ব্যারথতা বা সফলতা মানবতা ও ধর্ম নিয়ে । আজ এই প্রশ্ন গুলোর যুক্তি পূর্ণ উত্তর আশা করছি । শুভ কামনা রইলো সবার প্রতি
সর্বশেষ এডিট : ০৫ ই ডিসেম্বর, ২০১৬ সকাল ১১:১৯