"সূর্যের আলো আমি একদম পছন্দ করি না,তুমি প্লিজ জানলাগুলো কালো পর্দা দিয়ে ঢেকে দাও।"
শিলার কথা শুনে অবাক হয়ে যায় শুভ্র।শিলা তো আগে এমন ছিলো না।হঠাৎ যে ওর কি হলো আর ভেবে পায় না শুভ্র।
যত দোষ ঐ গ্রামের বাড়ির।ঐখানে বেড়াতে যেয়েই যত ঝামেলা হলো।
প্রথমে তো শুভ্র যেতেই চায়নি পরে শিলার চাপাচাপিতে যেতে রাজি হলো।ওদের বাড়ির পুকুর দেখে শিলার সেকি উচ্ছাস।একদম বাচ্চাদের মত লাফালাফি করছিলো শিলা।
কিন্তু পর মুহুর্তেই চুপচাপ হয়ে গেলো শিলা,ও যে সাতার জানে না! তাহলে সাতার কাটবে কিভাবে?পুকুরে নামতে চাইলে নিশ্চই শুভ্র খুব রাগারাগি করবে।করাটাই স্বাভাবিক।শিলা কে চুপ থাকতে দেখে শুভ্র বলে উঠে "কি হলো তোমার?"
"আমার না এই পুকুরে খুব নামতে ইচ্ছা করছে।নামি?তুমি রাগ করবে না তো?" আদরমাখা কন্ঠে বলে শিলা।
"রাগ করবো কেন?অবশ্যই নামবে,আমি যখন থাকবো তখন।একা নামতে পারবে না"
তখনকার মত এইটুকু বলেই শিলাকে চুপ করায় শুভ্র।কিন্তু ও যদি জানত এই পুকুরেই ঘটে যাবে ওর জীবনের সবথেকে বড় অঘটন তাহলে হয়ত গ্রামের বাড়িতে আসতো না।
সেই দুপুরের কথা এখনও ভুলতে পারে না শুভ্র।দুপুরে খাওয়া দাওয়া করে ও বেড়িয়েছে ছোটবেলার বন্ধু সবুজের সাথে ঘুরতে।হঠৎ বাড়ি থেকে দৌড়ে আসে কাজের ছেলে রহিম।শিলা নাকি পুকুরে পরে গেছে!!!
তাড়াতাড়ি ছুটে কোনমতে পৌছাই বাড়িতে শুভ্র।পুকুর পাড়ে অনেক লোক।সবাই খুজছে শিলাকে।এখনো নাকি পাওয়া যায়নি।কারো কথায় কান না দিয়েই শুভ্র ঝাপিয়ে পড়ে পুকুরে।প্রায় আধাঘন্টা খোজার পর অবশেষে পাওয়া যায় শিলাকে।তারপর হসপিটাল,ডাক্তার দৌড়াদৌড়ি....
ওহ আর মনে করতে চায় না শুভ্র।।শিলা তো ভালোই আছে এখন।ঔ যে কি সুন্দর বসে টিভি দেখছে আর আইসক্রীম খাচ্ছে।কিন্তু ও যেন কেমন চুপচাপ হয়ে গেছে।কোথাও যেতে চায় না,আমাকেও যেতে দিতে চায় না।কি যে ঝামেলা হলো।আর সারাদিন আইসক্রীম খাবে,অন্য কিছুই খেতে চায় না।এ আবার কোন রোগ হলো,ভেবে পায় না শুভ্র।ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে,তাও যাবে না শিলা।
আজ শিলাকে অনেক বুঝিয়ে অফিসে এসেছে শুভ্র।অফিসে ঢুকতেই তনিমার সাথে দেখা।শুভ্র হেসে উঠে সাথে তনিমাও।তনিমা শুভ্রর কলেজ লাইফের ফ্রেন্ড।শুভ্র,তনিমা আর শিলা একসাথেই পড়ত কলেজে।পড়াশুনা শেষে শুভ্র আর তনিমা এক অফিসে জয়েন করে।মনে মনে যখন শুভ্রকে নিয়ে নতুন কিছু ভাবতে শুরু করে তনিমা তখনই খবর পায় শুভ্র বিয়ে করছে শিলা কে।বুকে পাথর চাপা দিয়ে সবকিছু সহজে মানে নেয় তনিমা,কিন্তু আজও ভুলতে পারেনি শুভ্রকে।
তনিমা বলে "কি রে এতদিন কোথায় ছিলি?অফিসে আসিস না কেন?বস একটু খেপে আছে তোর উপর"
শুভ্র বলে "আরে আর বলিস না,শিলার জানি কি হয়েছে।আমাকে বাসা থেকে বের হতে দেয় না আর নিজেও কোথাও যেতে চায় না"
শুভ্রর কথা শুনে বুক ধক করে উঠে তনিমার।এসব কি বলছে শুভ্র.!!
"শিলা??" নামটা কাপা কাপা কন্ঠে বলে তনিমা।
"হ্যা শিলা,আমার বউ।চিনিস না যেন?" শুভ্রর নির্লিপ্ত জবাব।
তনিমার মুখে কথা নাই।হা করে শুধু তাকিয়েই থাকে শুভ্রর দিকে।আর ভাবে শুভ্রর কী সত্যিই মাথা খারাপটা খারাপ হয়ে গেলো নাকি।শুভ্র তনিমাকে চুপ থাকতে দেখে নিজের কেবিনের দিকে পা বাড়ায়,অফিস থেকে তাড়াতাড়ি বাসায় যেতে হবে,একা একা শিলা বাসায় কি করছে কে জানে।
বিকালে অফিস থেকে বের হওয়ার মুখে আবার তনিমার সাথে দেখা হয় শুভ্রর।
"কি রে এত তাড়াতাড়ি চলে যাচ্ছিস যে আজ?" তনিমা জিগেস করে শুভ্রকে।
"হ্যা রে একটু তাড়াতাড়ি যাচ্ছি,শিলা যে বাসায় একা।" বলেই চলে যায় শুভ্র।অজানা আতংকে হাত পা ঠান্ডা হয়ে আসে তনিমার।শিলা মানে ওদের শিলা,শুভ্র আর তনিমার বান্ধবী শিলা পানিতে ডুবে মারা গেছে আজ ২ মাস হলো !!!
বাসায় পৌছে সেই পুরানো পরিবেশ দেখে শুভ্র।শিলা সব জানলা কালো পর্দা দিয়ে ঢেকে মোমবাতি জালিয়ে রেখেছে।আচ্ছা যন্ত্রনা শুরু হলো তো,মনে মনে ভাবে শুভ্র কিন্তু কিছু বলে না।
"এত দেরি করে ফিরলে কেন?" আহলাদী কন্ঠে জিগেস করে শিলা।
"দেরি করলাম কোথায়,প্রতিদিন যে সময় আসি তার থেকে তাড়িতাড়ি এসেছি আজ,শুধু তোমার জন্য"শিলার গাল টিপে দিয়ে বলে শুভ্র।
"তুমি আর অফিসে যেও না প্লিজ,আমার বাসায় একা থাকতে ভয় লাগে।ওহ আর শোনো আরো আইসক্রীম কিনে নিয়ে এসো আমার ক্ষুধা পেয়েছে"
"সে কী।কাল না ২ লিটারের ২টা বক্স আনলাম,সব শেস?"
"হ্যা শেস,তুমি যাও তাড়াতাড়ি নিয়ে এসো।"
আইসক্রীম কিনতে বের হয় শুভ্র।দোকানদার ওর পরিচিত।সে জিগেস করেই বসে "ভাইজান বাসায় তো আপনি একা।এত আইসক্রীম কেমনে খান?"
"একা কোথায়?বেসি কথা না বলে তাড়াতাড়ি দাও"রাগেই কথাটা বলে শুভ্র।
সবার যেন হঠাৎ করে কি হয়েছে।উদ্ভট কথা বলে উঠে।জানে বাসায় শিলা তারপরও বলে একা মানুস আমি।
বাসায় পৌছানোর আগেই তনিমার ফোন মোবাইলে।জিগেস করে কি করছে শুভ্র।
খুব বিরক্তি নিয়ে উত্তর দেয় শুভ্র "শিলার জন্য আইসক্রীম কিনে বাসায় যাচ্ছি,রাখি পরে কথা হবে" বলেই লাইন কেটে নেয়।
তনিমা হতবাক হয়ে যায় শুভ্রর কথা শুনে।শুভ্র এসব কি বলছে!!
৩-৪ ঘন্টা পর আবার ফোন দেয় তনিমা শুভ্রকে।এখনো ছেলেটা কে নিয়ে ভাবে তনিমা।ওর সাথে বিয়ে হয়নি তো কি হয়েছে।ও সবসময় চায় ভালো এবং সুস্থ থাকুক শুভ্র।এবার বিরক্তি প্রকাশ করেই ফেলে শুভ্র "তুই এতবার ফোন করছিস কেন আজ?"
শান্তভাবেই জবাব দেয় তনিমা "তুই ভালো নেই জানি আমি,তাই তোর খোজ নিচ্ছিলাম।"
''আমি ভালো আছি,শিলার সাথে টিভি দেখছি"
"শুভ্র তুই কি সব জেনেও না জানার ভাব করছিস?বুঝতে পারছি তোর অনেক খারাপ লাগে শিলার জন্য কিন্তু তাই বলে এত পাগলামি শুরু করবি তুই?শিলা নেই আজ প্রায় ৩মাস!!"
"শিলা নেই তোকে কে বলেছে?ফাজলামি করবি না।"
"তুই বলছিস শিলা আছে??তাহলে আমার সাথে কথা বলছে না কেন?ফোনটা দে ওকে,আমি কথা বলি"
শুভ্র ফোনটা শিলার দিকে বাড়িয়ে দেয়।শিলা ফোনটা নিয়েই লাইন কেটে দেয়।অবাক হয় শুভ্র।তনিমা ওদের সবথেকে কাছের বন্ধু আর তার সাথেও শিলা কথা বলতে চায় না আজ কাল।
"তুমি লাইনটা কেটে দিলে কেন?কথা কেন বললে না তনিমার সাথে??"
"কারণ আমি জানি ও আমাকে আর আগের মত পছন্দ করে না কারণ তুমি আমাকে ভালোবাসো আর তনিমা তোমাকে"
"কি আজেবাজে কথা বলছো তুমি শিলা।তনিমা এমন মেয়ে না।ও আমাকে নিয়ে এমন কিছুই ভাবে না।"
"এতই ভালো যখন ও তাহলে আমাকে কেন বিয়ে করলে।ওকে বিয়ে করলেই পারতে!!" বলে অন্যঘরে চলে যায় শিলা।
তনিমা গাড়িতে উঠে গ্লাস উঠিয়ে দিলো।শুভ্র লাইন কেটে দেয়ার পর থেকে ওর নাম্বারে অনেকবার ডায়াল করে না পেয়ে অস্থির হয়ে আছে সে।বেশ অনুভব করছে খারাপ কিছু একটা হচ্ছে শুভ্রর সাথে।তাই রওনা দিয়েছে শুভ্রকে দেখতে।
৪-৫বার কলিংবেল বাজার পর শুভ্র দরজা খোলে।
তনিমা ঘরে ঢুকে চারপাশে তাকায়।কি অবস্থা করে রেখেছে শুভ্র বাসাটার।আর একি জানলায় কালো পর্দা ঝুলানো কেন??ওকে এভাবে ঘরের চারপাশে এভাবে তাকাতে দেখে শুভ্র জিগেস করে "কি দেখছিস?"
"কালো পর্দা দিয়েছিস কেন জানালায়?আর এত অন্ধকার কেন ভিতরে?পর্দা সরা আলো আসতে দে" বলে তনিমা নিজেই পর্দা সরিয়ে দেয়।সূর্যালোকে ঝলমল করে উঠে ঘরটা।
"কি করছিস তুই।আমি এখন আর শিলাকে দেখতে পাবো না।আলো থাকলে ও যে কোথায় লুকিয়ে পড়ে আমি আর খুজে পাই না ওকে।"
"শুভ্র শিলা নেই।শিলা মারা গেছে।কেন বুঝতে পারছিস না তুই"
"আজে বাজে কথা বলবি না,শিলা মারা গেলে একটু আগে আমার সাথে টিভি দেখছিলো কে?আর এখন রাগ করে ঐ ঘরে বসে আছে কে?শিলা আছে।"
"তাহলে চল ঐঘরে,দেখি কোথায় শিলা।"
ঐঘরে ঢুকে এদিক ওদিক তাকায় শুভ্র।কোথায় গেল শিলা।এই তো একটু আগেও এখানে বসে ছিলো মুখ ঘুরিয়ে।বেলে বাজার শব্দে উঠে যায় শুভ্র দরজা খুলতে।ওহ বুঝেছে।তনিমা জানলা থেকে কালো পর্দা সরিয়ে দিয়েছে বলেই শিলা কোথাও লুকিয়ে আছে।ভীষন রাগ লাগে শুভ্রর তনিমার উপর।এত বলার পরেও কেন শুনলো না ও।
""কোথায় শিলা,দেখা আমাকে" শুভ্রকে চুপ করে দাড়িয়ে থাকেতে দেখে বলে তনিমা।
"তুই কেন কালো পর্দাটা সরিয়ে দিলি?শিলা সেজন্য সামনে আসছে না।তুই যা এখন,আর কোনদিন আমার বাসায় আসবি না।শিলাকে দেখতে হবে না তোর।যা এখনই চলে না।"
বলে শুভ্র সত্যি সত্যি তনিমাকে বাসা থেকে বের করে দরজা লাগিয়ে দি্যে ঘুরতেই দেখে শিলা দাড়িয়ে আছে পিছনে।হাসছে ওর দিকে তাকিয়ে।শুভ্রও হেসে ফেলে।
বাসায় ফিরে রকিং চেয়ারে বসে চুপচাপ কাদছে তনিমা।কি করবে ঠিক বুঝতে পারছে না।চোখের সামনে দেখছে শুভ্রর অবস্থা।কিন্তু কি বা করার আছে ওর।একবার ভাবলো বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ফেলবে শুভ্রকে।বিয়ে হলে ওকে এই বাসায় এনে রাখবে কিছুদিন,তারপর সব ঠিক করে ফেলবে তনিমা ধীরে ধীরে।কিন্তু শুভ্রর মানসিক অবস্থা এতই খারাপ যে তনিমা বিয়ের কথা বললে রি-একশন কেমন হবে বলা যাচ্ছে না...কূল কিনারা খুজে না পেয়ে চুপচাপ কাদতেই থাকে তনিমা।
"তুমি তনিমার সামনে কেন আসলে না?জানো ও কি বলছিলো আমাকে?বলছিলো তুমি নাকি মারা গেছো!!আমি এতবার বললাম বুঝতে চাইলো না।বললো তোমার সাথে দেখে করবে।কিন্তু তুমি তো আসলে না।কোথায় যে চলে যাও মাঝে মাঝে,আমার সাথেও কথা বলো না।" অভিমান করে কথাগুলো বলছিলো শুভ্র শিলা কে।
শান্তভাবে শিলা উত্তর দিলো "আমি তনিমার সাথে কথা বলবো না।ওকে আমি কখনোই সফল হতে দিবো না।"
শেষের লাইনটা গম্ভীর স্বরে উচ্চারন করলো শিলা।
"কি বলছো বুঝতে পারছি না"
অন্যমনষ্ক হয়ে শিলা বললো "জানো তুমি তনিমা এখন কি ভাবছে,ও ভাবছে তোমাকে বিয়ে করে ওর বাসায় নিয়ে যাবে।কিন্তু আমি তা কখনোই হতে দিবো না।কখনোই দিবো না"
এক দৃষ্টিতে শিলা তাকিয়ে আছে সিলিং ফ্যানের দিকে।আর ওর দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে শুভ্র!!
৭ দিন পরের ঘটনা।তনিমাকে অফিসের বস ডেকে পাঠালেন তার কেবিনে।
"তনিমা বসেন।আপনার সাথে শুভ্রর ব্যাপারে আমার কিছু কথা আছে।"
"জ্বি স্যার বলুন"
"৭ দিন হলো শুভ্র অফিসে আসছে না।গত মাসেও সে এমন বহুবার করেছে।তার স্ত্রী মারা যাওয়ার কিছুদিন তাকে আমি ছাড় দিয়েছি,কিন্তু এখন আমার পক্ষে আর কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।আপনি শুভ্রর বান্ধবী তাই আপনাকে বলছি শুভ্রকে আর অফিসে রাখা সম্ভব না।আপনি কথাটা তাকে জানিয়ে দিবেন আশা করছি"
এমনটা হবে তা আগেই বুঝতে পেরেছিলো তনিমা।তাই কিছু না বলে বের হয়ে গেলো বসের কেবিন থেকে।এই ৭দিন তনিমার সাথেও যোগাযোগ করেনি শুভ্র।তনিমাও খোজ করেনি শুভ্রর।কিছুদিন সময় দিতে চেয়েছিলো ওকে।আজ ভাবলো একটা ফোন দিবে অথবা বাসায় যাবে।
শুভ্র ফোন ধরছে না দেখে ওর বাসায় গেলো তনিমা।বেল বাজার পরও দরজা খুলছে না দেখে দরজার নভটা ঘুরালো তনিমা।খুলে গেলো দরজা আর সাথে সাথেই বোটকা গন্ধে বমি এসে গেলো তনিমার।নাক চেপে ভিতরে ঢুকলো সে।
ঘর যথারীতি অন্ধকার।শুভ্র বলে ডাকলো তনিমা কয়েকবার।কোন সাড়া শব্দ নেই কারো।বেডরুমের দিকে আগালো ও। এইরুমে গন্ধ মনে হচ্ছে আরো বেশি।তনিমা অনেক কষ্ঠে বমি আটকে রেখে সুইচবোর্ড এ হাত বাড়ালো।লাইট জ্বালাতেই আকাশ বাতাস কাপিয়ে চিৎকার দিয়ে উঠলো সে।সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলছে শুভ্র।মুখ থেকে রক্ত বের হয়ে শুকিয়ে লেগে আছে চোয়াল আর গলায়।খোলা চোখদুটো এত বীভৎস করে রেখেছে লাশটাকে যে তনিমা বেশিক্ষন সহ্য করতে পারলো না।২য় বার চিৎকার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেললো।
জ্ঞান যখন ফিরলো তখন তনিমা নিজেকে আবিষ্কার করলো হাসপাতালের বেডে।পাশে তার বাবা মা।মার কাছ থেকে সব শুনলো তনিমা।শুভ্রর পাশের ফ্লাটের লোকটা তনিমার চিৎকার শুনে আসে এবং শুভ্রর ঝুলন্ত লাশ আর মেঝেতে পড়ে থাকা তনিমাকে উদ্ধার করে।সশব্দে কেদে উঠে তনিমা।শুভ্রকে বাচাতে পারলো না ও।বাস্তবকে মেনে নিতে কষ্ট হয় ওর।
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরে নিজের রুমের দিকে পা বাড়ায় তনিমা।রুমে ঢুকে হকচকিয়ে যায় ওর রকিং চেয়ারে একটা ছেলে বসে দুলছে।তনিমাকে দেখে মুখ তুলে তাকায় ছেলেটা।আতকে উঠে তনিমা।
শুভ্র!!!
রকিং চেয়ারে শুভ্র বসে আছে।তনিমার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো
"সূর্যের আলো আমি একদম পছন্দ করি না,তুই প্লিজ জানলাগুলো কালো পর্দা দিয়ে ঢেকে দে তো।"
শুভ্রর কথা শুনে অবাক হয়ে যায় তনিমা।ভয় পায় না একটুও।শুধু ভাবে হঠাৎ শুভ্রর কি হলো।ও তো আগে এমন ছিলো না....
সর্বশেষ এডিট : ১৯ শে অক্টোবর, ২০১১ দুপুর ১২:১৮