রঙচড়া মেকাপের আড়ালে
অশ্রভেজা চোখ আরশীতে দেখতে দেখতে
একদিন ক্লান্ত হয়ে নিজেই বেরিয়ে পড়লাম সত্য সুখের সন্ধানে ;
সুখ ! এ এক মরিচীকাসদৃশ শব্দ ।
কেউ তার সন্ধান পায় মার্শিডিজ হাকিয়ে ,
কেউবা পায় অট্টালিকায় ঘুমিয়ে ।
আমার মতোন নগন্য মধ্যবিত্ত সুখ পেতে হাজির হয় ;
দু’বাহু বড়িয়ে কেবল প্রকৃতির কাছ ।
আহা ! বিধাতা ...
কী অপরূপ স্বাজে সাজিয়েছো তুমি ধরনী ,
আমার হাজার টাকার রেভলন ,
ডোভের মিষ্টি সুবাস আর জেসমিনের ঠান্ডা পরশ
হার মেনে গেল নিমিষে ।
আমি যদি পাখি হতে পারতাম ;
তবে উড়ে বেড়াতাম ভূমধ্যসাগরের নীল ছুঁয়ে ।
যদি মেঘ হতে পারতাম ;
তবে বৃষ্টি হয়ে ঝরে পরতাম নায়াগ্রার জলে ।
আমি নারী হয়ে জন্মেছি ,
বছরের তিনশত পয়ষট্টি দিন আমাকে কড়ায় গন্ডায়
হিসেব করে রাখতে হয় ।
দাড়িপাল্লার এক পাশ যদি একটু ভারি ঠেকে
তবে তীব্রবানে জবাব চায় কৌফিয়ত ।
ছোট বেলায় পিতা ,আর বড় বেলায় স্বামী ,
আর ও দু'টো পথ যারা মারিয়ে এসেছে তাদের জন্যে
সমাজ পতিরা খুব মুখিয়ে থাকেন ।
আমি যতোই নিজের খাই , নিজের পরি ;
কোন এক অজ্ঞাত কারনে আমি অন্যের কাছে জিম্মি ।
মুক্ত বলে আদৌ কি কোন শব্দ আছে অভিধানে ?
আদতে খাঁচার পাখিকে তুমি যতোই বলে দাও উড়াল দিতে ,
বেলা শেষে সে ঠিকঠিক নিড়ে ফিরতে চায়
যতোই সেখানে শেকল পড়ানো থাক ।
এ হলো অভ্যাস ;
নারীরা জন্মের পর থেকে এক অদৃশ্য মায়ায় নিজেকে বেঁধে ফেলেছে ।
সে মায়া সংসারের ।
কেউ হয়তো ছুটে যেতে পারে আবার কেউ কেউ চেষ্টা করে মাত্র ;
কিন্তু বেলা শেষে দু’পা সামনে বাড়িয়ে দিয়ে বলে – নাও ,শেকল পরাও ।
প্রকৃতির কাছে আত্মসমর্পণ করা আর হয়ে ওঠে না ,
নিজস্ব কারাবাসেই লিখে যেতে চায় তার আপন পরিচয় ।।