somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আমাদের কপাল আর ড্যডির পোলাদের কপাল (নির্মম হইলেও কথা সত্য)

১৫ ই নভেম্বর, ২০১১ বিকাল ৩:৩০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :











খরগোশ পড়ত প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে আর কচ্ছপ পড়ত পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে





এক দেশে ছিল এক খরগোশ আর এক ছিল কচ্ছপ। খরগোশ পড়ত দেশের সবচেয়ে বড় প্রাইভেট ইউনিভার্সিটিতে আর কচ্ছপ পড়ত পাবলিক ইউনিভার্সিটিতে। খরগোশ তো দামি ইউনিভার্সিটিতে পড়ে বেজায় দেমাগ। একদিন কচ্ছপের সাথে তার দেখা। “ভাই তোমরা পড় গরীব ইউনিভার্সিটিতে আর আমরা পড়ি বড়লোক ইউনিভার্সিটিতে।” খরগোশ বলল “আমাদের একটা কোর্সের এক ক্রেডিটের খরচ তোম...াদের ৮টা সেমিস্টারের খরচের সমান। তাছাড়া আমরা ৩ বছর ৮ মাসের মধ্যেই পাশ করে বের হয়ে যাই আর তোমরা পড় অনন্তকাল”।





কথা শুনে কচ্ছপের আতে ঘা লাগল। ছোটবেলা থেকেই সে ভালো স্টুডেন্ট হিসেবে পরিচিত। অনেক পরিশ্রম করে এই ভার্সিটিতে ভর্তি হয় সে। তার আত্মীয় স্বজনরা তাদের ছোট বাচ্চাদের বলে “দেখো পড়াশুনা করলে কচ্ছপ ভাইয়ার মত ইঞ্জিনিয়ার হবা”। “ঠিক আছে দেখা যাক কে আগে পাশ করে বের হয়” কচ্ছপ চ্যালেঞ্জ করে “তারপর কে আগে চাকরি তে ঢুকে”।





খরগোশ তো হেসেই খুন, “আমি যে তোমার আগে বের হব এটা নিশ্চিত” খরগোশ হাশতে হাশতে বলে “ঠিক আসে লাগলাম চ্যালেঞ্জ”।





তারপর থেকে কচ্ছপ পড়াশুনায় আরো মন দেয়। প্রতিদিন টিউশনি থেকে ক্লান্ত হয়ে আসার পর ও রাত জেগে পড়াশুনা করে। ব্যাকলগের ভয়ে করে যায় অক্লান্ত পরিশ্রম। অপর দিকে বড়লোকের সন্তান খরগোশ আগের মতই গার্লফ্রেন্ড নিয়ে ব্যস্ত। মাসে মাসে গার্লফ্রেন্ড আর গাড়ি চেঞ্জ, নর্মাল পার্টি, ডিজে পার্টি, বেড়ে চলল জ্যামিতিক হারে। এতকিছু করার পর পড়াশুনা করার টাইম কই? তাই ডিসিশন নিল সেমিস্টার ড্রপের। “আরে কাঙ্গালের পোলা কচ্ছপ বাইর হইতে বহুত দেরি এখন একটু মউজ-মাস্তি কইরা নেই” ভাবলো সে।





৪.৫ বছর পর





“হ্যালো দোস্ত আমার তো ফাইনাল প্রজেক্টের কাজ শেষ” ফোন করে বলল কচ্ছপ ” এখন চাকরি পাইলেই হয়।





খরগোশ শুনে তো আকাশ থেকে পড়ল “হায়!হায়!আমার তো আরো ৪টা সেমিস্টার বাকি” মনে মনে বলল সে। কিছু না বলেই খট করে ফোন কেটে দিল সে। অনেকক্ষন ভাবল সে।





কি ভাবছেন? Slow and Steady wins The Race ??? ? ?

বাকিটুকু পড়ুন।





খরগোশ শুনে তো আকাশ থেকে পড়ল “হায়!হায়!আমার তো আরো ৪টা সেমিস্টার বাকি” মনে মনে বলল সে। কিছু না বলেই খট করে ফোন কেটে দিল সে। অনেকক্ষন ভাবল সে।





তারপর ড্যাডি কে ফোন দিল। “ড্যাডি, জানো কচ্ছপের পড়াশুনা শেষ। আর আমি এখন পড়তেসি। ড্যাডী, কচ্ছপের কোন গার্লফ্রেন্ড নাই। আর আমি সেঞ্চুরি কইরা ফেলাইসি। ও চলে ভার্সিটির বাসে আর আমি স্পোর্টস কারে। ওদের হলে পারসোনাল টয়লেট পর্যন্ত নাই। ড্যাডি ও যদি চাকরি করে আমার স্ট্যাটাস থাকবে??”





বাবা খরগোশ বলল “ও এই ঘটনা?? কাল থেকে তুমি আমার সাথে অফিসে যাবা। ম্যানেজারকে ছাটাই করে দিচ্ছি।”





খরগোশের সাথে কথা বলেই কচ্ছপ লগ ইন করে বিডিজবস ডট কমে। আর খরগোশ ছুটে শপিং এ। আরে কাল থেকে অফিসে যেতে হবে না!!!





উপদেশঃ আপনি যত ভালো স্টুডেন্টই হন না কেন ড্যাডির ছেলেদের ছাপিয়ে যেতে পারবেন না।
..............................................................................
(২)
শহর থেকে এক স্যুট-টাই পরিহিত ভদ্রলোক গ্রামে এলেন। তাকে আসতে দেখে কৃষকটা হাতের কাজ ফেলে তাকে দেখতে লাগল। আসলেই দেখার মতো ছিলেন তিনি। সাথে ছিল তার পিএস।

গ্রামের আসার কয়েকদিনের মাঝেই তিনি সাড়া গ্রামে আলোড়ন ফেলে দিলেন। কারণ তিনি অনেক বানর কিনছেন। তিনি গ্রামের সব কৃষকদের ডেকে বললেন, "শোন, আমার কিছু বানর লাগবে। প্রতি বানর ৫০ টাকা করে দেব।"
...
কৃষকটা ভাবল, এক বানরে ৫০ টাকা!! সৌভাগ্যক্রমে/ র্দুভাগ্যক্রমে সেই গ্রামে বানরের অভাব ছিল না। সবাই কাজ ফেলে বানর ধরায় লেগে গেল। এবং প্রত্যেকে যথেষ্ট পরিমানে বানর ধরে নিয়ে এল। ভদ্রলোকের এক জবান, সবাইকে পাই পাই করে দাম বুঝিয়ে দিলেন। প্রত্যেকে খুশি মনে ধন্যবাদ দিতে দিতে বাড়ি চলে গেল।

ক'দিন পরে তিনি আবার সবাইকে ডাকলেন। তার আরো বানর চাই। এবং এবার বানরের দাম আরো বেশি। "বুঝলে, বানরের খুব চাহিদা, আমার আরো কিছু বানর দরকার। এবার প্রতি বানর ৭০ টাকা করে দেব।" গ্রামের কৃষকরা সবাই উত্তেজিত হয়ে উঠল টাকার গন্ধ পেয়ে। সবাই অনেক অনেক বানর ধরে নিয়ে এল। এবং খুশি মনে যথার্থ দাম বুঝে নিয়ে চলে গেল।

ক'দিনের মাথায় আবার ডাক পড়ল। আরো বানর চাই সাহেবের। এবার বানরের দাম আরো বাড়ানো হলো, প্রতি বানর ১০০ টাকা। কিন্তু কৃষকরা একটু বিপদে পড়ে গেল, গ্রামের সব বানর তো এরিমাঝে ধরা হয়ে গেছে। তারা আশে পাশের সাত গ্রাম খুজে গুটি কয়েক বানর পেল। তাই সাহেবের কাছে বেচে দিল। ভাল দাম পেল তারা।

এরপর একদিন সাহেব শহরে গেলেন। যাবার আগে কৃষকদের বলে গেলেন, "শুন, জরুরী কাজে শহরে যাচ্ছি, বানরের খুব চাহিদা। সেটা নিয়ে কথা বলতেই যাচ্ছি। এসেই আমার অনেক অনেক বানর চাই। দামও বাড়িয়ে দেব। ১৫০ টাকা প্রতি বানর। সবাই বানর খুঁজতে লেগে যাও।" সাহেব তার পিএস কে রেখেই শহরে গেলেন।

এবার কৃষকদের মাথায় হাত। আশেপাশের সাতগ্রামের সব বানর এরমাঝেই ধরা হয়েগেছে। এখন বানর পায় কই? পিএস তাদের সবার সাহায্যে এগিয়ে এলেন। বললেন, "শোনেন ভাইয়েরা, স্যারের বানরগুলো তো এখনো গ্রামেই আছে। এক কাজ করা যায়। স্যার তো ১৫০ করে কিনবেন.... আমি আপনাদের কাছে ১৩০ টাকা করে প্রতিটা বানর বিক্রি করি। আপনারা স‌্যারের কাছে ১৫০ করে বেচবেন। প্রতি বানরে ২০ টাকা করে লাভ থাকবে আপনাদের।"

কৃষকরা আনন্দে আক্ষরিক অর্থেই লাফ দিলো। সবাই হুড়মুড় করে ১৩০ টাকা করে বানর কিনতে লাগল। ৫ মিনিটেই সব বানর বিক্রি শেষ। সবাই মনের আনন্দে বানর গুলোকে তাদের বাড়িতে নিয়ে গেল। কলা, দুধ খেতে দিল। বানরের কদর দেখে কৃষকদের বউ ছেলেরা হিংসেয় জ্বলতে লাগল।

এদিকে স্যার তো আর শহর থেকে ফিরেন না। ক'দিন পর জানা গেল, স্যারের পিএস এরও পাত্তা পাওয়া যাচ্ছে না।

কৃষকরা এখন কৃষি কাজ বাদ দিয়ে ১৩০ টাকা দামের বানর বুকে আগলে আছেন।







[সংগ্রহকৃত]
১১টি মন্তব্য ৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×