গত ৩ বছরে রাজু নিজেকে অনেকটা পরিবর্তন করে ফেলেছে। আগে যেমন লাইফস্টাইল ছিলো সেখান থেকে নিজের ভবিষ্যতকে আলোর পথ দেখিয়েছে। মোটামুটি একটা প্রত্যাবর্তন বলা যায়। আমি কিংবা আমরা কয়েকজন একদম কাছে থেকে যারা রাজুকে দেখেছি তারা খুব অবাক না হলেও বাইরের মানুষের কাছে রাজুর এই পরিবর্তন বেশ অবাক করার মত। এখন ও যে পথে আছে, পাশ দিয়ে হেঁটে গেলও অনেক ওকে চিনতে পারে না। তবে এর জন্যে অনেক কষ্ট পোহাতে হয়েছে, অনেক সম্পর্ক ত্যাগ করতে হয়েছে। নিজেকে বারবার মোটিভেটেড করতে হয়েছে নিজেকেই। তবে সব কিছুর পেছনে ছিলো কিছু সম্পর্ক।
আমি রাজুকে ভালো করে চিনি মোটামুটি ৪ বছর ধরে। এক রুমে থাকতাম। কিন্তু আমার সাথে বন্ধুত্ব কিংবা সম্পর্ক ছিলো চলনশই টাইপ। যদি নিজের সম্পর্কে বলতে চাই তাহলে এভাবেই বলি, আমি বিশ্যবিদ্যালয় লাইফে যে খুব বেশি পড়ালেখা করতাম এও না আবার খুব যে আড্ডাবাজ ছিলাম এও না। চলত নিজের মত, দিনে দু'বেলা বিছানায় শুয়ে নিজেকে পরিবর্তনের বিশাল বিশাল থিওরী বানাতাম, কিন্তু এপ্লিকেশন করা হত না। যাই হোক, হলে ওঠার সময় রাজুর সাথে উঠলাম। আগে থেকে পরিচিত ক্লাসমেট হিসেবে।
কয়েকদিন পর হিশেব করে যা দেখতে পেলাম, খুব সকালে ঘুম থেকে উঠেই দেখতাম পরে পরে ঘুমাছে। সপ্তাহের চাঁদ রাতে বন্ধুদের সাথে নিজের লেভেল বাড়াতে লাল নীল পানীয়, ঘুম থেকে উঠে বিড়িতে ফুক দিয়ে টয়লেটে, ১ম ক্লাস মিস দিয়ে ক্লাসে যাওয়া, আর সন্ধ্যা থেকে মাঝরাত এমনিতেই বন্ধুদের সাথে বাইরে থাকা।
এত কিছুর মাঝেও রাজুর মাঝরাতে ফিরে ঘন্টাখানেক ফোনে বিড় বিড় করে কথা বলত। মাঝে মাঝে জোড়ে গলায় শুনতে পেতাম কিছু। তবে সবচেয়ে বেশি কমন কথা ছিলো, রাজু বলত ''দেখো, তোমার কথা আমি ভুলব কেন? মানুষ কি সারাদিন নিজের ক্লাস, ল্যাব থাকে আর সব ক্লান্তি দূর করতেই তো তোমার সাথে এই রাতে ফোন দেই।''
অভিযোগ কি ব্যাপারে তা জানিনা। তবে রাজু ওর প্রেমিকার ব্যাপারে কোন দিন কিছু না বললেও একদিন সময়ের প্রয়োজনেই অনেক কিছু জেনে গেলাম।
একদিন বিছানায় শুয়ে শুয়ে পা নাড়াচ্ছিলাম। পেটে প্রচুর ক্ষুধা। এদিকে দুপুর গড়িয়ে যাচ্ছে। রাজু বলে গেছে না খেতে, ও খাবার নিয়ে আসবে। আমি অপেক্ষায় আছি। বেশ কিছু ক্ষন পর বড় বড় বাটিতে গুরুর ভুনা মাংস আর ভাত নিয়ে আসল। "কিরে কি এইসব? কোথায় থেকে নিয়ে আসলি?", "আরে এটাই তো লোকাল প্রেমিকা থাকার মজা। মাঝে মাঝে বেশ ভালো খাওয়া দাওয়া হয়।" বেশ ঢেকুর তুলে খাওয়া শেষ করে রাজু আমাকে বলল, ''আমার টিঊশনি যেতে হবে, অনেক কস্টে সময় মিলিয়েছি, তুই এগুলো ধুয়ে দে কোনভাবে, নীতু ল্যাব শেষ করে বের হলে ওকে দিয়ে দিবি।"
-নীতুকে? ও তোর প্রেমিকা? কিন্তু আমি তো চিনি না?
-আরে বা* , ওই জুনিয়র মেয়েটাকে চিনিস না? ওত হাইফাই সাজুগুজু করে না, কিন্তু ভেতরে একটা ক্লাসিক ক্লাসিক ভাব আছে ওই মেয়েটা।
-যদিও চিনলাম না, কোথায় থাকবে বলেছে কিছু?
- তা চিনবা কেন? চিনবা তো শুধু লাবিবাকে।
-কি যে বলিস না!
-যাই হোক, ও ল্যাবের আশে পাশেই থাকবে। আমি তোকে ওর নাম্বার দিয়ে দিচ্ছি।
আমি নাম্বার নিয়ে ৫ টার সময় ল্যাবের সামনে বসে আছি। কাউকে দেখতে পেলাম না যদিও। কিছু ক্ষন পর ফোন দিলাম.
- হ্যালো, নীতু বলছ?
- জী।
-তোমার বাটি গুলো?
-মানে? কে আপনি?
-আমি রাজুর বন্ধু।
-ও ভাইয়া! আমি তো বাসায় চলে আসছি মাত্র। আপনি একটা কাজ করেন আজকে আপনার কাছেই রেখে দেন। পরে আবার রাজুকে দিয়েই পাঠিয়ে দিয়েন।
-আচ্ছা।
এই প্রথম পরিচয় নীতুর সাথে। আমি বাটিগুলো নিয়ে এসে টেবিলের ওপর রেখে দিলাম। ২ দিন পর্যন্ত দেখলাম বাটি ওখানেই আছে।
কয়েকদিন পরে হঠাত করেই রাজু বাটি খুঁজে পাচ্ছে না। কে যে নিয়ে গেছে! মোটের ওপর ২ টা বাটি। একটা অপেক্ষাকৃত ছোট। কিন্তু এমন ভাবে কে নিয়েছে, ওর নিজেও কাজেও লাগবে না। বাটি নিয়েছে ছোট টা আর ঢাকনা নিয়েছে বড়টার। শেষ পর্যন্ত সে বাটির তদন্ত শেষ হয়নি। হল থেকে একবার একটা জিনিস হারালে তা সম্ভবত মিস্টার হোমস ও কিছু করতে পারবেন না।
এর বেশ কিছুদিন পরে, নীতু দেখি আমাকে নক করেছে। আমি কিভাবে কথা বলব বুঝছি না!
আলাপ্সুলভ কিছু কথা বার্তা হওয়ার পর
-ভাইয়া? একটা কথা বলব কিছু মনে করবেন না তো?
- আগে বল যদি বলতেই হয়! মনে করব কি না করব পরে দেখছি।
- আপনার সাথে আমার কিছু কথা আছে। আপনার কি সময় হবে?
-রাজুকে বলব?
-না ভাইয়া ওকে বলার দরকার নাই।
অনেক ক্ষন চিন্তা করলাম, আমি রাজুকে না বলে ওর প্রেমিকার সাথে কথা বলতে যাবো, ও যদি কোনদিন জানতে পারে? সত্য তো চাপা থাকে না। তারপর কিভেবে বলে দিলাম আচ্ছা।
নীতু আমাকে সময় আর জায়গা বলে দিলো। রাজশাহী কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে। জায়গাটা নীতু বাড়ির পাশেই।
প্রথমে কিছু কথা বার্তা হওয়ার পর-
-আসলে ভাইয়া আপনার কাছে একটা কথা জানতে চাচ্ছিলাম!
-কি বলো
-রাজু হঠাত এমন চেঞ্জ হয়ে গেলো কেন?
-কেমন?
-মানে ওর সাথে কিন্তু আমার প্রথম দেখা হয় এই লাইব্রেরীতেই। আমি বই পড়ছিলাম। ও ঠিক আমার সামনেই বসে ছিলো হয়ত আমাকে ফলো করতে ছিলো। তবে এটা সত্য যে ও তখন অনেক বই পড়ত। ও লাইব্রেরীতে আসত। কিভাবে কথায় কথায় আমাদের মাঝে একটা বন্ধুত্ব তৈরি হয়েছিলো। ও তখন আমাকে নিয়ে কবিতা লিখত, গল্প লিখত, মাঝে মাঝে দু'এক লাইন করে লিখত, আমার জন্য ওর কত সময় ছিলো, ঘন্টার পর ঘন্টা ফোনে কথা হত, আমাকে সকালে এখান থেকে নিয়ে যেত! আমাকে একবেলা দেখার জন্য কতই না পাগল ছিলো! কিন্তু এখন ও কত চেঞ্জ হয়ে গেছে। আমি তখন ভেবেছিলাম হয়ত এই আমার জীবনে পারফেক্ট জীবন সঙ্গী। কিন্তু দিন যতই যেতে থাকছে, আগের মত আমার প্রতি ওর সেই ব্যাপারটা নেই।
কেমন জানি দায়িত্ব মেটাতে একবেলা কল দেয়, মাঝে মাঝে রাতে তো ফোনই দেয় না। অথচ ঘন্টার পর ঘন্টা এখন আমি অপেক্ষা করি।
আপনি কি কিছু জানেন? তবে এটা সত্য যে ও অন্য কোন মেয়ের সাথে সম্পর্কে আছে কিনা এটা জানতে চাই নি। ওর যে মেয়েদের নিয়ে একটু আকর্ষণ আছে এটা আমি জানি।
- দেখো, আমি ওর রুমমেট কিন্তু ও তো আমার সাথে তেমন ফ্রি না। তোমার সাথে ওর রিলেশন ২ বছরের। মানে ভার্সিটিতে আসার পর থেকে। আমি ওর সাথে আছি মাত্র ৬ মাস হলো। এখন আমরা ফাইনাল ইয়ারে এমনিতেই অনেক ব্যস্ততা চলে আসে। হয়ত এ কারনেই। তবে তোমরা নিজেদের মধ্যে কথা বলছ না কেন? আমি একটা পর মানুষ! আমাকে বলে সমাধান হবে? তোমরা দুজুন নিজেদের সব কিছু বাদ দিয়ে কথা বল।
-আমি ওকে অনেকবার এই একই কথা বলেছি। ক্লান্ত প্রায়। এখন দেখা করতে বললেই অনেক অযুহাত দেখায়।বারবার বলে সব ঠিক হয়ে যাবে। কিন্তু হয় না। তাই আপনাকে বলছি। বিরক্ত ভাব নিয়েন না। ধন্যবাদ ভাইয়া। ওকে কিছু বলার দরকার নাই। শেষ বারের মত চেষ্টা করে দেখি।
এরপর অনেক দিন কেটে গেছে। সেমিস্টারের এক্সামের শেষে করে রুমে বসে আফসোসের হিসেব কষতে ছিলাম। মাঝরাত্রিতে রাজু এসে বলল, আবল তাবল বলতে লাগলো। বকতে বকতে বলে ফেলল, নীতু আমাকে স্যাকা দিয়েছে! বলেই হাসা শুরু করল। এক পর্যায়ে ঘুমিয়ে গেলো।
আমি চিন্তা করে কিছু পেলাম না। কেন জানি ইচ্ছা হলো ওর এসকল কারনের পিছে মূল কারন কি জানতে।
২
বর্তমানে রাজু বেশ ভাল আছে। দুদিন পরে বিয়ে। আমাকে সব দায়িত্ব নিতে হয়েছে। তবে বিয়ে হচ্ছে কার সাথে?
এইতো কিছুদিন আগে আমি আর রাজু বেশ জীবনমুখী আলোচনা করছিলাম। ৪ বছর আগে ছিলাম ফাইনাল ইয়ারে। বেশ কয়েকটা কু কীর্তির কারনে আরো মাস ছয়েক লেগেছিলো। তারপর বেশ কিছুদিন বসে, বিভিন্ন চাকরী পরীক্ষাও দিলাম। টিক্লাম না। মাঝে মাস্টার্সে ভর্তি হয়েছিলাম। সেটাও শেষ হয়ে গেলো। যদি রাজুর শেষ আমার থিসিসের কিছুটা বাকি আছে। তাই দেরী হবে। একসময় রাজুর সাথে আমার তেমন ক্লোজ সম্পর্ক ছিলো না, কিন্তু এই ৪ বছরে হয়ে গেছে। কথায় কথায় রাজু বলে উঠলো, "নীতুর কোন খবর জানিস?"
-আবার নীতু?
যদিও এই বছর গুলোতে ও মাঝে মাঝে বলত, কিন্তু আবার ফিরে যেত স্বাভাবিক অবস্থায়।
- মেয়েটার সাথে বেশ অন্যায় করেছি রে। ওর তো কোন দোষ ছিলো না। নিজেই নিজের অপরাধের কারনে দূরে সরে আছি। একবার যদি দেখতে পারতাম বা কথা বলতে পারতাম। আবার যদি নতুন করে শুরু করা যেত!
-কি যে বলিস!
-কেন? বিয়ে তো করতেই হবে! নীতু যদি রাজী হয় তাহলে আমি ওর থেকে ভালো সঙ্গী আর পাবো। অন্তত ও আমাকে বোঝে। এক সময় আমাদের রিলেশন নিয়ে ওর বাড়িতে ও অনেক ঝামেলা সহ্য করেছে। কত রাত কান্না করে কাটিয়েছে। কিন্তু শেষে আমিই ঠিক থাকলাম না। কত বড় অপমান একটা!
-তাহলে তো ওসময়ে তোর পাশে থাকল না কেন?
- আমি তো ওকে কিছু বলি নি। ও যে চাওয়া নিয়ে আমার সাথে ছিলো, তার বদলে আমি ওকে অবহেলা ছাড়া কিছু করি নি। আর যতই ভালোবাসার মানুষ হোক না কেন অবহেলা কেউ সহ্য করতে পারে না।
- তাহলে দেখ? কোথায় আছে? আমার সাথে তো যোগাযোগ নেই। আমিও ওর ব্লক লিস্টে।
- কালকে ওর জন্মদিন। কাল যদি দেখা করতে পারতাম!
-আচ্ছা দারা দেখি, আমার একটা ফেইক আইডি আছে। ঐটা দিয়ে কিছু পাই কিনা চেষ্টা করি!
- দেখ তো!
তখন রাত সাড়ে ১২ টা হবে। ফেইক আইডি থেকে লগিন করে নীতুর প্রোফাইলে ঢুকলাম। ঠিক ১২ টা ১৫ মিনিটে পোস্ট দিয়েছে,
"জীবনের ২৫ তম জন্মদিনে মুক্তি দিলাম সবচেয়ে বড় অপরাধীকে।"
কিন্তু এই স্ট্যাটাসের মানে কি? কি মনে হলো, রাজু কে বললাম, "দেখত তোর ব্লক খুলে গেছে নাকি?"
রাজু ফেসবুকে ঢুকে দেখতে পেলো হ্যাঁ। সত্যই ব্লক খুলে দিয়েছে। আমি দ্রুত বললাম, এবার কথা বল!
-কেমন আছো?
-নো রিপ্লাই!
-কি করো?
-নো রিপ্লাই!
- জানিনা মেসজ দেখছো কিনা! শুভ জন্মদিন। জানি আমার কথায় তুমি আসবে না! তবুও বলছি। যদি কাল সকালে আসতে! অবশ্যই বলে দেয়া লাগবে না! মনে আছে তো সেই আমাদের রিলেশনের পর আমার জন্মদিনের কথা? তুমি আমাকে ডেকেছিলে যেখানে! আশায় থাকব। কোন ভাবেই দেরী করব না। অপেক্ষায় থাকলাম।
পরের দিন কথা মত রাজু নামাজ পরেই, নীতুর দেয়া ১ম পাঞ্জাবী টা পরে চলে গেলো সেই জায়গায়। দশ মিনিট অপেক্ষা করার পর রাজু দেখতে পেলো শাড়ি পরে নীতু আসছে। যদিও আজ পর্যন্ত নীতুকে শাড়ি দেয় নি রাজু। তবুও শাড়ি পরেই আসল নীতু। হতে পারে এটা কোন কাক্তালীয় ব্যাপার।
মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে নীতুর আগমন দেখেছে রাজু। কিছুক্ষন পর পাশে এসে দাড়ালো নীতু।
কারো মুখে কোন কথা নেই। কে আগে শুরু করবে কথা! এই ভরে নদীর শান্ত বাতাসের সাথে ঢেউ এর শব্দ ছাড়া আর কিছু নেই। এই নীরবতা ভেঙ্গে মুখ খুলল নীতু।
- আমি কতটা পাগল বলো? একটা ছেলে আমাকে ডাকল আর আমি চলে আসলাম? এত বোকা কেন?
- একটা ছেলে? আসলেই কি?
- চিনতাম। তবে সে ছিলো আমার। এখনকার তুমি আমার তুমি নও।
- একটা ছেলে তোমার মন কে চুরমার করে দিলো, ৪ বছর কোন খোঁজ নিলো না, হঠাত একদিন ডাকল আর চলে এলে কিসের কারনে?
-জানিনা। এতো কিছুর ভাবার সময় পাইনি। এই যে এতো বছর পরেও যে তুমি ডাকলে এই ভেবে রাতে ঘুমানোর আগে অনেক ভেবেছি কিভাবে যাব, কি পড়ে যাব, কি বলব? কিন্তু কেন জানি ভাবনা আসলো না "যাব না''। আর এই যে তুমি আমি কোন রিপ্লাই না দিতেও চলে এসেছো?
- কেন জানি মন চাইলো! তুমি আসবে। এই ব্যাপারটা কি আমি জানিনা।
তারপর আবার কিছুক্ষন নীরবতা!
আবার নীতু বলল,"কি বলবে বলো"?
- সময় কম নাকি?
-বেশি সময় নিলে যদি আবার মায়ায় পড়ে যায়!
- মায়া বড্ড খারাপ জিনিস।
- খারাপ বলেই তো একটা ছেলের ডাকে এতো সকালে চলে আসলাম।
রাজু বলল, "আবার কি শুরু করা যায় না? তোমার সেই ছোট্ট চাওয়া গুলো, আমার ওপর তোমার ভরসা, মাঝে মাঝে দু চার কথার ঝগড়া, লিখে ফেলা দু চার লাইন?
নীতু বলল, "সময় চলে গেছে! আমি অন্যসব মেয়েদের কথা জানিনা। আমি তোমাকে ভালোবাসি কিংবা তখন বেসেছিলাম এই কারনে না যে আমার পরিবার থেকে আমার ভালোবাসা, আমার চাওয়া পাওয়া কমতি ছিলো। তারপরের এই বয়সে মেয়ে হোক কিংবা ছেলে কিছু সবপ্ন দেখার কারনেই এই ভালোবাসা হোক কিংবা প্রেমে পরে।আমি ভালোবাসার সত্য মিথা বুঝি না। শুধু এইটুকুই বুঝি ভালোবাসা টা হয়ে যায়। কিভাবে জানিনা। তবে একজীবনে একজনকে ছাড়া বাচব না এমনও নয়। দিব্যি বেঁচে থাকা যায়। কেবল স্মৃতি গুলো একটু বিষণ্ণ করে দেয়।"
- তা ঠিক, ভালো তো আমরাও বেশেছিলাম। বেঁচে আছি কিন্তু হারিয়ে গেছে মুল্যবান কিছু সময়।
- হয়ত এই হারিয়ে যাওয়া সময়টা আমাদের জন্য ভালো ছিলো। তুমি আমার ব্যাপারে খোঁজ না নিলেও আমি পরে সবই জেনেছি। মাঝে মাঝে খোঁজ নেবার ট্রাই করেছি। সময় টা আমার জন্য , তোমার জন্যে কষ্টকর হলেও ভালো কিছু হয়েছে।
আবার কিছুক্ষন নীরবতা শেষে.।.।.।.।.।
রাজুঃ আমাদের সময় গুলোকে ফিরিয়ে আনা যায় না?
নীতুঃ তা দেখা যাচ্ছে, কিন্তু একবারো জিজ্ঞেস করলে না তো, আমার বিয়ে হয়ে গেছে নাকি?
রাজুঃ ঐ যে বললাম, কি একটা ব্যাপার মন কে বলল!
রাজুঃ তাইলে ক্ষমা করে দিচ্ছ তো প্রিয়তমা?
নীতুঃ যাকে ভালোবাসি তাকে যদি ক্ষমা করে দিতে না পারি তাইলে আর কেমন ভালোবাসলাম? তুমি বারবার অপরাধ করবা আমি ততবার ক্ষমা করে দেব। তাই বলে সত্যিই কিন্তু না!
রাজুঃ চলো বিয়ে করে ফেলি তাহলে?
নীতুঃ বাড়িতে জানাবা না?
রাজুঃ আমার বাড়িতে তো জানাবার কেউ নেই। তাইলে কি সরাসরি শশুর বাড়ি যাব?
নীতুঃ শয়তান! খুব শখ নাহ?
৩
আজ নীতু একটা করে অর্ডার করে আর আমি সেই অনুযায়ী বিয়ের সকল এরেঞ্জমেন্ট করছি। একটু অবসর পাইলাম বলে লিখে রাখলাম। আসলে আমাদের কিংবা আমার মত যারা অন্যের সাথে সরাসরি কথা বলে বলতে পারে না তারাই লিখে প্রকাশ করে, আমি তাই। লেখাটাই নেশা।
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা অক্টোবর, ২০১৮ দুপুর ১:০৫