মা আমি যখন তোমার ছোট্ট রোমান ছিলাম, জন্মের পর থেকে ১৬ বছর অব্দি তোমার চোখের সামনে তিল তিল করে বড় হয়েছি। ছোট বেলায় যখন তুমি নিজ হাতে খাইয়ে দিতে। আমি খেতে না চাইলে.তুমি রাজা-রানীর গল্প বলে বলে খাওয়াতে। আমার জ্বর হলে সারা রাত নির্ঘুম থেকে আমার মাথায় জলপট্টি দিতে। কাঁদা মাটিতে গড়াগড়ি খেলে যখন বাড়ি ফিরতাম তুমি কত মমতায় আমায় গোসল করিয়ে দিতে। মা তোমার মনে আছে, নবম শ্রেনীতে পড়ার সময় আমি একদিন ব্লেড নিয়ে দুষ্টমি করতে করতে হাত কেটে পেলেছি.. আর তুমি আমার রক্ত দেখে কান্নায় ভেঙে পড়েছো। মা আমি যখন রাতের খাবার না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়তাম, তুমি তখন আমায় অনেক চেষ্ঠায় জাগিয়ে তুলতে, বলতে রাতের খাবার না খেলে বড় হওয়া যায় না।
জিঃ মা আমিও বড় হওয়ার আনন্দে রাতের খাবার খেতাম। কিন্তু মা এই বড় হওয়ার ধারাবাহিকতায় এস এস সির পর তোমাকে ছেড়ে এই যান্ত্রিক কোলাহলযুক্ত শহরে চলে এসেছি। এখানে আসার পর বছরে হয়তো দু তিনবার তোমার কাছে গেছি.......তাও ৫/৬ দিনের বেশী থাকতে পারিনি। বড় হওয়ার বাস্তবতায় আবারো ফিরে আসতে হয়েছে এই যান্ত্রিক কোলাহলে।
@@মা তুমি কি জানো? এখোনো আমার জ্বর হয়, জ্বরের গোরে তোমাকে প্রলাপ করি,,,,অসুখে ভিষন কষ্ট পাই! কিন্তু এখানে কেউই রাত জেগে আমার মাথায় জলপট্টি দেয় না।
@@ মা তুমি কি জানো? ঐ দিন বুয়া আসে নি তাই রান্না করার জন্য পেঁয়াজ কাঁটতে গিয়ে,,, আমার বাম হাতের বৃদ্দাঙুল কেটে অনেক রক্ত ঝরেছে,,,,,,,কিন্তু রক্ত দেখে কেউই অস্থির হয়নি, কাঁদাতো দুরের কথ।
@@ মা তুমি কি জানো? আমি এখন মাঝে মাঝে অফিস থেকে ফিরে ক্লান্ত শরীর নিয়ে রাতের খাবার না খেয়েই ঘুমিয়ে পড়ি। কিন্তু কেউই আমাকে জাগিয়ে বলে না, রাতের খাবার খেয়ে নে।
মা আমি জানি, আমি যদি তোমার সামনে অসুস্থ হতাম তুমি এখোনো রাত জেগে আমার সেবা করতে। আমার রক্ত দেখে কেঁদে দিতে।আমি যদি তোমার সামনে থাকতাম, তাহলে কখোনোই রাতের খাবার খাওয়া ব্যতীত ঘুমাতে পারতাম না। তুমি আমাকে জাগিয়ে তুলতেই খাবার খাওয়ার জন্যে।
মা আমি তোমাকে প্রতিদিন প্রতিমুহুর্ত্ত ভিষন মিছ করি.....শুধু একটা দিবসে নয়........তুমি বছরে ৩৬৫দিনই আমার মা!......যেটা এ পৃথিবীর অন্য কোন নারীর জন্যে সম্ভব নয়। মা তুমি আমাকে দোয়া করো.... ! আমি যেন তোমার সেই ছোট্ট রোমান হয়েই থাকি।
আমি জানি মাকে নিয়ে সবারই স্মৃতি-----এক..! আজ এই মা দিবসে জগতের সকল মাকে জানাই সন্তান হয়ে অকৃত্রিম শ্রদ্ধা।