somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

দ্যা এ্যালকেমিস্ট_ পাওলো কোয়েলহো

২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ রাত ১২:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পড়ছিলাম পাওলো কোয়েলহোর দ্যা এ্যালকেমিস্ট। অসাধারণ স্বপ্নচারী এক রাখাল বালকের সঙ্গী হয়ে রইলাম বেশ কিছুক্ষণ।

ছেলেটির নাম সান্তিয়াগো। রাখাল হলেও বই পড়তে জানে। বাবা-মা চেয়েছিলো ছেলে যাজক হবে, বেশ কিছুদিন পড়তে হয়েছে ধর্মতত্ত্ব সম্পর্কে। একদিন বাবাকে সাহস করে বলেই ফেললো, যাজক হতে চায়না। ঈশ্বর এবং পাপ সম্পর্কে জানার চাইতে পৃথিবীকে ঘুরে ঘুরে দেখাটাই যেনো তার কাছে সবচাইতে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অবশেষে বাবাও আশীর্বাদ করলেন ছেলেকে। শুরু হলো আন্দালুসিয়া থেকে সপ্নেদেখা গুপ্তধনের খোজে মিশরের পিরামিডের পথে যাত্রা। প্রথমে তারাফিয়ায় এক বয়সি সপ্নব্যখ্যাকারী মহিলার কাছে জানতে পারে তার স্বপ্ন রহস্য সম্পর্কে, মহিলার মতে, তাকে পিরামিডে যেতে হবে সেখানে গুপ্তধন আছে কিনা সে জানেনা কিন্তু অর্থের দেখা পাবে সে, ধনী হয়ে যাবে রাতারাতি। এরপর তার দেখা হয় নিজেকে সালেমের রাজা বলে দাবি করা এক বৃদ্ধের সাথে। সেও একই কথা বলে ছেলেটাকে জানায় সপ্নকে অনুসরণ করা উচিত সবার। আর বিদায়কালে তাকে উপহার দেয় দুটি পাথর।একটা পাথর সাদা, আরেকটা কালো। এদের প্রথমটার নাম হলো উরিম আর দ্বিতীয়টার নাম থুমিম। সুনির্দিষ্ট প্রশ্নের পথ বাতলে দিতে পারে পাথরগুলো। বৃদ্ধ তাকে বলেছিলো, কখনো স্বপ্ন দেখা না থামাতে। সে আরো বলেছিলো, যখন কেউ কিছু পাওয়ার চেষ্টা করে পুরো বিশ্ব তাকে তা পাইয়ে দেয়ার জন্য ফিসফাস করতে থাকে। কথাগুলো বুঝতে সময় লেগেছিলো সান্তিয়াগোর যদিও এমনিতেই সে স্বপ্নভঙ্গ ছিলোনা মোটেও। এরপর পর আফ্রিকায় চলে আসে ছেলেটা ভেড়ার পাল সহ। এখানকার শহর তাঞ্জিয়ারে এসেই সবকিছু হারিয়ে দুইবছর কাজ করতে হয়েছিলো স্ফটিকের দোকানে। এই দীর্ঘ-যাত্রা বিরতি কাজে দিয়েছিলো অনেক অভিজ্ঞতা সঞ্চয়ের কিন্তু সপ্নপূরনের পথে কাটা হয়ে দাড়ায়নি। এরপর একদিন বেশ কিছু টাকা জমলে আবার মিশরের পথে স্বপ্ন যাত্রার শুরু। সফর সঙ্গী হিসেবে এবার পায় এক ইংরেজকে যার উদ্দেশ্য ছিলো এ্যালকেমিস্টকে খুঁজে বের করা।সিসাকে স্বর্ণে পরিণত করতে পারতো এ্যালকেমিস্টরা আর অন্যদের রোগমুক্ত করাছাড়াও নিজেদের জীবনকে দীর্ঘায়ু দান করতে পারতো। যাত্রাপথে মরুভূমিতে উট চালকের কথাগুলো পর্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে শুনে সান্তিয়াগো। অভিজ্ঞতা হয় নতুন অনেককিছু সম্পর্কে। আর সে আগে যেমন ভেড়াদের কথা বুঝতে পারতো বলে ভাবতো এবার আয়ত্ত করে ফেলে উটদের ভাষা বুঝতে পারা। মরুভূমির এই দীর্ঘ যাত্রাপথে যুদ্ধের কারণে কিছুদিন অবস্থান করতে হয় মরূদ্যানে। সেখানে অনেক কিছু পায় ছেলেটা। খুঁজে পেয়েছে তার প্রথম ভালোবাসার নারী "ফাতিমাকে"। ফাতিমার কাছ থেকেই শিখেছে সান্তিয়াগো, ভালোবাসা মানুষের স্বপ্নকে পালটে দেয়না। পেয়েছে আগের চাইতে দ্বিগুন ভেড়ার পাল কিনে নেয়ার মতো কিছু স্বর্নমুদ্রা। এইসব প্রাপ্তিতেই যখন নিজেকে সুখি ভাবা শুরু করে ছেলেটা। সেই এ্যালকেমিস্টের দেখাও মিলে যায় তার। এ্যালকেমিস্ট তাকে সতর্ক করে দেয় তার লক্ষ সম্পর্কে। আবার যাত্রা শুরু হয়, এবার ঘটনাক্রমে বাতাস আর সূর্যের সাথে কথা হয়। কথা হয় সেই হাতের সাথে যা আগেই লিখে রেখেছে মানুষের ভাগ্য।

এভাবেই অনেক কিছু হারিয়ে এবং নতুন অনেক কিছু প্রাপ্তির মাধ্যমে অবশেষে গুপ্তধনের সন্ধান মিলে যায়।

যে স্বপ্নটা মানুষ দেখে তার বাস্তবায়নে ছুটে চলতে হয় সবসময়। ছুটে চলতে হয় প্রাপ্তি আর অপ্রাপ্তির মধ্য দিয়ে শুধুমাত্র জীবনের ভাষা বুঝতে, শুধু আসল স্বপ্নটাকে সত্য করতে। সান্তিয়াগোর এই ভ্রমণ কাহিনী আমাদের সেই কথাই বলতে চায়। এ্যালকেমিস্টদের মতই আমাদের এই সাধারণ জীবনে সঠিক লক্ষণগুলো মেনে চলার মধ্যে যে প্রচ্ছন্ন সূত্র লুকিয়ে থাকে, তা যেনো সাদামাটা এই জীবনকে স্বর্ণে পরিণত করার প্রচণ্ড প্রয়াস চালায়।


সর্বশেষ এডিট : ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৪১
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

১. ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ৭:৩৯

প্লাবণ ইমদাদ বলেছেন: কোয়েলহোর জীবনটাও আলকেমিস্ট এর মতই ছিল। ব্ল্যাক ম্যাজিক, নাস্তিকতা, ইশ্বর বিশ্বাস-- কি নেই তার জীবনে। এভাবেই স্বপ্ন আর বাস্তব মিলেমিশে যায়।

দারুন সিনপসিস!

২. ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ সকাল ১০:২৪

কাফের বলেছেন: বইটা পড়েছি প্রায় চার বছর আগে

পড়ার সময় এক ধরনের ঘোরের মধ্যে ছিলাম। অসাধারণ!

৩. ২২ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:৪৫

মোঃ মোশাররফ হোসাইন বলেছেন: এখনো মাঝে মাঝেই রিভিসন দেই। মোটিভেশন এর কাজ করে।

৪. ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৪:১০

মশিকুর বলেছেন:

পড়তে হবে

৫. ২১ শে ডিসেম্বর, ২০১৩ দুপুর ১২:১৩

আছিফুর রহমান বলেছেন: পড়তে হব। পোস্টে প্লাস

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঈদের শুভেচ্ছা: দূর থেকে হৃদয়ের কাছ

লিখেছেন আমিই সাইফুল, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৪:০৩

আসসালামু আলাইকুম,
আজ ঈদের দিন। চারদিকে উৎসবের আমেজ, হাসি-খুশি, নতুন জামা আর মিষ্টি মুখের আদান-প্রদান। আমি ইউরোপে আমার পরিবারের সাথে এই আনন্দের মুহূর্ত কাটাচ্ছি। কিন্তু আমার হৃদয়ের একটা কোণে একটা ফাঁকা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বগুড়া ঈদগা মাঠে নামাজের সময় শুধু ইমামের কর্তৃত্ব চাই, তার কথা শুনতে চাই

লিখেছেন অপলক , ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ বিকাল ৫:৩৫


আ.লীগের শাসনামলে ঈদের মাঠের ইমামরা ঠিক মত বয়ান দিতে পারত না। অন্তত বগুড়ায়, আমি নিজে সাক্ষী। অমুক তুমুক সভাপতি, চেয়ারম্যান, আতারি পাতারি নেতা... ২ মিনিট করে বক্তব্য দেবেন, সে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে......

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ সন্ধ্যা ৭:৪০


বাংলা গানের ভাণ্ডারে কাজী নজরুল ইসলাম এক অনন্য নাম। তিনি বাংলা সাহিত্যে ইসলামী সংগীতের এক শক্তিশালী ধারা তৈরি করেছেন। তারই লেখা কালজয়ী গজল "ও মোর রমজানেরও রোজার শেষে এলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেই যে আমার নানা রঙের ঈদগুলি ......

লিখেছেন অপ্‌সরা, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ৮:৪২


পেছনে ফিরে তাকালে আমি সবার প্রথমে যে ঈদটার কথা স্মরন করতে পারি সেই ঈদটায় আমি পরেছিলাম আমব্রেলা কাট নীলচে বলবল রং একটা জামা এবং জামাটা বানিয়ে দিয়েছিলেন আমার মা... ...বাকিটুকু পড়ুন

জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা

লিখেছেন নতুন নকিব, ৩০ শে মার্চ, ২০২৫ রাত ১০:৫৬

জেগেছে বাংলাদেশ: কমে গেছে আগ্রাসী ভারতের সীমান্ত হত্যা

জুলাই ২০২৪-এর বিপ্লবের পর বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তের চিত্র আমূল বদলে গেছে। এখন বাংলাদেশ সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিজিবি) ভারতের বিএসএফ-এর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আত্মমর্যাদার সঙ্গে কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

×