আমার বয়েসী বা কাছাকাছি বয়েসী বা খানিকটা বড় মানুষের এ বিষয়ে আগ্রহ কম থাকার কথা। আসলে এটা বিষয়টাই ওরকম।
দু'জন খ্যাতিমান কবির কথা ভেবে লিখছি। যাদের লেখা খুব কম দেখা হয় বা পড়া হয়। দু'জনই দু'টো ভিন্ন মহাদেশের ভিন্ন শতাব্দীর কবি। এমনকি দু'জনের ভাষাও ভিন্ন। একজন লিখেছেন সারাজীবন ইংরেজীতে, আর অন্যজন বাংলায়। দু'জনের লেখার ধাঁচও আলাদা। একজন ইংরেজ রোমান্টিক কবি; অন্যজন বাংলায় রোমান্টিক কবিতার পাশাপাশি সমাজকে নিয়ে অনেক লিখেছেন।
এঁদের একজন জন কিটস আর অন্যজন সুকান্ত ভট্টাচার্য।
জন কিট্স্
সুকান্ত ভট্টাচার্য্য
তাঁদের এত অমিলের পরও কত মিল থেকে যায়। একবার প্রথম আলোতে দেখছিলাম জন কিটসের মৃত্যু নিয়ে লিখেছে। খুব কম বয়সে (২৫) মারা গেছেন তিনি। রোমে শায়িত আছেন এখন। তাঁর এত খ্যাতি সবই এসেছে মৃত্যুর পর।
তার এপিটাফ...
তিনি তাঁর জীবন নিয়ে এতটাই হতাশ ছিলেন যে তাঁর এপিটাফেও লিখতে বলেছেন " Here lies one, whose name was written in water "। কি গভীর লাগলো কথাটা !! জলের ওপর লেখা নাম মিলিয়ে যাবে নিমিষেই, অথবা জল দিয়ে লেখা কোনো নাম খুব সহজেই শুকিয়ে যাবে, আর পড়া যাবে না। কিন্তু আমাদের সৌভাগ্য যে তাঁর নাম হারিয়ে যায় নি। বরং সংরক্ষণ হচ্ছে।
কিট্স্ হাউস ( ডানে ) তার জাদুঘর। Ten Keats Grove ( বামে )
রোমে যে বাড়িতে তিনি থাকতেন
একইভাবে বাংলাতেও জীবদ্দশায় কোনো খ্যাতি না পাওয়া এক দূর্ভাগা কবি আছেন। " সুকান্ত "। তিনিও খুব অল্প বয়সেই (২১) মারা যান। তাঁর লেখাগুলোও মৃত্যুর পর তাঁকে খ্যাতি এনে দেয়। আধুনিক বাংলা কবিতা সম্ভার তাঁর কৈশোরে লেখা কবিতা গুলোর কারণে অনেক সমৃদ্ধ, এবং ঐ কিশোর মনের ভাবনাগুলো এখনও অনেক ক্ষুরধার সাহিত্য মস্তিষ্ককে ভাবিয়ে তোলে।
এটাও আমাদের এক বিশাল সৌভাগ্য যে তিনি হারিয়ে যান নি। তবে কেবল তার লেখাগুলোই আমাদের কাছে এসেছে।
তার স্মৃতি জমিয়ে রাখা ( মানে জাদুঘর বা বাড়ি ) কোনো ছবি পেলাম না। কারও কাছে থাকলে শেয়ার করতে পারেন। আমি একটা পেয়েছি নিচে দিলাম তাও আবার দখল করা
গোপালগঞ্জে কোটালীপাড়ায় তার পিতৃপুরুষের সম্পদ এই বাড়িটা। দখল হয়ে গেছে।
তার হাতে লেখা একটা কবিতা পেলাম দিয়ে দিলাম। সব নেট থেকে
শেষে এসে লিখবো আমাকে সবচেয়ে বেশি অবাক করে দেয়া বিষয়টা। এই দুই বিখ্যাত লেখক মারাও গিয়েছিলেন একই রোগের কারণে। তা হল " যক্ষ্মা "।
বিধাতা মাঝে মাঝে কি অদ্ভুত মিলই না রেখে দেন পৃথিবীতে !!!
সর্বশেষ এডিট : ২৫ শে জুন, ২০১৪ বিকাল ৩:৫৩