日本 এই নামটাই জাপান। জাপানের আষ্টে পৃষ্ঠে চীনা সংস্কৃতি জড়িয়ে আছে। প্রথম শব্দটাকে চীনা ভাষায় পড়লে জাপান হয়। আর ইংরেজীতে আমরা জাপানই ডাকি। আর জাপানিদের মতো পড়লে হয় নিপ্পন।
Dai Nippon Teikoku --- এই নামটা ছিল ২য় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত। যার ইংরেজী অর্থ "The Empire of Great Japan"।
জাপানের প্রাচীন ইতিহাস অনেক পুরোনো। গুগোল করলেই বেরিয়ে আসবে অনেক কিছু। আমিও তেমনি কিছু খুঁজে পেয়েছি যা জানানোর লোভ সংবরণ করতে পারি নি।
এত লেখালেখির অভ্যাস আমার নাই। তাই অল্প কিছুতে লিখার চেষ্টা করব।
প্রথম কিস্তিতে প্যালিওলিথিক এজ আর জমন সময়কাল সম্পর্কে লিখবো।
প্যালিওলিথিক এজঃ
এটা একটা লম্বা সময়কাল। খ্রিষ্টপুর্ব ৫০,০০০ সাল থেকে ১২০০০ সাল পর্যন্ত এর ব্যাপ্তিকাল। অধিকাংশ ইতিহাসবিদ বিশ্বাস করেন এই সময়কাল ৪০,০০০ বছর আগে শুরু হয়েছে।
তবে এ ধারণা নিয়ে বিতর্কও আছে। কেননা 35000 BC এর আগে কোনো মানুষের অস্তিত্ব ওখানে ছিল কি না তা নিয়ে সংশয় আছে। প্রমাণ হিসেবে বলা যায় হামামাতসুতে কিছু হাড় ফসিল পাওয়া গিয়েছিল যা ১৪ থেকে ১৮ হাজার বছর পুরোনো।
ঐ আমলের কিছু নিদর্শন। এগুলো পালিশ করা কিছু পাথর যা দিয়ে নানা রকম অস্ত্র বানানো হত।
এর পরই আসে জমন সময়কাল।
এর ব্যাপ্তিকাল ১৪০০০ BC থেকে ৩০০ BC পর্যন্ত। কারও কারও মতে ১০০০০ থেকে ৪০০ BC পর্যন্ত। এসময়টাতেই প্রাচীন জাপানে মানব সভ্যতা বিকশিত হচ্ছিল। মানুষ শিকারি হচ্ছিল, পাশাপাশি চাষাবাদ শুরু করেছিল।
তাছাড়া মৃৎশিল্পের প্রকাশ লাভ এই সময় কালেই। প্রমাণ পাওয়া যায় কিছু পুরাতন মাটির পাত্র থেকে।
এগুলো কিছু নিদর্শন তখনকার জাপানি মৃৎশিল্পের।
আরও কিছু দিলাম। এগুলো জাদুঘরে সংরক্ষিত আছে।
১।
২.
৩.
৪.
এইগুলো পুরো জমন কাল ধরে বানানো কিছু নিদর্শন।
এই জমন সময়কাল কিছু ভাগে বিভক্ত--
Incipient Jomon: 10,000 B.C. - 8,000 B.C.
এই সময়ে মুলত মৃৎশিল্পের বিকাশ দেখা যায়। ২০০০ বছর ব্যাপ্ত এ সময়কালের প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন সিরামিকের (মেসোপটেমিয়ান সিরামিকের চেয়েও পুরোনো) বাসন কোসন পাওয়ার পর।
কান্তো নামের জায়গাতে, যা এখনকার হন্সু ( টোকিও যেখানে অবস্থিত), এই সিরামিকগুলো পাওয়া যায়। তবে অবশ্যই ভাঙ্গা চোরা অবস্থায়।
আবার যদিও কোনো শক্ত প্রমাণ নেই তবে ধারণা করা হয় তখনও কৃষিকাজ হত।
Initial Jomon: 8,000 B.C. - 5,000 B.C.
প্রমাণ পাওয়া গেছে এই সময়কালে কিছু পাত্র বানানো হয়েছিল যা কোনো কিছুকে সেদ্ধ করার কাজে ব্যাবহার করা হত। আবার আগুন জ্বালানোর কাজে ব্যবহৃত হয় এমন কিছু জিনিসও পাওয়া গেছে ( মানে ফসিল পাওয়া গেছে)।
Early Jomon: 5,000 B.C. - 2,500 B.C.
প্রসঙ্গক্রমেই বলছি এ সময়টাতে পৃথিবীর তখনকার তাপমাত্রা এখনকার চেয়ে ৪-৬ ডি,ফারেনহাইট, বেশি ছিল। আর ঐ সময়ইকেই ধরা হয় পৃথিবীর সবচেয়ে উষ্ণকাল। তো সারা দুনিয়ায় তখন কৃষীকাজের ধুম পড়েছিল। তাই তখন জাপানেও প্রচুরভাবে কৃষিকাজ শুরু হয়েছিল। তবে এটার শক্ত কোনো প্রমাণ কেউ পায় নি
কিছু মাটির ভাঙ্গাচোরা টুকরো পাওয়া গিয়েছিল যা দেখে ধারণা করা হয় ওপরের কথাগুলো।
Middle Jomon: 2,500 B.C. - 1,500 B.C.
এই সময়কালটায় জাপানি জমনীয়রা সমতল কান্তো ছেড়ে পর্বত অভিমুখী হয়েছিল।
{ ** কেন গিয়েছিল কারণটা আমি খুঁজে পাই নি। কেউ পেলে জানাবেন** }
তখন তারা ' দোগু ' নামের বিশেষ কাদামাটির প্রস্তরমুর্তি বানিয়েছিল। কেউ বলে এগুলো বিশেষ রক্ষাকবচ (সুস্বাস্থ্য বা নিরাপদ প্রসবের জন্য)। আবার কেউ এগুলো বাচ্চাদের খেলনা ছিল।
আবার কেউ বলে জমন্দের এলাকা ঘুরে যাওয়া মহাকাশ থেকে আসা এলিয়েনের প্রতিকৃতি এগুলো।
Late Jomon: 1,500 B.C. - 1,000 B.C.
এই সময়টাতে জমনীয়রা আবার সমতলে ফিরতে শুরু করে। কারণ পৃথিবী আবার ঠান্ডা হতে শুরু করেছিল। সেসময়ের কিছু বিখ্যাত মৃৎ নিদর্শন নাম হল গোরিও, হরিনউচি, কাসোরি বি।
Final Jomon: 1,000 B.C. - 400 B.C.
এ সময়টাতে হারপুন নামে এক প্রযুক্তি এসেছিল। অনেক বড় বড় নকশার পাথর পাওয়া গেছে যা নানা রকম শাস্ত্রীয় কাজে ব্যবহৃত হত বলে বিশ্বাস করা হয়। এখানেও চাষাবাদের ব্যাপারে প্রমাণ পাওয়া যায়, কিন্তু তা খুব একটা প্রভাব ফেলতে পারে নি জমনীয়দের ওপর। কিছু নারী প্রস্তর মূর্তি পাওয়া গেছে এই সময়কাল বয়সের যা দেখে ধারণা করা হয় যে ওই সময় জমনীয়রা কোনো দেবীর অর্চনা করত।
খুব একটা ছবি পাওয়া যায় নি দেবার মতো। তাই দেয়া হল না ছবি। তবে পুরো জমন কালের ঐতিহ্য নির্দেশক ছবি আমি দিয়ে দিয়েছি।
আর হ্যাঁ 'জমনীয়' নামটা আমার দেয়া