somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

অগ্নিঘড়ির ডায়াল

৩১ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১২:৪৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


কিছু সম্পর্ক থাকে মোমের মত। তাপ পেলেই গলে যায়। উদ্ধত শিখা হুমড়ি খেয়ে পড়ে থাকে টেবিলের ওপর দলা দলা বিকৃত বস্তুর সাথে, যাদেরকে একসাথে করে আবার হয়তোবা নতুন মোমবাতি বানানো যেতে পারে, কিন্তু পরবর্তীতে তাদের গলে যেতে বেশি তাপ লাগবে না। হাতের চেটোয় লুকিয়ে রাখা নেমেসিসের ওমেই গলে যাবে, হারিয়ে যাবে। আমার বাবা-মা'র মধ্যে এই গলন প্রক্রিয়া অনেকদিন ধরেই চলছিলো। কোন অসৎ মনোহরী দোকানদারের কাছ থেকে তারা রঙচঙে মোমবাতিগুলো কিনেছিলো কে জানে! গত দেড় যুগ ধরে দেখছি আমি একটা একটা করে মোমবাতি খসে পড়া। কেকের লোভনীয় পেস্ট্রির অর্গল খুলে পড়ে যাচ্ছে, টেবিলের ওপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা বই খাতাগুলোকে পুড়িয়ে দিচ্ছে। আমরা নিস্পলক চোখে এই দহনকার্য দেখি। অগ্নিঘড়িতে এ্যালার্ম দেয়া আছে, যথাসময়ে বেজে উঠবে। তাই তেমন গা করিনা কেউ। চলুক সব যেমন চলছে এখন, অথবা পুড়ুক সব যেমন পুড়ছে এখন! অগ্নি অভ্যুত্থানের দিন কেউ হারবে না। সম্পর্কের শবদেহরা জাগ্রত হয়ে মিছিল করবে, শ্লোগান দেবে সবার জন্যেই! সুতরাং, হারার ভয় নেই। নেই পোড়ার ভয়ও।

তাদের বাদানুবাদের সুত্রে আমি জেনেছি বেশি বয়সে বিয়ে করে সংসারী হবার পেছনে বাবার সুমতি কাজ করেনি কোন, তাকে তাড়িয়ে বেড়াত প্রাক্তন প্রেমিকার স্মৃতি। সত্যি-মিথ্যা জানি না, মায়ের ধারণা অন্তত সেরকমই ছিলো। বাবা উপেক্ষার মাধ্যমে প্রতিবাদ করতে চাইতেন, না পেরে ক্ষীণস্বরে অব্যয়সূচক শব্দ উচ্চারণ করতেন বেশিরভাগ সময়। ঘৃণাবাচক শব্দের তুবড়ি ছড়িয়ে বিজয়ী হবার নিস্ফল প্রচেষ্টা দেখান নি কখনও। নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে দেখতে গেলে আমি স্বীকার করব, আমার মায়ের অতিমাত্রায় স্মৃতিশূচিতা মোমসম্পর্কের গলনাঙ্ক বাড়িয়ে দিয়েছিলো। গলিত টুকরোগুলো শুধুমাত্র আমার হাতের তালুতেই পড়ত। তবে আমি চিৎকার করিনি কখনও। চিৎকার করতেন মা। বাবার কাছ থেকে সাড়াশব্দ না পেয়ে তিনি ক্ষেপে উঠতেন। বাবা তখন তার শীতলদৃষ্টির ছুড়ি দিয়ে কুচি কুচি করে কাটতেন মাকে। কর্তন এবং পতনের ভয়ানক অস্বস্তিকর আওয়াজ শুধু আমিই শুনতে পেতাম।

অবশেষে একদিন বেজে উঠলো আগ্নেয় এ্যালার্ম। মোমবাতিগুলো গলে পুড়ে ঘরময় ছড়িয়ে পড়ল। অসহনীয় উত্তাপে আমার সদাশান্ত বাবাটাও চিৎকার করতে লাগলেন। ব্যাগ গুছিয়ে নিয়ে মা চলে গেলেন। অনেকদিন ধরে এই দৃশ্যটি মঞ্চায়ন হবার অপেক্ষায় ছিলো। কুশীলবেরা চমৎকার প্রদর্শনী করলেন সংলাপ, আর্তনাদ এবং অভিসম্পাতের। আমার কল্পনার সাথে অনেকটাই মিলে গেল সবকিছু। পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী ছুটে গিয়ে মা'র হাতও ধরলাম আলতোভাবে। যেখানে ছিলো না কোন অনুরোধ, আবদার বা অনুনয়। মা চলে গেলেন। ঝটকা দিয়ে আমার হাত ছাড়িয়ে নিয়ে চলে গেলেন। এই পারিবারিক গোলযোগময় মুহূর্তে যৎকিঞ্চিত ভূমিকা পালনের পর কালপঞ্জির হিসেব মিলিয়ে কার দায় কতটা তা নিয়ে একটা দীর্ঘ, নির্জন ব্যক্তিগত অধিবেশন করার কথা ভাবি আমি।

মা
এই ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই, যে তিনি মানসিকভাবে কিছুটা অপ্রকৃতস্থ ছিলেন। তার চিৎকারপ্রবণতার কথা তো আগেই বলেছি। হঠাৎ হঠাৎ হটকারী বিষণ্ণতায় নিমজ্জিত হয়ে পার করতেন দিনের পর দিন। বিষণ্ণকাল পার করবার পরে অনেক কিছুই ভুলে যেতেন। আবার অনেক কিছুই তৈরি করতেন নিজের থেকে। বাবার প্রাক্তন প্রেমিকাকে নিয়ে দোষারোপ এবং সন্দেহ করাটা শুরু হয়েছে অনেক পরে। এবং সেই প্রেমিকাই শেষ পর্যন্ত তার স্থায়ী প্রতিপক্ষ হয়ে গেলেন! বাবাকে সবসময় দেখেছি এমন সময়ে খুব হতাশ দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকতে। এই হতাশা সহধর্মিনীর উচিত অভিযোগের জবাবের অক্ষমতা থেকে নাকি কাল্পনিক অভিযোগের বিষতীরে বিদ্ধজনিত স্থবিরতার কারণে, আমি বুঝতে পারিনি কখনও। যদিও এই বিচ্ছেদের পেছনে মায়ের অসংলগ্ন আচরণের দায়'ই বেশি, তারপরেও তাকে দোষী ভাবতে মন সায় দেয়না কখনো। একজন মানসিক ভারসাম্যহীন মহিলা, যিনি কাল্পনিক চরিত্র তৈরি করে বচসা করতেন, যিনি ভুলে যেতেন পূর্বাপর, তাকে কীভাবে দোষ দিই! মায়ের প্রসঙ্গে বলতে গেলে বারবার সেই একই ব্যাপার ঘুরে ফিরে আসে, কোন সুখস্মৃতি আসে না। কপালে একটা চুমু? উমমম ভাবতে হবে। বাইরে বেড়াতে যাওয়া? মনে পড়ছে না। বাবার সাথে মায়ের বিয়ে হল কীভাবে এটাও এক রহস্য! তাদের মাঝে কী প্রণয় ছিলো, নাকি আয়োজিত বিবাহ? দু-পক্ষের আত্মীয়-স্বজনদের দেখিনি খুব একটা। দেখেছি অনিচ্ছুক স্বজনদের কুঞ্চিত ভুরু আর কুন্ঠিত সম্ভাষণ। ছোটবেলায়, অনেক ছোটবেলায়, যখনকার স্মৃতিরা ধূসর কুয়াশাকূন্ডলী ভেদ করে পৌঁছুতে বেগ পায় এই উত্তপ্ত মোমমন্ডলীতে, তখন কী কিছু দেখেছিলাম আমি? কেউ কী কারও হাত ধরেছিলো? হেসে হেসে কথা বলেছিলো? কেউ কী কারো খোঁপায় বুনোফুল গুঁজে দিয়েছিলো? মনে করার বৃথা চেষ্টা করে হাল ছেড়ে দিয়ে আবারও মায়ের মনোবিশ্লেষণে রত হই। আত্মীয়-স্বজনদের অনিচ্ছায় বিয়ে হয়েছিলো এটা কী তাকে পীড়িত করত? অনেকদিন পর্যন্ত তাকে সন্তানহীন জীবন কাটাতে হয়েছে, হয়তোবা 'বাঁজা' অপবাদও শুনতে হয়েছে, এসবের কারণে তিনি কি হীনমন্যতায় ভুগতেন? আর সেই হীনমন্যতাই কী রাগের স্ফুলিঙ্গ হয়ে আঘাত করত বাবাকে? বাবা কখনও এসব নিয়ে খুব একটু মাথা ঘামান নি। তিনি বাস করতেন যেন সম্পূর্ণ অন্য এক জগতে...

প্রচুর পড়তেন, লিখতেনও। কোথাও কোথাও ছাপা হত। আমি বা মা কখনও এসব নিয়ে আগ্রহ দেখাই নি। বাবাও হয়তোবা খুব একটু ভাবতেন না এসব নিয়ে। তার গাছের বাকলের মত আঁকাবাঁকা হাতের লেখা ছাপাখানায় গিয়ে প্রক্রিয়াজাত হচ্ছে কী না তাতে তার কিছুই এসে যেত না। অসংখ্য ডায়েরি ছিলো তার সংগ্রহে। লিখতেন আর লিখতেন। কী যে লিখতেন, কেন যে লিখতেন, কাকে নিয়ে লিখতেন তার হদীশ পাইনি আমরা কস্মিনকালেও। অবশ্য পাবার চেষ্টাও করিনি। আমার অপ্রকৃতস্থ মা, ঘোরগ্রস্থ বাবা এবং শূন্যের গুণিতক আমি-সবার মধ্যেই একটা এ্যাটিচুড কমন ছিলো, একটা ভঙ্গি, যেন কাঁধ ঝাঁকিয়ে ঠোঁট উল্টে বলা "কী হবে! হু কেয়ারস!"

তবে মা চলে যাবার পরে বাবার দৈনন্দিন জীবনে একটা বড় পরিবর্তন এলো। তিনি লেখালেখির প্রতি ভীষণ উদাসীনতা দেখাতে লাগলেন। পত্রিকা অফিসের জন্যে ফরমায়েশী লেখা লিখতেন কেবল। যোজন যোজন দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও আমি এটা বেশ বুঝে ফেলেছি এতদিনে, ডায়েরি লেখা ছিলো তার আসক্তি। কিছুটা গোপনীয়তাও অবলম্বন করতেন তিনি ডায়েরিগুলোর ক্ষেত্রে। বিশেষ কিছু ডায়েরির ক্ষেত্রে। যদিও তার কোন দরকার ছিলো না। আমাদের কারুরই উৎসাহ বা আগ্রহ ছিলো না ওসব পড়ার। মা চলে যাবার পর ডায়েরি লেখা যেমন বন্ধ হল, গোপনীয়তার অবগুন্ঠনও খসে পড়ল। একদিন রাতে ঘুমুতে যাবার সময় মেঝেতে পা হড়কে পড়েই গিয়েছিলাম প্রায় একটা ডায়েরির গোপন অভিসন্ধিতে। কী মনে করে যেন ডায়েরিটাতে লাথি কষে অথবা তুলে নিয়ে জানলা দিয়ে বাইরে ফেলে দেবার বদলে বগলদাবা করে ঘরে নিয়ে গেলাম। পড়ার আগ্রহে না, ডায়েরিটার অলংকরন এবং অঙ্গসজ্জা আমাকে আকৃষ্ট করেছিলো বেশ। পুরোনো ডায়েরি। বেশ একটা রেট্রোস্পেকটিভ আভিজাত্য আছে!

ঘুমানোর আগে ডায়েরিটা একটু নেড়েচেড়ে দেখতে ইচ্ছে হল। লেখার জন্যে বরাদ্দ অনুভূমিক সমান্তরাল লাইন টানা পৃষ্ঠাগুলোর আগে একটা সাদা পাতায় লেখা,
"শূচিস্মিতা, তোমার জন্যে"
শূচিস্মিতা! খুব সুন্দর নাম তো! বাবা আসলেই ভালো লেখেন। নইলে এমন একটা নাম মাথায় এলো কীভাবে? এই শূচিস্মিতাটা কে? মা যার কথা বলে বাবাকে গালমন্দ করত সে? বাবার গোপন প্রেমিকা? নাকি শুধুই একটা গল্পের চরিত্র? উৎসাহ চাগিয়ে ওঠে আমার মধ্যে। শূচিস্মিতার পরিচয় উদঘাটনে কোনকিছুরই রদবদল ঘটবে না, মা ফিরে আসবে না, এলেও ঠিক ঠিক গলার রগ ফুলিয়ে ঝগড়া করবে। বাবা নির্বিকার ঔদাসীন্যে দেখেই যাবেন। মাকে যদি সব প্রমাণাদি উপস্থাপন করে দেখান হয় যে তিনি একটি কাল্পনিক চরিত্রের কারণে এতদিন অশান্তি করেছেন, যন্ত্রণায় ভুগেছেন, এবং যদি এতে বুঝ মানেনও, তাতেও কিছু এসে যাবে না। কারণ, তিনি ভুলে যাবেন সব। আবার নতুন করে শুরু করবেন বাকবিতন্ডা। যাকগে! চুলোয় যাক সব। বাবা-মা, তাদের ঝগড়াঝাটি, নির্বিকারত্ব...কুৎসিত, সব ভীষণ কুৎসিত। শূচিস্মিতা নামের স্নিগ্ধতার কাছে এসবকিছুই আমার কাছে খুব কদর্য লাগতে থাকে, যেগুলো ছিলো প্রাত্যহিক জীবনাচরণের অংশ। শূচিস্মিতাকে নিয়ে বাবা কী লিখেছেন? পড়ার আগ্রহ জাগে।

শূচিস্মিতা

তারিখ, ১১ই অক্টোবর
১৯৭৯,হেমন্তের অলস দুপুর

শূচিস্মিতা প্রিয়তমেষু,
কেমন আছো তুমি? তোমার কাছে লিখতে গেলে আমার কাব্য করতে ইচ্ছে করে না মোটেও। অথচ তুমি তো চাও সুন্দর সুন্দর চিঠি পেতে, চাও না? ঋদ্ধ উপমায় অলংকৃত, ভোরবেলায় পড়ে থাকা বকুলফুলের মত সুবাসিত চিঠি। আসলেই কী চাও? আমি বুঝি না তোমাকে। একদম বুঝি না। ভয় করে আমার। কী হবে যদি তোমাকে না পাই? কী হবে যদি আমাকে প্রত্যাখ্যান কর? এতদিনকার ঘনিষ্ঠ মেলামেশাকে স্রেফ বন্ধুত্ব হিসেবে উড়িয়ে দিতেই পারো! বন্ধুবান্ধবকে দেখিয়ে দেখিয়ে আমার এই ন্যাকাবোকা চিঠি পড়তে পারো, উচ্চস্বরে হাসতে পারো। না, সেই সুযোগ তোমাকে দেবো না। এই চিঠিগুলো তোমার কাছে পৌঁছুবে না কখনও। তবে তোমাকে না লিখেও তো থাকতে পারবো না। লিখবো তোমার প্রাপ্তিস্বীকারের তোয়াক্কা না করেই। ভালো থেকো শূচিস্মিতা। শূদ্ধ এবং শূচি থেকো। সবুজ থেকো।

চিঠিটা পড়ার পরে বেশ দ্বিধান্বিত হলাম। পড়ে তো মনে হচ্ছে সত্যিই! এই নামে আসলেই কেউ ছিলো? মা তাহলে এমনি এমনি অমন ক্ষেপে উঠতো না! কিন্তু এসবই তো অনেক আগেকার কথা। সুন্দর নামধারী সেই তরুণীর সাথে বাবার যদি কিছু থেকেও থাকে, এতদিন পর কেন খামোখা সে প্রসঙ্গ তুলে হেনস্থা করা? নাকি বাবা কখনও ভুলতেই পারেনি শূচিস্মিতাকে? আমার ঘুম টুটে যায়। পৃষ্ঠা উল্টোই পরবর্তি চিঠি পড়ার জন্যে।

১৭ই অক্টোবর, ১৯৭৯
তপ্ত দুপুর
শূচিস্মিতা,
লো কাট ব্লাউজের সাথে ঢাউস গগলসে তোমাকে একদম অপর্ণা সেনের মত লাগছিলো। যেহেতু এই চিঠি কখনও তোমার কাছে যাবে না, তাই সাহস করে বলতেই পারি, তুমি পৃথিবীর সব থেকে যৌনাবেদনময়ী নারী। মেরলিন মনরো বা সোফিয়া লোরেন তোমার কাছে কিছুই না। একটিবার যদি চুমু খেতে পারতাম তোমার ওই গোলাপ অধরে? আহা! অতটুক শরীরে কী করে অত সৌন্দর্য আর কামনা ধরে? হিরোশিমা-নাগাসাকিতে যে বোমাগুলো নিক্ষেপ করা হয়েছিলো তা লক্ষ লোকের প্রাণ কেড়েছে। তুমি ঠিক ততটাই তেজস্বী, প্রাণসংহারী। কিন্তু আমাকে ওভাবে মেরো না! তিলে তিলে মারো বরঙ? বেদনার বরফ দিয়ে চেপে ধর, কামনার বারুদশয্যায় শুইয়ে রাখো অনন্তকাল, ঠোঁটের আদ্রতা দিয়ে বিষ বানিয়ে সূচবিদ্ধ কর। আমাকে এভাবে মেরে ফেলো শূচিস্মিতা। এভাবে। ধীরে ধীরে। খুউব ধীরে...

ওহ! কী একটা চিঠি! এই শীতের রাতেও আমার কপাল দিয়ে চিকন ঘাম নির্গত হচ্ছে। অস্বীকার করবো না, এর থেকে ইরোটিক কোন কিছু আমি পড়ি নি কখনও। অবশ্য সেসব বস্তু পড়ার অভিজ্ঞতা আমার তেমন নেইও। চোখে ভাসছে লো কাট ব্লাউজ আর গগলস পরিহিতা এক লাস্যময়ীর ছবি। আর একটা উদগ্র কৌতূহল, এরপরে কী হয়েছিলো?

২৪শে অক্টোবর
১৯৭৯
লাভাময় রাত
শূচিস্মিতা,
রাতের ভাষা পড়তে পারো তুমি? শুনতে পারো ঝিঁঝিঁপোকাদের ঐকতান? মেঘলা আকাশের পেট চিড়ে একটা রুপালী চাঁদ তার আলোয় কীসের ফাঁদ বোনে? ধরা দাও, ধরা দাও শূচিস্মিতা, এই জোৎস্নাপ্লাবিত রাতে! দেখছো না, আকাশে আজ আগ্নেয়গিরিদের রথ ছুটে চলেছে? নক্ষত্রেরা লংমার্চ করে আসছে। জোনাকিদের আলোকসজ্জায় স্নাত হতে চাও না তুমি? এসো, এসো, এসো...জানি আসবে না...

ধুর! এটুকু পড়ে আমার মেজাজটাই বিগড়ে গেল। হোয়াট আ ফাকিং লুজার! খালি সেই প্যানপ্যান, ঘ্যানঘ্যান, "জানি তোমাকে পাবোনা" "তবু ভালোবেসে যাবো"। নিজের মধ্যে এই আক্রোশ আমাকে রীতিমত হতবাক করে দেয়! বাবার প্রেমিকার কাছে লেখা চিঠি পড়ছি, এ রীতিমত অনধিকার চর্চা, অনৈতিকও বটে। কিন্তু আমি কী করব! আই কান্ট রেজিস্ট মিসেলফ। এই বদ্ধ ঘরে, বদ্ধ আবহে এতদিন থেকে মনের এবং শরীরের সব অনুভূতি ভোঁতা হয়ে গেছে। আজকে রাতের এই নিস্তব্ধতা আমাকে যেন চিৎকার করে জাগিয়ে তুলতে চাইছে। জাগিয়ে তুলতে চাইছে অশুভ বোধ, কামনা এবং কৌতূহল। নিজেকে নিবৃত্ত করার চেষ্টা করলাম আমি। ডায়েরিটা ছুড়ে ফেলে দিয়ে বালিশে মুখ গুঁজে থাকলাম কিছুক্ষণ। মনের ভেতরে একটা আয়নাঘরের গোঁলকধাঁধা, তাতে শুধু শূচিস্মিতার মুখ। তার একটা মুখের আদল গড়ে নিয়েছি আমি ইতিমধ্যেই। অবাক এবং খানিকটা ভীত হয়ে লক্ষ্য করলাম, শূচিস্মিতার সাথে বাবার সম্পর্কের পরিণতি জানার চাইতে অন্য কিছু আমাকে বেশি তাড়িত করছে। অস্পষ্টভাবে বুঝতে পারি কী, ইচ্ছে করে একটা স্পষ্ট প্রতিবিম্ব দেখতে। ডায়েরিটা আবার টেনে নিই আমি।

১২ই নভেম্বর
১৯৭৯
বিষণ্ণ মেঘবেলা
শূচিস্মিতা,
তোমার অপারগতা আমি বুঝতে পারি। এও বুঝি যে, সেটা খুব ইচ্ছে করে নয়। পারিবারিক নানারকম প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে একটা মেয়ের জন্যে একলা যুঝা অনেক কঠিন। আর কেনই বা যুঝবে? আমি কে তোমার? তোমার হাত ধরতে চাইলে কৌশলে এড়িয়ে যাও। একটা ব্যাপার কি জানো? আমার তৃষ্ণা মেটাতে তুমি অপারগ। তাই তো এমন ভয় পাও। আমার বুক ভরা তৃষ্ণা। তোমার ফিনফিনে শাড়ীর ভেতর দিয়ে নাভীর উদ্যানে আমার চোখ আর জিভ চষে বেড়ায় নি? অনেক তৃষ্ণা আমার...

আমার গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। পাশে রাখা জগটা থেকে ঢোকঢোক করে পানি ঢালি গলায়। শরীর কাঁপছে উত্তেজনায়। ওহ, আমি কী আর কখনও ঘুমাতে পারবো না? চিরকাল আমাকে জেগে থাকতে হবে?

শূচিস্মিতা শূচিস্মিতা শূচিস্মিতা শূচিস্মিতা শূচিস্মিতা শূচিস্মিতা...

তুমি স্নিগ্ধ, তুমি মোহময়ী, তুমি রহস্যাবৃতা, তুমি কামনার অগ্নিগোলক...
নিজের অজান্তেই কখন যে ট্রাউজারের ভেতরে সংবেদনশীল রাগী উদ্ধত অঞ্চলে এনজাইম রায়ট থামাতে গেছি মনে নেই।
লো কাট ব্লাউজ, লাস্যময়ী শূচিস্মিতা

জার্ক জার্ক জার্কিং!

ফিনফিনে শাড়ির অভ্যন্তরে নাভীপ্রগলভা শূচিস্মিতা

শ্যাগ শ্যাগ শ্যাগিং!

মাত্র আধা মিনিটেই সাইক্লোনের তোপে এলোমেলো হয়ে যাওয়া বনভূমি বৃষ্টির ঝাপটায় নাজুক এবং প্রশান্ত হয়ে এলে বিশাল অরণ্যের মধ্যে আমি পরাজিত এবং নির্বোধের মত দাঁড়িয়ে থাকি। শূচিস্মিতা নিশ্চয়ই আমাকে দেখে হাসছে! হ্যাঁ, তাইতো! ঐ যে হাসছে খিলখিল করে, যা থেকে অবজ্ঞা চুইয়ে পড়ছে। আমার ভীষণ অবসন্ন লাগে। তাকে কিছু বলতে গিয়েও বলতে পারি না। ঘুমিয়ে যাই সঙ্গোপন এবং স্বমেহনের স্মৃতি নিয়ে।

দ্বৈরথ
সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর অদ্ভুত একটা অনুভূতি হল। বাবাকে আমার প্রতিদ্বন্দ্বী মনে হতে লাগলো। শূচিস্মিতার জন্যে! এখনও অবশ্য ডায়েরিটা শেষ করতে অনেকটাই বাকি। এখনও আমি জানি না কী ঘটেছিলো শেষতক। তবে এটা তো নিশ্চিত যে শূচিস্মিতার সাথে তার প্রণয় জাতীয় কিছু একটা ছিলো। সেটা কত গভীর পর্যন্ত বিস্তৃত হয়েছিলো? শূচিস্মিতা কী হাত ধরতে দিয়েছিলো? চুমু খেতে দিয়েছিলো? এবং আরো কিছু? হিংসার সাপেরা আমাকে ছোবল মারতে থাকে। আমি আর পড়তে চাই না ও ডায়েরি। শূচিস্মিতার সুন্দরতম প্রতিবিম্ব কেবলমাত্র আমিই দেখতে পারি, কালের আবর্তে হারিয়ে যাওয়া থেকে উদ্ধার করতে পারি। এই ক্ষমতা আর কারো নেই। কারো নেই। ডায়েরিটা গোপনে যথাস্থানে রেখে দিয়ে আসি। এখন চলবে দ্বৈরথ। শীতল চোখের চাহনি। তুমি একবার হেরেছো, আরেকবার হারবে বাবা! নাস্তার টেবিলে তার সাথে বসে আমারও ইচ্ছে করে মা'র মত চিৎকার করতে। মা খামোখাই চেচাতো না। শূচিস্মিতার মত না হতে পারার বেদনা কাউকে পেয়ে বসলে নিস্কৃতি পাওয়া পৃথিবীর দুরূহতম কাজ। বাবাও এত নিস্পৃহ আর ঘোরগ্রস্থ এমনি এমনি হয়নি। যে চোখ একবার শূচিস্মিতাকে দেখেছে সে চিরদিনের জন্যে অভিশপ্ত। তার চোখের ভাষা অপহৃত। অন্য কেউ বুঝবে না শূচিস্মিতা ছাড়া। বুঝবে আর খুব হাসবে। বিজয়ীদের পৃথিবীতে তুমিই রাণী, পরাজিতরা তোমার আজন্ম ক্রীতদাস। বাবা, মা, আমি... না না আমি না! কখনই না। আমি তোমার কাছে পরাজিত হতে পারবো না। তবে আপাতত আমার "নিকটতম" প্রতিদ্বন্দ্বীর সাথে জিততে হবে। সে তোমার কাছাকাছি গিয়েছিলো অনেক, জেনেছি। অনুমান করতে পারি হাতও ধরেছিলো, চুমুও অস্বাভাবিক না। আর তুমি আমার কাছে এসে অবজ্ঞায় হেসে চলে গেলে গতকাল রাতে? এই অবজ্ঞাকে গুড়িয়ে দেব! তার আগে পরাজিত লেখকটিকে ডুয়েলে আমন্ত্রণ জানাবো, সে এখনও তোমার কথা ভাবে নিশ্চয়ই!
-বাবা, তুমি লেখো না আর ইদানিং?
-না।
সংক্ষিপ্ত জবাব তার।
-হু। কী আর হবে লিখে! লিখতে হলে ভাবতে হয়। না ভাবলে কী লেখা হয়? অত ভাবাভাবির কাজ নেই। তোমার বয়স হয়েছে, এখন বিশ্রাম নেয়া দরকার বুঝলে?
প্রায় হুমকির মত শোনালো আমার কথাগুলো। বাবা অবাক হয়ে তাকালেন আমার দিকে। কিছুটা ভীতও যেন। যুদ্ধঘোষণা হয়ে গেছে। এখন কামান দাগানো বাকি।
-আর যেন তোমাকে লিখতে না দেখি। আই মিন ইট। এ্যান্ড ইউ নো হোয়াট? আই ক্যান বি সো মীন!
- কি বলিস এসব!
যথেষ্ট হয়েছে। আমি আর কিছু না বলে কলেজব্যাগটা কাঁধে নিয়ে বেরিয়ে পড়ি বাসা থেকে।

হাস্যকর সব তরুণী শিক্ষার্থী এবং শিক্ষয়িত্রী। যারা নিজেদের রূপ নিয়ে গর্ব করত। আমিও বেশ লোভাতুর চোখেই দেখতাম তাদের। আজ তাদের উদ্ভট এবং কদাকার লাগছে। শূচিস্মিতার রিনরিনে কন্ঠের হাসি, মাদকতাময় চাহনি, রেট্রো গেটআপের কাছে এই প্লাস্টিক তরুণীরা কী ভীষণ ম্রিয়মাণ! তবে ছাত্রদের সাথে বেশ ভালো সময় কাটালাম। হাসলাম। ভালো লাগলো তাদের।

তারা কেউ শূচিস্মিতাকে দেখেনি। দেখার সম্ভাবনাও নেই।

বাসায় ফিরে প্রথমেই খেয়াল করলাম বাবা কিছু লিখছে কী না। সে বারান্দায় ইজিচেয়ারে বসে প্রকৃতি দেখছে। আশ্বস্ত হলাম। তবে শতভাগ না।
-সারাদিন কী করলে বাবা?
-এইতো!
-খেয়েছো?
-হু।
-লিখেছো কিছু?
আবারও অজান্তেই আমার গলা কঠোর হয়ে যায়। তবে এবার আর বাবা খেয়াল করে না। তার সেই বিখ্যাত ঐতিহ্যবাহী ঔদাসীন্য পেয়ে বসেছে তাকে।
-নাহ, লিখিনি।
আনন্দে ভরে ওঠে আমার মন। বুড়ো রণে ভঙ্গ দিয়েছে বোধ হয়। আমার আর কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই! আর লিখো না বাবা, আর ভেবোনা শূচিস্মিতাকে!

রাত নেমে আসে। রেট্রো রাত। ইরোটিক রাত। রোমান্টিক রাত। মিস্টিক রাত। এক কথায় বলতে গেলে, শূচিস্মিতাময় রাত! আমি প্রস্তুত আজকে। আজ আর তুমি অবজ্ঞার হাসি হাসতে পারবে না। আজ তোমার হাত ধরব, ঠোঁট ছোঁব, ক্লিভেজে মুখ ডোবাবো...
-এসে গেছো শূচিস্মিতা?
এসে গেছে! এসে গেছে সে! কী বাধ্যগত মেয়ে দেখ! আমি যেভাবে সাজতে বলেছিলাম ঠিক সেভাবেই সেজেছে! লো কাট ব্লাউজ, ফিনফিনে সাদা শাড়ি, লাল টিপ, চূড়া করে বাঁধা খোঁপা, টানা কাজল, টিকলি। আজ আমার কোন তাড়াহুড়ো নেই। আজ আমি অনেকক্ষণ ধরে তোমাকে ভালোবাসবো। কালের অতল থেকে তোমাকে টেনে নিয়ে এসেছি...সেই শূচিস্মিতা! আহা, কী মাখন পেলব দেহ তোমার! ছুঁলেই যেন গলে গলে যাও! উহু আহ্লাদ কর, তাই না! দুষ্টু মেয়ে! ফিসফিসিয়ে বলি আমি।
পাশের ঘর থেকে কেমন যেন ঘরঘর আওয়াজ আসছে। মৃদু একটা ফোঁপানোর শব্দ। ভয়ার্ত বিলাপ। বুড়োর আবার কী হল! বাদ দাও শূচিস্মিতা, ভুলে থাকো ওসব। শুনো না। কিন্তু তার চোখে অনুনয়! যেতে বলছে আমাকে ওখানে। কেন!! কেন!!! কেন???
-তুমি ওই বুড়োকে এখনও ভালোবাসো শূচিস্মিতা? সত্যি করে বলত?
শূচিস্মিতা ধীরে ধীরে আবছা হতে থাকে।
-কোথায় যাচ্ছো শূচি? ওহ, বুঝেছি। আর্ত মানবতার সেবা তাইতো? জানি তো তোমার কোমল হৃদয়। স্রেফ একজন অসহায় বৃদ্ধের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া, তাই না? অন্য কিছু নেই তো? পুরোনো প্রেম? নেই, না? আচ্ছা যাচ্ছি।

আমি এগুই পাশের ঘরের দিকে। শূচিস্মিতা মিলিয়ে যায়।

অগ্নিঘড়ির ডায়াল
-কাম অন বাবা, ইজি!
বাবা খুব ঘামছে। শ্বাস নিতে কষ্ট হচ্ছে তার। লক্ষণ দেখে মনে হচ্ছে স্ট্রোক।
-ভয় নেই বাবা। হাসোতো একটু,
আমার মনে পড়ে স্ট্রোক হয়েছে কী না বুঝতে হলে স্মাইল, টক আ সেন্টেন্স, রেইজ ইয়োর হ্যান্ডস থিওরি প্রয়োগ করতে হয়।

বাবা হাসতে পারছে না। আমার ঠোঁটে মৃদু হাসি খেলা করে। বাবা একটি পূর্ণ বাক্য বলতে পারছে না। আমি বিড়বিড় করে শূচিস্মিতাকে খুব শিগগীরই অভিসারে আসার আহবান জানাই। বাবা হাত তুলতে পারছে না। এবার আমার হাতগুলোকে কাজে লাগাতে হয়। তাকে টেনে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যাই।

যা ভেবেছিলাম তাই। তার একটা মেজর স্ট্রোক হয়েছে। কতদিন বিছানায় শুয়ে থাকতে হবে কে জানে! মা ছুটে আসেন। আজকে তিনি চিৎকার করছেন না। তবে তাকে দেখে খুব একটু প্রকৃতস্থও মনে হচ্ছে না। ঘোর লাগা পায়ে হেঁটে সবাইকে উপেক্ষা করে বাবাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। সবাইকে উপেক্ষা করে প্রেমময় কথাবার্তা শুরু করে দেন। কী বিরক্তিকর!
-ভয়ের কিছু নেই। আমি এসে গেছি।
বাবার কথা বলতে কষ্ট হয়। কী যেন বলতে গিয়ে আটকে যান।
-আমাকে একবার সেই পুরোনো নামটা ধরে ডাকো। সব ঠিক হয়ে যাবে। হ্যাঁ, বল, বল!
বাবা খুব অস্পষ্টভাবে একটা নাম উচ্চারন করেন।
-তোমার মনে নেই, তুমি কত চিঠি লিখতে আমাকে। লিখে আবার ডায়েরিতে এক কপি রেখেও দিতে। হিহিহি! ডাকো, ডাকো না সেই নামটা ধরে!
বাবা আবারও চেষ্টা করেন অস্পষ্টভাবে কিছু একটা বলতে। আমার পৃথিবী দুলছে। ডাক্তারদের সাদা এ্যাপ্রনে রক্তের ছোপ ছোপ দাগ, কেবিনের সমস্ত বাতি যেন আমার চোখ জ্বলিয়ে দেবার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। আমি দৌড়ে গিয়ে বাবার মুখ চেপে ধরি। আতঙ্কিত কন্ঠে চিৎকার করতে থাকি, "না বাবা, না, প্লিজ না, বল না। বল না, দোহাই লাগে, কসম লাগে বল না, বল না বাবা প্লিইজ, প্লিইইজ! বাবা..."

পাশ থেকে একজন ডাক্তার গুরুগম্ভীর স্বরে নির্দেশ দেন, "অত্যাধিক মেন্টাল ট্রমার শিকার হয়ে ছেলেটা খুব আপসেট হয়ে পড়েছে। ওকে নিয়ে যাও এখান থেকে। একটা ট্রাংকুলাইজার দাও"

ওরা নিয়ে যাচ্ছে আমাকে। নিয়ে যাচ্ছে ভুলের কংক্রিটে গড়া শরীরটায় রিলাক্সিং ইনজেকশন দিতে। আমি জোম্বির মত হাঁটতে থাকি। বোধশক্তিহীন। তলিয়ে যাবার আগে একটাই প্রার্থনা করি, আর যেন কখনো জেগে উঠতে না হয়...

কৃতজ্ঞতা- মাশরুর
সর্বশেষ এডিট : ৩১ শে অক্টোবর, ২০১২ রাত ১:০৯
১৩৫টি মন্তব্য ১২৯টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান।

লিখেছেন আহা রুবন, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ৯:৫০





ফখরুল সাহেব দেশটাকে বাঁচান। আমরা দিন দিন কোথায় যাচ্ছি কিছু বুঝে উঠতে পারছি না। আপনার দলের লোকজন চাঁদাবাজি-দখলবাজি নিয়ে তো মহাব্যস্ত! সে পুরাতন কথা। কিন্তু নিজেদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হচ্ছে।... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। প্রধান উপদেষ্টাকে সাবেক মন্ত্রীর স্ত্রীর খোলা চিঠি!

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:০৩




সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনকে মুক্তি দিতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে খোলা চিঠি দিয়েছেন মোশাররফ হোসেনের স্ত্রী আয়েশা সুলতানা। মঙ্গলবার (২৯... ...বাকিটুকু পড়ুন

কেমন হবে জাতীয় পার্টির মহাসমাবেশ ?

লিখেছেন শিশির খান ১৪, ০১ লা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১০:৫৬


জাতীয় পার্টির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে বিক্ষুব্দ ছাত্র জনতা আগুন দিয়েছে তাতে বুড়ো গরু গুলোর মন খারাপ।বুড়ো গরু হচ্ছে তারা যারা এখনো গণমাধ্যমে ইনিয়ে বিনিয়ে স্বৈরাচারের পক্ষে কথা বলে ,ছাত্রলীগ নিষিদ্ধ হওয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী

লিখেছেন সামিউল ইসলাম বাবু, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ রাত ১২:১৩

ফিতনার এই জামানায়,
দ্বীনদার জীবন সঙ্গিনী খুব প্রয়োজন ..! (পর্ব- ৭৭)

সময়টা যাচ্ছে বেশ কঠিন, নানান রকম ফেতনার জালে ছেয়ে আছে পুরো পৃথিবী। এমন পরিস্থিতিতে নিজেকে গুনাহ মুক্ত রাখা অনেকটাই হাত... ...বাকিটুকু পড়ুন

জাতির জনক কে? একক পরিচয় বনাম বহুত্বের বাস্তবতা

লিখেছেন মুনতাসির, ০২ রা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৮:২৪

বাঙালি জাতির জনক কে, এই প্রশ্নটি শুনতে সোজা হলেও এর উত্তর ভীষণ জটিল। বাংলাদেশে জাতির জনক ধারণাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, যেখানে একজন ব্যক্তিত্বকে জাতির প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে মর্যাদা দেওয়া হয়। তবে পশ্চিমবঙ্গের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×