হুমায়ূন আহমেদ একবার ঠাট্টা করে বলেছিলেন, তিনি সবচেয়ে অপছন্দ করেন ডাক্তারদের। কেন? তাঁর সরস জবাব
আবার বাংলা গানের কিংবদন্তী শিল্পী নচিকেতা বলেছেন, "কসাই আর ডাক্তার একি তো নয় কিন্তু দুটোই আজ প্রফেসন, কসাই জবাই করে প্রকাশ্যে দিবালোকে তুমার আছে ক্লিনিক আর চেম্বার "।
নচিকেতার গানের চিকিৎসকরা কি তাই? বিখ্যাত এ গায়ক তার গানে কেন কসাইয়ের সাথে ডাক্তারদের গুলিয়ে ফেললেন? কেন এক কাতারে তাদের দাঁড় করালেন? আমরা তো জানি, চিকিৎসক চিকিৎসা সেবাদাস।
অথবা হুমায়ূন আহমেদের রসিকতাচ্ছলেই বলা হোক তবে এ কথার মধ্যে কোথায় যেন ডাক্তার দের আসল একটা পরিচয়ও পাওয়া যায়। চিকিৎসকের কক্ষে প্রবেশ করার সময় যেকোনো রোগীর চেহারায় যে একটা অসহায়ত্ব ফুটে ওঠে, তখন রোগীর সামনে ত্রাতার ভূমিকায় থাকেন চিকিৎসক।ডাক্তারের মুখের দিকে তাকিয়ে যেন নিজের ভাগ্য বুঝতে চেষ্টা করেন রোগী। সেই চেহারায় আশ্বাস বা অভয় পেলে প্রায় শিশুর সারল্যে হাসেন যন্ত্রণাকাতর রোগীও। এই হচ্ছে চিকিৎসক-রোগীর সম্পর্ক। কিন্তু এই চিকিৎসক যদি কোনো কারণে প্রতিপক্ষ হয়ে ওঠেন, রোগীর জীবনের জন্য এর চেয়ে বড় শঙ্কার কারণ আর কিছুই হতে পারে না।
যারা প্রতিদিন প্রত্রিকায় একবার হলেও ঢু মারেন তারা প্রতিদিন এরকম ঘটনা পড়েন। কিন্তু এর প্রতিকারে সামাজিক প্রতিরোধ হচ্ছে না। আর ডাক্তারাই কেন এ ধরনের অনৈতিক কাজ করেন?? টাকার অভাবে না বিলাসিতার লোভে?? উত্তর আমার অজানা।
আজকাল ভুল চিকিৎসায় রোগীদের হয়রানি যেন রুটিন হয়ে গেছে। খায়রুল বশর নামে এক লোক তাঁর মেয়ের চিকিৎসায় অবহেলার অভিযোগ এনে মামলা করেন দুজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। প্রায় একই সময়ে হার্নিয়ার অপারেশনের পরে রোগীর পেটে গজ-ব্যান্ডেজ রেখে দেওয়ার অভিযোগে আরও একটি মামলা হয় অন্য এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। এতে খেপে গেছেন চিকিৎসকেরা। তাঁরা প্রাইভেট চিকিৎসা ও চেম্বার বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়ে বসেন। আশ্চর্য, মেয়ে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন মনে করলে একজন শোকার্ত বাবা আদালতের দ্বারস্থও হতে পারবেন না? আজব
ভুল চিকিৎসা আবার কিছু বললেই কর্ম বিরতির হুমকি!! কিছুদিন আগেই এই কর্মবিরতি তে চিটাগাং বাসির জীবন নাকাল হয়ে গিয়েছিল। কোথায় ওদের আন্দোলনের মাধ্যমে সঠিক পথে আনাব তা না উল্টো ওরাই ব্লেকমেইল করছে কর্মবিরতি দিয়ে, রোগিরাও চুপ হয়ে যান, এভাবে কতদিন?? আসলে, বাস ধর্মঘট হলে আমদের কাছে বিকল্প আছে। কিন্তু ডাক্তাররা জানেন তারা ধর্মঘট করলে কোন বিকল্প নেই তাদের দাবী মেনে নেয়া ছাড়া। সুতরাং তাদের দাম্ভীকতা সেখানেই।
আর মৃত লাশের ব্যাবসা ত আছেই বড় বড় হসপিটাল এ, আদায় করে নেয়া হচ্ছে লাখ লাখ টাকা। রোগিদের ঘটিবাটি চাটি করে পথে বসাচ্ছে, রোগিরা ত রোগি নয় খদ্দের এখন।ডাক্তারদের নৈতিক অবক্ষয় আজ মেরুদণ্ড ভেংগে দিচ্ছে মধ্যবিত্তদের। জানিনা এর থেকে পরিত্রাণ কি তবে এর থেকে এখুনি সতর্ক হোন, নিকট আত্মীয় দের সতর্ক করুন।
চিকিৎসকদের হেয় করা এই লেখার উদ্দেশ্য নয়। এ দেশে বহু শ্রদ্ধেয় চিকিৎসক আছেন, তাঁদের স্বতঃস্ফূর্ত মানবিক উদ্যোগের কথা আমরা জানি। গরিবদের বিনা মূল্যে চিকিৎসার পাশাপাশি নিজের টাকায় ওষুধ কিনে দিয়ে তাদের সুস্থ করে তোলার দায়িত্ব পর্যন্ত পালন করেছেন কত চিকিৎসক।কিন্তু তাদের দেখা পাওয়া অমাবস্যার চাদঁ হাতে পাওয়া।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে এপ্রিল, ২০১৬ রাত ৮:০০