ফান বহুত অইছে, এইবার কোয়ান্টাম ফিজিক্স নিয়া কিছু মাথা ঘামান---
-কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও আপেক্ষিকতা -
আপনি জানেন কি, একটি ভবন এর সব চেয়ে উপরের তলা থেকে সব চেয়ে নিচের তলা বা ফ্লোরে আপনার বয়স ধীরে বাড়ে? অথবা আপনার গ্রহন করা প্রতি টি নিশ্বাস এ Marilyn Monroe এর ত্যাগ করা একটি নিশ্বাস এর অণু আছে? অথবা, যদি সব গুলো শুন্য স্থান কোন বস্থ ছাড়া সঙ্কুচিত হয়ে থাকতো, তাহলে সমগ্র মানব জাতিকে একটি মাত্র চিনির দানার পরিমান বাক্সে সেটে দেয়া যেতো?
কথা গুলো কোন কল্প কাহিনি মনে হচ্ছে, তাই না? কিন্তু বিজ্ঞান কল্প-কাহিনীর চেয়েও বেশি বিস্ময়কর- এবং আমরা নিজেদের এই মুহূর্তে যে মহাবিশ্বে আবিষ্কার করেছি, তা সম্ভবত তার চেয়েও অদ্ভুত এমন কিছু যা আমরা আবিষ্কার করতে পারতাম।
এই বিস্ময়কর তত্ত্বগুলোকে একমাত্র "কোয়ান্টাম তত্ত্ব ও আপেক্ষিকতা" ছাড়া আর কোন কিছুই আমলে নিতে পারে না, আর এই "কোয়ান্টাম থিওরি আর রিলেটিভিটি" একবিংশ শতাব্দীর বিজ্ঞানের সহজাত স্তম্ভ। রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিকতা "ব্ল্যাক হোল" এর অদ্ভুত জগত কে আমাদের সামনে এনে দিয়েছে আর এই কথা পরিস্কার করে দিয়েছে যে "মহাবিশ্বের একটি শুরু বা সূচনাকাল বা বিগিনিং" ছিলো।
আধুনিক বিশ্ব কে সব রকম সম্ভাব্যতার দ্বারপ্রান্থে নিয়ে এসেছে কোয়ান্টাম থিয়োরি, আমাদের দিচ্ছে "ল্যাজার, কম্পিউটার আর আইপড ন্যানো", বলার অপেক্ষা উপেক্ষা করেই আমাদের বলে দিচ্ছে কিভাবে কিরণ দেয় সূর্য এবং ভুমি কেন শক্ত বা নিরেট।
মেনে নেয়া যাক যে আপনি অনবরত Marilyn Monroe এর কিছু অণু গ্রহন করছেন। আর এটা খুব সামান্য পরিমান টানাহ্যাঁচড়া করছে এই কথা স্বীকার করতে যে- তা কোয়ান্টাম থিয়োরির এ প্রভাব মাত্র।
তবুও, ইহা কিন্তু অণু বা পরমাণু সম্পর্ক কে যুক্ত করছে, যেখানে সব কিছু কোন না কোন ভাবে সম্পর্কিত। আর এই আণুবীক্ষণিক বিশ্ব কে ব্যাখ্যা করতে কোয়ান্টাম থিয়োরি অত্যাবশ্যক।
জরুরি ব্যাপার টা খেয়াল রাখতে হবে যে অণু গুলো কিন্তু অনেক ছোট। এদের প্রায় ১০ মিলিয়ন একটার পর একটা জুড়ে দিলে একটি ফুলস্টপ এর সমান দীর্ঘ হয়। এর মানে কি দাঁড়ালো, আমরা যত বার নিশ্বাস ফেলি, তত বার অসংখ্য ট্রিলিয়ন এই রকম ছোট্ট কনা না অণু বেরিয়ে যায় এই বাতাসে।
পরিনামে, বাতাস এই সব অণু কে ছড়িয়ে দেয়ে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে। যখন টা ঘটে, তখন বায়ুমণ্ডলের প্রতি টি স্তর কিন্তু আপনার ত্যাগ করা একটি বা ততোধিক অণু বা কনা দ্বারা পরিপূর্ণ।
সুতরাং, প্রত্যেক বার যখন কেউ নিশ্বাস নেবে, সে আপনার ত্যাগ করা এই অণু গুলো কিন্তু গ্রহন করবে, অথবা অণু গুলো হতে পারে Marilyn Monroe এর, অথবা Alexander the Great এর, অথবা হতে পারে একসময় পৃথিবী শাসন করে চলা "রেক্স প্রজাতির কোন ডাইনোসর" এর!
কিন্তু এটা শুধুমাত্র পরমাণুর ক্ষুদ্রতাই নয়, মাথা ঘুরিয়ে দেওয়ার মতো এর প্রভাবও আছে। আছে তাদের ভয়ঙ্করতম শুন্যতাও।
সুতরাং, কেনো পরমাণু গুলো এত শুন্য? অন্য ভাবে বললে- কেন পরমাণু গুলো এত বিশাল তাদের ক্ষুদ্র থেকে ক্ষুদ্রতর "নিউক্লিয়াস" এর তুলনায়?
হ্যাঁ, এর সব কিছুই সুসংগত ভাবে ব্যাখ্যা করেছে কোয়ান্টাম জগতের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য- এর প্রজাতিগত কিছু ভিন্নতা আছে, স্কিজোফ্রেনিয়া সঙ্ক্রান্ত ধর্মে। অবস্থাগত কারনে এরা উভয় রকমের আচরন করতে পারে, তরঙ্গ এবং কনা।
পদার্থবিদদের সাধারণ ভাবেই মেনে নিতে হয়েছিলো যে ইলেকট্রন ও তাদের মতো সব কিছুই মজ্জাগত ভাবেই এই প্রতিদিনের বিশ্বের সব কিছু থেকে আলাদা।
মূল কথা হলো যে একটি তরঙ্গ অনেক বেশি জায়গা দখল করে থাকে, এই জন্যে ইলেকট্রন ও একটি তরঙ্গ, কোন ছোট পরিসরে একে আবদ্ধ করা যায় না, এবং পরমাণু গুলো কেন আপনার ধারণার চেয়েও এতবেশি বড় যে কোন শুন্য স্থানের ৯৯.৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯৯ ভাগ জায়গা দখল করে থাকে।
প্রকৃতির এই চূড়ান্ত দ্বৈত চরিত্র বাধাগ্রস্ত করছে অন্য প্রভাব কে। ইহা নিজেই একটি প্রভাবক- কারন তা আরও বেশি জায়গা দখল করতে পারত, আরও এক অদ্ভুত ব্যাপার হল যে একটি মাত্র পরমাণু একই সময় ভিন্ন দুটি জায়গায় হতে পারে, এবং যেখানে পরমাণু গুলো তাৎক্ষণিকভাবে পরস্পরের সাতে যোগাযোগ ও রক্ষা করতে পারে, বরং যদি টা মহাবিশ্বের অন্য এক প্রান্তেও হয়।
এই রকম ক্ষুদ্র ব্যাপার গুলো কে সঠিক ভাবে বিশ্লেষণ করার নাম ই কোয়ান্টাম ফিজিক্স বা কোয়ান্টাম মেকানিক্স।
কোয়ান্টাম থিয়োরি অবশ্যই অদ্ভুত।
আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের আরেকটি স্তম্ব- আপেক্ষিকতা- এর ও কিছু টা জটিলতাও আছে।
উদ্বাহনস্বরূপ, সম্ভাব্যতার বাইরে এসে এই থিয়োরি কিন্তু আরও একটি নকশা তুলে ধরে যা আদতেই কার্যকর, কিন্তু কেন? কারন " যত দ্রুত আপনি ভ্রমন করবেন, তত বেশি আপনার ওজন বৃদ্ধি পাবে।
এটা হলো আইনস্টাইন এর আপেক্ষিকতা তত্ত্বের এক বিশেষ নীতি, ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন তা প্রকাশ করেন। কিন্তু তা সুস্পষ্ট নয়, কারন তা তখনই লক্ষণীয় যখন "সাবজেক্ট বা বস্তু'র বেগ আলোর বেগের সমান বা কাছাকাছি হবে- একটি যাত্রীবাহি জেট এর থেকে মিলিয়ন গুন বেশি বেগ সম্পন্ন বেগে যখন তা গতি প্রাপ্ত হবে।
অদিকন্তু, যদি কেউ আপনার খুব কাছ দিয়ে আলোর গতি তে অতিক্রম করে, তবে আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব বলে যে সে আপনার কাছে চ্যাপ্টা মনে হবে তার গতি অভিমুখে।
এটাই আপেক্ষিকতার একমাত্র বিশেষ তত্ত্ব নয়। যে ব্যক্তি আপনাকে ওই বেগে অতিক্রম করবে তার সময় ধিরে চলবে। অর্থাৎ, তার হাতের ঘড়ির কাটা আপনার হাতের ঘড়ির চেয়ে ধিরে চলবে।
আইনস্টাইন তাঁর থিয়োরি কে পরিবর্ধন করে "আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব" প্রকাশ করলেন ১৯১৫ সালে, যা অভিকর্ষ সুত্র হিসেবেও পরিগণিত হলো। এবং তা প্রকাশ করলে যে- আপনার দেহ অতি দ্রুত গতিশিল থাকায় সময়ের এই ধীরতা আসে না বরং তাঁর জন্যে অত্যন্ত শক্তিশালী অভিকর্ষ বলও দায়ী।
এবার দেখা যাক আপনার ঘরের অর্থাৎ বিল্ডিং এর উপরের তলা থেকে নিচের তলায় কেন বয়স দ্রুত বর্ধনশীল। এর একটি বিশেষ প্রভাব হলো - নিচের তলা তে, আপনি পৃথিবীর কেন্দ্রের কাছাকাছি বেশি উপরের তলার তুলনায়, কারন নিচ থেকে উপরের দিকে অভিকর্ষ বল ক্রমাগত কমতে থাকে। সব চেয়ে উপরে অর্থাৎ স্পেস বা মহাশূন্যে এই অভিকর্ষ বলে হয় "0 (জিরো)।
তবে হ্যাঁ, সাধারণ জিবনে তা খুবই সামান্য এক ব্যাপার। কিন্তু শক্তিশালী অভিকর্ষ শক্তির কাছাকাছি যে দেহ থাকে, যেমন ব্ল্যাক হোল, তার প্রভাব হয়ে উঠে অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। যদি আপনি ব্ল্যাক হোলের খুব কাছাকাছি কোন প্রান্তে ঝুলে থাকতে পারেন, তবে সময় সেখানে এতটাই ধির হয়ে যেত যে আপনি মহাবিশ্বের ভবিষ্যৎ একঝলকে দেখতে পারবেন।
অদ্ভুত তাই না? হ্যাঁ, ঠিক এই তত্ত্বের মতই। যুক্তিসঙ্গত ভাবেই, মহাবিশ্বের একটি সৃষ্টি বা সূচনা ছিল সব চেয়ে আশ্চর্যজনক তত্ত্ব হলো আইনস্টাইন এর আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বের। (যদি আপনি সৃষ্টিকর্তা তে বিশ্বাস না করে থাকেন তবে এই হল ধর্মগ্রন্থের বাইরে তত্ত্ব)
সাম্প্রতিক ধারনা অনুসারে, ইহা আনুমানিক ১৩.৭ বিলিয়ন বছর পূর্বে একটি বিশাল বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে এর জন্ম হয় যার নাম "বিগ ব্যাং"। যা একটি উষ্ণ বিন্দুর মতো অবস্থান করছিলো। বিস্ফোরণের পরে একে ধিরে ধিরে ঠাণ্ডা হতে থাকে। যার ফলস্রতিতে আজো অদৃশ্য অনেক মাইক্রোওয়েব রয়ে গেছে।
মাইক্রোওয়েভ ও কিন্তু একপ্রকার আলো, এবং একপ্রকার কণা ( *"wave-particle duality") দিয়ে তৈরি যার নাম- "ফোটন "; মহাবিশ্বের ৯৯ ভাগ মাইক্রোওয়েভ কিন্তু স্টারলাইট নয়, তা সৃষ্টি হয়েছিলো বিগ ব্যাং এর উত্তাপে।
আমরা যদি মাইক্রোওয়েভ কে দেখতে পারতাম, তবে সমস্থ রাতের আকাশ জুড়ে উজ্জ্বল আলো দেখতে পেতাম যেমন টা দেখা যায় একটি ইলেকট্রিক ভাল্ব এ। যা এই সব কিছু কে অনেক বেশি চমকপ্রদ করে রেখেছিলো, যতক্ষণ না মাইক্রোওয়েভ আবিষ্কৃত হয়, ১৯৬৫ সালে। আর তাঁর পরে একটি সম্পূর্ণ দুর্ঘটনার মধ্যে- দুই জন নভোচারী জারা তা আবিষ্কার করেছিলেন এবং বয়ে এনেছিলেন "নোবেল পুরস্কার", সে গল্প অন্য দিন।
তো, সার কথা হলো- " আলোর বেগে কোন বস্তু চলতে পারে না, আর যদিও তা সম্ভব হয়, তবে চলন্ত বস্তু আর বস্তু থাকে না, শক্তি তে রুপান্তরিত হয়ে যায়"।
--------------------------------------------------------------------
(ঘুম আইতাছে না, তাই এই আকাম করতাসি বইস্যা বইস্যা)
Reference- 'Quantum Theory Cannot Hurt You' by Marcus Chown (Faber)
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা এপ্রিল, ২০১৩ সকাল ৯:৩১