somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সংস্কৃতির স্রোতধারা

২৮ শে অক্টোবর, ২০০৯ রাত ১০:৩৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সংস্কৃতি কথাটি নিয়ে আমাদের মধ্যে নানা ধরনের বিভাজন আছে। খুব সুনির্দিষ্টভাবে কেউ সংস্কৃতির এমন কোনও সংজ্ঞা দিতে পারেননি, যাকে বিনা মতানৈক্যে গ্রহণ করা যায়। যার যার দৃষ্টিকোণ থেকে বিভিন্ন জন বিভিন্ন মত প্রকাশ করেছেন। এ কথা প্রতীচ্যে যেমন, তেমনি প্রাচ্যেও সমানভাবে প্রযোজ্য। কেউ সংস্কৃতিকে দেখেছেন নিরেট শিল্প হিসেবে, কেউ আবার বৃহত্তর পটভূমিকায় উপস্থাপন করে একে জীবনচর্যার এক অবিভাজ্য অংশ হিসেবে রূপায়িত করেছেন। ঐতরেয় আরণ্যকের 'আত্মসংস্কৃতির্বাব শিল্পানি', রবীন্দ্রনাথ যার ইংরেজি অর্থ করেছেন 'Arts indeed are the culture of soul.' এটা সংস্কৃতি সম্পর্কে একটি আংশিক ধারণা দেয় মাত্র, এতে করে তার কোনও পরিপূর্ণ আধারের সন্ধান আমরা পাই না। জীবন এবং জীবনের মধ্যে যা কিছু দৃষ্টিগ্রাহ্য, যা জীবনকে অনুভব করতে সহযোগিতা করে, বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের সকল কিছু, যা মানুষের চিন্তা ও চেতনার অধিগত, তাকে সংস্কৃতির আওতার মধ্যে নিয়ে নিলে তাতে সংস্কৃতি একটি বিশাল অবয়ব পায় বটে, কিন্তু তাতেও সংস্কৃতির পূর্ণাঙ্গ স্বরূপ সন্ধানে আমরা ব্যর্থ হই। তা হলে বলা যেতে পারে খণ্ড খণ্ডভাবে নানা মুণির নানা মত নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ ধারণা সৃষ্টির মধ্য দিয়ে যতটুকু আয়ত্ত করা যায়, সংস্কৃতি নিয়ে ততদূর পর্যন্ত এগুতে পারলেও মনে হয়, তাতে অনেকটাই আমরা আমাদের লক্ষ্যস্থলে পৌঁছে যেতে পারি।

কিন্তু প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে, সংস্কৃতি সম্পর্কে একটা ঐক্যবদ্ধ ধারণায় যাওয়ার ক্ষেত্রে তার অন্তর্গত চারিত্র্য যেমন একটি প্রধান প্রতিবন্ধক, তেমনি মানুষসৃষ্ট প্রতিবন্ধকতাও সাংস্কৃতিক প্রবণতা থেকে মানুষের মধ্যে বিভাজন সৃষ্টি করছে। ইংরেজিতে আমরা যে cultured কথাটির উল্লেখ করি, তা দিয়ে আমাদের অনেক বিশেষজ্ঞই এটা বোঝাতে চান, সংস্কৃতি হলো সভ্য মানুষের অন্তর্জগৎ এবং বহির্জগতকে প্রকাশের একটি মৌলিক আধার। এর সঙ্গে আমাদের সাধারণ জনগণের কোনও সংযোগ নেই। তার মানে সভ্য কথাটিকে তারা শিক্ষিত এবং উচ্চশ্রেণীর মানুষের একচেটিয়া অধিকারের বিষয় বলে মনে করেন। সন্দেহ নেই, এই ধারণা একপেশে, বর্ণবাদী, সামপ্রদায়িক এবং অনাকাঙ্ক্ষিত। কারণ পৃথিবীর শিক্ষিত কিংবা অশিক্ষিত, জাতি কিংবা জাতিগোষ্ঠী, আদিবাসী কিংবা আধুনিক মানব-সমপ্রদায় নির্বিশেষে প্রত্যেকের রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন সংস্কৃতি। যে সাঁওতাল কিংবা মণিপুরী নৃত্য আমাদের আজও চমকিত করে, তা বর্তমান তথাকথিত আধুনিক সংস্কৃতির চেয়ে কোন্ দিক থেকে নিম্ন মানের? বরং এই সকল সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে আমাদের হাজার হাজার বছরের ঐতিহ্যিক আবহ, যাকে আমরা কোনও অবস্থাতেই নিম্ন বা অ-সভ্য সংস্কৃতির পর্যায়ে ফেলতে পারি না। আসলে মনে রাখতে হবে শিক্ষা আমাদের সমকালীন করে তোলে, সব সময় সভ্য করে তোলে না। যার মধ্যে সংস্কৃতি নেই সে-ই অসভ্য, এটা অত্যন্ত যৌক্তিক একটি অভিধা, কিন্তু সংস্কৃতি নেই কার? পৃথিবীর এমন কোনও মানুষ কিংবা প্রাণী ও প্রকৃতি নেই, যার মধ্যে সংস্কৃতি নেই। ফলে এদের প্রত্যেকেরই যে আলাদা আলাদা সংস্কৃতি রয়েছে এবং সেই সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে সভ্যতার উপাদান, এটা অস্বীকার করা মানে সংস্কৃতির বৃহত্তর পরিমণ্ডলকে সংকুচিত করে ফেলা। এ কথা মনে রাখতে হবে, সংস্কৃতির চারিত্র্য নির্ভর করে তার ধারাবাহিক রূপান্তর-প্রক্রিয়ার অগ্রগতির ওপর। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে যদি কোনও সংস্কৃতি এগুতে না পারে, তা হলে তা আস্তে আস্তে ধ্বংস হয়ে যায়। তাই সংস্কৃতিকে টিকে থাকতে হলে প্রয়োজন হয় তার ধারাবাহিক রূপান্তরের। এই রূপান্তর-প্রক্রিয়া কিন্তু খুব স্বাভাবিকভাবেই চলতে থাকে। নদীর প্রবহমানতার মতো সংস্কৃতিও এগোয় তার আপন নিয়মে। এই অগ্রগতি বা রূপান্তরের গতিটা আমরা সব সময় সতর্ক প্রহরীর মতো লক্ষ করি না বটে, তবে এটা যে নিরন্তর ঘটতেই থাকে এবং এর ফলে সংস্কৃতি নতুন জীবন ফিরে পায় এবং নিজের অস্তিত্ব নানাভাবে ঘোষণা করে, তা নিশ্চয়ই জোরের সঙ্গে বলা যায়। সমস্যা হয়, আমরা যে সকল সংস্কৃতি প্রত্যক্ষ করি এবং যা দৃষ্টিগ্রাহ্য এবং শ্রুতিগ্রাহ্য তাকে শ্রবণ করি এবং ভাবি এটাই সংস্কৃতি, সেখানেই রয়ে যায় আমাদের ভাবনার অসম্পূর্ণতা। প্রত্যক্ষ সংস্কৃতিকে স্পর্শ করা যায়, তার অবয়ব আছে, আছে রূপান্তরের সহজ পথ, যেমন আমাদের কামার-কুমোর-তাঁতীদের সৃষ্ট বিভিন্ন লৌকিক উপাদান। কিন্তু যেটিকে দেখা যায়, শোনা যায় কিন্তু স্পর্শ করা যায় না, অথচ অনুভব করা যায়, যেমন নৃত্য, সঙ্গীত, শিল্প-সাহিত্য প্রভৃতি, তার রূপান্তরের প্রক্রিয়াটাকে খুব সহজে অনুভব করা যায় না। পৃথিবীতে এমন কোনও সংস্কৃতি নেই, যা রূপান্তরের প্রক্রিয়ার মধ্যে পড়ে না। এটা অবশ্য অনেক ক্ষেত্রে ইচ্ছে-অনিচ্ছের ওপরও অনেকটাই নির্ভরশীল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে অবশ্য এই রূপান্তরের প্রক্রিয়াটি কার্যকর হয় না। তার ফলে হয় সেটি চিরকালের জন্য বিলীন হয়ে যায়, অথবা থাকে এমনভাবে যাকে বলা যেতে পারে জীবন্মৃত। অবশ্য এখন আধুনিক প্রযুক্তির যুগে আমাদের যে কোনও ঐতিহ্যিক বিষয়কে টিকিয়ে রাখা এমন কোনও কঠিন কাজ নয়। সারা পৃথিবী জুড়েই সংস্কৃতিবান মানুষ নিজেদের ঐতিহ্যকে বাঁচিয়ে রাখার স্বার্থেই শুধু সাংস্কৃতিক রূপান্তরের কাজটি করছে না, তাকে হাজার হাজার বছর ধরে টিকিয়ে রাখার স্বার্থে আধুনিক প্রকৌশলের সাহায্য নিয়েও এগিয়ে যাচ্ছে। প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতায় 'পিরামিড সংস্কৃতি' যে অবস্থায় ছিল, আজ আর সে অবস্থায় নেই। মূল কাঠামোকে বজায় রেখে তাকে সংস্কার করা হয়েছে। গ্রীসের যে নগরসভ্যতার পত্তন ঘটেছিল আজ থেকে বহু বহু বছর আগে, তাকে গ্রীসীয়রাও সংস্কার করে সারা পৃথিবীর মানুষের সামনে তুলে ধরছেন। দেখিয়ে দিচ্ছেন তাদের প্রাচীন সভ্যতার ঐতিহ্যিক সৌন্দর্যকে। এমনকি ভারতবর্ষের 'তাজমহল' থেকে শুরু করে 'হাওড়ার ব্রীজ' পর্যন্ত নিয়মিত সংস্কার করে একে দীর্ঘস্থায়িত্ব এবং এর সৌন্দর্য প্রবহমান রাখার কাজে সেখানকার মানুষ এবং সরকার যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। এর মধ্য দিয়ে শুধু যে তাদের ঐতিহ্যের সংস্কারের কাজ চলছে তাই নয়, এতে করে তাদের যে সাংস্কৃতিক সৌন্দর্যবোধ তা-ও স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আসলে এটা শুধু এখানেই নয়, সারা পৃথিবীতেই ঘটে চলেছে, প্রাচীন সংস্কৃতির আধারকে যদি সংস্কার বা রূপান্তরের স্পর্শে সৌন্দর্যমুগ্ধতা দিয়ে ভরিয়ে তোলা না হয়, তা হলে তার মধ্য দিয়ে সেই জাতি বা জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক দীনতাই প্রকাশ পায়।

আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য দেশ যেমন করে তাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য নিয়ে গর্ববোধ করে, আমাদের ক্ষেত্রে তেমনটা খুব একটা ঘটে না। এর একটি প্রধান বাধা হচ্ছে আমাদের ধর্মীয় সংস্কৃতির আগ্রাসী মনোভাব। সংস্কৃতিকে যদি ধর্মীয় কূপমণ্ডুকতা দিয়ে ধর্মীয় আবরণে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা হয়, তা হলে সংস্কৃতি যেমন টেকে না, ঐতিহ্য বিলুপ্ত হয়ে যায়; জাতি হিসেবে কোনও উচ্চতায় তাদের পক্ষে পৌঁছুনোও সম্ভব হয় না। মনে রাখতে হবে, সংস্কৃতির ওপর জোর করে কোনও কিছু আরোপ করলে সেই সংস্কৃতি টেকে না, কালক্রমে তা ধ্বংস হয়ে যায়। আমরা যদি প্রাচীন গুহাগাত্রে অঙ্কিত চিত্রকলাসমূহের দিকে তাকাই, তা হলে দেখতে পাবো, অনেক ক্ষেত্রে নগ্ন পুরুষ ও নারীমূর্তি এবং তাদের বিশেষ অঙ্গভঙ্গিমা। হাজার হাজার বছর আগে মানুষ যখন নগ্ন থাকতো, তখন দেয়ালচিত্রে তাদের সেই সংস্কৃতির প্রতিচ্ছায়া পড়াই স্বাভাবিক। এখন আধুনিক যুগে এসে আমরা যদি সেই নগ্নতাকে কোনও আচ্ছাদন দিয়ে ঢেকে দিতে চাই, তা হলে তাতে আব্রু রক্ষা হয় বটে, ইতিহাস, ঐতিহ্য তথা সংস্কৃতি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যায়। আমাদের দেশের একশ্রেণীর মানুষ সেটাই করতে চায়। যদি আমরা আমাদের জাদুঘরগুলোর দিকে তাকাই তা হলে সেখানেও দেখতে পাবো, বিভিন্ন স্থান থেকে উদ্ধারকৃত বিভিন্ন দেবদেবীর মূর্তি কিংবা এমন সব যুগলমূর্তি, যাকে এখনকার চোখ দিয়ে দেখলে অশ্লীল বলে মনে হতে পারে। কিন্তু একমাত্র নির্বোধ এবং গোঁড়া ধর্মীয় মৌলবাদীরা ছাড়া একে পরিবর্তনের বা রূপান্তরের কথা কেউ চিন্তাও করতে পারে না। আফগানিস্তানে তালিবানরা যে পৃথিবীর অন্যতম বিশাল একটি বৌদ্ধমূর্তি ভেঙে দিয়ে উল্লাসে ফেটে পড়েছিল, তাতে আপাতদৃষ্টিতে মনে হতে পারে, তারা একটি মহৎ কাজ সম্পাদন করেছেন, আসলে এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের যে সুপ্রাচীন ঐতিহ্যের স্মারক হিসেবে একটি বৌদ্ধমূর্তি নমুনা হিসেবে রয়ে গিয়েছিল, রয়ে গিয়েছিল তাদের পূর্বপুরুষদের সংস্কৃতির একটি বিস্ময়কর উদাহরণ, তা তারা বোঝেনি। এই ধরনের মানসিকতাসম্পন্ন অন্ধরাই হলো সংস্কৃতির আসল শত্রু।

এই অন্ধদের কথা বাদ দিয়ে একটি কথা বলা যায়, এরা সংস্কৃতিকে ধ্বংস করতে চায়, এটা নিজেদের অন্ধ সংস্কৃতির আওতার মধ্যে পড়ে না বলে। সেখানে মৌলিকভাবে মূর্তিই হোক কিংবা দেয়ালগাত্রে অঙ্কিত চিত্রকলাসমূহই হোক, কোনওটাই তাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। তাই তাদের কাছ থেকে সংস্কৃতির প্রতি ভালোবাসা কিংবা নিজেদের সংস্কৃতিকে রূপান্তরের মাধ্যমেও টিকিয়ে রাখাকে তারা একটি পৌত্তলিক কাজ বলে মনে করে। তা-ই তারা সংরণের চেয়ে ধ্বংসের দিকেই নিজেদের হাত প্রসারিত করতে একটুও দ্বিধাগ্রস্ত নয়। সেজন্য ঐতিহ্য তাদের কাছে মূল্যহীন, সংস্কৃতি পরিত্যক্ত। কিন্তু পৃথিবীর অন্যান্য জাতিগোষ্ঠীর মধ্যে এই ধারণাটি নেই বলে তারা যে কোনও ধরনের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে তাদের উত্তরাধিকার বলে মনে করে, মনে করে নিজেদের বৃহত্তর সংস্কৃতির অংশ বলে। সেক্ষেত্রে তারা যে কোনও সাংস্কৃতিক উপাদানের রূপান্তরের ক্ষেত্রে কোনও দ্বিধার আশ্রয়ে অবসিত হয়ে থাকে না। প্রকৃত পক্ষে প্রাচীন কিংবা আধুনিক যাই হোক না কেন, তাকে যদি রূপান্তরের প্রয়োজন হয়, সে ক্ষেত্রে তারা কোনও হীনম্মন্যতায় ভোগে না। ফলে সংস্কৃতির শক্তির ক্ষেত্রে তারা অনেক জাতিগোষ্ঠীর চেয়ে কয়েক ধাপ এগিয়ে থাকে তাদের উদার মনোভাবের জন্যই। অনেকে আবার এই রূপান্তরের বিরুদ্ধেও অবস্থান নেন। তারা মনে করেন, মৌলিক সংস্কৃতির উপাদানের ক্ষেত্রে সংস্কার বা রূপান্তর ঘটলে তাতে সংস্কৃতির মৌলিক আধারের ওপর হস্তক্ষেপ করা হয়। ফলে সে তার প্রকৃত রূপ হারায়। এটা অবশ্য একদিক থেকে ঠিক। কিন্তু সংস্কৃতির বহু প্রাচীন আধার আছে, যাকে সংস্কার না করলে সেটি সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে মৌলিক কাঠামোকে সঠিক অবস্থায় রেখেই যদি তাকে সংস্কার করে কিংবা খানিকটা রূপান্তর করে আরও হাজার হাজার বছর টিকিয়ে রাখা যায়, তা হলে সেটা করার মধ্যে সংস্কৃতিকে ধ্বংস করে দেয়ার প্রবণতা আমি খুঁজে পাই না। এই সংস্কার-প্রবণতা বা রূপান্তরের চেষ্টার মধ্যে মানুষিক প্রয়াস থাকে বলে হয়তো এটাকে অনেকে সহজভাবে গ্রহণ করতে পারেন না, কিন্তু যেটা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইতিহাসের পরম্পরার মধ্য দিয়ে রূপান্তরিত হয়ে আসে, তাকে গ্রহণ করার ক্ষেত্রে কোনও বিরূপতার কারণ আমরা খুঁজে পাই না। এটা যেমন গুহাগাত্রের চিত্রকলা, ভাস্কর্য, শিল্পের নানা বিষয়, সাহিত্য ও সংস্কৃতির ব্যাপারে প্রযোজ্য, তেমনি প্রযোজ্য প্রকৃতিতে সংঘটিত নানা বিষয়সমূহ। অনেকে প্রকৃতিকে সংস্কৃতির মধ্যে ফেলতে চান না, কারণ সেটা মানবসৃষ্ট নয়। তা হলে কি ধরে নিতে হবে, মানুষসৃষ্ট যা কিছু আধার আমরা অবলোকন করি, স্পর্শ করি কিংবা অনুভব করি, সেগুলোকেই আমরা সংস্কৃতি বলে গ্রহণ করে প্রকৃতিকে সংস্কৃতির বাইরে রাখবো? যদি কোনও মানুষ একটি বৃরে বীজ বপন করে তাকে ধীরে ধীরে বড় করে তোলে কিংবা তার পরিচর্যা করতে করতে একটি সুন্দর ফুল ফোটানোর কাজ করে, তাকে আমরা সংস্কৃতির আধার বলে মনে করবো না কেন? তা ছাড়া বৃক্ষ থেকে বৃক্ষে রূপান্তরের কাজটিও যে কখনও কখনও স্বতঃস্ফূর্তভাবে সংঘটিত হয়ে যায় কিংবা প্রকৌশলগত আধুনিকতা দিয়ে নতুন কোনও বৃক্ষের জন্ম দান করা হয়, তাকে সংস্কৃতি বলে মেনে নিতে আমাদের আপত্তি থাকবে কেন?

আসল কথা, সংস্কৃতির যে কোনও ক্ষেত্রেই রূপান্তর চলে। সেই রূপান্তর-প্রক্রিয়া নানাভাবে হতে পারে। আমরা আমাদের শৈশব থেকে যে সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে বড় হয়েছি, তার ক্ষেত্রে কি কোনও রূপান্তর ইতোমধ্যেই ঘটেনি? অবশ্যই ঘটেছে। আজকের নিরঙ্কুশ গ্রাম তো আর গ্রামের মতো নেই। নাগরিক সংস্কৃতির অনেক কিছুই ঢুকিয়ে দিয়ে গ্রামীণ সংস্কৃতির মৌলিক ধারাটিকে রূপান্তরের প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। আগে গ্রামে যে মেলা বসতো, তাতে সেখানে যে আনন্দ-উল্লাস ঘটতো, তা অনেক ক্ষেত্রে কেড়ে নিয়েছে নগর-সংস্কৃতির উন্মার্গ বিশৃঙ্খলা। তাতে আমরা যেমন অনেক কিছু হারিয়েছি, তেমনি তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সংস্কৃতির নতুন নতুন উপাদান। এটা ঠেকাবার সাধ্য আমাদের নেই এবং সেটাকে ঠেকাতে যাওয়াও যুক্তিসঙ্গত নয়। রবীন্দ্রনাথ যে বলেছেন, 'দিবে আর নিবে, মিলাবে মিলিবে, যাবে না ফিরে' -- এই সত্যের ওপর দাঁড়িয়ে আজকের সংস্কৃতিকে বিশ্লেষণ করতে হবে। তা না হলে আমরা পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবো না। কিন্তু এটাও একইসঙ্গে মনে রাখতে হবে, পৃথিবীর সঙ্গে তাল মেলানোর অর্থ এই নয়, আমাদের ঐতিহ্যবাহী সবকিছুকে বিসর্জন দিয়ে শুধু পাশ্চাত্য সংস্কৃতির উন্মাদনা নিয়ে আমরা নিজেদের সভ্য ভাবতে শুরু করবো। আমাদের সমস্যা হলো, আমাদের মানসিকতা। সেখানেই ঘাটতি আছে বলেই আমরা নিজেদের ঐতিহ্যকে ধ্বংস করে তার ওপর তথাকথিত আধুনিক সভ্যতার প্রলেপ লাগিয়ে বাহবা কুড়াতে চাই। এতে না হয় পাশ্চাত্য সংস্কৃতি, না হয় দেশীয় সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার প্রয়াস। এটা একটা আত্মঘাতী প্রবণতা। এটা এখন বিশেষভাবে নাগরিক উঁচুস্তরের মানুষদের একটা আভ্যন্তরীণ সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে।

সংস্কৃতি কোনও কৃত্রিমতায় বিশ্বাস করে না। আমরা যদি পাশ্চাত্য থেকে কিছু গ্রহণ করি, তা আমাদের মতো করেই গ্রহণ করবো। তা না করে এখন আমরা যা করছি তা পাশ্চাত্য সংস্কৃতির ব্যর্থ অনুকরণ মাত্র। এটার মধ্যে আছে এক ধরনের হীনম্মন্যতা। আর এই হীনম্মন্যতাই সংস্কৃতির রূপান্তরের ক্ষেত্রে মৌলিক বাধা হয়ে দাঁড়ায়। এ কথা সত্যি, নগরসভ্যতার পত্তনের সঙ্গে সঙ্গে সংস্কৃতির বহু ক্ষেত্রেই পরিবর্তন ঘটেছে। আর যে সব দেশ অন্যান্য শক্তিধর দেশের উপনিবেশ ছিল, সেই সব দেশের ঘাড়ের ওপরে উপনিবেশবাদী শক্তির সংস্কৃতি শক্তভাবে চেপে বসেছে। এটা যেমন ঘটেছে ইউরোপ, আমেরিকা, এশিয়ায়, তেমনি ঘটেছে ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলোতে। তবে কালক্রমে মানুষ সচেতন হয়ে উঠছে। তাই আমরা দেখতে পাই ল্যাটিন আমেরিকায় এক নতুন সংস্কৃতির উদ্বোধন। এই সংস্কৃতি উঠে আসছে তাদের মাটি ফুঁড়ে, তাদের ঐতিহ্যসচেতনতার ভেতর থেকে। তারা বুঝে গেছে নিজেদের প্রকৃত সংস্কৃতির মধ্যেই তাদের উদ্ধারকর্ম নিহিত। আত্মসচেতনতা সংস্কৃতিকে বলবান করে, অন্য সংস্কৃতির অন্ধ অনুকরণ নিজেদের শিক্ষা, সংস্কৃতি ও সভ্যতাকে ধ্বংস করে। তাই আধুনিক সময়ের উপযোগী করে হলেও তারা তাদের সংস্কৃতির মধ্যে এক ধরনের স্বাভাবিক রূপান্তর ঘটাচ্ছেন, যা মৌলিকভাবে তাদের নিজস্ব। লক্ষ করলে দেখা যাবে, একমাত্র এ ক্ষেত্রে আমরাই প্রধানতম ব্যতিক্রম। নীরোদ সি চৌধুরী যে আত্মঘাতী বাঙালির কথা বলেছেন, তার মধ্যে বাঙালির হীনম্মন্যতাকে তিনি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। বাঙালি কেন এই হীনম্মন্যতায় ভোগে, তা নিয়ে প্রচুর বিতর্ক হতে পারে, তবে আমার কাছে এর পেছনে যে কারণটা বড় হয়ে দেখা দেয়, সেটা হচ্ছে ভয়। বিশেষভাবে বাংলাদেশের বাঙালিরা পৌত্তলিক সংস্কৃতির আগ্রাসনের ভয়ে নিজেদেরকে নিজেদের মধ্যেই অবরুদ্ধ করে রাখার দীনতায় ভোগে। অথচ যারা এই ধরনের রোগের শিকার, তাদের সংখ্যা খুব বেশি নয়। কিন্তু সমাজের ওপর এদের নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই তীব্র বলে এরা অশিতি মানুষদের অতি সহজেই প্রভাবিত করতে পারে। ফলে আমরা একটা দোদুল্যমান সংস্কৃতির প্রক্ষেপের মধ্য দিয়ে ঝুলন্ত হয়ে আছি। এটা অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। নিজেদের সংস্কৃতিকে যথাযথভাবে নিরূপণ করা, নিজেদের প্রাচীন ঐতিহ্যের মধ্যে নিজেদেরকে খুঁজে পাওয়ার মধ্যেই যে একটি জাতিগোষ্ঠীর মুক্তির পথ অবারিত হয়ে থাকে, এটা বোঝার মতাও আমাদের নেই। ফলে আমরা ক্রমশই প্রতিটি ক্ষেত্রে পিছিয়ে যাচ্ছি। অনেক সময় মনে হতে পারে, এটা আমাদের বোঝার ভুল। তা কিন্তু নয়, যারা জেগেও ঘুমায়, তাদের জাগানো যেমন সহজ নয়, তেমনি যারা জ্ঞানপাপী তারা জেনেশুনেই এই ধ্বংসাত্মক কাজে লিপ্ত হয়। আমাদের সংস্কৃতি এখন সেই বৈতরণীই পার হবার চেষ্টা করছে।

আসলে যতক্ষণ না আমরা আমাদের বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতির সঙ্গে সমন্বয় সাধন করতে পারবো এবং আন্তর্জাতিক সংস্কৃতিকে নিজেদের সংস্কৃতির প্রলেপ দিয়ে গ্রহণ করতে পারবো, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংস্কৃতি নিয়ে গর্ব করার মতো কিছুই অবশিষ্ট থাকবে না। আমাদের অশিক্ষিত লোকশিল্পীরা যা বোঝেন এবং দৃশ্যমান সংস্কৃতির রূপান্তরের কাজে নিজেদের ঐতিহ্যের প্রতি একশ' ভাগ বিশ্বস্ত থেকেই কাজ করে যান, তা আমাদের তথাকথিত সভ্য বা শিক্ষিত মানুষেরা বুঝতে পারেন না, এটা সহজে বিশ্বাস করা মুশকিল।
আমি আগেও বলেছি, সময়ের সঙ্গে পালা দিয়েই সংস্কৃতির রূপান্তর ঘটাতে হয়। কিন্তু সেটা কোনও অবস্থাতেই আত্মবিসর্জনের বিনিময়ে নয়। আমাদের যাত্রা-পালায় এখন আগের সেই ধরন নেই, ইলেকট্রনিক মিডিয়ার কারণে তা অনেকটাই বদলে গেলেও তার সম্পূর্ণ শেকড়কে উৎপাটন করে তা ঘটেনি। তাই আজও গ্রামেগঞ্জে 'রূপবানযাত্রা' কিংবা 'আলোমতি-প্রেমকুমার' যাত্রা-পালায় হাজার হাজার মানুষের উপস্থিতি ঘটে। গ্রাম্য মেলাগুলোতে দেশীয় খাবার-দাবারের সঙ্গে সঙ্গে আরও অনেক কিছুই ঘটে, যা আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্যের সঙ্গে সম্পৃক্ত। অনেক সময় রূপান্তরের ধারাটা আমরা চাক্ষুষ করতে পারি না। মনে হয় সবকিছুই আগের মতোই আছে। কিন্তু সূক্ষ্মভাবে দেখলে হয়তো কারোই নজর এড়াবে না যে, এর মধ্যেও অনেক কিছুর রূপান্তর ঘটেছে, যেটা হয়েছে অত্যন্ত স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়। আজ ১ বোশেখে কিংবা শহুরে মেলায় গ্রাম উঠে আসছে তার নিজস্ব শক্তি নিয়ে। কিন্তু আমরা যারা নাগরিক শক্তির নামে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির পদলেহন করি, তাদের কর্মকাণ্ডের মধ্যে তার নির্লজ্জ দৃষ্টান্ত সচেতন মানুষের চোখ এড়ায় না। সংস্কৃতি শুধু আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; কেউ যদি ভাবেন শুধু নাচ-গান, যাত্রা-পালার মধ্যে সংস্কৃতির অবস্থান অথবা সংস্কৃতি শুধু ছায়াছবি, ফাস্টফুড, ইংরেজি স্টাইলে বাংলা বলার অপচেষ্টা, কিংবা ১ বোশেখে ধুতি-পাঞ্জাবি পরে রমনার বটমূলে গমন, ঢাক-ঢোল বাজিয়ে নানা রঙে সজ্জিত হয়ে বিশাল মিছিল করা, তা হলে বুঝতে হবে, তারা নিজেরাই এখনও সংস্কৃতিবান হয়ে উঠতে পারেননি। সংস্কৃতি হচ্ছে একটি শাশ্বত ব্যাপার -- যা যুগ যুগ ধরে ধারাবাহিকভাবে নিজের পরম্পরাকে সঠিকভাবে অনুসরণের মাধ্যমে তার অস্তিত্বকে টিকিয়ে রাখে। আমাদের বুঝতে হবে, সংস্কৃতি একটি বহমান স্রোতের মতো। সেই স্রোতের সঙ্গে প্রবহমান না থাকতে পারলে রূপান্তরের সংস্কৃতি তো দূরের কথা, সামান্য সংস্কৃতিবান হয়ে ওঠাও তাদের পক্ষে সম্ভব নয়।

অনেকে ভাবতে পারেন, আমি আমার এই লেখার মধ্য দিয়ে শুধু নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছি। আসলে সেটা সত্যি নয়। কারণ আমি তো চাই, আমাদের বৃহত্তর জনসংস্কৃতির সঙ্গে নাগরিক এবং পাশ্চাত্য জনসংস্কৃতির ইতিবাচক দিকের মেলবন্ধন ঘটুক। কিন্তু বাস্তবে সেটা হচ্ছে কি? যদি সংস্কৃতির একটি অঙ্গ হিসেবে গানের কথাই বলি, তা হলে কি এটা আমরা জোরের সঙ্গে বলতে পারবো যে, তাকে আমরা এবং আমাদের সরকার যথাযথ সম্মান দিচ্ছি? আমরা প্রতিরক্ষা, স্বরাষ্ট্র কিংবা ধর্মের জন্য যতোটা পৃষ্ঠপোষকতা দিই, আমাদের মৌলিক সংস্কৃতিকে রক্ষা করার জন্য ততটুকু কি দিই? দিই না। আর আমাদের বহুজাতিক কোম্পানিগুলো তো ইচ্ছেকৃতভাবেই আমাদের লোকসংস্কৃতিকে ধ্বংসের জন্য উঠে-পড়ে লেগেছে। তারা ব্যান্ড সঙ্গীতদলগুলোকে যেভাবে সহযোগিতা করেন, আমাদের ঐতিহ্যবাহী লোকসংস্কৃতি দলকে কি সেইভাবে সহযোগিতা করেন? বরং এ ক্ষেত্রে উল্টোটাই ঘটে। তারা আমাদের মধ্যে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির এমন বিষধর বীজ বপনের কাজে নিজেদের নিয়োজিত রেখেছেন যে, তার চাপে আমাদের মৌলিক সংস্কৃতি আজ ধ্বংস হবার পথে। এদের সঙ্গে যোগাযোগ আমাদের ওপরতলার মানুষদের, যারা আমাদের লোকসংস্কৃতিকে অচ্ছুতের সংস্কৃতি বলে মনে করেন। তাই আমাদের গ্রামের সঙ্গে নগরের ব্যবধান এখনও কমেনি। যদিও আগেই বলেছি, আমাদের আগের সেই গ্রাম এখন আর নেই, কিন্তু যেটুকু আছে, সেটাকে রূপান্তরের নামে যখন নাগরিক পেশাজীবী-বুদ্ধিজীবীরা মাঠে নামেন, তখন একটা ভয় নিত্য-নিয়ত আমাদের লোকসংস্কৃতির ধারক-বাহকদের মধ্যে অনিবার্যভাবে কাজ করে যে, তারা অবশ্যই লোকসংস্কৃতিকে গিলে ফেলতে নিজেরা বহুজাতিক কোম্পানির স্বার্থরার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছেন।

তার ফলে আমাদের সংস্কৃতির সর্বেক্ষেত্রে একটা নৈরাজ্য লক্ষ করা যাচ্ছে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের সংস্কৃতিতেও রূপান্তরের আঁচ লাগবে, কিন্তু তা যদি গনগনে আগুনের দহনশিখা তৈরি করে, তবে তার তাপে আমাদের মৌলিক সংস্কৃতি পুড়ে ছাই হয়ে গেলে তার দায় বহন করতে হবে বহুজাতিক কোম্পানির ইজারাদারদেরই। তবে আশার কথা এই যে, আমাদের বৃহত্তর জনগোষ্ঠী এখন এ ব্যাপারে সচেতন হয়ে উঠছেন। ফলে খুব সহজে তাদের ধ্বংস করা সম্ভব হবে না। তারা নিজেরাই সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে নিজেদেরকে রূপান্তরের সংস্কৃতির অঙ্গীভূত করে আমাদের হাজার হাজার বছর ধরে চলে আসা ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতিকে বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হবেন, এটা নিশ্চয়ই আমরা দৃঢ়ভাবে আশা করতে পারি।
৩টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কমলার জয়ের ক্ষীণ ১টা আলোক রেখা দেখা যাচ্ছে।

লিখেছেন সোনাগাজী, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:১৮



এই সপ্তাহের শুরুর দিকের জরীপে ৭টি স্যুইংষ্টেইটের ৫টাই ট্রাম্পের দিকে চলে গেছে; এখনো ট্রাম্পের দিকেই আছে; হিসেব মতো ট্রাম্প জয়ী হওয়ার কথা ছিলো। আজকে একটু পরিবর্তণ দেখা... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিড়াল নিয়ে হাদিস কি বলে?

লিখেছেন রাজীব নুর, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:২৪



সব কিছু নিয়ে হাদিস আছে।
অবশ্যই হাদিস গুলো বানোয়াট। হ্যা বানোয়াট। এক মুখ থেকে আরেক মুখে কথা গেলেই কিছুটা বদলে যায়। নবীজি মৃত্যুর ২/৩ শ বছর পর হাদিস লিখা শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। বকেয়া না মেটালে ৭ নভেম্বরের পর বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না আদানি গোষ্ঠী

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ সকাল ৯:৪১





বকেয়া বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে কোটি কোটি টাকা। ৭ নভেম্বরের মধ্যে তা না মেটালে বাংলাদেশকে আর বিদ্যুৎ দেবে না গৌতম আদানির গোষ্ঠী। ‘দ্য টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র একটি প্রতিবেদনে এমনটাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারত থেকে শেখ হাসিনার প্রথম বিবৃতি, যা বললেন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ দুপুর ১২:৩২



জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে বিবৃতি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শনিবার (২ নভেম্বর) বিকালে দলটির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এটি পোস্ট করা হয়। গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার... ...বাকিটুকু পড়ুন

=বেলা যে যায় চলে=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৪ ঠা নভেম্বর, ২০২৪ বিকাল ৪:৪৯



রেকর্ডহীন জীবন, হতে পারলো না ক্যাসেট বক্স
কত গান কত গল্প অবহেলায় গেলো ক্ষয়ে,
বন্ধ করলেই চোখ, দেখতে পাই কত সহস্র সুখ নক্ষত্র
কত মোহ নিহারীকা ঘুরে বেড়ায় চোখের পাতায়।

সব কী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×