দলবাজ স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী একজন ব্যক্তির জন্য মায়াকান্নার কিছু নেই
আআমস আরেফিন সিদ্দিক। পুরো নাম আবু আহসান মো. সামশুল আরেফিন সিদ্দিক। ঢাবির সাবেক উপাচার্য (ভিসি)। তার কর্মকাণ্ড ও ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন নিয়ে বিভিন্ন সময়ে আলোচনা ও বিতর্ক হয়েছে। ঢাবি থেকে অবসরে যাওয়ার পরেও তার সুবিধাভোগের ধারা অব্যাহত ছিল। অবসরে গিয়ে তিনি বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। উহার জন্য্ কাউকে কাউকে অতিরিক্ত কান্নাকাটি করতে দেখা যাচ্ছে। একজন দলবাজ স্বৈরাচারের সুবিধাভোগী একজন ব্যক্তির জন্য মায়াকান্নার কিছু নেই।
আআমস আরেফিন সিদ্দিকের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন:
আআমস আরেফিন সিদ্দিক ২০০৯ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি মোট ৮ বছর এই পদে ছিলেন। তার দায়িত্বকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ও প্রশাসনিক উন্নয়নে বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তবে তার কিছু সিদ্ধান্ত ও কর্মকাণ্ড নিয়ে বিতর্কও তৈরি হয়।
স্বৈরাচারের দোসর ও সুবিধাভোগী হওয়ার অভিযোগ:
আআমস আরেফিন সিদ্দিকের বিরুদ্ধে কিছু মহল থেকে অভিযোগ উঠেছে যে তিনি স্বৈরাচারী শাসনের দোসর বা সুবিধাভোগী ছিলেন। এই অভিযোগের পেছনে মূলত নিম্নলিখিত বিষয়গুলো রয়েছে:
১. রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট:
আআমস আরেফিন সিদ্দিক ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে। তার দায়িত্বকালে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু সিদ্ধান্তকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবিত বলে মনে করা হয়।
তিনি সরকারের সমালোচনা কম করেছেন এবং সরকারের নীতির প্রতি সমর্থন দেখিয়েছেন বলে অনেকে মনে করেন। এর জন্য তাকে "সরকারপন্থী" বা "সুবিধাভোগী" হিসেবে অভিহিত করা হয়।
২. শিক্ষার্থীদের আন্দোলন ও দমন:
তার দায়িত্বকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বেশ কয়েকটি ছাত্র আন্দোলন হয়, যেগুলোকে প্রশাসন কঠোর হাতে দমন করেছিল বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে ২০১২ সালের কুর্মিটোলা গেইট আন্দোলন এবং ২০১৭ সালের কোটা সংস্কার আন্দোলন-এর সময় প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা হয়।
এই আন্দোলনগুলোর সময় প্রশাসনের কঠোর পদক্ষেপকে অনেকে "স্বৈরাচারী" মনোভাব হিসেবে দেখেন।
৩. মুক্তচিন্তা ও বাকস্বাধীনতা:
আআমস আরেফিন সিদ্দিক একজন লেখক ও কলামিস্ট হিসেবে পরিচিত। তার লেখনীতে তিনি প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার কথা বললেও, ভিসি হিসেবে তার প্রশাসনিক সিদ্ধান্তগুলোকে অনেকে "স্বৈরাচারী" বলে মনে করেন। বিশেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের বাকস্বাধীনতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
৪. সুবিধাভোগী হওয়ার অভিযোগ:
কিছু সমালোচক দাবি করেন যে তিনি সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় দীর্ঘ সময় ধরে ভিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এবং এর মাধ্যমে তিনি রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক সুবিধা ভোগ করেছেন। শুধু ঢাবিতেই নন, তিনি ঢাবি থেকে অবসরের পরেও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) চেয়ারম্যান ও বাংলাদেশ জাতীয় জাদুঘরের ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এগুলো মূলতঃ স্বৈরাচারের দোসর হিসেবে সুবিধা লাভ করেছেন।