মানুষের জীবনের প্রথম বারো বছর বুদ্ধি কেবলই বাড়ে। প্রতি মুহুর্তে নতুন কিছু শিখছে। কিন্তু, এসময় যাচাই করার মানসিকতা থাকে না। যে যা বলে তাই সরল মনে বিশ্বাস করে। মোটামুটি বিশ বছর বয়স পর্যন্ত মানুষের বুদ্ধি বেড়ে পুর্ণতা লাভ করে। এর পরে আর বুদ্ধি সাধারনত বাড়ে না। পঞ্চাশ-পঞ্চান্ন পর্যন্ত তা একই লেভেলে থেকে ধীরে ধীরে কমতে থাকে।
অভিজ্ঞতা সারাজীবনই একই হারে বাড়তে থাকে। বিশের পরে যখন মানুষের বুদ্ধির বৃদ্ধি থেমে যায় তখনও অভিজ্ঞতা বাড়তে থাকে। ফলে, মানুষের বুদ্ধি না বাড়লেও অভিজ্ঞতার আলোকে তার যথাযথ ব্যাবহারের ক্ষমতা বাড়ে। বারোর আগে পর্যন্ত মানুষ শুধু শেখে। আর বারো থেকে বিশ পর্যন্ত যা শেখে তা যাচাই করে। এই কারনে এই বয়সের ছেলে-মেয়েরা যে কোন কিছুকে চ্যালেঞ্জ করতে পছন্দ করে।
জন্মের সময় মানুষের সততা থাকে সর্বোচ্চ। তারপরে, যখন থেকে তার বোধ হওয়া শুরু করে তখন থেকে তার সততা হ্রাস পেতে থাকে। তার পরেও বাইশ থেকে পঁচিশ পর্যন্ত মানুষ মোটামুটি সৎ থাকে। তারপরে আসে উচ্চাশা। তখন মানুষ বিভিন্ন বিষয়ে আপোষ করতে শুরু করে। ফলে, সততা দ্রুত হ্রাস পেতে থাকে। পঞ্চাশ বছর পর্যন্ত তা একই রকমভাবে চলে। তারপরে ষাট পর্যন্ত হ্রাসের হারটা একটু কম। কারন, জীবনে যা অর্জন তা সম্পুর্ন হয়ে যায় পঞ্চাশের ভেতরেই। বাকি যা থাকে তা আর হবে না বলে মেনে নেয়। ষাটের পরে শুরু হয় জীবনের অনিত্যতা সম্পর্কে চিন্তা। তখন আবার সততা ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে।
বিঃ দ্রঃ নবনীতা দেবসেনের লেখা “চক্রবর্তী রাজশেখর H.O.D.H.S" থেকে উপরের দর্শণটুকু নেয়া। আমি বাংলাদেশে নবনীতা দেবসেনের লেখা গল্প অনেকদিন ধরে খুজছি। কোথায় কিনতে পাওয়া যাবে কেউ যদি জানান তবে খুব খুশি হব।