দিনাজপুরের বীরগঞ্জে এতিমখানার এক ছাত্রকে জামায়াত নেতা কর্তৃক বলাৎকারের ঘটনা জানতে পেরে বিক্ষুব্ধ জনতা মাদ্রাসা কমিটির লোকজনকে গত রোববার রাতভর অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী। থানায় মামলা দায়ে করা হয়েছে
উপজেলার নিজপাড়া ইউনিয়নের জামায়াত নিয়ন্ত্রিত হাবলুহাট এতিমখানার দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্র শতগ্রাম ইউনিয়ন জামতলী গুচ্ছগ্রামের মৃত তোতা মিয়ার পুত্র মনিরুল ইসলাম (১০) কে গত সেপ্টেম্বর মাসে এতিমখানা পরিচালনা কমিটির সদস্য সুজালপুর ইউনিয়নের শীতলাই গ্রামের মৃত. ইউসুফ আলীর পুত্র হোমিও চিকিৎসক জামায়াত রুকন ডাঃ আশরাফ আলী (৬০) বলাৎকার করে। ঐ ছাত্র বিষয়টি এতিমখানার প্রধান শিক্ষক তরিকুল ইসলামকে জানায় কিন্তু জামাতের সমর্থক হওয়ার তিনি অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন না করে ব্যাপারটিকে ধামাচাপা দিতে উদ্যোগ নেন
এর সপ্তাহ খানেক পর ডাঃ আশরাফ আলী ঐ ছাত্রকে আবার বলাৎকার করলে তার চিৎকারে এতিমখানার প্রথম শ্রেণীর ছাত্র মোঃ শাহীন, মোঃ শাকিল এবং ২য় শ্রেণীর ছাত্র সোহেল ছুটে এসে উক্ত ঘটনা দেখে ফেলে প্রধান শিক্ষককে জানায়। ঘটনা প্রকাশ হয়ে পড়ায় গত রোববার সন্ধ্যায় এতিমখানার পরিচালনা কমিটির অপর সদস্য শীতলাই গ্রামের মৃত সবার উদ্দীনের পুত্র মোঃ কাবুল (৪৫) ছাত্রদের মারধর করে আশরাফ আলীর পরিবর্তে এতিমখানার অর্থ আদায়কারী আরিফুর রহমানকে অভিযুক্ত করতে শিখিয়ে দেয়।
ছাত্রদের কান্নায় এলাকার লোকজন ছুটে এসে আসল ঘটনা জানতে পারলে উপস্থিত কমিটির লোকজনকে অবরুদ্ধ করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। এ সময় অভিযুক্তরা পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এমিখানার সভাপতি উপজেলা জামায়াতের আমীর পৌর মেয়র মাওঃ মোহাম্মদ হানিফ উত্তেজিত জনতাকে শিবির ক্যাডার দিয়ে হুমকি দেখায় । মুহূর্তের মধ্যে শত শত লোক এসে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানান। সংবাদ পেয়ে বীরগঞ্জ থানার এসআই মতিন এর নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঐ ছাত্রকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
এ ব্যাপারে এতিমখানার প্রধান শিক্ষক মোঃ তরিকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান প্রথম যেদিন ঘটনাটি জানতে পারি সেদিনই সভাপতি মাওঃ মোহাম্মদ হানিফকে জানিয়েছিলাম তখন তিনি বিষয়টি অন্য কাউকেও না জানাতে অনুরোধ জানান এবং পরবর্তী ঘটনা জানার সঙ্গে সঙ্গে কমিটির সভাপতিসহ সদস্য ফয়েজ আহম্মেদ ও ফেরু মাস্টারকে জানাই। কিন্তু তারা কি কারনে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা গ্রহন করেননি এ ব্যাপারে আমি কিছু জানিনা।
বীরগঞ্জ থানার ওসি (প্রশাসন) আনিছুর রহমান জানান বিষয়টি ন্যাক্কারজনক। দোষীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এ ব্যাপারে এতিমখানার প্রধান শিক্ষক মোঃ তরিকুল ইসলাম হয়ে বীরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন।