রাজাকার মুজা মইতা দেলুর এবং লাল দাঁড়ির সাঈদিকে জেলে নেওয়ার পর থেকেই জামাত শিবির তাদের বিচারের প্রক্রিয়াকে বাধাগ্রস্ত করতে নানা প্রকার চক্রান্ত করতে যাচ্ছে নিরীহ পথচারিদের এবং যানবাহনের উপর চোরাগুপ্তা হামলা, নেট এবং ব্লগে লোক নিজেদের লোকদের দদিয়ে নানা প্রকার অপ্রচার করা এই সব কার্যক্রমের অংশ এরকমই একটা শিবিরে নাশকতা মূলক কাজকে পুলিস নস্যাৎ করে দিয়েছে অতি সম্প্রীত
‘বদনা শাহ মাজার (সিএসসিআরের পাশে) প্রবর্তক মোড়ে বেলা একটায় পর্যাপ্ত সঙ্গীসহ থাকতে হবে। প্রত্যেককে পকেটে করে ৮-১০টি পাথর নিয়ে আসতে হবে।’ চট্টগ্রাম নগরের খুলশী এলাকার একটি রেস্তোরাঁ থেকে গ্রেপ্তার করা জামায়াত-শিবিরের ২৫ নেতা-কর্মীর মুঠোফোনে এ ধরনের অনেক খুদে বার্তা (এসএমএস) পাওয়া গেছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে খুলশীর তাভা কাবাব হাউস থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ সূত্র জানায়, বিভিন্ন স্থানে চোরাগোপ্তা হামলা চালানোর পূর্বপরিকল্পনার অংশ হিসেবে জামায়াত-শিবিরের এসব নেতা-কর্মী ওই রেস্তোরাঁয় জড়ো হতে পারেন। তবে গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা দাবি করেন, তাঁরা সেখানে ডিএনএ নামের একটি কোচিং সেন্টারের নবীনবরণ অনুষ্ঠান করছিলেন।
গ্রেপ্তার হওয়া ২৫ জনের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীর উত্তর জেলার সাবেক আমির ও মহানগর শুরা সদস্য মফিজুর রহমানও রয়েছেন। বাকি ২৪ জন শিবিরের নেতা-কর্মী। তাঁদের মধ্যে সাতজন চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। বাকিরা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন কলেজে পড়েন।
পুলিশ জানায়, গ্রেপ্তার হওয়া ভেটেরিনারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা হলেন হেলাল উদ্দিন, আসাদ উল্লাহ আল গালিব, আলী হায়দার, শাহাবুদ্দিন, নিজাম উদ্দিন, রিজুয়ানুর রাকিব ও আবদুল্লাহ করিম মজুমদার। বাকিরা হলেন মোহাম্মদ ইকবাল (প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়), শরীফুল ইসলাম, শাহেদুল করিম, এহছানুল হক, মামুনুর রশীদ, মো. রাসেল, নাছির উদ্দিন, সায়েদুর রহমান, শাফায়েত জামিল, আবদুল্লাহ আল মামুন, আবু সায়েম, আনছার উদ্দিন, নূর এ আজম, সরোয়ার কামাল, মোছলেম উদ্দিন, রাশেদুল ইসলাম ও মো. আলী মর্তুজা।
খুলশী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. ইফতেখার হাসান জানান, ‘আমাদের কাছে সংবাদ ছিল ফয়’স লেক এলাকার একটি রেস্তোরাঁয় বৈঠক হবে। পরে সেটা তাভা রেস্তোরাঁয় চলে আসে। নবীনবরণ অনুষ্ঠানের আড়ালে তাঁরা নাশকতা চালানোর জন্য সংগঠিত হচ্ছিলেন। তাঁদের মোবাইলের বার্তায় এ প্রমাণ পাওয়া যায়।’ আটক ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি চলছে।
পুলিশ গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের সামনেই তাঁদের একটি মুঠোফোনের বার্তাগুলো সাংবাদিকদের দেখান। গ্রেপ্তার হওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের ছাত্র নাছির উদ্দিনের মুঠোফোনের বার্তায় বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ও শিবিরের বিভিন্ন বৈঠকের কথা উল্লেখ আছে। গত রোববার নগরের হালিশহরের বড়পুল এলাকায় যানবাহন ভাঙচুরের আগে-পরের বেশকিছু ঘটনার তথ্যসংবলিত বার্তা এতে রয়েছে।
একটি বার্তায় রয়েছে, ‘সিঙ্গাপুর মার্কেটে (হালিশহর) বিকেল চারটায় জড়ো হতে হবে। বিক্ষোভ মিছিল হবে।’ ফোনসেটের আউটবক্সে জমা রাখা আরেকটি বার্তায় বলা হয়েছে, ‘আজ হালিশহরে চিরুনি অভিযান চালানো হবে।’ কিন্তু এই বার্তাগুলো কত তারিখে কার কাছে পাঠানো হয়েছে তার উল্লেখ নেই। অন্যদের মুঠোফোনেও এ ধরনের তথ্য থাকতে পারে বলে পুলিশের ধারণা।
নগর পুলিশের উপকমিশনার (উত্তর) বনজ কুমার মজুমদার বলেন, ‘এরা নগরে চোরাগোপ্তা হামলা-ভাঙচুর চালানোর জন্য তৈরি হচ্ছিল। তাদের মুঠোফোনের বার্তা এটার প্রমাণ।’