somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

যৌবন কালের ইবাদত বড়ই মূল্যবান সম্পদ

০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৫২
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন এত সুন্দর পৃথিবীতে অনেক কিছু সৃষ্টি করেছেন শুধু মাত্র আমাদের কাছে সহযোগিতা বা এক প্রকার বলা চলে আমাদের ইবাদত করার জন্য। আর আমাদেরকে তথাপি সৃষ্টির সেরা জীব মানুষকে এবং জিন জাতিকে সৃষ্টি করেছেন শুধু মাত্র আল্লাহু পাক রাব্বুল আলামীনের ইবাদতের জন্য। তবে এই ইবাদতের শ্রেষ্ঠ সময় বা উত্তম হচ্ছে কিশোর কিশোরী থেকে যৌবন কাল ।
দেখুন একজন মানুষ যখন ভূমিষ্ঠ হয় পৃথিবীতে তখন সে একেবারে দুর্বল থাকে।সেই শিশুটি তখন না কোনো কথা বলতে পারে,না পারে সে নিজ হাতে খেতে, সব কাজেই তাকে তার মা,বাবা অথবা অন্য কারো সাহায্য সহযোগিতা নিতে হয়।

ঠিক ধীরে ধীরে যখন একজন মানুষ শিশু কিশোর ও যৌবন পার করে বৃদ্ধকালে পড়ে তখন আবারো সে দুর্বল হয়ে পড়ে।
তখন আবারো মানুষ পরনির্ভরশীল হয়ে পড়েন ।

তবে মাঝামাঝি সময়েই বা যাকে আমরা যৌবনকাল বলে থাকি, এই সময় মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন মানুষকে সব থেকে বেশি শক্তি,সামর্থ্য দিয়ে থাকেন । আর সেই শক্তি সামর্থ্য ব্যবহার করে একজন মানুষ চাইলে সারা বিশ্ব জয় করতে পারেন।

এই জন্যই আল্লাহু পাক রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন,
যিনি তোমাদের সৃষ্টি করেছেন দুর্বল বস্তু থেকে এবং দুর্বলতার পর তিনি শক্তি দান করেন। আর শক্তির পর তিনি আবার দেন দুর্বলতা ও বার্ধক্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন এবং তিনিই সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। ’ (সুরা: রুম, আয়াত: ৫৪)



পবিত্র হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, রাসুল (সা: )বলেন, যেদিন আল্লাহর রহমতের ছায়া ছাড়া আর কোনো ছায়া থাকবে না। সেদিন সাত ব্যক্তিকে আল্লাহ তাআলা তার নিজের ছায়ায় আশ্রয় দেবেন। তার মধ্যে রয়েছে,যে যুবকের জীবনটা গড়ে উঠেছে তার প্রতিপালকের মানে আল্লাহু পাক রাব্বুল আলামীনের ইবাদত বন্দেগীর মধ্যে দিয়ে ।(বুখারি, হাদিস: ৬৬০)

কালের সাক্ষী যুগে যুগে সব পাপ এবং অন্যায়ের বিরুদ্ধে কিন্তু যুবকরাই দাঁড়িয়েছে বা লড়াই করেছেন। প্রায় প্রতিটি জাতির ইতিহাসেই দেখা মিলে তাদের মুক্তি, শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে যুবকরাই প্রথম অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে। তেমনই এক যুবক ছিলেন ইবরাহিম (আ: )। যিনি সর্বপ্রথম তাঁর গোত্রের মূর্তিপূজার বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছিলেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তাদের কেউ কেউ বলল, আমরা শুনেছি এক যুবক এই মূর্তিগুলোর সমালোচনা করে। তাকে বলা হয় ইবরাহিম। ’ (সুরা: ইবরাহিম, আয়াত: ৬০)

মহান আল্লাহ তার বান্দাদের উপযুক্ত সময় বিশেষ বিশেষ নিয়ামত দান করেন। অনেক ক্ষেত্রে মানুষের জন্য সেই উপযুক্ত সময় হলো বিশেষ করে যৌবন কাল। মহান আল্লাহ পাক রাব্বুল আলামীন বলেন, আর মুসা যখন যৌবনে পদার্পণ করল এবং পরিণত বয়স্ক হলো, তখন আমি তাকে বিচারবুদ্ধি এবং জ্ঞান দান করলাম। আর এভাবেই আমি সৎকর্মশীলদের পুরস্কার দিয়ে থাকি। ’ (সুরা: কাসাস, আয়াত: ১৪)

শুধু তা-ই নয়, ঈমান রক্ষার জন্য গোত্র ত্যাগকারী সেই আসহাবে কাহফকেও পবিত্র কোরআনের মাধ্যমে মহান আল্লাহ চিরস্মরণীয় করে রেখেছেন। ইরশাদ হয়েছে, ‘আমি তোমাকে তাদের সংবাদ সঠিকভাবে বর্ণনা করছি। নিশ্চয়ই তারা কয়েকজন যুবক, যারা তাদের রবের প্রতি ঈমান এনেছিল এবং আমি তাদের হিদায়াত বাড়িয়ে দিয়েছিলাম। ’ (সুরা: কাহফ, আয়াত: ১৩)

যৌবন কখনো কখনো মানুষকে পথভ্রষ্ট করে। যৌবনের তাড়নায় অনেক ধরনের পাপে লিপ্ত হয়ে যায়। এ কারণেই যুবকদের উদ্দেশে রাসুল (সা.) বলেন, হে যুবকদের দল! তোমাদের মধ্যে যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে, সে যেন বিয়ে করে। এবং যে বিয়ের সামর্থ্য রাখে না, সে যেন ‘সাওম’ পালন করে। কেননা সাওম যৌন ক্ষমতাকে দমন করে। (বুখারি, হাদিস: ৫০৬৫)

যৌবনে কেউ কেউ অধিক ফ্যাশনপ্রিয় হয়। তাদের চুল, পোশাক ও বেশভূষায় থাকে উগ্রতা। কেউ কেউ নারীদের মতো কানে দুল পরে। কেউ আবার সোনার আংটি, চেইন, ব্রেসলেট ইত্যাদিও পরে থাকে। রাসুল (সা.) এ ধরনের কাজ পছন্দ করতেন না। একবার রাসুল (সা.) হজরত খাব্বাবের দিকে তাকিয়ে দেখতে পেলেন, তার হাতে একটি সোনার আংটি। তিনি বললেন, এখনো কি এ আংটি খুলে ফেলার সময় হয়নি? খাব্বাব (রা.) বললেন, আজকের পর আর এটি আমার হাতে দেখতে পাবেন না। অতঃপর তিনি আংটিটি ফেলে দিলেন। (বুখারি, হাদিস: ৪৩৯১)

মূলকথা হলো, যৌবনকাল মানুষের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি নিয়ামত। এ সময় মানুষের ইবাদতের শক্তি ও সুস্থতা দুটিই থাকে। এ সময় একটা মানুষ যতটা শুদ্ধতা ও দৃঢ়তার সহিত আমল করতে পারে, বৃদ্ধ হয়ে গেলে তা অনেক সময় সম্ভব হয় না। তাই এই মহামূল্যবান নিয়ামতে কোনোভাবেই অবহেলায় কাটানো উচিত নয়। কারণ, কিয়ামতের দিন যৌবনকালের সময়ের হিসাব নেওয়া হবে।

নবী (সা.) বলেছেন, কিয়ামত দিবসে পাঁচটি বিষয় সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ হওয়ার আগ পর্যন্ত আদম সন্তানের পদদ্বয় আল্লাহ তাআলার নিকট থেকে সরতে পারবে না। তার জীবনকাল সম্পর্কে, কিভাবে অতিবাহিত করেছে? তার যৌবনকাল সম্পর্কে, কী কাজে তা বিনাশ করেছে ; তার ধন-সম্পদ সম্পর্কে, কোথা হতে তা উপার্জন করেছে এবং তা কী কী খাতে খরচ করেছে এবং সে যতটুকু জ্ঞান অর্জন করেছিল সে মোতাবেক কী কী আমল করেছে। (তিরমিজি, হাদিস: ২৪১৬)

তাই আমাদের প্রতিটি মানুষের উচিৎ যৌবন কালে বেশি করে আল্লাহু পাক রাব্বুল আলামীন কে খুশি রাজি রাখতে বেশি বেশি আল্লাহুর ইবাদতে মনযোগ দেয়া ।
সর্বশেষ এডিট : ০৩ রা অক্টোবর, ২০২৪ রাত ৯:৫৩
৪টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

=এখানে আর নিরাপত্তা কই!=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৩:১৩


কোন সে উন্নয়নের পথে হাঁটছি বলো
এই গিঞ্জি শহর কি বাসের অযোগ্য নয়?
শূন্যে ভাসমান রাস্তা-নিচে রাজপথ
তবু কি থেমে আছে যানজট কিংবা দুর্ঘটনা?

দৌঁড়ের জীবন-
টেক্কা দিতে গিয়ে ওরা কেড়ে নেয় রোজ... ...বাকিটুকু পড়ুন

এই শহর আমার নয়

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ বিকাল ৫:০২




এই শহর আমার নয়
ধুলিমলিন, পোড়া ধোঁয়ায় ঘেরা
ধূসর এক স্বপ্নহীন চেহারা।
এই শহর, আমার নয়।

ঘোলাটে চোখে জমে হাহাকার,
চেনা মুখেও অচেনার ছাপ।
পথে পথে স্বপ্নরা পোড়ে,
আলোর ছায়ায় খেলে আঁধার।

এই শহর... ...বাকিটুকু পড়ুন

টিউবওয়েলটির গল্প

লিখেছেন নাহল তরকারি, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:০৪



এটা একটি টিউবওয়েল।

২০০৯ সালে, যখন আমি নানী বাড়ি থেকে লেখাপড়া করতাম, তখন প্রতিদিন এই টিউবওয়েল দিয়েই গোসল করতাম। স্কুল শেষে ক্লান্ত, ঘামাক্ত শরীর নিয়ে যখন ঠান্ডা পানির ঝাপটায় নিজেকে স্নান... ...বাকিটুকু পড়ুন

গাজায় গণহত্যা : মুসলিম বিশ্বের নীরব থাকার নেপথ্যে !

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ০৬ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৯:৫৮


গাজার প্রতিটি বিস্ফোরণে কেবল ধ্বংস হয় না —প্রতিধ্বনিত হয় একটি প্রশ্ন: মুসলিম বিশ্ব কোথায় ? মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতির আয়নায় এই প্রশ্নটি এক খণ্ড অন্ধকার, যা শুধু আন্তর্জাতিক রাজনীতির ব্যর্থতা... ...বাকিটুকু পড়ুন

লেখকের প্রাপ্তি ও সন্তুষ্টি

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ০৭ ই এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১২:০০

একজন লেখক যখন কোন কিছু লিখেন, তিনি কিছু বলতে চান বলেই লিখেন। বলাটা সব সময় সহজ হয় না, আবার একই কথা জনে জনে বলাও যায় না। তাই লেখক কাগজ কলমের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×