সাগর-রুনি হত্যাকান্ডের প্রায় চারমাস অতিক্রম করতে চলেছে। কিন্তু খুনিরা ধরা পরেনি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। সমানে চলছে বিতর্ক। থেমে নেই কল্পকাহিনী রচনায়। কিন্তু খুনি তো সবার সামনে সমান তালে ঘুরে বেড়াচ্ছে।
গত কয়েক দিন আগে সাগর-রুনির হত্যাকারীর অন্যতম হোতা লণ্ডনে প্রকাশ্য সাংবাদিকদের কাছে নিজের হত্যাকান্ডের জড়িত থাকার প্রকাট ইঙ্গিত দিয়েছেন। নিজে মুখে বলেছেন “সাগর ও রুনি পরকীয়ার বলি”। তিনি চেনেন সাগর-রুনিকে কারা হত্যা করেছে! েএতোদিন নিজের ক্ষমতা বলয়ে মুখ খুলেনি তিনি। পরিশেষে সাংবাদিকদের চাপের মুখে বিদেশে গিয়ে মুখ খুলতে বাধ্য হলেন এটিএন বাংলার চেয়ারম্যান মাহফুজুর রহমান! তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেছেন যুক্তরাজে্যর লন্ডনে। নব্য এই গায়ক লন্ডনে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, । ড. মাহফুজের এই বক্তব্য যদি সত্য! হয় তবে তিনি জানেন সাগর-রুনির খুনি কারা? দৈনিক আমার দেশের ৩ জুনের সংখ্যায় এটিএন বাংলার চেয়ারম্যানের বক্তব্য সম্বলিত একটি প্রতিবদেন প্রকাশিত হয়।
“সাংবাদিক সাগর-রুনি হত্যাকান্ড আপনি জড়িত বলে আমরা শুনেছি” প্রশ্নের মুখোমুখি হন ড. মাহফুজ। এই প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ” আমি যতটুকু মনে করি, সাগর-রুনি পরকীয়ার বলি হতে পারে। হত্যাকাণ্ডের পর তাদের ছোট্ট শিশু মেঘের দেয়া একটি বক্তব্য ও ভিডিও ফুটেজ আমার কাছে সিজ করা আছে। প্রয়োজনে আমি এটি প্রচার করব। তিনি বলেন, আমি যেটুকু শুনেছি, রুনি তার বাসায় প্রায়ই মদের আড্ডা বসাত এবং সেখানে তার কাছের বন্ধুরা যেত। রুনি খুব চঞ্চল এবং প্রাণোচ্ছল প্রকৃতির মেয়ে ছিল—যে কারণে তার অনেক বন্ধুও ছিল। রুনির স্বামী সাংবাদিক সাগর জার্মানি থাকাকালে কোনো এক বন্ধুর সঙ্গে তার গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল বলে আমি শুনেছি। সে কারণে তাদের মধ্যে কিছুটা মনোমালিন্যও চলছিল। তিনি হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে বলেন, হত্যাকাণ্ডের দিন সকাল ৬টায় বাসায় আসার কথা থাকলেও রাত ২টায় সাগর কাজ ফেলে কেন বাসায় চলে এলেন? নিশ্চয়ই তিনি কিছু বুঝতে পেরেছিলেন। কোনো দুর্নীতি করার মতো লোক আমি নই। ওয়ান-ইলেভেনের সময় আমি সত্য বলা থেকে পিছপা হইনি, ভবিষতেও হব না।”
মাহফুজ ওয়ান ইলেভেনে কী ধরণের সাহস দেখিয়েছিলেন সত্য প্রকাশ করেছিলেন বা বলেছিলেন তা আমাদের জানা নেই। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তার খোলাসা কোন জবাবও দেননি। সে যাইহোক প্রসঙ্গ ওয়ান ইলেভেন নয়। মেহেরুন রুনি এটিএন বাংলার সিনিয়র রিপোর্টার ছিলেন এবং টিভি মিডিয়ায় একজন বন্ধুবৎসল ও প্রাণবন্ত সাংবাদিক হিসেবে বেশ জনপ্রিয় ছিলেন। ড. মাহফুজ প্রচ্ছন্নভাবে সাগর-রুনির নিষ্পাপ শিশু সন্তান মাহির সরোয়ার মেঘের কাছ থেকে নেয়া একটা ভিডিও সাক্ষাৎকার আছে বলে তা ফাঁস করে দেবার হুমকিও প্রদর্শন করেছেন। ড. মাহফুজ হয়ত জানেন না যে একজন শিশু যখন ট্রমাটাইজড হন বা এতবড় একটা নৃশংস ও জঘন্য হত্যাকান্ড নিজ চোখে দেখেছেন তখন তার মানসিক অবস্থাটা কী হতে পারে তা বোধহয় মাহফুজ রহমানদের মতো লোকদের বোধগম্য নয়। প্রিয় বাবা ও মাকে খুন করার দৃশ্যটা যে বাচ্চা শিশুটি স্বচোখে দেখেছে তার কাছ থেকে কোন বক্তব্য নেয়াটা নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য কিনা তার বিবেচনা করার মতোও কোন ক্ষমতা এই মিডিয়া মালিকের আছে বলে আমাদের মনে হয় না।
ঘটনা যাই ঘটুক, মাহফুজুর রহমান যে ঘটনার সম্পকর্ে সবকিছুই জানেন তা কী আর অস্বীকার করা যায়? মাহফুজুর রহমান নিজেই সেই ফাঁদে পা দিলেন! এখন আমাদের আর বলতে কোন সংশয় নেই যে মাহফুজুর রহমান সাগর-রুনির খুনিদের চেনেন না! তাই এখন মাহফুজুর রহমানকে রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই হয়ত সাগর-রুনির খুনিদের সম্পকর জানা যাবে।
বের হবে সাগর-রুনি হত্যাকারীরা্। তাহলে আমরা কি আশা করতে পারি না আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা তাকে গ্রেপ্তার করুক। তার ওই মন্তব্যগুলো কি ফেলে দেয়ার মতো। আমার মনে হয় তিনি আর পার পাবেন না। সাংবাদিক নেতাদের পোষ মানিয়ে তিনি অনেক বাহ্বা কুড়িয়েছেন। আর নয়। এই সাংবাদিক দম্পতির হত্যকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি সকল মানুষদের। বিচার ব্যবস্থায় স্বচ্ছ্বতা প্রকাশ হওক এই প্রত্যাশা সকলেরর