লক্ষ কোটি জনগণের নয়নের মনি, যার ছিল সু-দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনের পরীক্ষিত সহকর্মী, সেই জননেতার কি একজন ও বিশ্বস্ত লোক ছিল না? অন্ততঃ পক্ষে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা কয়েকটি লাইন লিখে তা তিনি তার কোন এক বিশ্বস্ত সহযোগী কাছে গচ্ছিত রেখে ও তো পাঞ্জাবীদের কাছে আত্ম সমর্পণ করতে পারতেন। তাহলে তো আজ পুরা জাতি স্বাধীনতা ঘোষণার ধূর্মজালে পতিত হত না।
এইতো সে দিন খালেদা জিয়া পুলিশ পরিবেষ্টিত থাকা অবস্থায়, মান্নান ভূঁইয়া কে বহিষ্কার ও দেলওয়ার হোসেন কে মহাসচিব নিয়োগ করে একখণ্ড কাগজে লিখে যথা যোগ্য ব্যক্তির কাছে পৌছেদিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু কি ঠিক এমনি ভাবে আমাদের প্রাণের দাবি ঘোষণা করে যেতে পারতেন না?
যদি লিখে যেতেন তাহলে কি আজ উনাকে নিয়ে কোন বিতর্ক হতো? যখন পাঞ্জাবীরা উনাকে বন্দী করে নিয়ে যাওয়ার পর ঐ লিখিত বাণী চারদিকে ছড়িয়ে দেওয়া যেত।
আমার কেন জানি মনে হয়--
১. বঙ্গবন্ধু তার সহযোগী কাউকে বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
২. বঙ্গবন্ধু পূর্ব পাকিস্তানের পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা চান নাই।
৩. অথবা বঙ্গবন্ধু দুই ঝুড়িতে ডিম রেখেছিলেন, তবে একীভূত পাকিস্থানী ঝুড়িতে ডিম বেশীছিল,
৪. পূর্ব পাকিস্থান সত্যি বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারবে এটা উনি বিশ্বাস করতে পারছিলেন না।
৫. তাই কোন প্রকারের লিখিত ডকুমেন্ট যদি পাক জান্তার কাছে হস্ত গত হয়, তাহলে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার পুনরাবৃত্তি হবার ভয়।
যারা বলেন বঙ্গবন্ধু যখন শুনতে পেলেন, পিলখানা ও রাজার বাগ পুলিশ স্টেশন পাক আর্মি দ্বারা আক্রান্ত হলো তখন তিনি টেলিফোনে কোন এক ওয়ারলেস অপারেটর কে স্বাধীনতার ঘোষণার ডিকটেড করে ঐ অপারেটরকে তা চতুর্দিক্ ছড়িয়ে দিতে নির্দেশ দিয়ে ছিলেন।
আমার প্রশ্ন-
১. ঐ অপারেটর টা কে তার কি পরিচয়?
২. রাজার বাগ ও পিল খানা কখন আ্যটাক হয়?
৩. বঙ্গবন্ধু কখন এরেষ্ট হন?
সূত্র বলে বঙ্গবন্ধু ২৫শে মার্চের সন্ধ্যা ১০.৩০ থেকে ১১.০০ মধ্যে শুধু বন্দী নন, তাকে তেজগাঁ এয়ার পোর্টে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাহলে আমরা কেন ২৬শে মার্চকে স্বাধীনতা দিবস পালন করি?
যেহেতু বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা ২৫শে মার্চের সন্ধ্যা ১০.৩০ থেকে ১১.০০ মধ্যে হয়েছিল!
পৃথিবীতে যেখানে বড় সর বিদ্রোহী নেতাকে বন্দী করতে যাওয়ার পূর্বেই বাহিরের সাথে সকল প্রকার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। পাক জান্তারা কি এতো আহাম্মক ছিলো যে বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতা ঘোষণার জন্য টেলিফোন লাইনটা অক্ষত রেখে দিয়েছিল?
সন্ধ্যা ১০ টার দিকে যখন বঙ্গবন্ধু ডঃ কামালকে উদগ্রীব হয়ে জিজ্ঞাসা করছিলেন, পাক জেনারেলদের কাছ থেকে কোন ফোন এসেছে কি না? আমার মনে হয় সেই সময়ই টেলিযোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়াতে ই বঙ্গবন্ধু ডঃ কামালকে উনার বাড়ী ত্যাগ করতে বলেন। নিশ্চয় বঙ্গবন্ধু ডঃ কামালকে ইন্ডিয়াতে গিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ করতে নির্দেশ দেন নাই, তার কারণ ডঃ কামাল ২৫ শে মার্চের দুদিন পরে স্বেচ্ছা পাক জান্তার কাছে আত্মসমর্পণ করে পশ্চিম পাকিস্থান চলে যান।
১. প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া কেন তাকে বহন কারি গাড়ি ব্যবহার না করে চোরের মতো একটা লকরঝকর সাধারণ গাড়িতে চড়ে এয়ার পোর্টে পৌছেই আগে থেকে ইঞ্জিন চালু কৃত বিমানে করে পালিয়ে গেলেন?
২. ২৬শে মার্চ যখন বঙ্গ বন্ধুরে পশ্চিম পাকিস্থান নেওয়া হয় তখন তার সুটকেসের সাথে বাঁধা পায়খানার বদনাও কেন ছিল? বদনার ইতিহাস কি বলে দেয়না যে বঙ্গবন্ধু সফরের প্রস্তুতি আগেই নিয়েছিলেন?
৩. এক সাংবাদিক সাহেব বলেন যে বঙ্গবন্ধু ২৫শে মার্চের সকালে তাকে ঢাকা ছাড়তে বলছিলেন?
এতই যখন উনি উপলব্ধি করেছিলেন তবে কেন স্বাধীনতার লিখিত কোন নির্দেশনা দিয়ে গেলেন না?
৪.ইয়হিয়া যখন চোরের মতো পলায়ন করে চলে গেলেন তো ২৭শে মার্চ মিঃ প্রবলেম ভুট্টো নীরোর মতো ঢাকা শহর পুড়ার দৃশ্য উপভোগ করে বীরের মতো ঢাকা ছেড়ে গেলেন, উনি এত সাহস পেলেন কাদের কাছ থেকে?
৫. মেজর আমিন আহম্মদ চৌধুরী ২৫ তারিখ সকালে বঙ্গবন্ধুর সামরিক এডভাইজার কর্ণেল ওসমানীকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যে তারা পাঞ্জাবিদের বিপক্ষে যুদ্ধে নামবেন কি না? তখন ও ওসমানী কোন প্রকার আ্যকশনে যেতে নিষেধ করেছিলেন কেন?
এত সব আলামত কি ইঙ্গিত করে যে বঙ্গবন্ধু সত্যি স্বাধীনতার ঘোষণা দিয়েছিলেন?
আমি কোন ইতিহাস বিদ নই কিম্বা ইতিহাসের ছাত্র ও নই। এখানে আমার শুধু প্রশ্ন, যদি কেহ প্রফেশন্যাল নট ইমোশন্যাল ইতিহাস বিদ থাকেন, তবে আমার এই প্রশ্ন গুলির জবাব দিবেন কি কেউ?
সর্বশেষ এডিট : ০১ লা জুলাই, ২০০৮ রাত ৯:১৮