শিরোণামটি দেখে একটু খটকা লাগতে পারে তবে এরচেয়ে বেশী যুৎসই শিরোণাম পেলামনা । একটি ফোরাম যেটি গড়ে উঠেছে বাংলাদেশের নারীদের ভোগের পণ্য হিসাবে পুরুষদের লালসা মেটানো আর নারীর প্রতি চূড়ান্ত অসম্মান হিসাবে বিভিন্ন হিডেন ক্যামে তোলা ভিডিও এবং ছবিকে উপজীব্য করে সেই ফোরামে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়ার আন্দোলন দেখি বর্তমান বাংলা ব্লগের একটি মূখ্য আলোচ্য বিষয় হয়ে উঠেছে!! দেশের সাধারণ নারীদের প্রতি সহিংসতাকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠা একটি সাইটের আমাদের মা বোনদের উপর করা একাত্তরের রাজাকারদের সহিংসতার প্রতিবাদ করার নৈতিক অবস্থান বা গ্রহণযোগ্যতা থাকে কিনা সেটি নিয়ে ভাববার বিষয় রয়েছে । নারীত্বের চূড়ান্ত অবমাননাকে যারা প্রমোট করছে তাদের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার চাওয়ার দাবীকে একটা প্রহসন বই অন্য কিছু মনে হয়না !!
যুদ্ধাপরাধীদের দল হিসাবে স্বীকৃত জামাত-শিবির আজ যদি যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলন করে সেই আণ্দোলনের কি কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকবে? নাকি আমরা সেই আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করবো এই বলে যে, যারা একাত্তরে আমার মা-বোনের উপর সহিংসতা করেছে তারাও যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবী তুলছে তখনে সেই দাবীকে সাধুবাদ জানাই!!! নিশ্চয়ই নয়!!! এই কুম্ভীরাশ্রুর গ্রহণযোগ্যতা সভ্য সমাজে নেই । আর সেজন্যই যৌবনযাত্রার যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলন আর জামাত-শিবিরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবীতে আন্দোলনকে আমি একই দৃষ্টিতে দেখি ।
আমার মা বোনের সম্মান রাখার দায়িত্ব আমাদের সকলের । তাদের অসম্মান যে করবে তাকে সমানভাবেই ঘৃণা করবো । সে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী হোক আর হাল আমলের পিন্টু সুমনদের শিষ্য হিডেন ক্যাম প্রমোটকারী হোক, দুজনেই নারীর প্রতি সহিংসতার দায়ে অপরাধী । হাল আমলের পিন্টু সুমনরা মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে আশ্রয় করতে চাইলেও মুক্তিযোদ্ধারা তাদের গ্রহণ করবেন বলে মনে হয়না । যুদ্ধাপরাধীদের অবশ্যই বিচার চাই তবে সেটা মুক্তিযুদ্ধের পবিত্রতাকে অক্ষুন্ন রেখেই ।
এটা আমাদের প্রজন্মের চূড়ান্ত ব্যর্থতা যে আজো আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে পারিনি । তবে এই বাংলার মাটিতেই যে একদিন তাদের বিচার হবে সেই বিশ্বাস আছে । তবে সেই বিচারের জন্য আমাদের যেন বর্তমান সময়ে নারীর প্রতি সহিংসতা আর অসম্মানকে প্রমোট করা কোন গোষ্ঠীর সাহায্য নেবার দূর্ভাগ্য না হয় ।