somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

হিজাব , নিকাব এবং পর্দার ব্যপারে পরিপুর্ন আলোচনা

২৮ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ বিকাল ৫:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(বিদ্র: এ লিখা তাদের জন্য যারা খোলা মনে চিন্তা করতে সক্ষম, বিস্বাস করেন কোরআনে, এবং সত্য মেনে নিতে যারা দ্বিধা করেন না )

ইসলাম আল্লাহ পাকের মনোনীত দ্বীন। জীবনের এমন কোনো অঙ্গন নেই, যেখানে ইসলামের বিধান ও শিক্ষা নেই। সেই শিক্ষা ও বিধান যখন আমরা ভুলে যাই তখনই আমাদের উপর বিপর্যয় নেমে আসে। আখেরাতের ভয়াবহ শাস্তি তো আছেই, দুনিয়ার জীবনও বিপর্যস্ত হয়ে যায়।

সম্প্রতি নারীনির্যাতন খুব বেড়ে গেছে, বিশেষত উঠতি বয়েসী মেয়েরা চরম নিরাপত্তাহীনতার শিকার। এটা এ সমাজের চরম ব্যর্থতা যে, নিজেদের মা-বোনকেও নিরাপত্তা দিতে পারছে না। এ অবস্থায় মা-বোনদেরকে গভীরভাবে ভাবতে হবে নিজেদের নিরাপত্তা সম্পর্কে। অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে এখন প্রয়োজন অনেক বেশি সতর্কতা ও সচেতনতার। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক সত্য এই যে, বিপর্যয়ের সাথে পাল্লা দিয়েই যেন বেড়ে চলেছে আমাদের অবহেলা ও অসচেতনতা।

পোশাক-পরিচ্ছদ মানব জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, পোশাক যেমন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ঢেকে রাখা ও সৌন্দর্যের উপকরণ, তেমনি শরীয়তের দিক-নির্দেশনা মেনে তা ব্যবহার আল্লাহর নৈকট্য লাভের মাধ্যম,

পর্দা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ বিধান। কুরআন মজীদের কয়েকটি সূরায় পর্দা-সংক্রান্ত বিধান দেওয়া হয়েছে। পর্দার বিষয়ে আল্লাহ তাআলা সকল শ্রেণীর ঈমানদার নারী-পুরুষকে সম্বোধন করেছেন। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে আদেশ করেছেন তিনি যেন তাঁর স্ত্রীদেরকে, কন্যাদেরকে এবং মুমিনদের নারীদেরকে চাদর দ্বারা নিজেদেরকে আবৃত রাখার আদেশ দেন। কিছু আয়াতে উম্মুল মুমিনীনদেরকেও সম্বোধন করেছেন, কোনো কোনো আয়াতে সাহাবায়ে কেরামকেও সম্বোধন করা হয়েছে। মোটকথা, কুরআন মজীদ অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে মুসলিম নারী ও পুরুষের জন্য পর্দার বিধান দান করেছে। এটি শরীয়তের একটি ফরয বিধান। এ বিধানের প্রতি সমর্পিত থাকা ঈমানের দাবি।

পর্দা-বিধান ইসলামী শরীয়তের পক্ষ থেকে সাধারণভাবে সমাজ-ব্যবস্থার এবং বিশেষভাবে উম্মতের মায়েদের জন্য অনেক বড় ইহসান। এই বিধানটি মূলত ইসলামী শরীয়তের যথার্থতা, পূর্ণাঙ্গতা ও সর্বকালের জন্য অমোঘ বিধান হওয়ার এক প্রচ্ছন্ন দলিল। পর্দা নারীর মর্যাদার প্রতীক এবং ইফফাত ও পবিত্রতার একমাত্র উপায়।

অনেকে মনে করেন, পর্দা-বিধান শুধু নারীর জন্য। এ ধারণা ঠিক নয়। পুরুষের জন্যও পর্দা অপরিহার্য। তবে উভয়ের পর্দার ক্ষেত্রে পার্থক্য রয়েছে। যে শ্রেণীর জন্য যে পর্দা উপযোগী তাকে সেভাবে পর্দা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

যে কোনো ন্যায়নিষ্ঠ ব্যক্তিই কুরআন-সুন্নাহর পর্দা সম্পর্কিত আয়াত গভীরভাবে অধ্যয়ন করলে এই বাস্তবতা স্বীকার করবেন যে, ইসলামে পর্দার বিধানটি অন্যান্য হিকমতের পাশাপাশি নারীর সম্মান ও সমাজের পবিত্রতা রক্ষার জন্যই দেওয়া হয়েছে। এজন্য এই বিধানের কারণে প্রত্যেককে ইসলামের প্রতি কৃতজ্ঞ হওয়া উচিত।

আমরা নারীর পর্দা নিয়ে আলোচনা করার সময় নিচের প্রশ্ন সমুহের উত্তর খোজার চেস্টা করবো:
-হিজাব কি সবসময় মুসলীম নারীর জন্যপীড়াকর জবরদস্তি করে পড়তে হয় ?
- হিজাব কি নারীকে মুক্তিদান করে ?
- হিজাব কি কোরআনে বাধ্যতামুলক ?
- শুধু কি নারীর জন্য হিজাব ?
-পাশ্চাত্যে কি হিজাবের কোন ঐতিহ্য বা পড়ার উদাহরন আছে?

"নিকাব হচ্ছে ইউরোপ, আমারিকা, কানাডা ও অস্ট্রেলিয়ায় ইসলাম প্রচারে সবচেয়ে বড় বাধা/অন্তরায়" - মুরাদ হফম্যন Click This Link

প্রচলিত পর্দার বিপরীতপক্ষে বিভিন্ন ধরনের পর্দার প্রকার দেখা যায়. ঘোমটা পর্দার সুনিদ্দিস্ট কোন আরবি শব্দ নেই ইংলিশ ডিকশনারীতে veil এর চারটা ভিন্ন অর্থ দেখায় বস্তুগত, স্থান গত , বার্তা/যোগাযোগ গত এবং ধর্মের দিক হতে ভিন্ন ভিন্ন অর্থ বহন করে।

ইসলামিক কালচারে হিজাব বা পর্দা সবচেয়ে ভালো ভাবে বলতে গেলে বোঝায় কাপড় পরিধানের একটি পদ্ধতি, যেমন কাপড়ের অন্যন্য উপাদানের মত এটা সময় ও স্থানে পরির্বতন হয়, নীচে কিছু কমন টাইপ উদাহরন"

১। হিজাব- মাথার স্কার্ফ যা সাধারনত ধর্মীয় কারনে পড়া হয়। হিজাব হল একখণ্ড কাপড় যার সাহায্যে মাথা ও বুক ঢাকা হয়।আমাদের দেশে মেয়েরা ওড়না অনেক সময় হিজাবের মতো করে ব্যবহার করে।

২। চাদর- লম্বা কাপর শাওয়াল যা বুকের উপর জরিয়ে রাখা হয় অথবা এটা পুরু শরীর আবৃত করতে পারে এত বড়ও হতে পারে।

৩। নেকাব- নেকাব হল একখণ্ড কাপড় যারা সাহায্যে মুখমণ্ডল ঢাকা হয়। এটা অনেক মুখোশের মতো পরা হয়। কেবল চোখ খোলা থাকে বা নাও থাকতে পারে। পর্দা ছাড়াও আরব দেশে অনেক আগে থেকে নেকাব প্রচলিত।

৪। ভেইলবোরকা- দুই পিস কাপর একসাতে সেলাই করা শুধু মাত্র চোখের দিকে খোলা যা সাধারনত কাপরের উপরে পড়া হয়।পুরো শরীর ঢাকা যায় এমন বড় লম্বা পোশাক যার অংশ হিসেবে হিজাব থাকে। কোন কোন বোরকা দুই অংশে বিভক্ত থাকে। কোন কোন বোরকা মাথা থেকে পা পর্যন্ত একটি অংশ থাকে।



কোরআনে কোন আদেশ নাই যে নারীদেরকে তাদের মাথা ও মুখ ঢাকতে হবে। আমি হয়তো কিছু মিস করছি কিন্তু আমি কোন কোরআনের আয়াত বা হাদীস পাইনি যা এ বিষয়ে সরাসরি অলোকপাত করেছে।

প্রথমত সধারন নিয়মে দেখুন কোরআনে সুরা ৯ আয়াত ৭১: "আর ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একে অপরের সহায়ক। তারা ভাল কথার শিক্ষা দেয় এবং মন্দ থেকে বিরত রাখে। নামায প্রতিষ্ঠা করে, যাকাত দেয় এবং আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নির্দেশ অনুযায়ী জীবন যাপন করে। এদেরই উপর আল্লাহ তা’আলা দয়া করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ পরাক্রমশীল, সুকৌশলী।"

দেখুন এই আয়াতে ঈমানদার পুরুষ ও ঈমানদার নারী একসাথে কাজ করছে একে অপরকে সহায়তা করছে , এটা কোন খালি লেকচার/বক্তব্য নয়। তারা একে অপরকে পুন্য কাজে সহায়তা করে এবং খারাপ কাজ থেকে বিরত রাখে ব্যক্তিগত উদাহরণ দেয়ার মাধ্যমে বা নিজে ভালো কাজ করে দেখানোর মাধ্যম, কারন তারা জানে যে কোরআন হচ্ছে ভালো ও খারাপের মধ্যে পার্থক্য নির্নয় কারী।

আর কোনটা ভালো কোনা খারাপ সে কোন অস্পস্ট বিষয় নয় দেখুন কোরআনে বলা আছে সুরা বাকারা সুরা নং ২ আয়াত ১৮৫ : রমযান মাসই হল সে মাস, যাতে নাযিল করা হয়েছে কোরআন, যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ যাত্রীদের জন্য সুষ্পষ্ট পথ নির্দেশ আর ন্যায় ও অন্যায়ের মাঝে পার্থক্য বিধানকারী।

নিকাব কি ঠিক? নারীর ড্রেস কোডের জন্য তিনটি নিয়ম
১। সুরা নং৭) সূরা আল আ’রাফ , আয়াত নং ২৬: হে বনী-আদম আমি তোমাদের জন্যে পোশাক অবর্তীণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবর্তীণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র এবং পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম। এটি আল্লাহর কুদরতেরঅন্যতম নিদর্শন, যাতে তারা চিন্তা-ভাবনা করে।

২। সুরা নং ২৪) সূরা আন-নূর , আয়াত ৩১: ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে এবং তারা যেন তাদের স্বামী, পিতা, শ্বশুর, পুত্র, স্বামীর পুত্র, ভ্রাতা, ভ্রাতুস্পুত্র, ভগ্নিপুত্র, স্ত্রীলোক অধিকারভুক্ত বাঁদী, যৌনকামনামুক্ত পুরুষ, ও বালক, যারা নারীদের গোপন অঙ্গ সম্পর্কে অজ্ঞ, তাদের ব্যতীত কারো কাছে তাদের সৌন্দর্য প্রকাশ না করে, তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে। মুমিনগণ, তোমরা সবাই আল্লাহর সামনে তওবা কর, যাতে তোমরা সফলকাম হও।
(সোজা কথায় অপরিচিত/অনাত্বীয় মানুষের সামনে বুক ঢেকে রাখা আর স্টাইল করে হাটা চলা বন্ধ )

৩। সুরা নং ৩৩) সূরা আল আহযাব আয়াত নং ৫৯: হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।

কোরআনে হিজাব শব্দ সর্ম্পকে : হিজাব শব্দটি অনেক মুসলমান ব্যবহার করেন মাথায় কাপড় দিয়ে ঢাকা যা হতে পারে চেহারা সহ বা চেহারা ছারা ঢাকা, শুধু মাত্র চোখ ছারা আবার কখনো কখনো একচোখও ঢাকাআবৃত করে রাখা। আরবি শব্দে হিজাবকে অনুবাদ করা হয় ঘোমটাপর্দা আবৃত করে রাখা ঢেকে রাখা অন্য অর্থে হিজাব বোঝায় পর্দা ঘেরা, বিভাগ বিভক্ত অবস্থা বিভাজক ইত্যাদি।

হিজাব শব্দটি কোরআনে সাত বার এসেছে, এর মধ্যে ৫ বার হিজাব এবং ২ বার হিজাবান দেখুন সুরা: আয়াত( হিজাব অর্থ) 7:46 (প্রাচীর ), 17:45(প্রচ্ছন্ন পর্দা ), 19:17 (নিজেকে আড়াল করার জন্যে সে পর্দা করলো), 33:53(পর্দার আড়াল থেকে চাইবে), 38:32(সূর্য ডুবে গেছে সূর্য আড়ালে গেছে), 41:5(আমাদের ও আপনার মাঝখানে আছে অন্তরাল), 42:51(কিন্তু ওহীর মাধ্যমে অথবা পর্দার অন্তরাল থেকে).

এই আয়াত সমুহের হিজাব শব্দটি কোরআনে একবারও সেই অর্থে ব্যবহার হয়নি যা আমরা সাধারন/বর্তমান মুসলমানরা হিজাব বলে থাকি মানে হিজাব শব্দটি নারীদের ড্রেস কোড হিসেবে বলা হয়নি। হিজাব শব্দটি কোরআনে যেভাবে বলা আছে সেটি যে নারীর ড্রেস কোড বিষয়ে নয় সেটা স্পস্ট।

ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট পটভূমি: যখন অনেক মুসলিম হিজাব/ নিকাব কে ইসলামিক ড্রেস কোড বলছেন তারাই কম্পিলটি ভুলে যাচ্ছেন বা এড়িয়ে যাচ্ছেন যে হিজাব ড্রেস কোড হিসেবে ইসলামের সাথে কোন সর্ম্পকই নেই এবং কোরআনেই নেই যা উপরে আলোচনা করা হয়েছে।

সত্যি বলতে "হিজাব" হলো একটি পুরাতন জিউইশ ট্রেডিশন যা আমাদের হাদিসের বইয়ে অনুপ্রবেশ করানো হয়েছে। জুইশ ট্রেডিশনের যে কোন লোকই আপনাকে কনফার্ম বলবে যে জিউস নারীদেরকে উৎসাহ দেয়া হয় মাথায় কাপড় পড়তে তাদের রাব্বাই বা ধর্মের লিডাররা সেটাই মানেন। ধর্মভিরু জিউস নারীরা এখনো মাথায় কাপড় দেয় তাদের ধার্মিক উৎসব বা বিয়ের সময়। এই জিউস ট্রেডিশন কিন্তু কালচারাল নয় এটা তাদের ধর্মের ট্রেডিশন।ইসরায়ীলের নারীরা তাদের ধর্মের হিজাব প্রথাকে হাজার বছর ধরে পালন করে তাদের ঐতিহ্যের অংশ করে নিয়েছে।

খ্রিস্টান নারীরাও তাদের মাথা কভার করে রাখেন তাদের বিভিন্ন উপলক্ষে আর নান রাতো সবসময়েই মাথায় কাপড় দিয়ে রাখেন। এই খ্রিস্টান দের ধর্মে মাথায় কাপড় দেয়ার প্রচলন হয় যখন থেকে মুসলমান স্কলাররা দাবি করছেন যে হিজাব ইসলামে নারীদের ড্রেস কোডের অংশ তার হাজার বছর পুর্বে ।

ট্রেডিশনাল আরব ধর্ম সমুহে জিউ, খ্রিস্টান এবং মুসলিমরা হিজাব পরিধান করতো ইসলামেনর জন্য নয় বরং ট্রেডিশনের জন্য. সৈদি আরবে আজো/ বর্তমানেও বেশিরভাগ পুরুষ মানুষ তাদের মাথা ঢেকে চলে সেটাও ইসলামের জন্য নয় তাদের ট্রেডিশনের জণ্য। আল্লহকে অশেষ ধন্যবাদ যে হিজাবের পক্ষের লোকেরা পুরুষের এই মাথায় কাপর দেয়া ইসলামের ড্রেসকোড বলে বাধ্যতামুলক করা হয়নি যেমন নারীদের জন্য করেছে।

উত্তর আফ্রিকাতে কিছু মুসলিম পুরুষ হিজাব পরে। যেমন ধরুন ,টিউরেগ গোত্রের মানুষের জন্য হিজাব হলো তাদের স্টেটাস, যে যত আবৃত থাকবে তার স্টেটাস তত উপরে।



জানা যায় হজরত মুহাম্মদ (সঃ) ও পড়তেন ওনার মাথায় পাগরী বা কখনো মুখ আবৃত রাখতেন ইন্টারেস্টিং ব্যপার দেখুন কাবা শরীফ সেটাও কিন্তু আবৃত মানে হিজাব তাবে সেটাও কিন্তু কাবার চারদিকে উপরে কিন্তু নয় . আরো দেখুন হজ্জের সময় সকলেই সাদা কাপড় পরিধান করে যা মানুষের মধ্যে ঐক্য বোঝায় কিন্তু কত জনকে দেখেছেন একবারে মাথা মুখ সব আবৃত. হজ্জের সময় পুরোটা আবৃত নয় এটা এজন্য যে কোরআন অনুযায়ী মুসলমান ও তার প্রভু আল্লাহর মাঝে কোন কিছুই লুকানো থাকেনা কোন কিছুই পর্দার আড়ালে থাকে না তখন বান্দার সাথে আল্লাহর সরাসরী কানেকশন হয়।

হিজাব করা যদি শুধুমাত্র ধার্মিক, সচ্চরিত্র, ন্যায়পরায়ণ লক্ষন হয়ে থাকে তবে কেন আমরা দেখি অনেক হিজাব কারী নারী অন্যন্য শালীনতা রক্ষা করেন না , যেমন টাইট শাট, জিন্স, টাইট বোরকা যাতে দেহের আকার বোঝা যায় অথবা আশালীন আচরন বা অশালীন কথা বার্তা। মাথায় কাপড় দেয়া থেকে শালীন কাপর পড়া , শালীন কথা কি বেশি গুরুত্বপুর্ন নয়?
.
ধর্মকে ট্রাডিশন বা ঐতিয্যর সাথে মিলানো অনেকটা মুর্তি পুজার মত পুর্বপুরুষ যা করে গেছে সেটা ফলো করা , কারন আল্লাহ কোরআনে আমাদের কি আদেশ দিয়েছেন সেটা না জানা অথবা জানার চেস্টা না করা এটা আল্লাহ ও তার নবীকে অবমাননার নির্দশন। যখন ট্রাডিশন বা ঐতিয্য খোদার আদেশকে অবমাননা করে তখন দীন বা সত্য পথ সেকেন্ড প্লেসে চলে যায়। কিন্তু খোদা/আল্লহ তো সবসময়ে সবার আগে থাকার কথা কখনোই সেকেন্ডে দ্বিতীয় অবস্থানে নয় ।

কোরআনে খিমার শব্দ বলতে কি বুঝিয়েছে: খিমার এবং নারীর জন্য ড্রেসকোর বিষয়ে পাওয়া যাবে কোরআনে সুরা ২৪ আয়াত ৩১ এ. কিছু মুসলিম বলেন যে এই আয়াতে হিজাবের (মাথা ও মুখ ঢাকার) জন্য বলা হয়েছে এজন্য তারা খুমুরিহিনা শব্দকে নির্দেশ করে (তারা যেন তাদের ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে) ,অথচ তারা ভুলে যায় যে আল্লাহ কোরআনে হিজাব শব্দটা অনেকবার ব্যবহার করেছেন. যারা আল্লাহর নেয়ামত প্রপ্ত তারা বুজতে পারেন যে খিমার শব্দটি হিজাবের মুখ বা মাথা ঢাকার জন্য ব্যাবহার হয়নি। যারা হিজাবের আয়াত হিসেবে এটা প্রমান দেখায় তারা সাধারনত খামিরুনা শব্দের পরে অর্থ হিসেবে মাথার কভারমাথার ওরনা ইত্যাদি যোগ করে আর সেটা সাধারনত ব্যাকেটের ভিতরে কারন এটা তাদের যোগ করা শব্দ আল্লাহর নয়।

চলুন এবার সেই আয়াত সুরা ২৪ সুরা আন নুরের আয়াত ৩১ দেখি:
ঈমানদার নারীদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে .....

বেশিরভাগ অনুবাদক, যারা হাদিসে এবং পুরাতন কালচারে অনুপ্রেরনা প্রাপ্ত তারা অনুবাদ করেছেন মাথার কাপড় বা ওরনা ইত্যাদি হিসেবে এবং এজন্যই আমদের ভুল ভাবে বোঝাচ্ছে যে এই আয়াত আমাদের মাথা ও মুখ ঢাকতে বলা হয়েছে।

অথচ এখানে আল্লাহ আমাদের বলেন যে নারীরা তাদের কভার খিমির যা হতে পারে জামা কোট চাদর স্কার্ফ ব্লাউজ যা তাদের বুক ঢেকে রাখে যাতে সেটা স্পস্টত দেখা না যায়, তাদের মাথা বা চুল ঢাকা নয়। যদি আল্লাহ চাইতেন নারীরা মাথা ঢেকে রাখুক তবে তিনি সিম্পলি বলতেন "তোমাদের মাথা ,চুল ও মুখ ঢেকে রাখ " আল্লাহ কখনো অস্পষ্ট বলেন না বা ভুলে যান না। তিনি কখনো শব্দ ভাষা হারিয়ে ফেলেন না, তিনি চাইলে বলতে পারতেন মাথা ঢাকার কথা। আল্লাহর কোন দরকার নাই যে ইসলামী স্কলাররা ওনার আয়াতের ঠিক অর্থ বলবেন! কারন আল্লাহই সবাধিক জ্ঞান রাখেন।

বুকের আরবি শব্দ জায়ব পাওয়া যাবে সুরা নং ২৪ আয়াত ৩১ এ কিন্তু মাথার আরবি শব্দ (رئيس)রা বা চুল (شعرة)শার সেই আয়াতে নেই। এই আয়াতের নির্দেশনা একেবারে পরিস্কার - নারীর বুকের অংশ ঢাকা। আরো দেখুন মহানবী (সঃ) সময় নারীরা যুদ্ধে বা ওনার সাথে কাফেলাতে যেত তারা কি মাথা মুখ সবকিছু ঢেকে রাখতো ? যদি তাই হয় তবে হজরত আয়েশা (রঃ) যখন হজরত আলী (রঃ) বিরুদ্ধে জামালউটের যুদ্ধ করেন সেখানে কি নিকাব পরে যুদ্ধ করেন নাকি মুখ খোলা রেখে যুদ্ধ করেন ?

এই আয়াতের শেষ অংশে আছে " তারা যেন তাদের গোপন সাজ-সজ্জা প্রকাশ করার জন্য জোরে পদচারণা না করে" অর্থাৎ তাদের শরীরের গোপন সাজ-সজ্জা দেখা যাবে কি না সেটা নির্ভর করে কোন ধরনের ড্রেস নারী পরিধান করে তার উপর মাথার কাপড়ের জন্য নয়। এই আয়াতে "জিনাতাহুননা" শব্দটি নারীর (সোন্দর্য)বডির অংশ নির্দেশ করে। শেষের দিকে আল্লাহ বলেন নারী যেন জোরে পদচারনা না করে তাদের সৈন্দর্য (জিনাত) প্রকাশের জন্য। নারীর সোন্দর্য (গহনা বা অন্যকিছু )প্রকাশের জন্য তার জোরে হাটার দরকার নেই কিন্তু যে ভাবে সে হাটবে বা জোরে হাটলে নারী তার প্রভাবে নারী শরীরের কিছু অংশ বোঝা যায় ঠিক যেমন দেখেন মডেলশোতে নারীরা জোরে পদচারনা করে ।

এই আয়াত থেকে বোঝা যায়, পরপুরুষকে আকৃষ্ট করে এমন সব কাজ থেকে বিরত থাকা ঈমানদার নারীর কর্তব্য। কারণ পরপুরুষকে নুপুরের আওয়াজ শোনানোর উদ্দেশ্যে সজোরে পদনিক্ষেপ হাটা যখন নিষেধ করা হয়েছে তখন যে সকল কাজ, ভঙ্গি ও আচরণ এর চেয়েও বেশি আকৃষ্ট করে তা নিষিদ্ধ হওয়া তো সহজেই বোঝা যায়। মুসলিম নারীদের জন্য এটি আল্লাহ রাববুল আলামীনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা।

আল্লাহ ছারা অন্য কারো অর্ডার মানা কি মুর্তি পুজার সমান নয়। হ্য এটা এত বড় সিরিয়াস ব্যপার হিজাবের ক্ষেত্রেও তাই। এটা সম্ভব হতে পারে যে নারী হিজাব (মাথায় কাপর দিয়ে মুখ ঢেকে রাখছে )ধর্মের নামে বিস্বাস করে যে আল্লাহ তাকে এই কাজের আদেশ দিয়েছেন বা অন্যকে পড়তে আদেশ করছে সে কি একই অপরাধ করছেনা কারন আল্লাহ তো সেই বিষয়ে আদেশই করেন নি তাদের এই কাজের আদেশ করেছে সেই মোল্লারা বা ঈমামরা যারা কোরআনের চেয়ে ঐতিহ্যের প্রতি বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। সেই নারীরা তাদের সেই আদেশ কারীকে ফলো করছে আল্লাহ প্রদত্ব কোরআন যা কমপ্লিট, পারফেক্ট এবং পরিপুর্ন ভাবে বর্ননা করা আছে।

কোরআনে জালবাব শব্দ : চাদর দিয়ে আবৃত করা: মুসলিম নারীদের জন্য ড্রেসকোডের প্রথম নিয়ম হলো সুরা ৭ আয়াত ২৬ এ, দ্বিতীয় নিয়ম সুরা নং ২৪ আয়াত ৩১ এবং তৃতীয় নিয়ম সুরা ৩৩ আয়াত ৫৯ এ চলুন তবে দেখা যাক

সুরা ৩৩ আল আহযাব আয়াত ৫৯ " হে নবী! আপনি আপনার পত্নীগণকে ও কন্যাগণকে এবং মুমিনদের স্ত্রীগণকে বলুন, তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়। এতে তাদেরকে চেনা সহজ হবে। ফলে তাদেরকে উত্যক্ত করা হবে না। আল্লাহ ক্ষমাশীল পরম দয়ালু।

এখানে আল্লাহ নারীর ড্রেস কোডের আরেকটি নিয়ম পরিস্কার বলেদেন রাসুল (সঃ) এর জীবদ্বশায় যা পালন করা হয় । আর এটা শুধুমাত্র রাসুল (সঃ) এর স্ত্রী গনের জন্য নয় দেখুন এই আয়াতে সকল মুমিনদের স্ত্রীদের জন্যও বলা হয়েছে মানে সকল বিশ্বাসী নারীর প্রতি এই নিয়ম প্রযজ্য।

সাধারন একটি জরিপ করুন দেখুন ছেলেরা ইচ্ছাকৃত বা অনিচ্ছা কৃত মেয়েদের কোথায় প্রথম তাকায় ? নিস্চই চুলে নয় তাই পর্দাটা কোথায় হলে সঠিক হয় আপনিই বলুন? সেজন্যই কোরআনে আগে ছেলেদের ছোখার দৃস্টি নত রাখতে বলা হয়েছে তার পর মেয়েদের পর্দার জন্য বলা হয়েছে।

ধর্মে কস্ট /তকলিফ বিষয়ে: আল্লাহ আদেশ করেন যে যারা কোরআন না মেনে অন্য কোথাও তাদের পথপ্রর্দশক খুজবে তারা দুনিয়া ও আখিরাতে কস্ট ভোগ করবে তাদের নিজেদের চয়েজের কারনে। এবং আমরা আরো দেখি কোরআনে আল্লাহ আমাদের বলেছেন সুরা হাজ্জ সুরা নং ২২ আয়াত ৭৮ এ ধর্মের ব্যাপারে তোমাদের উপর কোন সংকীর্ণতা ( কষ্ট/ সহ্য করা যায়না এমন কিছু) রাখেননি। কিন্তু আমাদের ফতোয়া প্রদানকারী মুসলিমরা এবং তাদের অহংকারী মনোভাব নিজেদের আইন করেছে এবং ইসলাম কে পালন করার জন্য কঠিন করেছে।. তারা মুসলমানদের জীবনকে ছকে বেধে দিয়েছে যেমন কিছু উদাহরন হলো কোন পাশে ঘুমাবেন, কোন পা দিয়ে ঘরে ঢুকবেন, বা বের হবেন, টয়লেটে যাবার আগে ও পরে কি দোয়া পড়বেন, খাবারে মাছি পরলে কি করবেন ইত্যাদি!

- পর্দা শালীন পোশাক কি নারীকে মুক্তিদান করে ? বা নারীর উন্নতিতে পর্দা কি অন্তরায়?


ছবিটি হচ্ছে, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ওবামার উপদেষ্টা ড. ডালিয়া মুজাহিদ এর। শালীন পোশাক পরিধান করার কারণে সাংবাদিকগণ তাকে গভীর বিস্ময়ে জিজ্ঞাসা করেছিলো, আপনার বেশ-ভূষা ও পোশাক- পরিচ্ছদের মধ্যে আপনার উচ্চ শিক্ষা ও জ্ঞানের গভীরতা প্রকাশ পাচ্ছেনা। তাদের ধারণা ছিলো, হিজাব অনগ্রসরতা, মূর্খতা ও সেকেলে ধ্যান-ধারণার প্রতীক। উত্তরে তিনি বললেন, আদিম যুগে মানুষ ছিল প্রায় নগ্ন। শিক্ষা ও জ্ঞান চর্চার উন্নতির সাথে সাথে পোশাক পরিধান করে সভ্যতার উচ্চ শিখরে আরোহণ করতে থাকে। আমি যে পোশাক পরিধান করেছি, তা শিক্ষা ও চিন্তাশীলতায় উন্নতি ও সভ্যতার চূড়ান্ত বহিঃপ্রকাশ। নগ্নতা ও উলঙ্গপ্নাই যদি উন্নত শিক্ষা ও সভ্যতার চিহ্ন হতো, তাহলে বনের পশুরাই হতো পৃথিবীর সবচেয়ে সুসভ্য ও সুশিক্ষিত। https://en.wikipedia.org/wiki/Dalia_Mogahed

যারা বিশ্বাস করেন কোরআন হলো কম্পিলিট, পারফেক্ট এবং পরিপুর্ন ভাবে পুঙ্খানুপুঙ্খ ও বিশদ ভাবে বর্ননা কৃত , তারা তাদের কাছে সবকিছু কে সহজ মনে হবে যেমনটি আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আর যারা কোরআন ছারা অন্য কিছুকে মানুষের ফতোয়াকে আইন বলে মেনেছে তাদের জন্য এই দুনিয়া ও আখিরাত হবে কস্টদায়ক। পরকালে তারা আল্লাহর কাছে কমপ্লেইন করবে যে তারা মুশরিক ছিল না দেখুন আল্লাহ বলেন সুরা ৬ সুরা আল আন আম আয়াত ২২ " আর যেদিন আমি তাদের সবাইকে একত্রিত করব, অতঃপর যারা শিরক করেছিল, তাদের বলবঃ যাদেরকে তোমরা অংশীদার বলে ধারণা করতে, তারা কোথায়? "

হিজাব নিয়ে বাড়াবাড়ি জন্য দুটি উদাহরন:
১। ১৯৩৯ সালে রেজা শাহ পালভি ইরানের শাসনকর্তা, মর্ডানাইজেশনের জন্য বোরকা /নিকাব ব্যান করেন- সরকারী আদেশ দেয়া হয় নিকাব ও বোরকা দেখলে ছিরে ফেলার। নারীরা যারা পর্দা করতো তাদের প্রাইভেসি রক্ষার জন্য , গর্ব ও তাদের স্বাধীনতা প্রকাশের জন্য তাদের জোর করে বাসায় থাকতে হয় এই সরকারী আদেশের জন্য কারন রাস্তার এসব পরলে হেনেস্তা হবায় ভয় ছিল।

২। আফগানিস্তান ১৯৯৪ সালের পুর্বে নারীদের হিজাব/বোরকা / পুরো শরীর ঢাকার জন্য কোন আইন ছিল না। কিন্তু বেশির ভাগ নারীরা পর্দা করতো স্বইচ্ছায়। তখন অর্ধেক নারী কর্মী জনসংখা ছিল এবং নারীরা শিক্ষা অর্জন করতে পারতো।

১৯৯৪ সালের পরে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধের পর যখন রাশিয়া চলে যায় তখন আফগানিস্তানে কোন সরকার ছিল না। এই সময়ে তালেবান ক্ষমতা দখল করে এবং মোল্লা মোহাম্মদ ওমর ছিল সেই সময়ের নেতা এবং তালিবানরা প্লান করে যে আফগানিস্তানকে তারা আদর্শ ইসলামী রাস্ট্র বানাবে এবং শান্তি প্রতিস্ঠা করবে।

১৯৯৬ সালে তালেবান আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুল অবরোধ করে এবং ক্ষমতা দখলের পর তারা জোরকরে কঠিনতম শরিয়া ইসলাম আইন চালু করে যা আগে কখনো দেখা যায়নি। নারীদের স্কুলে কলেজে যাওয়া নিষেধ করা হয় পুরো শরীর ঢেকে পর্দা প্রথা বাধ্যতামুলক এবং পুরুষদের বাধ্যতামুলাক দাড়ী রাখতে বলা হয় এমনকি ঘরের জানালা ও সাদা রং কারা হয় যাতে বাহিরের কেহ ভিতরে না দেখে। সে সময়ে যারা কোনদিন পুরো কভার করা বোরকা পরেনি তাদের এ সকল পরিবতনের সাথে খাপ খেতে অনেক কস্ট করতে হয়।


উপসংহার: আল্লাহ আমাদের নারীদের জন্য তিনটি সাধারন নিয়ম বলেছেন কাপর পরিধান করার জন্য:

১। ভালো ব্যবহার ,পরহেযগারীর পোশাক, এটি সর্বোত্তম (৭:২৬)
২। তারা যেন তাদের দৃষ্টিকে নত রাখে এবং তাদের যৌন অঙ্গের হেফাযত করে। তারা যেন যা সাধারণতঃ প্রকাশমান, তা ছাড়া তাদের সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে এবং তারা যেন তাদের মাথার ওড়না বক্ষ দেশে ফেলে রাখে, আনাত্বীয় মানুষের সামনে সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে (২৪:৩১)
৩। তারা যেন তাদের চাদরের কিয়দংশ নিজেদের উপর টেনে নেয়।(৩৩:৫৯)


এই সাধারন নিয়ম যারা আল্লাহ ও কোরআনে পরিপুর্ন বিশ্বাস করেনা তাদের জন্য যথেস্ট নয় বা পর্যাপ্ত নয় বলে মনে হয়। কিন্তু সত্য বিশ্বাসীরা ঈমানদাররা জানে যে আল্লাহ তাদের জন্য যথেষ্ট। উপরোক্ত এই তিনটি সাধারন নিয়মের পর প্রত্যেক নারী তার ড্রেস এডজাস্ট করতে পারেন সময় ও স্থানের উপর নির্ভর করে। যেমন শীত কালে একস্ট্রা চাদর বা মরুভুমির দেশে মাথায় কাপর যাতে বালু না লাগে ইত্যদি। আল্লাহর আদেশ ছারা অন্য কিছু মানাতে আমাদের বাধ্যবাধকতা নেই। যেমন মেনে চলেছেন আল্লাহর রাসুল। এই সাধারন নিয়মের পরিমার্জন বা পরিবর্তন এবং নারী কি পরবে সে বিষয়ে বিভিন্ন নিয়ম যোগ করা আল্লাহর আদেশ আমান্য তথা শিরক করার শামিল এবং সচেতন মুসলমানদের কর্তব্য তা সবাইকে জানানো যে বাধ্য করে নিকাব পড়া ইসলাম সম্মত নয়। আল্লাহর সাথে থাকুন বিজয়ীরা সেই কাজটি করেছেন তারা আল্লাহর আদেশের বাইরে যাননি এবং সেটি নিয়ে বাড়াবাড়ি করেননি।

ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো যে যারা পর্দা নিয়ে বাড়াবাড়ি করে আর ছেলেদের পোশাক আরবদের মত হতে হবে বলে মতামত দেয় তারা হয়তো জানেনা না ট্রাউজারপ্যন্ট এবং লং ও শর্ট জ্যকেট এর নির্মাতা/ উদ্ভাবনকারী হলেন স্পেনের একজন মুসলিম আর্কিটেক্ট এবং ডিজাইনার নাম হলো যারইয়াব ইবনে যাইয়াব.https://en.wikipedia.org/wiki/Ziryab (Ref: Aik Islam by Dr. G.J. Barq).


ইসলামে কতটুকু ঢেকে রাখার বিধান :
পুরুষদের ক্ষেত্রে নাভী থেকে হাটু পর্যন্ত ।নারীদের ক্ষেত্রে মুখমণ্ডল, হাতের কব্জি এবং পায়ের কব্জি থেকে হাত ও পা বাদে বাকি পুরো শরীর রাখাটাই হল পর্দা।

অনেক মহিলা হাতে পায়ে মোজা পরে, মুখমণ্ডল পুরো বন্ধ করে নেকাব পরে। এটা বাধ্যতামুলক দরকার নাই তবে সময় কাল ও স্থান ভেদে প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে যেমন শীতে হাত ঢাকা। বরং ইসলামে ছদ্মবেশ ধারণ করা নিষিদ্ধ। এমন কোন পোশাক পরা নিষিদ্ধ যাতে করে মানুষ তাকে চিনতে না পারে। পর্দা প্রথা নিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিভ্রান্তি আছে। মুখমণ্ডল, হাতের কব্জি ও পায়ের কব্জি থেকে খোলা রাখার বিধান থাকলে অনেক মেয়ে নেকাব পরে। নেকাব পরার কোন বিধান ইসলামে নাই। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে এটা ব্যবহার করে। এটা পর্দার বিধান নয়।

নারী তার মুখ, হাত, মাথা , পা গোড়ালী পর্যন্ত খোলা রাখতে পারবেন কারন দেখুন সুটা নং ৫ সুরা আল মায়েদাহ আয়াত ৬ এ বলা আছে "হে মুমিনগণ, যখন তোমরা নামাযের জন্যে উঠ, তখন স্বীয় মুখমন্ডল ও হস্তসমূহ কনুই পর্যন্ত ধৌত কর এবং পদযুগল গিটসহ।"
এসকল অংশ খোলা থাকে বিধায় ধোয়ার জন্য বলা হয়েছে।

ইবনে ওমর বলেন : "রাসুল (সঃ) সময় নারী এবং পুরুষ একসাথে ওযু করতেন " শিহ বুখারি ভলিউম ১ কিতাবুল উজু অনুবাদক মাওলানা আবদুল হাকীম খান শাহজাহানপুরী

পুরুষের উচিৎ হিজাব পড়া: কারন অনেক উগ্র নামধারী মুসলিম চান নারীকে পুরো আবৃত রাখতে বোরখার ভিতরে , শিক্ষার অধিকার না দিতে ও সমাজের উন্নয়নে নারীর অবদান নস্ট করতে তারা আমাদের বিস্বাস করাতে যায় যে উম্মুল মুমিনীন আয়েশা (রঃ)এবং অন্যন্য মহিলা সাহাবী নিজেকে পুরো আবৃত রাখতেন এমন কি অন্ধ লোক থেকে বাচার জন্যও তারা ভুল হাদীস দেখায় যে আয়েশা (রঃ) অন্ধ লোকের ব্যপারে বলেন "সে আমাকে না দেখলে কি হয়েছে আমি তো তাকে দেখছি " কেমন লজিক দেখেছেন? তিনি অন্ধ লোককে দেখছেন বলে তার নিজের পর্দা করতে হবে। এই যদি হয় তাদের লজিক যে নারীরা দেখলেই তাদের পর্দা করা উচিৎ তবে এটা কি যুক্তিযুক্ত নয় না পুরুষরাই পর্দা করবে হিজাব পড়বে না হলে নারীরা তাদের দেখে কামনার উদ্রেক হতে পারে। এই উগ্র নামধারী মুসলিমরা যুক্তি অগ্রয্য করে কমনসেন্স কে মেরে ফেলে। এরা এটা করে আসছে হাজার বছর ধরে আর করছে ইসলামকে কুলষিত। আর আরবরা যে পাগরী পড়ে বা মাথায় কাপরদেয় সেটা ইসলামের জন্য নয় সেটা তাদের ঐতিয্য এবং ধুলি ঝর হতে বাচবার জণ্য।

পুরুষের জন্য বলা আছে সুরা আন-নুর এ আয়াত ৩০ "মুমিনদেরকে বলুন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি নত রাখে এবং তাদের যৌনাঙ্গর হেফাযত করে। এতে তাদের জন্য খুব পবিত্রতা আছে। নিশ্চয় তারা যা করে আল্লাহ তা অবহিত আছেন। "

এবার ডিসিশন আপনিই নিন কার কথা মানবেন মহান আল্লাহর কথা না মানুষের কথা।

_________________

সুত্র:
১।http://www.irfi.org/articles2/articles_2851_2900/HIJAB%20-ONCE%20AND%20FOR%20ALL.HTM
২। http://www.ipernity.com/blog/246699/411890
৩।: http://www.alkawsar.com/article/442

বিদ্র: আমি যথা সম্ভব চেস্টা করেছি সঠিক তথ্য দিতে এবং আমার উপরোক্ত লিখায় যদি কোন ভুল থাকে তবে অবশ্যই কমেন্টে জানান যাতে ভুল শুধরে নিতে পারি।
সর্বশেষ এডিট : ২৯ শে সেপ্টেম্বর, ২০১৩ রাত ৮:৫৯
২৪টি মন্তব্য ১৭টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্যাটারি অটো রিক্সা বন্ধ করা কী খুব কঠিন কাজ?

লিখেছেন চোরাবালি-, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ দুপুর ১:৪৮



বাংলাদেশের জন্য বিষফোঁড় হল এখন অটো রিক্সা, স্বল্প পরিশ্রমে সহজ আয়ের মাধ্যম হিসাবে খুবই জনপ্রিয় একটা পেশা। স্বল্প ভাড়ার জন্য অনেক মানুষ এখন পায়ে হাঁটা ভুলেই গেছে আর হাঁটার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জিয়াউর রহমান

লিখেছেন করুণাধারা, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:২৪



চাইলে জিয়াউর রহমান ঢাকায় ঝাঁ চকচকে দালান কোঠা রাস্তা বানিয়ে সবার চোখ ধাঁধিয়ে উন্নয়ন করার বাহাদুরি করতে পারতেন। সেটা না করে তিনি ঘুরতে লাগলেন সারা দেশে, গ্রামে গঞ্জে গিয়ে খাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

জবাবদিহিতার অনন্য দৃষ্টান্ত

লিখেছেন মেঠোপথ২৩, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ৮:৪৫

অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টার পদ থেকে পদত্যাগ করার পর বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের অন্যতম কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক নাহিদ ইসলামের বিরুদ্ধে গুজব ছড়ানো হয় সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন অ্যাকাউন্ট থেকে। সেসব পোস্টে তার বিরুদ্ধে বিপুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

আপনি যাত্রা করবেন নাকি রাজনীতি করবেন ?

লিখেছেন সৈয়দ কুতুব, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১০:১১


ইদানীং দেশে রাজনৈতিক দল গজানোর হার দেখলে মনে হয়, দেশের মাটিতে এখন ধান নয়, গজায় দল। ভোট এলেই বুঝি এই দলগুলো দুলে ওঠে, আর না এলেই পড়ে থাকে ফাইলের পাতায়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৪ শে এপ্রিল, ২০২৫ রাত ১১:০৯

আওয়ামী লীগের নেতারা যদি সত্যিই নির্দোষ হতেন, তাহলে তারা পালিয়ে গেলেন কেন?

পলায়নপর ছবি কৃতিত্ব এআই

২০২৪ সালের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার সরকারের পতনের পর আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×