অ) মেজাজটা পুরা বিলা হইয়া আছে।
সকালে গেছিলাম গোশত কিনতে হালাল বুচার শপে ব্যাটারে পই পই করে বুঝায়ে কইলাম একটা আস্ত ল্যাম্ব এর পা দুইটা রাইখা বাকি সব কারি পিস করবা।
পাকিস্তানি কাস্মীরী বলদটার ইয়েস ইয়েস শুইনা আমার একটু সন্দেহ হইছিলো যে ব্যাটা কি বুঝেই ইয়েস ইয়েস করতেছে নাকি না বুঝেই মাথা ঝাকাইতেছে।
পরে চিন্তা করলাম এই রকম সহজ একটা কথা না বুঝার ত কথা না ।
চিন্তা করতে করতেই ওরে বললাম যে তুমি গোশত কাইটা রেডি করো আমি একটু উলি থেইকা চক্কর দিয়া আসি।
আইসা দেখি বিশাল বড় বাক্স।
জিগাইলাম কাহিনি কি আস্তা গরু দিয়া দিলা নাকি।
ব্যাটা বলদে হাসতে হাসতে কয় একটা হোল ল্যাম্ব আর দুইটা ল্যাম্বের লেগ দিছি তোমারে ব্রাদার।
আমি বলদের ভেটকি দেইখা পুরা টাশকি।
একবার চিন্তা করলাম হালারে অর নিজের ভাষায় একচোট কষায়া ঝারি দেই পরে চিন্তা করলাম আসলে অর ভাষাগত সমস্যার কারনে আমারে আগে কয়েকবার জিগাইছিলো যে আমি উর্দু কইতে পারি কিনা জবাবে আমি প্রত্যেকবারেই শুনাইছি যে আমার বাপে ৭১ এ মুক্তি আছিলো আর তুমার বাপ চাচারা বাংলাদেশে আমার দাদার বাড়ি পোড়ায়া দিছিলো।
এই কথা কইলে ব্যাটা মুখটা কালো কইরে আমারে উলটা বুঝায় আই ফরম কাশমীর নট পাকিস্তান অল ইন্ডিয়া মুসলিম ইস্পিক উর্দু মেনি মেনি বাংলাদেশি বারাদার ইস্পিক উর্দু।
আমি কই ইয়েস , মে বি বিকজ দেয়ার ফাদার ফট ফর পাকিস্তান ইন ৭১ বাট ইউ সি মায় ফাদার ফট ফর বাংলাদেশ এন্ড উই উইন দ্যাট ওয়ার দ্যাটস হোয়াই ডোন্ট গিভ আ ফাক টু পাকিস্তান অর দেয়ার ল্যাংগুয়েজ।
মাঝখান থেইকা দোকানের ইরাকী মালিক আইসা বাম হাত ঢুকায়
ইউ সয়ার ব্রাজার আমার দাড়ির দিকে ইশারা করে ইরাকি বলে ওয়াল্লাহে সয়ার মাফি কইয়ইস ইয়া আখ।
আমার ততক্ষনে মেজাজ পুরা বিলা
ইরাকীর লগে এইবার আরবীতেই শুরু করলাম
ওয়াল্লাহে হাদা বাকিস্তানি হায়ওয়ান জেয়াদা মিন কালব হারামী আকবার ওয়া আখ আল ইবলিছ কুল্লুদ দুনিয়া মাব আরেফ বাকিস্তানি ক্যাফ লাকিন নাহনু বাংগালী আরেফ মিন ইজা ওয়াহেদ সাবাইন ।
কাশমির বলদ আরবী বুঝে না কিন্তু চেতিল ভাব দেইখা মুখ বাংলা পাচ বানা চায়া থাকে আমার দিকে।
ইরাকী আমার চেতিল ভাব কমানোর জন্য কয়া ওঠে মালিশ ইয়া আখ মালিশ।
আ) গত সপ্তাহে আমার কাজের সূত্রে একটা প্রশিক্ষনে যেতে হয়েছিলো ত সেখানে ইন্সট্রাক্টর প্রত্যেককে জিজ্ঞেস করছিলেন কোন তিনটা জিনিস আমরা অপছন্দ করি আর কোন তিনটা জিনিস আমরা পছন্দ করি।
মজার ব্যাপার হলো প্রায় সব অস্ট্রেলিয়ান এর অপছন্দের বিষয় হলো ব্যাড ড্রাইভিং ম্যানার।
ব্যাড ড্রাইভিং ম্যানার হলো আজাইরা ওভারটেকিং , ইন্ডিকেটর ছাড়া ডানে বামে বা সামনে ঢুকে পড়া, স্পীডিং , ইয়োলো লাইটে টেনে চলে যাওয়া, খুব কাছাকাছি গায়ে গা লেগে ড্রাইভিং করা।
এর মধ্যে ইয়োলো লাইটে আমি নিজেই টেনে চলে যাই কারন ব্রীজবেনের রাস্তায় এত ঘন ঘন ট্রাফিক লাইট বসানো যে একটায় লাল লাইট খাইলে বাকি সব কয়টায় লাল খাইতে হয় কিন্তু কোনো মতে হলুদে টাইনা গেলে বাকি গুলিতেও সবুজ লাইট ধরা যায় সাথে মিনিমাম পাচ থেকে দশ মিনিট সময় বাচে।
হলুদে যে আমি নিজেই টাইনা যাই সেইটা অবশ্য বলি নাই সেখানে।
তবে এরপরেই ইন্সট্রাক্টরের প্রশ্ন কে কে সামনে স্পীড ক্যামেরা দেখলে হাই বিম দেখায়।
শুরুতে কেউই হাত তোলে না ত আমি বেশ ভয়ে ভয়ে হাত তুললাম তারপরে আরেকজন তারপরে আরেকজন বারো জনের গ্রুপ থেকে মোটমাট তিনজন আমরা এই আকাম করি।
ত এই কাজের পিছনে যুক্তি দেখাইতে কইলো
একজন কইলো সরকার পাবলিকের কাছ থেইকা ট্যাক্স ত নেয়ই তার উপরে স্পীড ক্যামেরা বসায়া লাখ লাখ ডলার কামাইতাছে এই ফাও টেকা পাবলিকের কাছ থেকা নেয়া অন্যায়।
আরেকজন কইলো স্পীডিং এর লাইগা তার লাইসেন্স সাসপেন্ড আছিলো এক বছর এখন স্পীড ক্যামেরা দেখলেই তার সেই দুর্বিসহ এক বছরের কথা মনে হয় তাই সে লোকজনরে সাবধান করার লাগি হেডলাইটের হাই বিম মারে।
তারপরে আইলো আমার দান
আমি কইলাম আমি নিজেও স্পার রে টেকা দিতে দিতে মেজাজ পুরা বিলা তার লাগি যেইখানেই দেখি ক্যামারা লইয়া মামু খাড়ায়া আছে নগদের উপ্রে জনগনরে সাবধান করি।
এখন অবশ্য সাড়ে চাইর শ টেকা দিয়া গাড়ীতে এক খান টম টম লাগায়া লইছি স্পীড ৬০ এর উপ্রে উঠলেই টুং টাং কইরা উঠে আর আমি ৬০ এর নিচে নাইমা আসি।
আছিলাম বোকা হইলাম বুদ্ধিমান।