আমার শিক্ষকতা জীবনের দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় আমি বেশীরভাগ শিক্ষার্থিদের মাঝে যে জিনিসটির তীব্র সংকট লক্ষ্য করেছি তা হলো লক্ষ্যস্থির না করেই অর্থাৎ সুনির্দিষ্ট গোল ছাড়াই তারা শিক্ষাঙ্গনে আসে আর যায়। এটা সবথেকে বেশী দেখা যায় মেয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে। আমি আমার শিক্ষকতার ১৯ বছর মফস্বলেই কাটিয়ে দিয়েছি। আর, মফস্বলের মেয়ে শিক্ষার্থীরা সাধারণত বড় কোন টার্গেট নিয়ে পড়ার অঙ্গনে আসে না। সেট পারিবারিক, আর্থিক, পারিপার্শ্বিক বা তাদের ব্যক্তিমানসের অপরিপক্ষতার জন্যে হলেও হতে পারে। মেয়েরা পরিবারে, সমাজে নানাভাবে বঞ্চিত হয়ে থাকে। এদেরকে সঠিকভাবে গড়ে দিতে না পারলে এরা আমৃত্যু পরমুখাপেক্ষী হয়েই থাকবে। সুতরাং চরিত্র গঠনে বা নেতৃত্বের বিকাশে নারীদের কথা মাথায় রাখতে হয়। আমরা যারা শিক্ষকতায় রয়েছি আমাদের অবশ্যই সেটা মনে রাখতে হবে। পুরুষ শিক্ষার্থীরাও একইভাবে গড়ে উঠবে তাদ্র মধ্যে চারিত্রিক দৃঢ়তা ও নেতৃত্বের গুনাবলীর বিকাশ ঘটিয়ে দিতে হবে। সেভাবে গড়ে নিতে হবে।অবশ্য, আমি এই মফস্বলের শিক্ষার্থীদেরকে যথেষ্ট পরিমাণ ক্যারিয়ার কাউন্সেলিং করি বা তাদের ক্যারিয়ার গোল সম্পর্কে স্বপ্নবাজ হতে বলি। আমি আমার মতো চেষ্ঠা করে যাই।।
অতি সাধারণ ও নগণ্য মানুষ হিসেবে আমি আমার ব্যর্থতাগুলো দিয়ে দেখেছি জীবনে উন্নতি করতে গেলে চরিত্রটা অবশ্যই থাকতে হবে এক্কেবারে পাক্কা। আর লিডারশীপ গড়ে নিতে হবে নিজের চলার পথে একাকী চলতে। আসুন বন্ধুরা আজ দেখবো ক্যারেকটার ও লিডারশীপ এর ওপর কিছু চিত্র কন্টেন্ট।।
০১) নাগরিকতাঃ একটা রাষ্ট্রে বসবাসকারী নাগরিক হিসেবে কিছু দায়িত্ব পালন করতে হয় তারমধ্যে দেশের বিদ্যমান আইন ও শৃংখলা। কাজ করতে হবে দেশের মঙ্গলের জন্য দেশের লোকেদের জন্য।।
০২) Compassion: সমবেদনা- আমাদের চারপাশের সকলের প্রতি দয়াশীল আর কোমল হওয়া জরুরী।অন্যদেরকে তাদের প্রয়োজনে সহযোগীতা করা এবং তাদের জন্য ভালো কিছু করা।
০৩) Fairness: স্বচ্ছতা, সততাঃ প্রতিবেশী বা আশপাশের মানুষজনের প্রতি বা কলিগ বা সহপাঠিদের প্রতি দৃষ্টি দেয়া। সবার সাথে সুখ শেয়ার করা, কোন কিছু শেয়ার করা আর অন্যরা কী বলছে তা মনোযোগ দিয়ে শুনা।।
০৪) Honesty-সততাঃ ব্যক্তিগত জীবনে সৎ ও কর্মনিষ্ঠ/নিষ্ঠাবান হওয়া উচিৎ।।নিজের কাজ নিজেই করা আর অন্যের গচ্ছিত জিনিস তাকে ফিরিয়ে দেয়া বা তার আমানত রক্ষা করা।।
০৫) Integrity-একাগ্রতাঃ সঠিক ক্যারিয়ার প্ল্যান করা বা নিজের জন্য সঠিক কাজ বাছাই করা যা নিজের সেরাটা দিয়ে সঠিকভাবে সম্পাদন করা যাবে। যা সঠিক এবং ন্যায়সঙ্গত তাই করা। আর সবচেয়ে ভালো হওয়ার মানসে নিজেকে আত্মপ্রকাশ ঘটানো।।
০৬) Perseverance-অধ্যাবসায়ঃ অধ্যাবসায় ছাড়া জগতে কোন লক্ষ্যেই পৌঁছা সম্ভব নয়।তাই, কঠোর অধ্যাবসায়ী হওয়া। লক্ষ্যে না পৌঁছা পর্যন্ত লেগেই থাকা।
০৭) Respect-শ্রদ্ধাঃ অন্যকে শ্রদ্ধা করা। এ জিনিসটার অভাব আজ সমাজের সর্বক্ষেত্রেই প্রকটভাবে চোখে পড়ে। নিজের প্রতি অন্যের যে ব্যবহার আমরা নিজে কামনা করি সেই আচরণ অন্যের প্রতি করাটাই অত্যাবশ্যক। আর, অন্যের জিনিস ব্যবহারের সময় তার মালিকের অনুমতি নিয়েই ব্যবহার করা।।
০৮) Responsibility-দায়িত্বঃ দায়িত্ব আর দায়িত্ববোধ এ দুটোর অভাবেই আজ আমাদের পারিবারিক, সামাজিক, রাজনৈতিক এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই অশান্তি আর অচলাবস্থা তৈরি হয়ে আছে। নিজের উপর নির্ভরতা থাকা, নিজের জিনিসের প্রতি দায়িত্বশীল হওয়া বা যত্নশীল হওয়া এবং সর্বোপরি নিজের প্রতি ক্যারিং হওয়া।।
০৯) Self-Discipline-আত্মশাসনঃ নিজের কথা ও কাজের ওপর আস্থা রাখা। এই বিষয়টা খুবই জরুরী। সব সময় নিজের পক্ষে যায় না এমন জিনিসও গ্রহণ করতে হয় কার্যক্ষেত্রে।। এক কাজ শুরুর পূর্বে প্রয়োজনীয় কাজগুলো শেষ করে যাওয়া।।
১০) Trustworthiness-বিশ্বাসযোগ্যতাঃ আমাদের আশপাশের লোকেরা যেন বিশ্বাস করে যে, আমি বা আমরা যা করছি তা সঠিক এবং ন্যায়সংগত। কারো কাছ থেকে ধার নেয়া জিনিস যথা সময়ে ফেরত দেয়া। ওয়াদা রক্ষা করা। অন্যজন যেন বিশ্বাস করে যে, যা বলছ তা তুমি করবে।।
১১) The 12 Powerful Words-বারোটি শক্তিশালী শব্দঃ চিহ্ন, বিশ্লেষণ করা, অনুমান করা, মূল্যনির্ধারণ, সূত্রবদ্ধ করা, বর্ণনা করা, সমর্থন, ব্যাখ্যা করা, সংক্ষিপ্ত করা, তুলনা করা, বিপরীত হত্তয়া, ভবিষ্যদ্বাণী করা।।
উপরোক্ত বিষয়াদি একজন ব্যক্তির জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যা পালন করার মাধ্যমে সে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করার পাশাপাশি সমাজে অন্যান্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে পারবে। প্রত্যকের ভিতর এই গুণগুলো রয়েছে শুধু দরকার এর নার্সিং এবং এসবের ব্যাপারে সচেতন থাকা।।
সবাই ভালো থাকুন।।
ছবি কার্টিসিঃ পিপিটি ইমেজ (মী) এবং গুগল থেকে ধার করা।
সুত্রঃ http://www.worldofteaching.com