ভ্যান চালক টি কে পাইলট বানায় নি , তার যোগ্যতা অনুযায়ী তাকে চাকরী দিয়েছে।
.
ভ্যান চালক ছেলেটিকে চাকরি দেওয়ার জন্য সেদিন প্রধানমন্ত্রী তার নাতি নাতনি দের নিয়ে ভ্যানে চড়েনি, আর এই বাস্তবতা না বুঝার জন্য ২-৩ শ লাইক পাওয়া ফেসবুকার হওয়া জরুরী নয়।
.
নিজের বাড়ি, নিজের গ্রামে প্রধানমন্ত্রী পায়ে হেটে চলতে পারে, ভ্যান রিক্সা ঠেলা গাড়িতেও চড়তে পারে। এতে করে শো অফ নাটক যারা খুজে পেয়েছে, বিশ্বাস করি তারা একটা অবস্থায় মোহের দাপটে তাদের জন্ম ভিটে মাটি কে অস্বীকার করতে পিছপা হয় না।
.
যে কারনে বলেছি, ফাইভ পাশ ভ্যান চালক ছেলেটির সমান যোগ্যতাও অনেকের নেই। একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী যখন ঐ ছেলেটার ভ্যান গাড়িতে উঠলো তখন ঐ ছেলের জায়গাতে আপনি মহা বাল ফেসবুকার হলে কি করতেন ?
.
পাকনামী করতেন, গলায় আঙ্গুল ঢুকিয়ে রামপালে বিদ্যুত কেন্দ্র বন্ধের কথা বলতেন, শাহবাগে সাংবাদিকের উপরে পুলিশের নির্যাতনের বিচার দাবী করতেন......ভাঙ্গাচুরা রাস্তা দেখে ভ্যান চালাতেন চেষ্টা করতেন যেন আপনার ভ্যানের যাত্রীরা সারাজীবন আপনাকে মনে রাখে। যাত্রা শেষে ভ্যান থেকে নেমে যাওয়ার পরে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ভ্যান ভাড়ার ৫০০ টাকা পকেটে নিয়ে চলে যেতেন।
.
অপরদিকে ছেলেটি কি করেছে ? হোক গোপালগঞ্জের মেয়ে কিন্তু একটা দেশের প্রধানমন্ত্রী তার ভ্যানে চড়েছে, সে গর্বে আত্মহারা হয়েও স্বাভাবিক ভাবে ভ্যান চালিয়েছে যাতে তার ভ্যানের যাত্রী মিনিমাম ব্যাথা না পায়, তারপরে ফাকে ফাকে প্রধানমন্ত্রীর করা প্রশ্নের জবাব দিয়েছে। যাত্রা শেষে ভ্যান ভাড়া বাবদ ৫০০ টাকা না নিয়ে সে চলে এসেছে।
.
এবার আসেন চাকরি বিষয়ে, গত পরশুদিন থেকেই ভ্যান চালকে দৃষ্টি ছিল আমাদের সাংবাদিকদের। প্রধানমন্ত্রী চলে আসার পরে সাংবাদিকরা ছেকে ধরেছিল ভ্যানচালক কে প্রশ্নের পর প্রশ্ন করে, এক অবস্থায় মুখ থেকে বের করে এনেছিল সুযোগ হলে প্রধানমন্ত্রীর কাছে সে কি চাইতো ? ফাইভ পাশ ভ্যান চালক সরল মনে বলে দিল চাকরির কথা। পত্রিকাও ছাপিয়ে দিল। সেই খবর প্রধানমন্ত্রী দেখলো, তারপরে নির্দেশ দিল কিছু একটা করার। যোগ্যতা ও জায়গা খালি থাকায় বিমান বাহিনীর যশোর ঘাটিতে ভ্যান চালকের একটা চাকরি জুটলো। বলেন উক্ত ঘটনায় প্রধানমন্ত্রীর ভুল কি ছিল ?
.
স্থানীয় ভাবে উক্ত ভ্যান গাড়ির মুল্য ২ লাখ টাকা পর্যন্ত দাম উঠার কারনেই ভ্যান চলে গেল যাদুঘরে......
খবরে বিজ্ঞ, অনভিজ্ঞ ২৪ ঘন্টায় ১০ লাইক পাওয়া ফেসবুকার সহ ১০ মিনিটে ৫০০ লাইক পাওয়া ফেসবুকারদের নানা আশংকার কথা শুনলাম। যার একটার সাথেও কোন ভাবেই আমি একমত, সহমত কিংবা কাছাকাছি মত প্রকাশ করি না।
.
শুনেন দুইটা ঘটনা বলি, আমির খানের নাম শুনেছন তো ? বলিউডের অভিনেতা, রাজকুমার হিরানীর থ্রী ইডিয়টস সিনেমার লাষ্ট সিনের শ্যুট করতে গিয়েছিল হিমাচলের লাদাখের একটি গ্রামে, গ্রামের জীর্ন স্কুলের কাজ করে সিনেমার শ্যুট করেছিল।পরবর্তিতে ঐ গ্রামের নাম সহ আর্থিক চেহারা এমনিতেই বদল হয়ে গেছে, বৃদ্ধি পেয়েছে পর্যটকের সংখ্যা, রাস্তা ঘাটে হয়েছে ব্যাপক উন্নয়ন, হিমাচলের বিখ্যাত কয়েকটা স্থানের মধ্যে ভারতীয়দের কাছে ঐ গ্রাম হলো একটা। প্রশ্ন উঠতে পারে গ্রাম তো আর যাদুঘরে নেওয়া হয়নি, তাইলে কেমনে ?
উত্তর হচ্ছে গ্রাম নিজেই যাদুঘর হয়ে গেছে। পরবর্তিতে ২০১৩-১৪ সালে হিমাচলের বন্যায় ঐ স্কুলের ব্যাপক ক্ষতি হলে আমির খান ঐ স্কুল নির্মান করতে ব্যাক্তিগত ভাবে টাকা দিয়েছে। ভিয়েতনাম, মার্কিনীদের দেখতে পারে না যারা... ২০১৬ সালের মে মাসে, প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা চিরশত্রু ভিয়েতনাম সফর করে, সে সময় রাজধানী হ্যনয়ের একটি ষ্ট্রীট ফুড দোকানে ৬ ডলারের লাঞ্চ করেছিল। হ্যানয়ের ঐ দোকান রাতারাতি পরিবর্তন হয়ে এখন বিখ্যাত রেষ্টুরেন্ট এ পরিনত হইছে।
সর্বশেষ এডিট : ৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৭ রাত ৮:২১