বাংলাদেশের রাজনীতি এখন ব্যবসায়ীরা নিয়ন্ত্রন করছে।ছাত্রসংসদ নির্বাচন না হওয়ার কারণে ভালোমানের রাজনতিবিদও গড়ে উঠছে না। যা হচ্ছে সব নেতার চামচা হয়ে নেতা হওয়ার প্রতিযোগিতা। যেখানে নেতা হওয়ার প্রধান নিয়ামক হলো তেল দেওয়া সেখানে যোগত্যা যাচাই করা অনেক দূরের কথা!
বাংলাদেশের বর্তমান সংসদে ২২১ জন ব্যবসায়ি। কল্পনা করা যায়! ৩০০ আসনের ২২১ জনই ব্যবসায়ি। এ্টা আমাদের জন্য কতটুকু সফলতা বয়ে আনছে তা তো দেখতেই পাচ্ছি।
আমদের সব অস্থিরতার পিছনে রয়েছে স্বচ্ছ ও নেত্বত্ব সম্পন্ন রাজনীতিবিদ গড়ে না ওঠা।একজন রাজনীতিবিদ যখন বিভিন্ন পর্যায়ে নেতৃত্বদানের মাধ্যমে ওঠে আসে তখন তার মধ্যে কিছু কমিটমেন্ট গড়ে ওঠে। দলের প্রতি কমিটমেন্ট,দ্বায়িত্বের প্রতি কমিটমেন্ট, দেশের প্রতি কমিটমেন্ট।একজন প্রকৃত রাজনতিবিদ নিজের সফলতাকে বিচার করতে পারে,তারা শুধু মুখে নয়, কাজে বিশ্বাসী।
আমি বলছি না তারা যখন নেত্বত্ব স্থানে পৌঁছাবে তখন ঘুষ খাবে না, নিয়ম বহির্ভূত কার্যক্রম করবে না। তারা করবে। এইটা আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় বা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় কিংবা আরো সুস্পষ্ট করে বললে আমাদের রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় গেঁথে গেছে। কিন্তু তারা যখন চুরি করবে, দূর্নীতি করবে তাদের একটা নির্দিষ্ট সীমা থাকবে। দ্বায়িত্বটুকু রক্ষা করে দূর্নীতি করবে।
আমরা যদি সরকারি দলের একজন রাজনৈতিক ব্যাক্তিত্বের কথা বলি অর্থ্যাৎ ওবায়দুল কাদেরে কথা ধরি তাহলে নি:সন্দেহে বলা যায় একজন প্ররিশ্রমী লোক, কাজ করছে, মানুষের মাঝে ভালো ইমেজ তৈরি করতে পারছে। বলতে পারি সরকার দলীয় রাজনীতিবিদদের মধ্যে সফল। কিন্তু ওবায়দুল কাদের কি দুর্ণীতি করে না? কমিশন খান না?
অবশ্যই খান, কিন্তু আমরা যদি ওবায়দুল কাদেরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ার পর্যালোচনা করি তাহলে দেখতে পারব তিনি ছাত্র রাজনীতি করে উপরে ওঠে এসেছেন। যার কারণে তার কমিশন খাওয়ারও একটা কমিটমেন্ট আছে। তিনি একাধারে যেমন দলের জন্য ডেডিকেট, তেমনি দেশের জন্যও আবার নিজের স্বার্থ নিশ্চই দেখেন!!
একজন ব্যবসায়ি যখন সংসদ সদস্য হন তখন তিনি ভালোভাবেই জানেন কিভাবে ব্যবসা মুনাফা অর্জন করতে হয়।তিনি নির্বাচনে খরচটাকে বিনিয়োগ হিসেবেই ধরে নেন।
একজন ব্যবসায়ী যখন ৫ কোটি টাকা দিয়ে নমিনেশন কিনেন, আরো ৫ কোটি নির্বাচনে খরচ করেন, ঐ ব্যাক্তি ভালো করেই জানেন এই ১০ কোটি ইনভেস্ট করে কিভাবে ১৫ কোটি মুনাফা অর্জন করা যায়। তার কাছে না থাকে দলের প্রতি, না থাকে মানুষের প্রতি, না থাকে দেশের প্রতি কোনো কমিটমেন্ট। তারা শুধু মুনাফা অর্জনে ব্যস্ত থাকবে। যেটা দেশের, দেশের মানুষের এমনকি নিজের দলের জন্যও বিপদ জনক।
যতদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-সংসদগুলোতে নির্বাচন দিবে না তত দিন ভালো মানের রাজনীতিবিদ গড়ে ওঠবে না। ভালোমানের রাজনীতিবিদ গড়ে ওঠতে হলে ছাত্র সংসদগুলোতে রাজনতির চর্চা করতে হবে। তার প্রধান উপলক্ষ হলো নিয়মিত ছাত্র-সংসদ নির্বাচন দেওয়া। এতে করে ছাত্রদের মধ্যে গণতান্ত্রিক মনোভাব গড়ে উঠবে। সহনশীলতাও বৃদ্ধি পাবে যেটা পরবর্তীতে জাতীয় রাজনীতিতে ভূমিকা রাখবে।
আমরা যদি এখনই ব্যবসায়ী বান্ধব সংসদ থেকে মু্ক্ত হতে না পারি, তাহলে আমাদের এই বিশাল তরুন প্রজন্ম নিয়েও সামনের দিকে আগাতে পারব না। তাই এখনই উপযুক্ত প্রদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
সর্বশেষ এডিট : ২৮ শে নভেম্বর, ২০১৬ রাত ১০:৪১