আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার সাথে সাথে সমাজ ব্যবস্থাটা অদ্ভুত। আমরা শুধু শিক্ষা ব্যবস্থার দোষ দিই। সমাজ ব্যবস্থার দোষ অনেক ।আমার কাছে পরিবারের আচরণগুলোই অদ্ভুত লাগে। আমাদের পরিবারের লোকজন মনে করে সারাদিন পড়লেই শুধু ভালো শিক্ষার্থী হওয়া যায়।ভালো চাকরি করলেই সুখি হওয়া যায়,ডাক্তার-ইঞ্জিনিয়ার হলেই সম্মান পাওয়া যায়,টাকা কামানো যায়।
আমাদের সমাজে ইনোভেটিভ মানুষগুলোর মূল্যায়ন প্রথমে কেউ করে না।তার সাথে এমন আচরণ করা হয় যে, সে বিশাল পাপ করেছে। তাকে এমনভাবে নিরুৎসাহিত করা যে,সে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে ভয় পায়।আর কাজের পরিধি ছোট হলে তো কথাই নেই!! আবার যখন কেউ এতকিছু উপেক্ষা করে সফল হয় সবাই থাকে নিয়ে মেতে থাকে।
কিন্তু কেন এই রকম কবে?
তাকে যদি প্রথমে উৎসাহ দেওয়া হতো, তাহলে সে কাজটা আরো ভালোভাবে করতে পারতো,আরো সহজে করতে পারতো। আমাদের এই নিরুৎসাহের কারণে কত হাজার হাজার আইডিয়া যে অঙ্কুরেই শেষ হয়ে যায়,তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। অথচ মার্কিনরাসহ উন্নত রাষ্ট্রগুলো তাদের যে কোন বয়সের মানুষদেরকে উৎসাহ দেয় তার ইনোভেটিভ আইডিয়াকে নিয়ে কাজ করতে। সেটা স্কুলের কোনো বাচ্চাও হতে পারে।
কিন্তু আমাদের দেশে শিক্ষার পাড়াপাশি যদি আপনি কিছু করতে চান তাহলেও পারবেন না। বরং যত বাধা আছে সব মোকাবেলা করতে হবে। স্কুল বযসে তো কোনো কিছু চিন্তাই করা যাবে না।
আমাদের সমাজ ব্যবস্থাইটাই এমন। বলবে-আপনি পড়াশুনা শেষ করে তারপর কিছু করবেন। আর সেটা বেশী দেখা যায় মধ্যভিত্ত পরিবারগুলোতে। আসলে নিম্নভিত্ত বা উচ্চভিত্তরা আলাদা। নিম্নভিত্তরা প্রয়োজনের তাগিদে করতে হয় আর উচ্চভিত্তদের বাপের হোটেলে অনায়াসে চলে যায় আর বাপের ব্যবসা থাকলে তো -নো চিন্তা,ডু ফূর্তি স্টাইলে চলে।
যতসব ভেজাল মধ্যভিত্তদের। তারা না পারে এপারে যেতে, না ওপারে। তাদের পরিবারের কথা হলো তুমি পড়ো,আমি কষ্ট করে হলেও তোমাকে পড়াবো। পড়তে পড়তে ইয়া বড় বড় সার্টিফিকেট অর্জন করে তার পর কিছু করতে পারবে। পড়াশুনার পাশাপাশি আর কিছু করতে হবে না।করলে তোমার পড়া লেখা গোল্লায় যাবে।সত্যিই কথা কি -আমি এখনও পর্যন্ত কিছু করতে গেলে পরিবার বাঁধা দেয়। তাদের কথা আগে মাষ্টার্স শেষ কর।
আজব, আমি পড়ে সার্টিফিকেট অর্জন করে বুঝলাম চাকরি পাব,করব।কিন্তু আমার যদি নতুন কোনো আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে ইচ্ছে হয়,হোক সেটা ছোট তাদের কি উৎসাহ দেওয়া উচিত নয়? আমি সব সময় বিশ্বাস করি যে যেটা কাজে আগ্রহী থাকে সেই সে কাজটা আন্তরিকতার সহিত করে। আর কাজে আকাগ্রতা থাকলে সেকাজে সফল হওয়াটা অনেকটা নিশ্চিত।
আমাদের নিজেদের উন্নয়নে আসলে সামাজিক প্রতিবন্ধকতাটা অনেক বড় ইস্যু।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই অক্টোবর, ২০১৬ রাত ১১:৩৪